– এই যে মিঃ ঘুম বাবু, আপনার টুথব্রাশ কোথায়? আমি হৃদয় আহমেদ এ এইস বাসায় আদর করে হৃদয়ও লক্ষীসোনা বলে ডাকে আর কলেজের সবাই কবি সাহেব বলে ডাকে,কারন বেশিরভাগ সময় লেখালেখি করিবলে। বাসার আশেপাশে আবার হৃদয় বললে চলবে না, তখন মমিন বলতে হবে। আবার কলেজে মমিন/হৃদয় বললে চলবে না,ওইখানে আবার কবি সাহেব বলতে হবে। আবার ভার্সিট এলাকায় এ এইস সাহেব না বললে চলবে না। মোট কথা যেখানে যে নাম দরকার সেটা না বললে কেউ চিনবে না আমায়।
আমি নিকটস্থ দনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে হিসাববিজ্ঞান পড়াই। গতবছর জয়ন করেছি। চাকরি জয়ন করার ২ মাস পরেই বাবা-মা জোড় করে বিয়ে দিয়ে দিলেন। আর আমিও পরাধীন হয়ে গেলাম। কি শান্তির জীবন ছিল তখন। আহা সকাল ৯টায় ঘুম থেকে উঠে ধীরে সুস্থে ব্রেকফাস্ট করে ১০ টার ভেতরে কলেজে পৌছে যেতাম। চাকরিতে জয়ন করার পর মাত্র ২ মাসই আরামে কাটিয়েছি। তারপরেই আমার জীবনের বিভীষিকা রুপে উনি মানে আমার বউ হাজির। এই মেয়ে আসার পর থেকে আমার জীবন পুরোপুরিভাবে তেজপাতা হয়ে গেছে। ওর নাম সাবরিনা আহমেদ অর্পা । আমার সবকিছুতে নাক গলাবে। এমনকি আমার ব্রাশ করাতেও। আমি ব্রাশ করতে করতে নাকি ও এক তরকারী রেঁধে ফেলে।
আজব চরিত্র এই অর্পা নামের মেয়েটি। আরেবাবা জীবাণু ধ্বংসের জন্য একটু সময়নিয়ে তো লড়াই করা উচিত। ডিসুম ডিসুম না করলেজীবাণু মরবে কিভাবে?? সেই সময়টুকুও এই মেয়েটা দিবে না। সকাল ৭ টায় আমাকে ঘুম থেকে তুলবে। (এত সকাল ঘুম থেকে উঠে আমি কোন মহাকর্ম যে সম্পাদন করব বুঝে উঠতে পারি না।) তারপর বিছানায় আমারটুথব্রাশে পেস্ট লাগিয়ে এনে দিয়েআমায় ব্রাশকরতে পাঠিয়ে দিবে। বাস্তবেই ও বেশ কর্মঠ মেয়ে। আজকালকের দিনে এমন দেখা যায় না। কিন্তু আমার জীবনটাকে তো পুরো নরক বানিয়ে দিয়েছে।
আমি জানি আমাকে ও ভালোবাসেবলেই এসব করছে। কিন্তু ভালোবাসা দেখানোর তো অনেক অভিনব উপায় আছে। আজ পর্যন্ত আমায় একটা কিসও করেনি। যাই হোক কয়েকদিন ধরে খেয়াল করেছি আগে আমার টুথব্রাশে পেস্ট লাগিয়ে বিছানায় নিয়ে আসে তারপর আমায় ডাক দেয়। তাই আমিও নতুন ফন্দি আঁটলাম। ট্রাউজারের পকেটে টুথব্রাশ লুকিয়ে রেখে দিলাম। ভাবলাম যতক্ষণ ও টুথব্রাশ খুঁজবে ততক্ষণে আমার কিছু আরামের ঘুম হবে। তাতে ফল হল উল্টো। বাবা-মা বাসায় নেই তাই নির্ভয়ে নিঃসংকোচে চিল্লানি শুরু করল ওই কথা বলে। কোথায় ভেবেছিলাম একটু শান্তিতে ঘুমাব,তা না উনি টুথব্রাশ না পেয়ে চিল্লানি দিয়া সারা বাড়ি মাথায় করে ফেলেছেন। তাও চিল্লাচ্ছে আমার রুমে এসে। কি আর করব উঠে পড়লাম। তারপর বললাম,
– টুথব্রাশ পেয়েছি, আর চিল্লাতেহবে না।
– কোথায় পেলেন??
– আমার পকেটে ছিল। ( একটা হাসি দিয়ে বললাম)
– তাই??নিজেই লুকিয়েছিলেন??
– হ্যাঁ।
– আচ্ছা??? আজ থেকে লুঙ্গি পরে ঘুমাবেন। ট্রাউজার পরে ঘুমানো চলবে না।
– এইই না না এটা পারব না।
– কেন পারবেন না???
– আরে একবার লুঙ্গি পরে ঘুমিয়েছিলাম, সকালেউঠে দেখি লুঙ্গি বিছানার নিচে আরআমার নিচ খালি!!!!!ভাগ্যিস রুমের দরজা বন্ধ ছিল, নইলে আমার প্র্যাসটিজ পাংচার হয়ে যেত।
– ও আচ্ছা এই ব্যাপার!! চিন্তা করবেন না যদি লুঙ্গিখুলে যায়, আমি আপনাকে ডেকে বলে দিব যে,লুঙ্গি খুলে গেছে।
– খুলার পর বলে কি হবে?? ততক্ষণে তো যা হবারহয়ে যাবে। আমার সম্মানটা যাবে।
– আরে নিজের বউয়ের কাছে লজ্জা কিসের?? এখানে তো আমি আর আপনি ছাড়া কেউ থাকে না।
– চক্ষুলজ্জা বলেও তো একটা কথা আছে, তাই না??
– এই আপনি জানেন না লজ্জ্বা, ঘৃণা, ভয়এই তিন থাকতে নয়??? যা বলেছি তাই হবে আপনি লুঙ্গি পরেই ঘুমাবেন।
এই কথা বলে আমায় কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই চলে গেল। কি অদ্ভুত মেয়েকে বিয়ে করেছি রে বাবা!! । স্কুলে আমি ছাত্রদের লুকা প্যাসিওলির সূত্র পড়াই আর ঘরে আমার বউ আমায় গার্হস্থ্য অর্থনীতি পড়াচ্ছে। কি সাংঘাতিক বিষয়!!!। যাই হোক যা হবার তা তো হয়ে গেছে। ভাগ্যকে তো আর কেউ বদলাতে পারে না। কাজেইটুথব্রাশে পেস্টলাগিয়ে দাঁত ব্রাশ করতে চলে গেলাম। ব্রাশ করে বাথরুমে ঢুকলাম গোসল করার জন্য। আমার ঘুম পুরো হয় নি। তাই হালকা ঢুলছিলাম। বাথরুমের ইংলিশ টয়লেট (হাই কমোড)দেখে মাথায় অন্যরকম দুষ্টু বুদ্ধি চাপল। ঢাকনি লাগিয়ে বসে পড়লাম। ঠিক পেছন দিকে ফ্লাশ বক্স থাকায় হেলান দিতে সুবিধা হল। কাজেই একটু আরাম পেয়ে বসতে না বসতেই ঘুমের রাজ্যে হারিয়ে গেলাম। আর আমাদের বাসর রাতের ঘটনা স্বপ্নে রিপিট দেখলাম।
(বাসর রাত,,, বুকে ফুঁ দিয়ে বিড়াল মারার উদ্দেশ্যে বাসর ঘরে ঢুকে পড়লাম। বাবা-মা জোর করে বিয়ে দিলেও বিয়ে যখন করেছি তখন স্বামীর কর্তব্য পালন করা উচিত। কাজেই স্বাভাবিকভাবে রুমে ঢুকে দরজা আটকালাম। ঢুকে দেখি বউ আমার ইয়া লম্বা একখান ঘোমটা না দিয়ে এমনিই বসে আছে। আর মোবাইল টিপছে। অকে দেখে মনে হচ্ছে ও যেন বাসর ঘরে না নিজের রুমে বসে টাইম পাস করছে। আমার উপস্থিতি জানান দেওয়ার জন্য আমি একটু গলা কাশি দিয়ে ওর পাশে গিয়ে বসলাম। ও আমার দিকে একবার তাকাল, তারপর আবার মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত হয়ে গেল। আমি কিছু বলব তার আগেই ও বলে উঠল,
– অনেক রাত হয়েছে শুয়ে পড়ুন। (মোবাইলের দিকে তাকিয়ে স্বাভাবিক কন্ঠে বলল)
– মানে?? আজ আমাদের বাসর রাত আর এমনিই শুয়ে পড়ব??
– হ্যাঁ,, আর ঘুমের মধ্যে আমার গায়ের উপর আপনার পা উঠলে কিন্তু ঠ্যাং ভেঙে দেব।
– এ আবার কেমনতর কথা?? স্বামী হয়ে আমার কোনো অধিকার নেই??
– এই মাস্টারমশাই বেশি বকবক না করে শুয়ে পড়ুন তো।
আমিও লাইট অফ করে শুয়ে পড়ছি। এই বলে ও লাইট অফ করে এসে আমার পাশে স্বাবলীল ভঙ্গিতে শুয়ে পড়ল। এমন ভাব করছে যেন আমি ওর বহুদিনের পরিচিত। ( কি সাংঘাতিক বিষয়!!!) আমি আর কি করব কিছু বলারও সাহস পাচ্ছি না, কিছু করতেও পারছি না। বড় সাধ করে বিড়াল মারতে এসেছিলাম। কিন্তু আমি তো বিড়ালকে মারিনি উল্টে বিড়াল আমাকে মেরে আমার পাশে এসে শুয়েপড়েছে। এসব ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে গেলাম। কতক্ষণ ঘুমিয়েছি খেয়াল নেই, হঠাৎ মনে হল) দরজার ওপর দিয়ে প্রলয় দৌড়ে যাচ্ছে। দড়াম দড়াম শব্দে চকিতেই ঘুম ভেঙ্গে গেল। অর্পা দরজা ধাক্কাচ্ছে আর বলছে,
– এই আপনার কি হয়েছে?? উত্তর দিচ্ছেন না কেন?? ঘুমিয়ে পড়লেন নাকি??
– আরে না না আমি ঠিক আছি।
– কি ঠিক আছি?? ১ ঘন্টা ধরে বাথরুমে কি করেন, হুহ??
– বাথরুমে মানুষ যা করে আমিও তাই করছি। ( ১ ঘন্টা শুনে আমার হাসি পেল। (তাই মজা করেই কথাটা বললাম। অনেকদিন পর একটু শান্তির ঘুম ঘুমালাম। আর একটা অশান্তিতে ভরপুর স্বপ্ন দেখলাম।)
– উফফ্ আপনাকে নিয়ে আর পারিনা। বেরোন বলছি। (একরাশ বিরক্তি নিয়ে কথাটা বলল।)
– আচ্ছা আসছি।
বেশি রাগ করে ফেলবে তাই তাড়াহুড়ো করে শাওয়ার ছেড়ে দিয়ে গোসল সারলাম। সেই রাত থেকে আজ পর্যন্ত আমায় দৌড়ের উপর রেখেছে। কাজেই গোসল শেষে মহারানীর সাথে দেখা করতে টায়েল দিয়ে গা মুছে বেরিয়ে এলাম। ঘড়ির দিকে চোখ পড়তেই দেখলাম ৮ বাজতেও আরো ১৫ মিনিট বাকী। তারমানে আমি বড়জোর ২০-২৫ মিনিট ঘুমিয়েছি আর এই মেয়ে বলে কিনা ১ ঘন্টা!!! তাই অর্পা কে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম,
– এই কোথায় ১ ঘন্টা হুহ?? খামকো আমায় জাগিয়ে দিলে। (এই কথা বলেই মুখে হাত দিলাম। মুখ ফসকে আসল কথা বেরিয়ে গেছে।) ও আমার কথা শুনে একটা রাগী লুক নিয়ে আমার ঠিক সামনে এসে দাঁড়াল। তারপর আমাকে অবাক করে দিয়ে খিলখিল করে হেসে উঠল। আমি অবাক হয়েই জিজ্ঞেস করলাম,
– এতো হাসার কি হল??
– এ বাবা হাসব না???? হি হি হি,,, আ আ আপনি বাথরুমে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন??? হা হা হা,,
হাসির চোটে একপ্রকার তোতলাতে তোতলাতে আমায় কথাটা বলল। ওকে এইরকম ভাবে কখনো হাসতে দেখিনি। আমি তো ভুলেই গেছিলাম এই মেয়েটা হাসতেও পারে। একটু ভালো করে খেয়াল করে দেখলাম, ওর হাসিতে দুই গালেই টোল পড়েছে।। তাই দেখতে আরও ভালো লাগছে। আমিও হা করে দেখতেলাগলাম। ও আমার তাকিয়ে থাকা দেখে হাসি থামিয়ে জিজ্ঞেস করল,
– এই মুখের হা বন্ধ করুন মাছি ঢুকে যাবে। আর এমন করে তাকিয়ে কি দেখেন, হুম??? ওর কথায় আমার সংবিত ফিরে আসল। এই কথা বলায় আমি একটু লজ্জা পেলাম। কিন্তু এভাবে চলতে পারে না। আমি একদিনও শান্তিতে ঘুমাতে পারি না। এর একটা বিহিত করতে হবে। তাই আমি একটু গলা খাঁকারি দিয়ে চেহারায় যথাসম্ভব রাগী ভাব আনলাম। এনে যত জোড়ে পারা যায় চিৎকার দিয়ে বললাম,
– আমার সব কিছুতে তুমি নাক গলাও কেন??
– কারণ আমি আপনার বউ। অদ্ভুত শান্ত কন্ঠে কথাটা বলল। এত শান্ত কারো কন্ঠ হয়?? ঝাড়ি মারছি তবুও শান্তথাকছে কিভাবে বুঝলাম না। কিন্তু আমি ভ্রুক্ষেপ না করে বললাম,
– সেটা আর হবে না। তোমার জ্বালায় আমি অতি,,,,,,, কথা শেষ করতে পারলাম না। তার আগেই আমার ঠোটে অর্পার উষ্ণ স্পর্শ পেলাম। এতটা অবাক হলাম যে, রেসপন্স করতেও ভুলে গেলাম। এ কে??
—-এই কি সেই অর্পা”!!! যার জন্য আমার জীবন অতিষ্ঠ হয়ে গেছে?? যার জন্য আমিসকালবেলাঠিকমত ঘুমাতে পারি না??। আমি রেসপন্স করছি না দেখে ও আমায় ছেড়ে দিয়ে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকল।
তখনি খেয়াল হল, বাস্তবিকই এই সেই অর্পা যাকে আমি বউ করে ঘরে নিয়ে এসেছি। “যে রাঁধে আবার চুলও বাঁধে”। এই অদ্ভুত মেয়েটা এত সহজে পরিবেশ নিজের নিয়ন্ত্রনে নিয়ে আসবে আমি স্বপ্নেও ভাবিনি। আমি শান্ত হয়ে গেছি এক নিমিষেই। সত্যি বলতে কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। রাতে ঘুমানোর সময় অকে টাচ করতেও দেয় না, আর আজ নিজে থেকেই কিস করে বসল??? আসল কথা হচ্ছে আমি মাস্টারি করি তো তাই বউকে একটু ভয় পাই। স্কুলে আমি ছাত্রদের ক্লাস নিলেও বাসায় ও আমার ক্লাস নেয়। আর জোর করে কিছু করারও সাহস হয়নি। তাই এতদিন আমরা এক বিছানায় শুলেও ভাই বোনের মতোই ছিলাম।
প্রতিদিন নিয়ত করে ঘুমাতাম আজ কিছু করব। কিন্তু বউ আমার যখন আমার দিকে একটু রাগী লুক নিয়েতাকায়, আমি চুপসে যাই। নিরাশ হয়ে শুয়ে পড়ি। কাজেই আজকের ওর এই কাজে আমার মাথায়ও দুষ্টু বুদ্ধি চাপল। আমিও অকে গভীরভাবে কিস করলাম। আর অর্পা ও রেসপন্স করল। না করে যাবে কোথায়??। এবার আমার সাহস বেড়ে গেছে। আরবউকে ভয়পাব না। অকে শুধু ভালোবাসব। যখন অকে ছাড়লাম তখন ও লজ্জায় আমার বুকে মাথা লুকালো। আমিও পরম ভালোবাসায় অকে জড়িয়ে ধরলাম। সকালের কথা মনে পড়ায় অকে বললাম,
– এই যে লজ্জাবতী এখন লজ্জা পাচ্ছ কেন?? তখন তো আমায় খুব কথা শুনিয়েছিলে। এবার তো নিজেই লজ্জায় মরে যাচ্ছ।
– মাঝে মাঝে লজ্জা পেলে কিছু হয় না। কিন্তু প্রশ্রয় পেয়ে মাথায় উঠার চেষ্টা করলে কিন্তু ভালো হবে না বলে দিচ্ছি।
– জো হুকুম মহারানী। তোমার সব প্রশ্নের উত্তর তো আজ রাতে পাবে।
– কি বললে তুমি?? (তুমি করে বলেছে!!! মানে পথে এসেছবাছাধন,,,আর যাবে কোথায়??)
– তুমি ঠিকই শুনেছ। (বীর বিক্রমে বললাম)
– আজ আমি অন্য রুমে শোব। (মুখ অন্যদিকে ঘুরিয়ে বলল। কিন্তু ওরসুরে কোনো মানা দেখতে পেলাম না।)
– দেখা যাক সেটা হয় কি না।
অকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়েআবার চারটি ঠোঁট একত্র করে ফেললাম। আর মনে মনে শুধু ভাবলাম, এই অদ্ভুত মেয়েটার সাথে থাকতে থাকতে অকে বাস্তবে নিজের অজান্তেই অনেক বেশি ভালোবেসে ফেলেছি, যেটা আজ বুঝতে পারলাম। ওর এই মিষ্টি ভালোবাসা পাওয়ার জন্য রোজ সকালে উঠে বাথরুমে ঘুমাতে আমি রাজি আছি। টুথব্রাশ লুকিয়ে রাখার অপরাধে ঝাড়ি খেতেও রাজি আছি। শুধু প্রতিদিন ওর এই মিষ্টি ভালোবাসা পেতে চাই।পাব তো???