আই লাভ ইউ জান,উম্মম্মম্মম Ummmmmmmm (নাসিম)
: ইস,হইছে।আর আদর দেখাতে হবে না যাও। (অধরা)
:কেন?আমার বউকে আদর দেখাবো না তো কাকে দেখাবো?
:সকালে গোসল করেছি এখন পারবো না।
:ইসসসসস,কেন?
:যতই ভোলানোর চেষ্টা করো হবে না। যাও দূরে থাকো।
:আমার বউকে যখন ইচ্ছা তখন আদর করবো।বুঝছ?
:না হবে না তো।আপনার জন্য রোজ রোজ সকাল বেলা আমি গোসল করতে পারবো না। এই ভরদুপুরে তো না ই।
:আমি আদর করবো ব্যস।
:দেবো না আদর করতে
:আমি জোর করবো..
:জোর করেও হবে না।আর এই শীতের মধ্যে আমি আম্মুর কাছে ঘুমাবো।
:কেন কেন?ওই তাইলে আমার শরীর গরম করবে কে?
:কেন কম্বল আছে না?
:কম্বলে হবে না।আর বিয়ে করেছি কী বউ রেখে কম্বল দিয়ে শরীর গরম করতে?
:তাই তো।
:আম্মু তো তোমাকে ঘুমোতে দিবে না। বলবে মা,স্বামীর উপর রাগ করতে নেই।যাও ঘরে গিয়ে ঘুমাও।
:ইসসসসসসস। আমি আম্মুর মেয়ে বুঝলা।আমি আম্মুর কাছে ঘুমাইলে আম্মু কিচ্ছু বলবে না
:যা…বাবা, মা আমার আর উনি নিজেকে মেয়ে বানিয়ে নিচ্ছেন।
:নিবই তো।আপনি কে হ্য?হু আর ইউ?
:হুম এম আই? দাড়াও দেখাচ্ছি।
এই বলে জোর করে অধরাকে বুকে টেনে নিলো নাসিম। ওর ভালবাসার চাদরে মুড়িয়ে দিল অধরাকে। অধরাও নাসিমের বুকে মাথা রেখে ভালবাসার পরশ লুটে নিচ্ছে। এভাবেই চলে ওদের দুষ্টু মিষ্টি ভালবাসা। অধরা চায় নাসিম ওর উপর জোর প্রয়োগ করে ভালবাসা আদায় করুক। তাই ওর কাছ থেকে দূরে দূরে থাকে।কিন্তু মনে মনে চায় নাসিমের খুব কাছে থাকতে। আর নাসিম চায় অধরার ভালবাসায় সিক্ত হতে।তাই মাঝে মাঝে ওকে রাগিয়ে দেয় আবার রাগ ভাঙায়।যাতে অধরা ওকে আরো বেশী ভালবাসে।তাই ওর মাথায় দুষ্টু বুদ্ধি উদয় হল। অধরাকে এখন রাগিয়ে দিবে।
:এই,পাখি……
:হুম বলো বাবু….
:তুমি কী সত্যিই আম্মুর কাছে ঘুমাবে?
:হুম,ঘুমাবই তো। রোজ রোজ তোমার অত্যাচার সহ্য করতে পারব না।(কন্ঠে দুষ্টুমি)
:কী?আমি অত্যাচার করি?
