যত বলা না বলা কথা আছে বলে ফেল।যত রাগ অভিমান আছে ঝেড়ে ফেল।যত গালি আছে দিয়ে ফেল।মনের ভিতর কোন কিছু পুষে রেখো না।সময় হারিয়ে গেলে সময় পাবে না।সময় থাকতে থাকতে মনের সব জ্বালা মিটিয়ে নাও।হয়তো কোন একদিন সময় পাবে কিন্তু আমাকে পাবে না।আমি ভাসমান সময়ের সাথে হারিয়ে যাব অজানা কোনো ঠিকানায়। তোমার চোখের আড়ালে দূর কোন সীমানায়।বিরক্ত করব না, তোমাকে আর কোনদিন বিরক্ত করব না।দেখতে পাবে না, আমার এই অভিশপ্ত মুখটা তোমাকে কোনদিন দেখতে দিব না।যদি কোন ক্ষোভ থেকে থাকে তাহলে প্রকাশ করে যাও।আজকেই তোমার শেষ সুযোগ আমাকে আর দেখতে পাবে না।বিদায়, ভালো থেকো, অপেক্ষায় থাকব।
রাতের আকাশে মেঘেরা ভেসে বেড়াচ্ছে।রাস্তার গাড়িগুলো দ্রুত গতিতে ছুটে চলেছে।তাদের খুব তাড়া।কিন্তু আজ তাওহীদের কোন তাড়া নেই।তাওহীদ ফারাহর ফেসবুক ঠিকানায় লেখাটা পাঠাবে কিনা পাঠাবে চিন্তা করছে।একটা মুচকি হাসি দিয়ে ওর ফেসবুক ঠিকানায় লেখাটা পাঠিয়ে চুপ করে দূর আকাশের বুকে তাকিয়ে আছে।তার মনের স্বপ্নজ্বালে পুরনো স্মৃতিগুলো ভেসে বেড়াচ্ছে।কত স্মৃতি? সুখের স্মৃতি, দুঃখের স্মৃতি, মধুর স্মৃতি, মায়া ভরা স্মৃতি, ভুলা যায় না।তাওহীদ কখনও ভুলতে পারবে না।
আধো আলো আধো অন্ধকার।ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি হচ্ছে।দূরের মসজিদ থেকে আযানের মধুর ধ্বনি ভেসে আসছে।ফজরের নামাজ পড়তে এক মুসলিম লোক মসজিদের দিকে এগিয়ে চলেছে।বৃষ্টির শব্দের সাথে এক নবজাতক শিশুর কান্না ঐ লোকের কানে আসে।উনি ঠিক বুঝতে পারেন না কে কান্না করছে।ধীরে ধীরে কান্নার উৎসের দিকে এগিয়ে যান।বাচ্চাটাকে দেখে উনার সব কিছু কেমন যেন থমকে দাঁড়ায়।বাচ্চাটার আত্মচিৎকারে উনার চোখে পানি চলে আসে।দুই হাতে বাচ্চাটাকে বুকে টেনে নেন।আদরে আদরে আস্তে আস্তে বাচ্চাটার কান্না থেমে যায়।
“আমি তোর বাবা নই, তোর বাবা মা কে আমি জানি না, আমি তোকে রাস্তায় পেয়েছি।” “আপনার জন্মের ঠিক নেই।” কথাগুলো কানে বাজতে বাজতে মিলিয়ে যায়।তাওহীদের বুকের ভিতর থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস বেড়িয়ে আসে।তারপর অবাক দৃষ্টিতে আবার আকাশের বুকে তাকিয়ে থাকে।তার কাছে সব কিছু কেমন যেন শূণ্য শূণ্য লাগছে।তাওহীদ ঘুমাতে চায়, একটু শান্তিতে ঘুমাতে চায়।
আকাশের কোথাও তাঁরা নেই।সারা আকাশ জুড়ে মেঘেরা ভেলা হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।মাঝে মাঝে দমকা হাওয়া বইছে।ফারাহ বিষন্ন মনে আকাশের বুকে তাকিয়ে রয়েছে। মনটায় শান্তি নেই।দমকা হাওয়ায় তার কেশরাশী উড়ে উড়ে শান্ত হয়ে যাচ্ছে।দমকা হাওয়ায় মাঝে মাঝে শরীরটাও নড়ে উঠছে।ফারাহর চোখ দু’টো লাল হয়ে আছে।কাঁদতে কাঁদতে লাল হয়েছে।সে এই ভুল কিভাবে করল? এই ভুলের ক্ষমা হয় না।কোন ক্ষমা হয় না।নয়ন জুড়ে পানি খেলা করছে।হঠাৎ মেসেন্জারটা টুং করে ওঠে।অনেক আশা নিয়ে মোবাইলে তাকায়।কিন্তু সব কিছু মিথ্যা হয়ে যায়।
তাওহীদের নাম দেখে চোখে মুখে হাসি ফুটে ওঠে।তিনটা দিন তাকে কত মেসেজ দিয়েছে তার কোন হিসাব নেই।কত আশায় থেকেছে একটা মেসেজের জন্য কিন্তু কোনটার রিপ্লে পায়নি।ফারাহ ওর ঠিকানায় যাবে কিনা যাবে শেষ পর্যন্ত আর যাওয়া হয়নি।মুখে হাসি নিয়ে মেসেজটা পড়তে থাকে।ফারাহ মেসেজটা পড়ে স্তব্ধ হয়ে যায়।দুই নয়ন জুড়ে পানি ঝরছে।মনের স্বপ্নজ্বালে পুরনো স্মৃতিগুলো ভেসে উঠেছে।কত স্বপ্ন ছিল।কিন্তু একটা ভুলে সব মিথ্যায় পরিনত হচ্ছে।এবং দুই জনের মনের পৃথিবীটা এক পৃথিবী থেকে দুই পৃথিবীতে রুপ নিয়েছে।এখন এক অজানা ভবিষ্যতের দিকে সম্পর্কটা এগিয়ে যাচ্ছে।
তিন দিন পূর্বে……
– ক্রিং ক্রিং ক্রিং
– ‘আসসালামু আলাইকুম কে বলছেন?’
– ‘ওলাইকুম আসসালাম আপনার জামাই বলছি।আপনার সমস্যাটা কি? আমাকে অপেক্ষা করিয়ে খুব মজা পান আপনি? এই রে সাহেবের রাগ ওঠে গেছে।এখন কী হবে? রাগের বসে কি করে কে জানে! (মনে মনে বলে)
– বাব্বাহ আমার হবু জামায়ের দেখা যা অনেক রাগ।এই বুঝি ভালোবাসার লক্ষণ? হবু বউয়ের জন্য একটু অপেক্ষা করবেন সেটাও পারেন না! আপনি জানেন না আপনার হবু বউ সাজুগুজু করতে খুব ভালোবাসে।তাই তো দেরি হচ্ছে।
– তাওহীদ কিছু বলতে গিয়েও বলতে পারল না।সে এই মেয়েটার কথার জ্বালে ফেসে যায়।তার রাগ অভিমান মেয়েটার কণ্ঠের সুরে কোথায় যেন হারিয়ে যায়।চিকন গড়ন মেয়েটার সাথে একদম রাগ করে থাকতে পারে না।কিন্তু মাঝে মাঝে তাওহীদ খুব অভিমান করে ফেলে।তখন ফারাহর খুব কষ্ট সাধ্য হয়ে যায়।তাওহীদ ফারাহকে নিয়ে স্বপ্নের ভেলায় ভাসতে থাকতে।
– এই যে, এই যে হবু স্বামী! কি ভাবছেন? আমার কথা বুঝি ভাবছেন? কথাটা বলে ফারাহ হাসছে।পাগল করা হাসি।তাওহীদ ফারাহর চোখের দিকে তাকিয়ে চোখ ফেরাতে পারে না।তাওহীদের তাকানো দেখে ফারাহ মুচকি মুচকি হাসছে।
পড়ন্ত বিকেল, আকাশে সূর্যের দেখা নেই।মেঘেদের দল পুরো আকাশটাকে ঢেকে রেখেছে।তাওহীদ ও ফারাহ পার্কের পথ ধরে হাটছে। একে অপরকে দেখছে মুচকি মুচকি হাসছে।দু’জনের মনের ভিতর শিহরণ বয়ে যাচ্ছে।সুখের আবেসে মাতহারা হয়ে যাচ্ছে।ধীরে ধীরে সময় বয়ে চলেছে।ভালোবাসার পাখিগুলো এখানে সেখানে বসে আছে।কেউ কেউ আবার তাদের মত হাটছে।কেউ কেউ হাতে হাত রেখে কথা বলছে।কেউ কেউ কাঁধে মাথা রেখে কথা বলছে বা চুপ করে আছে।কেউ কেউ চোখে চোখে কথা বলছে।আবার কেউ কেউ হাতে, গালে, কপালে চুমু খাচ্ছে।এসব দৃশ্য দেখে তাওহীদ ও ফারাহ অস্বস্তিতে পড়ে যায়।দু’জনেরেই লজ্জায় মাথা কাটা যাওয়ার মতো অবস্থা হয়।
– এই যে সাহেব! এখানে আমার ভালো লাগছে না।
– কেন কি হয়েছে? এই জায়গাটা আমার বেশ লাগছে।(তাওহীদ মজা করেই কথাটা বলে।কিন্তু তারও অস্বস্তি লাগছে।)
– কিছু হয়নি।চলেন এই জায়গাটা ছেড়ে অন্য কোথাও যায়।
– তাহলে চলেন আমার চিলোকোঠাতে যায়? (কথাটা বলে তাওহীদ মুচকি মুচকি হাসছে।অপেক্ষা করছে ফারাহ কি বলে।)
– মানে! চিলোকোঠায়? কিন্তু কেন?
– এখন ডেটিং করব রাতে জোসনা বিলাস করব।তারপর দু’জন ভালোবাসায় হারিয়ে যাব।
কথাটা শুনে ফারাহর মাথায় রক্ত ওঠে যায়।তাওহীদ যে মজা করে কথাটা বলেছে সেটা তার মাথায় এক বারের জন্যও আসেনি।উল্টো তাওহীদকে ভুল বুঝল।
– ছিঃ ছিঃ এই ছিল আপনার মনে? এই হলো আপনার ভালোবাসার নমুনা? আপনাকে কী দোষ দিব? ভুলটা তো আমারেই ছিল।চিনা নেই জানা নেই একটা পরিচয় হীন ছেলের প্রেমে পড়ে যায়।আমার বোঝার উচিত ছিল যার জন্মের ঠিক নেই তার মনটা কতটুকু ভালো হবে! তার চরিত্র কতটুকু ভালো হবে।একটা কথা শুনে রাখেন।আপনি যে রকম মেয়ে আমাকে মনে করছেন।আমি কিন্তু ঐ রকম মেয়ে নয়।এখানেই আমাদের সম্পর্ক শেষ।কখনও যোগাযোগ করার চেষ্টা করবেন না।
ফারাহ একদমে কথাগুলো বলে শেষ করে।কিন্তু তাওহীদকে একটা কথা বলার সুযোগ দেয়নি।তার একটা কথা শোনার চেষ্টা করেনি।সে অনেক বার বলার চেষ্টা করেছে কিন্তু ফারাহ শুনেনি।শেষে ফারাহর কথা শুনে স্তব্ধ হয়ে যায়। ফারাহ তাকে ভুল বুঝবে কল্পনাও করতে পারেনি।তাওহীদ কি বলতে চেয়েছিল তার কথাটা শেষ করতে দিল না? একটা দীর্ঘশ্বাস বেড়িয়ে আসে।
চার বছরের সম্পর্ক একটা কথাতেই শেষ করে দিল? একটা সম্পর্ক গড়া আর ভাঙ্গা এত সহজ? ফারাহ তাকে এই চিনল? তাওহীদ কতবার ফারাহকে বলেছে তার বাবা মা কে সে জানে না।তাকে ভালো না বাসতে।তারপরও তাকে ভালোবেসেছে।তাওহীদকে ভালোবাসতে বাধ্য করেছে।কিন্তু আজ? ফারাহ তাকে জন্মহীন পরিচয় দিয়ে চলে যাচ্ছে।ফারাহকে এক বারের জন্য বাঁধা দিতে যায়নি।যে তাকে চিনল না, তাকে বুঝল না।কখনও তাকে চিনাতে যাবে না, তাকে বোঝাতে যাবে না।ফারাহ চলে যাচ্ছে তাওহীদ তাকিয়ে রয়েছে।
বৃষ্টি হচ্ছে, বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে আবার দমকা হাওয়া বইছে।মায়ার বাঁধন ছেড়ে, রাতের আঁধারে, হারিয়ে যাবে অজানা কোন পথে অজানা কোন ঠিকানাতে।যে ঠিকানায় তাকে কেউ চিনবে না, তাকে কেউ জানবে না, তার জন্ম নিয়ে কেউ কোন প্রশ্ন তুলবে না।তাওহীদ হারাতে চায় ঐ অজানা পথের ঠিকানায় ঐ অজানা পথের রাস্তায়।এখন শুধু একটা কাজ বাকি ঐ কাজটা করেই চির দিনের মতো হারিয়ে যাবে।ডায়েরি লিখতে গিয়ে একটা ছবি সামনে পড়ে।দু’টো মুখ হাসি মাখা নয়নে তাকিয়ে আছে।ছবিটা ছিড়ে ফেলে।তারপর এক দৃষ্টিতে ছবিটার দিকে তাকিয়ে থাকে।
বজ্রপাতের শব্দে ফারাহ বাস্তবে ফিরে আসে।পাথরের মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে আছে।শরীরে আত্মা নেই, মন নেই, অনুভূতি নেই, বুঝ শক্তি নেই।শরীরে অবশিষ্ট যেন আর কোন কিছুই নেই।শুধু একটায় মনে হচ্ছে তার বেঁচে থাকার কোন মানে নেই, কোন অধিকার নেই।
যে ছেলেটা তাকে পাগলের মতো ভালোবাসে তাকে কিভাবে পারল ঐ কথাটা বলতে? তার বুকের ভিতরটায় খুব কষ্ট হচ্ছে।শরীরের শিরা উপশিরা সব কেমন যেন অবশ হয়ে যাচ্ছে।কানে কানে যেন বলছে, তাওহীদকে ফিরা ও চলে যাচ্ছে।ফারাহ ঝুম বৃষ্টির মাঝেই তাওহীদকে ফিরাতে দৌড় লাগায়। কলিং বেল বাজছে।কলিং বলের শব্দে বাস্তবে ফিরে।তাওহীদ দরজা খুলতেই অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে।তাওহীদ জানত ফারাহ আসবে।কিন্তু এভাবে ফারাহকে দেখবে এটা আশা করেনি।দু’চোখে কালি জমেছে।মায়াভরা মুখটা শুকিয়ে গেছে।তার হৃদয়ের কোথাও হাহাকার করে ওঠে।তার কেন যেন কষ্ট হয়।কিন্তু অভিমানটা তাকে বড্ড পাথর করে তুলে।ফারাহ কথা বলতে পারছে না, একটানা ফুফাচ্ছে।তাওহীদ প্রশ্ন করে।
– কে আপনি? কাকে চান? এই বৃষ্টি ভরা রাতে একা কেন? একা আপনাকে দেখলে মানুষে কি বলবে?
– ফারাহ কথা বলতে পারছে না, শুধু কাঁদছে।
– কি হলো কাঁদছেন কেন আপনি? কি হয়েছে আপনার?
– ফারাহ কেঁদেই যাচ্ছে।
– আশ্চর্য কাঁদছেন কেন আপনি?
– চুপ করেন চুপ করেন আপনি।পেয়েছেনটা কি? যেভাবে পারছেন ঐ ভাবেই বলবেন? আর একটা কথা বললে আমি নিজেকে শেষ করে দিব।
ফারাহ কাঁদছে।কিন্তু তাওহীদ স্থির পাথরের মতো দাঁড়িয়ে আছে।কোন কথা বলছে না।চুপ করে ফারাহকে দেখছে।তাওহীদের চুপ করে থাকাটা ফারাহকে আরও বেশি কষ্ট দিচ্ছে।ফ্লোরের দিকে তাকাতেই ছবির ছেড়া টুকরো গুলো দেখতে পায়।তার মনটা বিষাদে বড়ে যায়।কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলে।নড়ার শক্তি হারিয়ে ফেলে।নিজেকে খুব একা মনে হতে থাকে।তাওহীদকে করুণ চোখে মন ভরে দেখছে।
হঠাৎ তাওহীদ জ্ঞান হারিয়ে ফ্লোরে পড়ে যায়।তাওহীদের ফ্লোরে পড়া দেখে ফারাহ স্তব্ধ হয়ে যায়।কি করবে? বুঝ শক্তি হারিয়ে ফেলে। হঠাৎ চিৎকার করে তাওহীদকে ডাকতে থাকে।কিন্তু তাওহীদ কথা বলে না।আজ তিন দিন হলো তাওহীদ কিছু খায় নি।তাই দূর্বল হয়ে পরেছে।তাওহীদের বুকে মাথা রেখে ফারাহ কেঁদেয় চলেছে।
তাওহীদের জ্ঞান ফিরতেই ফারাহর একটা কথা বার বার শুনতে পাচ্ছে। ফারাহ বলছে, আমাকে ক্ষমা করে দেন।আমার সাথে একটি বার কথা বলেন। ফারাহর করুণ সুরটা শুনে তাওহীদের হৃদয়টা কেঁপে ওঠে।
– আমি মরেনি বেঁচে আছি।আমার কই মাছের প্রাণ সহজে মরব না।ঠিক আছে এই বারের মতো ক্ষমা করলাম পরের বার ক্ষমা করব না।কিন্তু একটা কথা আপনি কেন আমাকে স্পর্শ করলেন? আমার বুকে কেন মাথা রাখলেন?
সাথে সাথেই ফারাহ তাওহীদকে এলোপাথারি মারতে থাকে।এক সময় তাওহীদ পরম যত্মে তার বুকে ফারাহর মাথা রেখে আদর করতে থাকে।ফারাহ বাচ্চা শিশুর মতো আদর নিতে থাকে।
তাওহীদ ফারাহকে মেনে নিয়েছে এটা ফারাহর কল্পনা ছিল।কিন্তু বাস্তবতাটা বড় বেদনার। তাওহীদের জ্ঞান ফিরে আসার পর ফারাহকে দূরে ঠেলে দেয়।ফারাহ কত করে কত ভাবে ক্ষমা চেয়েছে।কিন্তু তাওহীদ পাথর হয়ে থেকেছে।মায়া ভরা মুখটার দিকে এক নজর তাকিয়েছে।যে তাকানোতে ছিল এক বুক নীল বেদনা। “অনেক ভালোবাসা পেয়েছেন এখন আমাকে যেতে হবে।আপনাকে নতুন করে একজন খুঁজতে হবে।এবং তাকে নিয়ে আপনার সুখে শান্তিতে বাস করতে হবে।বিদায়, ভালো থাকবেন।আবার দেখা হবে অপেক্ষায় থাকলাম।”
তাওহীদ লেখাটা হাতে ধরিয়ে দেয়।ফারাহ লেখাটা পড়ছে আর কাঁদছে।একটা চাঁপা কষ্ট তাকে ঘিরে ধরে।যে কষ্টের শুরু আছে কিন্তু শেষ নেই।তার সব কিছু কেমন যেন শূণ্য শূণ্য লাগছে। বৃষ্টির অঝর ধারাতে, অজানা ঠিকানাতে, অজানা পথে, তাওহীদ হাটছে।ফারাহ পিছু পিছু দৌঁড়াচ্ছে।কিন্তু তাওহীদকে ধরতে পারছে না।তাওহীদ বার বার তার চোখের আড়ালে হারিয়ে যাচ্ছে।