নীল + সাদিয়া

নীল + সাদিয়া

-বৃষ্টিতে ভিজতে আসতে কে বলেছে। (সাদিয়া)
-কেউ বলেনি। (নীল)
-তাহলে ভিজতে ভিজতে আসলেন কেনো।
-অনেকদিন হলো বৃষ্টিতে ভিজি না।
-তাই বলে এভাবে।
-এভাবে আসতেই ভালো লাগল তাই আসলাম।
-জ্বর চলে আসবে তো।
-দরজার সামনে এভাবে দাড়িয়ে থাকলে তো জ্বর আসবেই।
-আজকে না হয় দাড়িয়েই থাকুন ভেজা শরিরে।
-তোমার সামনে একদিন কেনো হাজার দিন দাড়িয়ে থাকতে পারবো আমি।
-হয়েছে আর সিনেমার নায়কের মতন ডায়লগ দিতে হবে না, ভেতরে আসুন।
-বিয়ের পরে আজকেই প্রথম শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে আসলাম। রাস্তাই প্রচন্ড বৃষ্টির কারনে ভিজে গিয়েছি।
-এই নেন তোয়ালে, মাথা টা মুছে নিন , নইত জ্বর চলে আসবে।
-না তুমি কাছে থাকলে কিছুই হবে না।
-ন্যাকা কথা ছাড়ুন। মাথা মুছে সব চেন্জ করে নিন।আমি টেবিলে খাবার দিচিছ।

-ফ্রেস হয়ে খেতে বসলাম, বাবা মা সবাই আছেন। একসাথে খাওয়া দাওয়া করছি।
-প্রত্যেকটি শ্বশুর শ্বাওরির বাড়িতে জামাই রা গেলে যেসব প্রশ্ন করেন তারাও আমাকে সেগুলোই প্রশ্ন করছে।
-মনে হচেছ তারা পুলিশ আমি আসামী। খাওয়া দাওয়া সেরে বিশ্রাম নেওয়ার প্রস্তুতি নিচিছ।
-এমন সময় সাদিয়া এসে বলছে যে চলোনা আজকে একটু আমাদের গ্রামটা ঘুরব।অনেকদিন হলো ঘুরিনা।
-আমি একটু ক্লান্ত, পরে গেলে হয় না।
-কথা দেন যাবেন বিকালে।
-হুম সত্যি যাবো।
-তাহলে এখন বিশ্রাম নিন আপনি, আমার একটু কাজ আছে ওটা সেরে নিই এখন।
-হটাং করে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেলো।চোখ মেলে দেখি সাদিয়া সামনে বসে থেকে আমার মাথাই জলপট্টি দিচেছ। কিছুক্ষন পরে আমি আর চোখ খুলতে পারলাম না, প্রচন্ড রকমের ঠান্ডা লাগা শুরু করছে।
-সাদিয়া,,,,,,,,
-জ্বি বলুন।
-আমার অনেক ঠান্ডা লাগছে, একটা চাদর এনে দিতে পারবে। এই পর্যন্তই বলেছিলাম সাদিয়াকে, আর কিছু মনে নেই আমার।

-কারো কান্নার শব্দ শুনে জেগে উঠলাম। কোনরকমে চোখদুটো মেলে দেঁখি সামনে সাদিয়া বসে থেকে কাঁদছে।
-কি ব্যাপার সাদিয়া তুমি কাঁদছ কেনো।
-আমার মুখে থেকে এমন কথা শোনার পরেই সাদিয়া আমার সামনে এসে মাথাই হাত রেখে বলল, এখন কেমন লাগছে আপনার।
-একটু ভালো , কিন্তু তুমি কাঁদছ কেনো।
-কিসের জন্য আপনি সেটা বুঝবেন না, আপনি আবার ঘুমিয়ে পড়ুন।
-কেনো বুঝবো না সাদিয়া,,,,,,আমার তো তেমন কিছু হয়নি সামান্য জ্বর।
-হুহুহুহু,আপনি জানেন না আপনার কিছু হলেই আমি ভালো থাকতে পারি না। এটাকে কেউ সামান্য জ্বর বলে।
-তো কি বলে শুনি।
-সেটা আপনাকে জানতে হবে না। আপনাকে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে কে আসতে
বলেছিলো। এভাবে যদি না আসতেন তাহলে কি আজকে এমন টা হতো।(রাগী ভাবে বলল)

-অনেক দিন হলো বৃষ্টিতে ভেজা হয় না, তাই আজকে একটু ভিজলাম।
-তাই বলে এভাবে, আর যদি কোনদিন দেখেছি এমন ভাবে ভিজেছেন তাহলে কি করবো আপনি নিজেই জানেন না। (ধমক দিয়ে বলল)
-যদি আবার ভিজি তাহলে।
-কি বললেন আবার ভিজবেন তাহলে হাত পা বেধে রেখে দেবো।
-ওর কথা শুনে হাঁসি পেলো, কিন্তু ওর সামনে কিছুই বললাম না, শুধু মাথা নাড়ালাম।
-এখন যদি তার সামনে হাঁসি তাহলে সে অভিমানে অনেক কান্না করবে। আর এই কান্না আমার ভালো লাগবে না।