:করোই তো। ফাজিল কোথাকার।
:ওকে,ঠিক আছে। তাহলে আজ থেকে পারসোনাল রোগী ভিজিট করতে হবে।
:ওকে কইরেন।
আচ্ছা,দেখি তো কোন রোগীর এপয়েন্টমেন্ট করা যায়। নাসিম কোনো ডাক্তার নয়। কিন্তু অধরাকে রাগানোর জন্য ও বলে যে পারসোনালি অন্য মেয়ের সাথে লাইন মারবে।মোবাইল বের করে ওর স্কুল জীবনের বান্ধবীদের সাথে তোলা পিকগুলি দেখছিল।
অধরাকে ফেলে ও মোবাইলের দিকে মন দেওয়াতে অধরা রেগে যায়। টান দিয়ে মোবাইলটা নিয়ে নেয়।নাসিম তখন ওর বান্ধবীদের সাথে ডুয়েল পিকগুলি দেখছিল।মোবাইল স্ক্রীনে ওগুলো দেখে অধরার ভীষণ রাগ হয়।মোবাইলটা আছাড় মারে। রাগ করে ফোপাতে থাকে।ওর চোখ দুটো ছল ছল করে উঠে।রাগলে অধরা মুখখানা লাল হয়ে যায়।এক্ষুনি কেদে দিবে এমন অবস্থা। রাগ করে থাকতে পারে না।ওর রাগটা মুহুরতেই কষ্টে কনভার্ট হয়ে যায়। নাসিম কাছে গিয়ে আদর করতে চায়।ওকে সরিয়ে দিয়ে অধরা বিছানা থেকে উঠে যায়।চোখ মুছে ঘর থেকে বেড়িয়ে যাওয়ার জন্য পা বাড়ায়।নাসিম পিছন থেকে হাত ধরে। ও হাত ছাড়িয়ে নেয়।
:এই খবরদার স্পর্শ করবে না আমাকে?
:কেন?আমার বউকে আমি স্পর্শ করবো না তো কে করবে?
:অন্য মেয়ে আছে না?তাদের কাছে যান। (কন্ঠে বেশ ঝাঝ)
:তাই?সত্যি অন্য মেয়েদের কাছে যাবো? স্পর্শ করবো না?
:না না না।করবেন না।আমাকে স্পর্শ করলে আমার মরা মুখ দেখবেন।
অধরার এমন রিয়্যাক্ট করায় হতভম্ব হয়ে যায় নাসিম। অধরাও বিস্মিত।কী করে ওর মুখ থেকে এই কথা বের হলো। ও নিজেকে বিশ্বাস করতে পারছে না। এভাবে রিয়্যাক্ট করাটা ঠিক হয় নি। নাসিম বেশ কষ্ট পেল।কী বলবে অধরা বুঝতে পারছে না কী করবে। নাসিম বাথরুমে চলে গেল ফ্রেশ হতে।অধরা পেছন থেকে ডাক দিতে গিয়েও পারল না। অফিস থেকে ফিরেই ভালবাসার ঘুনশুটি। এরই মাঝে ঘটে গেল মান অভিমান।অধরার শ্বাশুড়ী ডাক দিল।
: বউ মা,নাসিমকে খাবার দিছো?টেবিলে খাবার দাও।আমিও দুটো খাবো। বেলা তো কম হলো না। অধরা শ্বাশুড়ির ডাকে ডাইনিং রুমে চলে গেল।খাবার সারভ করছে। নাসিমকে সরি বলতে হবে। ওর ওভাবে রিয়্যাক্ট করাটা ঠিক হয়নি। নিজেও ভেতরে ভেতরে পুড়ছে এখন। নাসিম রেডী হয়ে বের হবে।
:এই কোথায় যাচ্ছো?
