পাগলা আর পাগলির প্রেম!!!

পাগলা আর পাগলির প্রেম!!!

আমি এখন বাসর ঘরে বসে আছি একা একা। এখন ও আমার বরটা আসে নি। আজ আমাদের বিয়ে হয়েছে। আমার দীর্ঘ তের বছরের সাধনা আজ পুরন হলো।
ও আপনাদের তো বলাই হয়নি
আমার আর আমার বরের পরিচয়।
আমি ’’ নুসরাত জাহান নাবিলা ‘’ আর
ওর নাম ‘ আদনান আহমেদ’
ও আমার খালাতো ভাই।আমাদেন বিয়েটা ওর জন্মের ১৮ দিন পরে আর আমার জন্মের ৩ দিন পরে নানা-নানি,
বাবা-মা, আংকেল-আন্টি মিলে ঠিক করে।আর ও আমার চাইতে মাএ ১৫ দিনের বড়।তাই আমার খুব ফ্রেন্ডলি ছিলাম। আমার সব কথা আমি ওকে বলতাম আর ও ওর সব কথা আামাকে বলতো।
আমার ক্লাস ফাইভ পযন্ত এক ইস্কুলেই পড়তাম। পি.এস.সি দিয়ে যখন ক্লাস ৬ এ উঠলাম। তখন ও ছেলেদের ইস্কুলে আর আমি গার্লস ইস্কুলে ভর্তি হই। ইস্কুলে যখন একা একা যাই তখন খুব খারাপ লাগতো। যখন প্রাইমারি ইস্কুলে পড়তাম তখন এক সাথে যাইতাম। এভাবে কিছু দিন যাওয়ার পর
ওর শূন্যতাতে বুঝতে পারলাম তখনো ভালবাসা কি সেটা বুঝতাম না। তাই
আমি মাকে বলি আন্টিকে বলতে
আমাকে ওর সাথে ইস্কুলে নিয়ে যেতে, আম্মু ও বলে দেয় কাল থেকে যাতে ইস্কুলে নিয়ে যেতে।(ওর ইস্কুল আর
আমার ইস্কুলের দুরত্বটা একটু বেশি তার পরও বললাম। আর ওদের বাসা আর আমাদের বাসা কাছাকাছি তাই কোন সমস্যা হয়নি।)
আজ ইস্কুলে যাবার জন্য একটু রেডি হয়েছি তারাতারি কারণ আমাকে ইস্কুলে ‍দিয়ে ও ওর ইস্কুলে যাবে তাই। আমি রেডি হয়ে দেখি ও আমার জন্য বসে আছে লাইভিং রুমে। আমি বলি,
আমি- কিরে কখন আসলি??
ও- ১০ মিনিট হয়েছে। তারাতারি আয়
আমার ক্লাস ধরতে হবে।
আমি- হুম চল,,
আম্মুর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আমরা চলে আসি..
এভাবে ও রোজ আমাকে
ইস্কুলে নিয়ে যাই।
আমি যখন ক্লাস ৭ এ উঠলাম তখন একটা ছেলে আমাকে প্রোপোজ করে কিন্তু আমি কিছু বলি নাই। আর তার
পরের দিন আমরা সবাই নানুর বাড়ি যাই।। ও খানে গিয়া ওকে কথাটা বলি আর ও কথাটা গিয়া ভাইয়াকে গিয়ে বলে দেয় আর ভাইয়া আম্মুকে। রাতে যখন
সবাই বসে আছি তখন ভাইয়া আমাকে বলে,
ভাইয়া- কিরে তোকে না ki একটা ছেলে প্রোপোজ করেছে??
(আমিতো ভয়ে কাপতেছি,কাপা কাপা গলায় উত্তর দি)
আমি- জি।
আম্মু- আদনান আর তোর ছোট থেকেই বিয়ে ঠিক করা
আছেতো বাইরের কারো সাথে প্রেম টেম করবি না।
(তখন তো লজ্জা আর খুশিতে (খুশিতে কারণ আমি তাকে ভালবেসে ফেলেছিলাম) সাদা মানুষ পুরা লাল হয়ে
গেছি ওই দিকে তাকিয়ে দেখি ও ওখান থেকে চলে গেছে। আমি চলে আসি।)
আমি গেয়ে দেখি ও বাইরে দাড়িয়ে আছে।চোখে চোখ পড়তে ও মুচকি একটা হাসি দিয়ে চোখ সরিয়ে নিলো। দুই দিন
পরে সবাই বাসায় চলে আসি। ওই দুই দিন ওর সাথে লজ্জায় আর কথা বলি নি।

আজ ইস্কুলে যাবার জন্য রেডি হয়ে দেখি ও আমার জন্য বসে আছে। কোনো কথা না বলে দুজনে ইস্কুলের দিকে রওনা হই। রাস্তায় এতে ওকে বলি,
আমি- তুই কি আগে থেকেই জানতি??
ও- না। তুই জানতি??
আমি- না। তুই আমার সাথে কথা বলিস না কেন আগের মত??
ও- আমি বলতে চাইতাম। তুইতো চাইতি না।
আমি- ওকে…. এবার বাদদে। এখন থেকে কোন মেয়ের দিকে তাকাবি না।
ফেসবুকে ও মেয়ে এবং ছেলেদের সাথে চ্যাট করতে পারবি না।
ও- কেন?
আমি- আমি বলেছি তাই।
ও- যদি তোর কথা না মানি
আমি- কি?
ও- না না মানবে তো ।
আমি- গুড বয় এবার তোর ইস্কুলে যা।
ও- হুম ম্যাডাম,বাই।
এভাবে ছোট থেকে আমাদের সম্পর্ক।

এখন ও এম.বি.বি.এস ডাক্তার আর আমি অনার্স কমপ্লিট। আজ আমাদের বিয়ে হয়েছে। আর আমি বাসর ঘরে বসে আছি একা একা। এখন ও আমার বরটা আসেনি।
ওই তো এসেছে। আমি খাট থেকে নেমে ওকে সালাম করি, আর ও আমাকে টেনে ওর বুকে নিয়ে বলে,
ও- তোমার জায়গা ও খানে না।
আমি- তা আমার জায়গাটা কোথায় শুনe????
ও- তোমার জায়গা আমার বুকের বাম পাসে। আমার মাথার প্রতিটি নিউরনে।
আমি- হইছে হইছে থাক আর বলতে হবে না। আমকে ভালবাসলেই হবে।
ও- ভালবাসব আমার পাগলিটাকে।
আমি- কি আমি পাগলি??
ও- আরে না না তুমিতো আমার
অন্জলি।
আমি- সত্তি তো??
ও- হুম। ৩ সত্তি।
আমি- আমি দেখে না বাইরে কি সুন্দর বৃষ্টি হচ্ছে। চলো না গিয়ে দেখি।
ও- চলো না আজ সারা রাত বৃষ্টি
বিলাস করি আর গল্প।
এই বলে ও আমকে কলে করে নিয়ে বারান্দায় নিয়ে যাই, আমি ওর কাধে মাথা রেখে বৃষ্টি বিলাস করছি।

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত