-এই যে মিসেস আমার নাস্তা কই??
-তোমার আজ নাস্তা নাই।।এবং বিকেলেও ভাত দিব না।।
-আমার অপরাধ??
-ঘুম থেকে দেরী করে উঠছ ৮টার জায়গায় ১০.৩০ মিনিটে।
-আজ অফিস বন্ধ আর তুমিও আমায় ডাকো নাই।।
-কি ডাকি নাই।।অনেক ডাকছি উল্টা আমারে তুমি চুল ধরে টান দিছো।
-বল কি আমি চুল ধরছিলাম এ হতেই পারে না।। আমি তো স্বপ্নে নিতুর চুল গুলা আদর করে ধরছিলাম।।।
-কি নিতু কে??আর তুমি অন্য মেয়েদের স্বপ্নে আদর কর তাই না।।।লুচ্চা কোথাকার।।
-এতে আমার দুষ কই,এই স্বপ্ন তো আর আমি ইচ্ছা করে দেখি নাই।
-সারা দিন অন্য মেয়েদের কথা ভাব আর রাত হলে তো স্বপ্নেই ওই গুলাই দেখবা।।আজ থেকে ৩দিন তোমারে খাবার দেয়া হবে না। আর আমার সাথেও ঘুমাতে পারবা না।।আমার সাথে ঘুমাবা আর অন্য মেয়েদের নিয়া স্বপ্ন দেখবা।।।বের হও।।।।
-বল কি বউ…একটা অপরাধের এত গুলান শাস্তি।। আমি হাই কোর্ট এ আপিল করব।।।
-লাভ নাই সুপ্রিম কোর্ট থেকে পারমিশন নেয়ে আছে।।।
-অকে আমি আর এই ৩দিন বাসায় আসুম না।।বাই..
-আইচ্ছা ভালো থেকো বাবু।।
রাগে গজ গজ করতে করতে বাসা থেকে বের হয়ে আসলাম এইটা তো বউ না যে ড্রাগন।।যেন আমি ওরে বিয়া করি নাই ওই আমারে বিয়া করতে।।বলে কিনা সুপ্রিম কোর্ট থেকে পারমিশন নেয়ে।।এই সুপ্রিম কোর্ট টা হল আমার আব্বু-আম্মু।।বিয়ার সময় মেয়ের বাবা জামাই কে বলত যে বাবা তুমি আমার মেয়েটারে দেখিয়া রাইখো।।
কিন্তু আমার উল্টা হইছে আমার আম্মু আমাকে বউ এর হাতে তুলে বলছে মা এই যে আমার পাগল পোলাটারে দেখে রেখো ওরে আজ থেকে মানুষ করার দায়িত্ব তোমার।।।বউ পাইয়া তো আম্মু-আব্বু সিরাম খুশি সব সময় বউ এর পাস দিবেন আর আমারে বাঁশ দিবে।। যদি জানতাম বউ এমন হবে তাহলে আর খাল কেটে ঘরে বউ থুক্কু কুমির আনতাম না।।।বাসা থেকে বের হইছি কিছুই খাই নাই এইদিকে ভূলে বাসায় মানিব্যাগ টা ও ফেলে এসেছি।। মিজাজ চরম ভাবে খারাপ খিদাও লাগছে প্রচুর।।শাওন হারামীরে ফোনদিয়া এনে হোটেলে ঢুকে চা-নাস্তা খেয়ে পেট টারে শান্তি করলাম কথায় বলে পেট ঠান্ডা তো দুনিয়া ঠান্ডা।।। হঠাৎ ফোন টা বেজে উঠল ওরে বাহ ড্রাগন ফোন দিছে…
-হ্যালো…
-কই তুমি??
-আমি জাহান্নামে…কেন আসবা নাকি??
-বাসায় আসো…
-আসতে পারব না।।।পারলে কিছু টাকা বিকাশ করিয়া দেও।।মানিব্যাগ টা বাসায় রেখে আসছি তো তাই।।।
-পারব না।।কিছু খাইছ..
