ভালোবাসা

ভালোবাসা

এই বাবু একটু কাছে আসো না

–চুপ কর তো
–আহা আসোই না
–রোজ রোজ তোমার এই ন্যাকামোগুলো দেখতে না একদম ভাল্লাগে না আসিফ
–আহা ন্যাকামো বলছ কেন…??? এইগুলা তো ভালোবাসা
–ভালোবাসা না ছাই
–তোমাকে আজ কত্ত সুন্দর লাগছে জানো তো বাবু
–কোনো কিছুতেই এখন কাজ হবে না জনাব। উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তার টেবিলে আসেন
–সকাল সকাল এমন করবা
–তো কি করব শুনি…??? আজকে বন্ধের দিন। কই একটু আগে আগে উঠে বাজারে যাবা তা না শুধু পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছ
–বন্ধের দিন বাজারে যেতাম…..!! মাইরালা
–উফফফ তোমার সাথে কথায় পারব না।যাও তো উঠে ফ্রেশ হও
–না ফ্রেশ হব না।আগে কাছে আসো তারপর ফ্রেশ হতে যাব

–তুমি বসে থাকো তোমার কাছে আসা নিয়া। আমি গেলাম
–এই রাত্রি শুনো
–না শুনব না।আমি গেলাম
–রাত্রি……..

রাত্রি।উনি হচ্ছেন আমার বউ।দশটা না পাঁচটা না একটা মাত্র বউ আমার। দুপুরবেলা রাত্রি রান্নাঘরে রান্না করছিল। আম্মু আশেপাশে ছিল না তখন।এটাই তো একটা সুযোগ আমি আস্তে আস্তে রান্নাঘরে ঢুকে রাত্রিকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলাম।

–আউউউউউউউউউউউ রাত্রি আউ বলে জোরে এক চিল্লানী দিয়ে উঠল।সাথে সাথে হাতের মধ্যে থাকা আলুর পাতিলটা ফ্লোরে পড়ে গেল।রাত্রির চিল্লানী শুনে আমি রাত্রিকে ছেড়ে দিলাম

–এই তুমি…..!!!
–তুমি কি ভেবেছিলে অন্যকেউ……!!!
–আরে আমি ভয় পেয়ে গেছিলাম।
–বৌমা কি হয়েছে….??? চিল্লানী দিলা কেন…..??? কথাটা বলেই রান্নাঘরে আম্মুর প্রবেশ।

–বৌমা কি হয়েছে….???
–না আম্মু কিছু না।ওই যে রুমে বিড়াল ঢুকেছিল। রাত্রির চিল্লানী শুনে আমিও রুম থেকে চলে এসছি আপাতত একটা কিছু বলে আম্মুকে কাটিয়ে দিলাম।

–ওহহ আচ্ছা।বৌমা আমি কাপড়টা আলমারিতে রেখে রান্নাঘরে আসছি
–আচ্ছা আম্মা

আম্মু রান্নাঘর থেকে চলে গেলেন।এখন রান্নাঘরে শুধু আমি আর রাত্রি

–তো এখন কি হবে আপনার জনাবা….???
–কি হবে মানে….???
–আম্মু তো চলে গেছে।এখন……….
–চুপ।কাছে আসার চেষ্টা করলে খবর আছে
–কি খবর শুনি….???
–আম্মুকে ডাক দিব
–দাও ডাক।আমি কি ভয় পাই নাকি হুহহহ
–এই খবরদার কাছে আসবা না
–আসব………..
–নাহ বলছি না
–আসছি………
–আম্মুউউউউউউউ
–এই আম্মুকে ডাক দিও না ডাক দিও না
–আম্মুউউউউউউউ
–আচ্ছা আমি যাচ্ছি যাচ্ছি
–তাহলে যাও ভদ্র ছেলের মত নিজের রুমে যাও
–আচ্ছা আচ্ছা যাচ্ছি
–এই তো ভদ্র ছেলের মত কথা
–পরে এটার সুদে আসলে মিটিয়ে নিব
–আম্মুউউউউউউউ
–আরে বাবা যাচ্ছি তো

যাহ সালা নিজের বউও আমার সাথে চালাকি করে।কার কাছে গিয়া বলি এই দুঃখের কথা বিকেলবেলা…

–রাত্রিইইইইই
–কিইইইইইই
–চলো না ছাদে যাই
–এখন হঠাত কি মনে করে ছাদে যাবা….??
–নাহ এমনি।চলো না যাই।খুব ইচ্ছে করছে যেতে
–তোমার যে যখন তখন কি ইচ্ছে হয় না আল্লাহ….!!!
–আহা চলোই না
–আচ্ছা চলো

বিকেলবেলা ছাদের পরিবেশটা আসলেই খুব সুন্দর।খুব সুন্দর ঠান্ডা বাতাস বইছে বাইরে। বেশ ভালোই লাগছে। রাত্রি আর আমি পাশাপাশি দাঁড়িয়ে ছিলাম।আমি হঠাতই রাত্রির হাতটা ধরে বসলাম।হাত ধরার পর রাত্রি আমার দিকে একটু তাকালো।তার ঠোঁটের কোণায় যে এক চিলতে হাসি ফুটে উঠেছে সেটা আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছিলাম।

–রাত্রি
–হুম
–ইচ্ছে করছে তোমাকে নিয়ে ওই দূর আকাশে
পাখির মত ডানা মেলে উড়ি
–মনে রং লাগছে নাকি….???
–মনে আবার রং লাগে কিভাবে…???
–না তোমার কথা শুনে মনে হচ্ছে আজকে সত্যিই তোমার মনে রং লেগেছে
–পাশে যদি পছন্দের মানুষটা থাকে তাহলে তো সবার মনেই রং লাগবে।তাই না…??
–কচু
–রাত্রিইইইই
–কিইইইইই
–এত্তগুলা ভালোবাসি
–কাকে….???
–পাশের বাড়ির ফারিয়াকে
–কিইইইইই বললা….???
–না মানে তোমাকে
–অন্য কারো দিকে তাকালে একেবারে খুন করে দিব
–পরে তো জেলে যাবা
–জেলে গেলে যাব। সমস্যা নেই।মামা পুলিশ। ছাড়িয়ে নিয়ে আসবে হাহাহা
–হাহাহা….

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত