আজ আমাদের ১ম বিবাহ বার্ষিকী।আমি ২টার সময় অফিস থেকে ছুটি নেই।আমি অফিস থেকে বের হয়ে সোজা চলে যাই মার্কেটে।সেখানে গিয়ে তন্নির জন্য একটা লাল শাড়ী কিনি।তার পর ফুলের দোকানে গিয়ে একগুচ্ছ গোলাপের তোড়া নেই তন্নির জন্য।সন্ধ্যায় ছোট একটা অনুষ্ঠান করবো বাসায়।হটাৎ ফোনটা বেজে ওঠে, ফোন তুলতেই দেখি তন্নির ফোন।
ও তো দেখতে পায় না,তাই ওর ফোনটা মুখের সামনে নিয়ে শুধু calling Rafi বললেই আমার ফোনে ফোন চলে আসে।আমি সেটিং এ গিয়ে এমনটা করে দিয়েছি যাতে ইচ্ছে হলেই আমাকে ফোন করতে পারে।ফোনটা ধরতেই ওপাশ থেকে সালাম দিলো তন্নি। বললো মিঃ রাফি সাহেব আজকের দিনটার কথা মনে আছে? আমি বলি কই না তো আজকে তো এমন কোন বিশেষ দিন নয় যে মনে রাখতে হবে।মনে মনে বলি পাগলীরে আমি কি করে এই দিনটা ভুলি, তোমাকে যে সারপ্রাইজ দিতে খুব ভালো লাগে।
দেখি তন্নি রাগ করে ফোটা রেখে দিয়েছে। শুনতে পেলাম Cut the call টুট টুট টুট এই যা তন্নি যে রেগে গেল এখন কী করি।কয়েক বার ফোন দিলাম ফোন ধরলো না।পরে ভাবলাম থাক বাসায় গিয়ে পাগলীটার রাগ ভাঙানো যাবে।ওর ফোনের একটু বিবরণ দেই, কিছু স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি চালু করা আছে ওর ফোনে,যেমন ফোন দেওয়া বা ফোন কেটে দেওয়া ও শুধু মুখে বললেই হবে।আর ফোনটা কানের কাছে নিলেই ফোন রিসিভ হয়ে যাবে।এমন কি কে ফোন দিয়ের সেটাও সে শুনতে পাবে।আমি পাগীলার পছন্দের একটা জিনিস কিনলাম সেটা হচ্ছে পায়েল।মেয়েটা যে পায়েল খুব পছন্দ করে।তারপর কেক আনতে গেলাম, বললো ১ ঘন্টা সময় লাগবে আপনি ওখানটায় বসুন কেকের অর্ডার দিয়েছি ১ ঘন্টার মধ্যে পেয়ে যাবেন।
আমি একটা চেয়ারে গিয়ে বসলাম আর হারিয়ে গেলাম সেই পূরনো দিনে যেখান থেকে সম্পর্কের সূচনা মেয়েটিকে দেখে ছিলাম যখন আমি ইন্টার পরীক্ষা শেষ করি।আমার বাসার পাশে ছোট একটা মাঠ ছিলো সেখানে আমি বাচ্চাদের সাথে ক্রিকেট খেলতাম।প্রায় যেতাম খেলতে। বাচ্চারা আমাকে রাফ্ফু ভাই বলে ডাকতো।আমিও খুব উপভোগ করতাম তাদের এই ডাকটা,ওদের সাথে কটানো সময় গুলো।বাচ্চাগুলো আমি বলতে পাগল ছিলো।আমি একদিন অসুস্থ ছিলাম সেজন্য মাঠে যেতে পারি নি,দেখি সবাই মিলে আমার বাসার সামনে হজির।সবাই আমার অসুস্থতার খবর শুনে কান্নাকাটি করছে এই দেখে ওদেরকে নিজের বুকে জড়িয়ে নেই।আমি সুস্থ হয়ে মাঠে যাই বাচ্চাদের সাথে সময় কাটাতে।ঠিক তখনই একটা নতুন ছেলে এসে মাঠের এক কোনে বসে আমাদের খেলা দেখছে। ছেলেটির বয়স সম্ভবত ৭-৮ হবে।আমি ঐ বাচ্চাটির কাছে গিয়ে বসি এবং তাকে বলি
=>তোমার নাম কী বাবু??
=> আবরার।
=>নতুন এসেছো বুঝি?
=>হ্যা রাফ্ফু ভাইয়া।
=> ওমা তুমি আমার নাম জানলে কী করে?
=> ঐ যে,মাঠের দিকে হাত দিয়ে বলে ওরা তোমাকে ডাক ছিলো তখন শুনেছি।
=>বেশ, কই থাকো তুমি?
=> মাঠে পাশের বিল্ডিং টা দেখিয়ে বলে ঐযে বেলকুনেতে একটা মেয়ে দেখছেন ওটা আমার বড় আপু।ওখানটাতেই থাকি।
=>কে কে থাকো তোমারা?
=>আমি,আপু ও মা।
=>ও আচ্ছা,খেলবে আমাদের সাথে?
=>হ্যা রাফ্ফু ভাইয়া।
=>আচ্ছা চলো।
মাঠের বাচ্চাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেই আবরার কে।এভাবে আমরা প্রতিদিন বিকালে খেলতাম,খেলা শেষে আড্ডা দিতাম।আমি প্রতি দিন আবরার দের বাসার দিকে তাকিয়ে থাকতাম মেয়েটার দিকে।লক্ষ্যে করতাম মেয়েটি অপলক দৃষ্টিতে আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকতো।আমি এটা বেশ উপভোগ করতাম।মাঝে মাঝে হাত দিয়ে ইশারা দিতাম কিন্তু কোন প্রতি উত্তর ছিলো না।একদিন আবরার বলে রাফ্ফু ভাইয়া বাসায় আম্মুকে তোমার কথা বলেছি।তোমাকে একদিন যেতে বলেছে বাসায়।কবে যাবে বলো? মনে মনে বলি এই সুযোগটার অপেক্ষাই ছিলাম আমি।আচ্ছা যাবো সময় করে না ভাইয়া না, বলো কবে যাবে বলতেই হবে তোমাকে। আমি বললাম কাল বিকালে যাব খেলা শেষ করে খুশি।আবরার আমাকে জড়িয়ে ধরে বলে অনেক খুশি ভাইয়া।আমি আবরারের কপালে চুমু দিয়ে বলি পাগল একটা। চল খেলতে চল। সবাই অপেক্ষা করছে। হ্যা চলো ভাইয়া।
পরের দিন খেলা শেষ করে আবরারের সাথে ওদের বাসায় যাই। দরজায় কলিং বেল বাজতেই ভিতর থেকে দরজা খুলে দিলো, আমি ভিতরের মেয়েটার থেকে চোখ সরাতেই পারছি না।অনেক মায়াবী দেখতে প্রথম দেখাতেই প্রেমে পড়ে যাই।সব মিলে অন্য রকম একটা মেয়ে।কিন্তু সে যে চোখের কোন পলক ফেলছে না।এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।আবরার বলে রাফ্ফু ভাইয়া ভিতরে আসো।ভিতরে যেতেই মেয়েটি বললো ভালো আছেন?আপনার অনেক প্রশংসা শুনেছি আবরারের কাছে।আমি বলি আলহামদুলিল্লাহ ভালো, আপনি? সে আমার উত্তর না নিয়ে চলে গেল।যাবার সময় বলে গেল ”আচ্ছা আপনারা গল্প করুন আমি ভিতরে যাই” আপনাদের জন্য জল-খাবার নিয়ে আসি।আমি তার চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলাম।আমাদের জন্য খাবার নিয়ে এলো আবরারের মা,বললো বাবা কেমন আছো?ছেলেটা সব সময় তোমার কথা বলে।
আমি বলি আন্টি আমি ভালো আছি,আপনি? তিনি একটু দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে বলে ভালো আছি বাবা।কেমন জানি একটা কষ্টের মধ্যে দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে তাদের সময়।আন্টি কে আঙ্কেলের কথা জিগাসা করতেই আচল দিয়ে মুখটা ঢেকে নিলো এবং চোখে পানি দেখতে পেলাম। বুঝতে বাকি রইলো না কিছু।আন্টি বললের ২ বছর আগে সড়ক দূর্ঘটনায় মারা যায়। ওহহ! সরি আন্টি।
তাদের সাথে অনেক সময় আড্ডা দিয়ে বাসায় ফিরে এলাম।সারারাত ঘুমোতে পারি নি।মেয়েটার নামও জানা হয় নি।আমার মেয়েটাকে নিয়ে ভাবতে ভালো লাগছে,মনে হচ্ছে সে আমার সামনেই দাড়িয়ে আছে। এই ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে গেছি সেটা নিজেও জানি না।বিকালে মাঠে গেলাম কিন্তু আবরার কে দেখতে পেলাম না।মনটা খারাপ হয়ে গেলো।আবরার এমন কখনো করেনি বিগত ৬ মাসে।আমি ভাবলাম একবার বাসায় গিয়ে খবর নেই।কিন্তু কি যেন মনে করে গেলাম না।পরের দিন আবার একই রকম হলো।তখন আর বসে না থেকেই আবরারে খোজে,আবরারে বাসায় যাই। গিয়ে কলিং বেল টিপতেই দরজা খুলে দিলো আবরারে বড় বোন।আমি একটু কাশি দিয়ে বুজাতে চাইলাম আমি রাফি। পরে আমি বললাম আবরার কই। মেয়েটি বললো আবরারের জ্বর হয়েছে।আচ্ছা! ও কোথায়, আমাকে নিয়ে চলো।আর হ্যা তোমার নাম তো জানা হলো না।
হ্যা আমার নাম তন্নি।চলুন আপনাকে আবরারে রুমে নিয়ে যাই। মেয়েটি সামনের দিকে হাত দিয়ে হাটছে।আমার বুঝতে বাকি রইলো না।পরে তার সাথে কথা না বলে আবরারের রুমে গিয়ে প্রবেশ করতেই বলে তুমি এসেছো ভাইয়া।
হুমমম! আবরারের মাথায় হাত বুলিয়ে দেই এবং বলি সুস্থ হয়ে যাবে কেমন। কিছু চকলেট এনেছি তোমার জন্য।আবরারের কাছে কিছু সময় থেকে চলে আসি।পরে বাসায় এসে ঘুমোতে যাবার আগে ঐ মেয়ে তন্নি ভাবনায় চলে এলো।সে চোখে দেখতে পায় না এটা ভেবে একটুও মন খারাপ হয় নি কেননা তাকে আমি ভালোবেসে ফেলেছি কিন্তু ভালোবাসি বলা হয় নি।ভেবেছি কাল বলবো এবং একটা অডিও রেকর্ডিং এ আমার কথা গুলো রেকর্ড করলাম।
আমি পরের দিন আবরার কে দেখতে যাই এবং তন্নির হাতে রেকডিংটা ধরিয়ে দিয়ে বলি এটা একা একা শুনবে।এই বলে আবরার কে দেখে চলে আসলাম।কিন্তু দুঃখের বিষয় সে আমাকে গ্রহন করেনি।আমি তখন সেটা মেনে নিতে পারি নি।পরে আমি তন্নির পরিবার বলতে ওর মার সাথে কথা বলি। তন্নির মা কে সব কিছু বুঝিয়ে বলি কিন্তু তিনি আমার উপর রেগে বসেন এবং বলেন ফাইজলামি করো আমার সাথে আরো অনেক কথা শুনায় যা শোনার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।পর্দার আড়ালে দাড়িয়ে তন্নি সবটা শুনছে।তন্নির দিকে তাকিয়ে দেখি ওর চোখে পানি, আমি বুঝে নিলাম মেয়েটাও আমাকে ভালোবাসে।অন্ধ বলে কি কাউকে ভালবাসতে পারবে না এমন তো কোন নিয়ম নেই। দেখতে পায়না বলে নিজের ভালোবাসা বিসর্জন দিতে চাচ্ছে।কিন্তু আমি যে তা হতে দিবো না। তন্নির মা আমাকে জোর গলায় বলছে এই ছেলে বেরিয়ে যাও আমার বাসা থেকে।আর কখনো আসবে না আমার বাসায়।
আমি তন্নির মায়ের এমন ব্যবহারে অনেক কষ্ট পাই এবং চোখ মুছতে মুছতে চলে আসি।বাসায় এসে আব্বু-আম্মুকে বিষয়টা বলি তারা বলে তুমি কেঁদো না আমরা দেখছি।আব্বু-আম্মু ও আমি পরের দিন তন্নিদের বাসায় যাই।আম্মু-আব্বু তন্নির মা কে অনেক বুঝানোর পরেও রাজি হয় নি।তিনি বলেন দেখেন মেয়েটা চোখে দেখতে পায় না,আমি চাই না মেয়েটাকে বিয়ে দিয়ে সমস্যায় ফেলতে।বাবা মরা মেয়েটাকে সব সময় সুখেই রাখতে চাই।তখন আমি বড়দের উপেক্ষা করে বলি তন্নিকে আমি সুখেই রাখবো।আমার বুকে আগলে রাখবো আমার তন্নিকে।পর্দার ওপাশ থেকে সবটা শুনছে তন্নি।আমি তার চোখে পানি দেখে উঠে ওর কাছে যাই। নিজের হত দুটো দিয়ে তন্নির চোখের পানি মুছে দেই।তন্নি বুঝতে পেল আমি,সে বললো এই দৃষ্টিহীন অন্ধ মেয়েটাকে কে এত ভালোবাসতে বলেছে হ্যা।আমি তাকে বলি ভালোবাসাটা আল্লাহ প্রদত্ত আপনা আপনি হয়ে যায়।
তন্নির চোখে আবারো পানি চলে আসে,আমি তন্নির চোখের পানি মুছতে মুছতে বলি এরকম কাঁদবে না, সইতে পারি না তোমার চোখের পানি।অনেক ভালোবাসি যে তোমায় তন্নি কথাটা বলতেই তন্নি আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে।আমি তাকে সান্তনা দিয়েই চলছি।এদিকে দেখি আব্বু,আম্মু,তন্নির মা,আবরার সবার চোখে পানি সবাই আমাদের খুনসুটি দেখে উনাদের চোখে পানি এসেছে হযতো।এমন সময় তন্নির বড় মামার আগমন হলো।তন্নির বড় মামা আকবর সাহেবই ওদের পরিবারে প্রধান বাহক।তাকে পুরো বিষয় পরিষ্কার করে বললো আব্বু খুব বিনয়ের সাথে বললেন।তন্নির বড় মামা আকবর সাহেব তন্নির কাছে এব্যাপরে জিজ্ঞাসা করেন এবং তন্নি সম্মতি প্রকাশ করে।পরে আকবর সাহেব সবার সম্মতি ক্রমে বিবাহটা নিজ দায়িত্বে সম্পূর্ণ করেন।এভাবে তন্নি মেয়েটা তার ভালোবাসার মানুষকে কাছে পায় আমিও পাই আমার প্রিয় মানুষ টিকে।তার ভালোবাসাতে কখনও কমতি রাখিনি।
জানেন আমি যখন তাকে নিয়ে বাহিরে ঘূরতে বের হই তখন চোখে কালো চশমা হাতে একটা লাঠি নিয়ে আমিও অন্ধ সেজে বাহিরে যাই।যাতে শুধু মাত্র তন্নিকে কেউ অন্ধ বলতে না পারে,ওর সাথে যেন আমাকেও বলে স্বামী-স্ত্রী দুজনই অন্ধ যাতে তন্নির কষ্টটা কম হয়।একদিন অফিসের একটা অনুষ্ঠানে আমি ও তন্নি যাই কিন্তু আমি গিয়ে ছিলাম অন্ধ সাজে।সবাই আমার এমন অন্ধ সাজ দেখে বিস্মিত হয়ে যায়।আমাকে আমার বস আরিফ সাহেব পিঠে হাত বুলিয়ে বলে তোমরা সুখে হও। তোমার বউয়ের প্রতি ভালোবাসা দেখে আমি মুগ্ধ।তোমার এই অন্ধ সাজ প্রামণ করে দেয় তুমি তোমার ওয়াইফ কে কতটা ভালোবাসো।এই বললে বস চলে যায়।আমি তন্নির দিকে তাকিয়ে দেখি ওর চোখে পানি, ও জানতো না ওর সাথে বাহিরে গেলে এভাবে অন্ধ সেজে বের হই।আমি তন্নিকে বলি তোমার চোখে পানি কেন,সে কিছু না বলে আমাকে জড়িয়ে ধরে আর বলে তোমার মত একটা মানুষকে স্বামী হিসাবে পাওয়াটা খুবি ভাগ্যের।
এইযে কেক নিন হয়ে গিয়েছে।আমি তার ডাকে বর্তমানে ফিরে এলাম।তাকে টাকাটা দিয়ে আমি বাসার দিকে যাই।দরজায় নক করতেই দরজটা খুলে দিলো আবরার।আমাদের বিয়ের মাস খানেক পর তন্নির মা অর্থাৎ আমার শ্বাশুড়ি স্ট্রোক করে না ফেরার দেশে চলে যায়।সেই থেকে আবরার আমাদের সাথেই থাকে।দরজা খুলে আবরার বললো রাফ্ফু ভাইয়া আপু সেই দুপুর থেকে কাঁদছে।কিচ্ছু খায় নি।আমি আবরারের কথা শুনেই দৌড়ে যাই পাগলীটার কাছে।আব্বু-আম্মু বলছে এত দেরি করলি কেন? তাড়াতাড়ি বৌমার কাছে যা।আমি আমাদের রুমে গিয়ে দেখি এখনো কাঁদছে, আমি তন্নির পাশে গিয়ে বসি।সে বুঝতে পেরেছে আমি এসেছি,কিন্তু সে কেঁদেই চলেছে।আমি তার চোখের পানি মুছে দিয়ে বলি পাগলীরে, আমি কি এই দিনটার কথা ভুলতে পারি বলো।আজকের দিনেই যে তুমি আমার হয়েছিলে।এই দিনটা কেমনে ভুলি বলো।মেয়েটি কেঁদেই যাচ্ছে। এই শোনো তোমার জন্য একটা শাড়ী এনেছি পরবে?
=>না পরবো না।
=>আমি পরিয়ে দিবো তোমায় পরবে না?
=> না না না পরবো না।
=>আমি সামনের দিকে ফুলের তোড়াটা এগিয়ে দিতেই ঘ্রাণেই বুঝতে পারে গোলাপ এনেছি।
তার গোলাপ খুব পছন্দের। সে গোলাপ তোড়াটা আমার হাত থেকে নিলো। এবং আমাকে কাঁদতে জড়িয়ে ধরলো। কাঁদো গলায় বললো, তখন ওটা বললে কেন?বলেই দিলো বুকে কয়েকটা কিল।তোমাকে সারপ্রাইজ করবো বলে সেজন্য।এই বলাতে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আমায়।আর কাঁদতে থাকে।এটা সুখের কান্না।আর পাগলী বউটা আমায় বলে এই আমাকে শাড়ীটা পরিয়ে দিবে?আমি যে শাড়ী পরতে জানিনা।আমি তাকে বলি অবশ্যই দিবো,কেন দিবো না বলো।আর হ্যা তোমার জন্য একটা পায়েল এনেছি বলাতে লাফিয়ে উঠে বলে কই দাও তো।
আমি বলি পা টা কই দাও তো, তন্নির পা আমার হাটুর উপর রেখে পায়েল টা পরিয়ে দেই। তন্নি খুশিতে দিশেহারা হয়ে যায়।অবশেষে আমাকে জড়িয়ে নেয় তার বক্ষ মাঝে। আমিও যে তার শরীরে ঘ্রাণটা নিতে থাকি।আর বলি এ ছাড়ো এখন অনেক কাজ বাকি আছেতো, সে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলে না ছাড়বো না তোমায়।আমি তখন তন্নির কপালে একটা চুমু দিয়ে বলি এবার ছড়ো পরে যত খুশি জড়িয়ে থেকো। ভালোবসি আমার তন্নিটাকে খুব বেচে থাকুক ভালোবাসা এমন ভালোবাসা হাজার বছর ধরে।