:অফিস থেকে জরুরী ফোন এসেছে। যেতে হবে।(ভারী কন্ঠে)
:খেয়ে যাও।(বিনয়ের সুর)
:সময় নেই।পরে খাবো।
: এই শোনো।
অধরার ডাক উপেক্ষা করে বেরিয়ে যায় নাসিম।বাইক স্টার্ট করে বেশ গতিতে চালিয়ে যায়। অধরা ফোন দিচ্ছে কিন্তু ফোনও অফ। বেশ চিন্তায় পরে গেল অধরা। দুপুরে না খেয়েই কাটিয়ে দিল।একটু পর পর নাসিমকে কল দিচ্ছে কিন্তু ফোন অফ। নাসিমও অফিসে গিয়ে মন খারাপ করে বসে রইলো। অধরা সারা বিকেল যন্ত্রনার আগুনে পুড়ছে। কী করল এটা।কেদে কেদে চোখ লাল করে ফেলছে।নাসিম,প্লিজ লক্ষীটি ফোন টা খোলো,তোমার অধরা খুব কষ্ট পাচ্ছে বাবু। প্লিজ বাসায় এসো। নাসিমের ফিরতে বেশ রাত হল।ও নরমালি সন্ধ্যার ভেতর চলে আসে।কিন্তু আজ এত দেরী করায় অধরাও ভেঙে পড়ে। বুকের ভেতর কষ্টের পাহাড় বড় হতে থাকে। নিজেকে কিছুতেই ক্ষমা করতে পারছে না। কলিংবেল বাজার সাথে সাথেই দৌড়ে গেল।
:এত দেরী হল যে?(চোখে জল)
:কাজ ছিল।
বলেই ভেতরে চলে গেল নাসিম।অধরাকে যে এড়িয়ে যাচ্ছে তা ভালই বুঝতে পারল অধরা।কী করবে ও বুঝতে পারছে না। আগে নাসিম অফিস থেকে ফিরেই ওকে আদর করে কপলে ভালবাসার পরশ বুলিয়ে দিত। আজ দেয় নি।বুক ভেঙে যাচ্ছে ওর। সোজা রুমে গিয়ে নাসিমকে জড়িয়ে ধরে কান্না জুড়ে দিল।
:প্লিজ বাবু আমাকে ক্ষমা করে দাও।
আমি ভুল করেছি। প্লিজ আমাকে ক্ষমা করো। নাসিম কোনো কথা বলছে না। নাসিমের বুক থেকে মাথা তুলে অধরা হাতজোর মিনতি করে, প্লিজ সোনা,রাগ করে থেকো না। তুমি জানো না তোমার অধরা তোমাকে কত ভালবাসে?আমাকে ক্ষমা করে দাও প্লিজ। দু হাতে নাসিমের দুই গালে স্পর্শ বুলায় অধরা।চোখে জল। এবার অধরার চোখে চোখ রাখে নাসিম। নিরবে অধরাকে জড়িয়ে ধরে। এতক্ষন নাসিমও ভাল ছিল না।ওকে কাছে পেয়ে বুকের কষ্টটা যেন নেমে যাচ্ছে। নাসিমের বুকে মুখ লুকিয়ে অশ্রু ঝরায় অধরা। ও যেন দেহের মাঝে প্রাণ ফিরে পেয়েছে।অধরার গাল বেয়ে ঝরে পরা নোনাজল আঙুল দিয়ে মুছে নিজের মুখে পুড়ে নেয় নাসিম।
:কতটা কষ্ট হয়েছে আমার তুমি জানো?তুমি আমার মুখের কথাটাই শুনলে?তোমার অধরার মনের খবর তুমি জানো না?(অধরা)
:তাই বলে আমাকে ওভাবে বলবে?আমি কী খুব ভাল ছিলাম পাখি?(অধরার কপলের চুলে পরশ বুলিয়ে)
:তো তুমি অন্য মেয়েদের কথা বললে কেন? তুমি জানো না আমি তোমার পাশে অন্য মেয়েদের সহ্য করতে পারি না?তোমাকে আমি কারো সাথে শেয়ার করতে পারবো না।এক মুহুরতের জন্যও না।
:সরি সোনা।আমি তো তোমাকে রাগিয়ে দিতে চেয়েছি।না রাগাইলে তোমার এই ভালবাসাটা পেতাম?
:ফাজিল,খালি কষ্ট দেয় আমাকে।
:উম্মম্মম্মম্মম্মম্মম্মাহ
ওর কপলে ভালবাসার পরশ বুলিয়ে দেয় নাসিম।দুজনের মনের মাঝেই কেবল ভালবাসার শীতল হাওয়া বয়ে চলেছে। ভালবাসার চাদরে নিজেদের জড়িয়ে নিল অধরা আর নাসিম।