-না খাই নাই টাকা থাকলে তো খামু(যদিও খাইছি)।।মানিব্যাগ তো বাসায়।।
-বাসায় চলে আসো।।
-আসব না।।।
-না আসলে এসো না।।ওই খানেই নিতুর কাছে থাকো।।
-আচ্ছা।।।
বলেই ফোন টা কেটে দিলাম আর বন্ধও করে দিলাম।।। সারা টা দিন এই সেই করে ঘুরে বেরালাম নিজেরে কেমন মুক্ত মুক্ত লাগছে।।দিন তো গেল কিন্তু রাতে কি হপে বাসায় তো যামু না বলছি এখন থাকুম কই।।শাওন এর বাসায় যাব সো শাওন এর বাসার দিক হাটা শুরু করলাম রাত ৮টা।।।শাওন রে ফোন দিয়া বললাম আসতাছি।। এমন সময় মনের মধ্যে একটা মোচড় দিল।।এই টাইমে রুপা আর আমি একসাথে বসে গল্প করতাম এবং একটা মগে কপি খেতাম অর্ধেক আমি আর বাকিটা ও।।।
মেয়েটা যতই ড্রাগন হাজার ব্যাস্ত এর মাঝেও ঠিকি হউক আমার খেয়াল রাখে।ঠিক টাইমে খাওয়া,নামাজ পরা এই সেই।।আজ যে কি হয়েছিল আল্লাহ জানেন।।ডিসিশন চেঞ্জ করে ফেললাম এখন বাসার দিকে হাটা শুরু করলাম।।আর মোবাইল টা ও অন করলাম ওরে বাহ আমার মোবাইলে দেখি ১০০০টাকা বিকাশে আসছে।। ৭টা মেসেজ রুপা দিছে সব কটিতেই বাসায় আসো বাসায় আসো।। বাসায় পৌঁছে রুমে যাব এমন সময় আম্মুর হাতের একটা থাপ্পড় খেলাম। কেন খাইলাম সেটা আর জিজ্ঞাস করলাম না আরেকটা খাওয়ার ভয়ে। গালে হাত দিয়া রুমের দিকে এগোচ্ছি এমন সময় ছোট বোন দেখি অগ্নি চোখে চেয়ে আছে।।বললাম
-কি হয়েছে….
-ভাবী সকালে থেকে এখনো কিছু খায় নাই।।
-কেন??
-মন চাচ্ছে তরে একটা থাপ্পড় মারি।।
বড় তাই মারলাম না।।ভাবি তরে ছাড়া কখনো খেয়েছে।। এই বার বুঝলাম আসল ঘটনা..রুমে গিয়া দেখি লাইট অফ বিষয় কি??লাইট জ্বালাম ওমা ড্রাগন দেখি কেঁদে কেঁদে চোখ ২টা ইয়া বড় আর লাল করছে।।সত্যি ড্রাগন হইয়া গেলনাকি।।। পাশে গিয়ে বসলাম..
-রুপা সরি।।
-কেঁদেই যাচ্ছে নো আন্স।।
-এই রুপা বললাম তো সরি।।।
-তুমি বাসা থেকে বের হয়ে গেলা কেন?? আমি না হয় রেগে বলছি তাই বলে চলে যাবা আর ফোন অফ রাখছিলা কেন??
-আসলে আমি অতটা বুঝি নাই।।
-জানো আমি কতটা কষ্ট পাইছি।।
-হুম সরি সুইটু,,আর এমন হবে না।।তুমি নাকি খাও নাই।।
-তোমাকে ছাড়া খেয়েছি কখনো(একটু রেগেই বলল)
-ও তাই তো।।।
-চল একসাথে দুজন খাই।।
-না আমি খাব না।।
-তাহলে আমার চলে যাই।।
-মেরে হাড্ডি ভেঙ্গে দিলে কি হবে।। সুপ্রিম কোর্ট থেকে কিন্তু পারমিশন আছে।।
-তাহলে চল…
এই বলে রুপার কপালে আলত করে একটা চুমু দিলাম।।ওরে মা ড্রাগন দেখি লজ্জা পেয়ে আমার বুকেই মুখ লুকিয়েছে।।।তাহলে আমি কি করুম তাই আমিও ড্রাগন কে আরেকটু শক্ত করে ধরলাম।।।