-আজকে সারারাত সাদিয়া ঘুমাই নি। আমার পাশেই বসে কাটিয়েছে। আমার যদি কিছু হয় তাহলে তার চোখ থেকে বন্যা হয়ে যায়। মেয়েটি আমাকে অনেক ভালোবাসে। কিন্তু আমি তাকে তার সমান ভালোবাসতে পারি নি।

-সকালের দিকে একটু কমে যায় জ্বর। তবু্ও সাদিয়া, মাথাই জলপট্টি দিয়ে দিচেছ। আরে আর দেওয়া লাগবে না জলপট্টি।
-সেটা আপনাকে বলা লাগবে না। আপনি শুধু শুয়ে থাকুন।
-কি আর করব সাদিয়ার কথা মতন শুয়ে থাকলাম।
-বিকালের দিকে সম্পূর্ন সুস্থ হয়ে গেলাম।
-এই চলেন আজকে বাইরে যাবো।
-কোথাই যাবে।
-গেলেই বুঝতে পারবেন।
-বিকালের দিকে সাদিয়া তাদের গ্রামের ভিতরে বেড়াতে নিয়ে গেলো । অনেক সুন্দর গ্রামটি । সাদিয়া কে যারা জিঙ্গেস করছে, এটা কে?

-এটা আমার জামাই।
-হটাং করে একটি মেয়ে বলছে সাদিয়া আপু এটা কে?
-কেনোরে কি দরকার।
-না মানে ছেলেটা অনেক সুন্দর আর আমি ছেলেটার প্রেমে পড়ে গেছি।
-কি বললি যা এখান থেকে। সাদিয়া মেয়েটির কথা শুনে আমাকে হাত ধরে টানতে টানতে বাসাই নিয়ে আসল।
-সাদিয়া মূখের দিকে তাকিয়ে দেখছি প্রচন্ড রাগ, মনে হচেছ বড় ধরনের কোন সমস্যা হয়েছে।

-কি হয়েছে সাদিয়া এমন করছ কেনো?
-কি হয়নি সেটা বল।
-আরে খুলে না বললে কি ভাবে বুঝবো।
-তোমাকে আর বাড়ির বাইরে যেতে দেবো না আমি ।
-কিন্তু কেনো,?
-দেখলে না ওই মেয়েটা কি বলল।
-কোন মেয়েটা?
-এখন তো না চেনার ভান করবেই।
-আরে বাবা কি হয়েছে ঘঠনাটা খুলে বলবে তো আমাকে ।
-ওই মেয়েটা বলল না যে তোমার প্রেমে পড়ে গিয়েছে । (জোরে জোরে নিশ্বাস নিচেছ আর বলছে)
-ওহ এই ব্যপার।
-এটা তোমার কাছে সামান্য বলে মনে হচেছ। (রাগ দেখিয়ে)
-তো কি, তার ভালো লেগেছে তাই বলেছে।
-কি বললে তুমি (কেঁদে দিয়ে) যাক শেষ পর্যন্ত এই সামন্য ব্যাপার নিয়ে আপনি থেকে তুমিতে আসছে।
-সাদিয়ার কাছে গিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরে বললাম, সত্যি সাদিয়া আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। আর মেয়েটা তোমাকে রাগানোর জন্য কথাগুলো বলছে। আমাকে অন্য কেউ ভালোবাসবে তুমি সেটা মেনে নিবে?

-যে আরাকবার এই কথা বলবে তার হাঁত পা ভেঙ্গে দেবো।

-এই না হলে আমার বউ।
-আজ থেকে বাইরে বেরোনো বন্ধ তোমার। (সাদিয়া)
-একটা সামান্য ব্যাপরে এত বড় শাস্তি দিবা।
-হুম এটা সামান্য না বুঝেছ।
-তাহলে তোমার লিপিষ্টিকের ভাগ দাও, তা না হলে আবার ওই মেয়েটির কাছে যাবো।
-কিইইইই?
-হুম সত্যি বলছি।
-না আমার ঠোটে ব্যাথা করবে।
-না করবে না একবার দাও।
-উহু দেবো না ।
-সত্যিই চলে গেলাম মেয়েটির কাছে।
-তখনি কারো ঠোটের স্পর্শ পেলাম।
-উহু বেথা পাচিছ তো (নীল)
-সাদিয়া পরে ঠোটে কামড় দিয়ে পালিয়ে গেছে, উহু ব্যাথা লাগছে সাদিয়া (জোরে বললাম)
-আমার কি তুমি তো চাইলে। এখন বুঝো। যাক পরিশেষে তো অরিনের ঠোটের স্পর্শ পেলাম।

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত