ডাইনী মেয়ের ভালোবাসা

ডাইনী মেয়ের ভালোবাসা

১ঘন্টা ধরে অপেক্ষা করছি!
মহারানির আসার কোন নাম গন্ধই নেই!
তিশা এবার আমাদের বাসায় নতুন আসছে!
ও হ্যা তিশা হলো আমার খালাতো বোন!
আমাদের বাসা চিনে না, তাই নিতে এসেছি বাস স্টপে!
কিন্তু তার আসার কোন নাম গন্ধ নেই!
ধুর আর ভালোলাগে না!
দেখি তো ফোন দিয়ে কোথায় আছে!
ধুর,,, মোবাইলটাও অফ হয়ে গেছে রাতে চার্জে দিতে
মনে নাই!
বাধ্য হয়ে বাসায় চলে আসলাম!
জানিনা আমার আস্ত রাখবে কিনা!
বাসায় এসেই মোবাইল টা চার্জে দিলাম!
ফোনটা অন করেই মাথাটা চক্কর দিয়ে উঠলো!
মিসড্ কল এলার্টে ২৬ বার ফোন!
সবগুলোই তিশা করেছে!
বোঝতেই পারছি আজকে আমার মাথার চুল একটাও
থাকবে না!
মেয়ে তো নয় যেন একটা আস্ত রাক্ষসী!
প্রান পণে দোয়া করছি বাসাটা যেন চিনতে না পেরে
আবার ফিরে যায় মায়ের মেয়ে মায়ের কোলে!
একটু পর কলিং বেলটা বেজে উঠলো!
খুলতেই চোখটা চরখ গাছ!
দড়জার ওই পারে ভয়ংকর রুপধারী একটা মহিলা দাড়িয়ে
আছে!
তুহিন:-সরি আপনি ভুল বাসায় এসেছেন
আমান কথা টা শুনে তিশা আরও রেগে গেলো।।।।
তুহিন:-অ্যা অ্যাঅ্যা অ্যা এই কি তিশা তুমি আমার চুল কেন
ধরেছো!
ছাড়ো না প্লিজ আমার খুব লাগছে তো!
তুমি জানো কত টাকা খরচ করি এই চুলের পিছনে আমার
কোন কথা না শুনে সোজা টানতে টানতে আম্মুর কাছে
নিয়ে গেলো!
আমাকে আমাকে এই অবস্থায় দেখে হাসতে হাসতে
বললো,,,
মা:-কি হলো তুই তুহিনের চুল কেন ধরে আছিস?
তিশা:-দেখো না খালামুনি একে তো আমাকে রোদে ১ঘন্টা
দাড়িয়ে রাখছে!
কত কত বার ডাকলাম বয়ড়াটা শুনতেই পেলো না
সাইকেল নিয়ে চলে আসলো!
একটা রিকশাকে বললাম,,, সাইকেলটার পিছনে পিছনে
আসতে কত কষ্ট করে আসলাম বাসায়! দরজা খুলে বলছে
আপনি ভুল বাসায় এসেছেন!
বলেন তো খালামনি কেমন লাগে?
তুহিন:-মা সত্যি বলছি আমি শুনতেই পাইনি তোমার আদরের
ভাগ্নির মিনমিনে ডাক!
তিশা:-কি আমি মিনমিন করে ডাকি?
আমার কথা শুনে আরও জোরে চুল টেনে ধরলো!
তুহিন:-আহ মা বলো না ছেড়ে দিতে খুব লাগছে তো!
তিশা:-না না শাস্তি তো পেতেই হবে তাই দিচ্ছি আর কি!
মা:-ওই তিশা দেখো না আমার ছেলেটার কত লাগছে এতো
আস্তে কেন ধরছো একটু জোরে ধরো!
কথাটা শুনেই তিশা হাসতে লাগলো!
আমি আমার মায়ের দিকে করুন দৃষ্টিতে তাকালাম!
তুহিন:-মা তুমি আমার মা হয়ে ওই ডাইনিটার সাথে হাত
মিলালে?????
এর শাস্তি তোমাকে পেতেই হবে মা হ্যা পেতেই হবে!
কান্নার অভিনয় করে কথাটা বললাম!
মা:-তুই আমার আমাকে কি শাস্তি দিবি রে?
কথাটা বলেই মা হাসতে লাগলো!
সাথে ডাইনিটাও!
তুহিন:-আমার আব্বুকে বিয়ে দিয়ে আরেকটা আম্মু আনবো তখন
বোঝবে হুু
মা:-কি বললি তুই তিশা আরেকটু জোরে ধর না!!!!!!
এইদিকে ডাইনিটা আমার মায়ের আদেশ অক্ষরে অক্ষরে
পালান করছে!
আহা রে বেচারা চুল তোমারে কত সুন্দর করে যন্ত করি!
আমাকে মাফ করে দেও তোমাকে এই ডাইনিটার হাত থেকে
বাচাতে পারলাম না!
হু হু হু হু হু
মা:-হইছে এবার তুই ফ্রেস হ তো খেতে দিবো! কত কষ্ট
করছিস তুই!
আহা রে মুখটা একেবারে শুকে গেছে
মনে হয় দরদ উতলে পড়ছে হু
তুহিন:-না মা মুখ শুখে যায় নি ময়দা গুলে গলে গলে পড়ছে!
তিশা:-কি বললি আমি ময়দা দিই?????
বলেই চুলে জটকা একটা টান দিলে ছেড়ে দিলো!
আহা রে বেচারা চুল কত কষ্টই না পাইছো! দুঃখ করো না
তোমারে অনেক পুষ্টি যুক্ত খাবার দিবো!
দিনটা কাটলো আমার ,,,,,,,,,
রাতে ছাদে বসে ফেবুতে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছি!
এই এই এই আমার ফোন কেন নিলে দেও বলছি দেও!
কোথা থেকে যেন তিশা এসে ফোনটা নিয়ে নিলো!
মেসেজ চেক করছে!
হঠাৎ,,,,,
তিশা:-ওই এইগুলো কি হুমমমম???
এতো কিসের পেরেম?
তুহিন:-আর কিসের প্রেম? এইগুলো আমার বন্ধু!
তিশা:-ইশ রে কত,,,,,,
পরিস্কার বলে দিচ্ছি কোন মেয়ের সাথে যদি টাংকি মারো
তাইলে ভুলে যাও!
কোন মেয়ের সাথে যদি টাংকি মারো তাইলে কিন্তু তার
ফল ভালো হবে না বলে দিলাম হু হু
এই মেয়ের মাথায় যদি একটা টাস করে বাড়ি দিতে
পারতাম তাইলে সব ঠিক হয়ে যেতো!
কিন্তু আল্লাহ আমারে সেই শক্তি দেয় নাই!
ম্যাইয়াটারে যমের মত ভয় পাই ক্যারে??????
তিশা:-কি হলো বলো কত মেয়ের সাথে টাংকি মারছো?
তুহিন:-আরে বাপ এখনো আমি মাসুম বাচ্চা তাই টাংকি মারি না
তো!
তিশা:-সেটাই টাংকি বাদ আমি তো আছিই!
আর তুমি মাসুম বাচ্চা?????
তুহিন:-হুমমমমম মাসুম বাচ্চা!
আর হ্যা তুমি আছো মানে কি?
তিশা:-আমি আছি মানে আমি আছি!
তুহিন:-মানে?
তিশা:-মানে কচু!
বলেই চলে গেলো!
ধুর আর থাকবোই না এখানে হুু!
একি আমার রুমে ম্যাইয়াটা কি করে?
তিশা:-এই তুমি নিজের রুম গোছাতে পারো না?
তুহিন:-পারি তো!
তিশা:-আচ্চা ঠিক আছে এখন থেকে আমিই সব কাজ করে দিবো!
কয়েকদিন পর তো সব আমাকেই করতে হবে!
তুহিন:-মানে?
তিশা:-ওই যে বললাম মানে মান কচু!
ম্যাইয়াটারে কেউ তুইলা নিয়া যায় না ক্যারে?????
তিশা:-আচ্চা আজকে থেকে আমি এই বিছানাতেই ঘুমাবো!
তুহিন:-মানে কি তাইলে আমি কোথায় ঘুমাবো?
তিশা:-কেন আমার পাশে?
তুহিন:-মানে কি আম্মুরে কিন্তু বলে দিমু!
বললে লাভ নেই তোমারে আমি সারাজীবনের জন্য কিন্না
নিছি!
তুহিন:-মানে?
তিশা:-বুইঝা নেও!!!
ম্যাইয়াটার ভাব গতি ভালো না তাই ছাদে চলে আসলাম!
৫দিন পর আমার জন্মদিন!
এবার জন্মদিনটা অনেক বড় করে পালন করবো!
অবশেষে জন্মদিনের দিনটা এসে গেলো!
তিশাকে কোথাও দেখছি না!
একটু পর শাড়ি পড়ে একটা মেয়ে আমার পাশে দাড়ালো!
তাকাতেই আমি ক্রাশ!
এইটা তো তিশা!
হায় হায় এতো সুন্দর লাগতাছে ক্যান?
কেক কাটা হলো!
সবাই কত সুন্দর সুন্দর উপহার দিলো! কিন্তু তিশা
কোন কিছুই দিলো না!
কি কিপটা মেয়েরে বাবা!
তুহিন:-কি হলো আমাকে উপহার দিবে না? (বেয়াহার মত নিজেই চাইলাম)
তিশা:-হুমমমম দিবো তো! তবে এখানে না ছাদে এসো!
বলেই তিশা চলে গেলো!
ছাদে গেলাম উপহারের আশায়!
দেখি তিশা দাড়িয়ে আছে!
তুহিন:-দেও এখন!
তিশা:-আগে প্রোপজ করো!
হায় হায় এই মেয়ে জানলো কেমনে আমি ওরে ভালোবাসি!
তুহিন:-কেন?
তিশা:-এতো নাক্যামি ভালো লাগে না যা বলছি তাই করো না হলে চুল একটাও থাকবে না বলে দিলাম হু।
প্রিয় চুল দেখ তোরে কত ভালোবাসি তোরে বাচাইতে একটা ডাইনিরে প্রোপজ করতাছি!
তুহিন:-আমি তোমাকে বালোবাসি সরি সরি ভালোবাসি!
তিশা:-উম্মমমমমমমমা এইটা আমার উপহার!
কি কই মাইয়া টাকা দিয়ে কিনে কিছু দিবে না কিপটা ম্যাইয়া!
দৌড়ে আমার বুকে জাপাই পড়লো!
তুহিন:-ওরে আল্লাহ গো তুমি এতো ভারি কেন?
তিশা:-কি আমি ভারী?
তুহিন:-না না তুমি আমার কিউট ডাইনি !!!!!
তিশা:-হুমমমম মনে থাকে যেন!
মনে হয় বুঝতে পারি নাই ডাইনি বলছি তা
আল্লাহ গো আমার মাথার চুল গুলো ডাইনির হাত থেকে বাচাইয়া রাইখো!!!!

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত