ঝগড়ার পর প্রেম

ঝগড়ার পর প্রেম

-এসএসসি পরীক্ষার শেষ দিন। সকল বন্ধরা মিলে বাসের মধ্যে আড্ডা দিচ্ছিলাম। আমাদের মাঝে যে হারামি বন্ধুটা আছে ফাহাদ ও শুধু গার্লস স্কুলের মেয়েদের দিকে লক্ষ্য রাখতেছে। আমি ব্যাপার টা খেয়াল করলাম।
– বললাম কিরে ওদিকে কি দেখিস??(আমি)
– কই কিছু নাতো(ভ্যাবাচেকা খেয়ে)!!(ফাহাদ)
– হুম, বুঝি বুঝি। (আমি)
– কি বুজলি তুই? (ফাহাদ)
– বুঝছি আরকি তোর মনে কিছু একটা চলছে, তো বল কোনটা & কোনো হেল্প লাগবে কিনা??(আমি)
– দেখ, তুই কিন্তু কাউকে কিছু বলিস না। এখানে একজন কে ভালো লেগেছে❤(ফাহাদ)
– বলিস কি? চল কথা বলে আসি( আমি)
– মানে,,,!!!!(ফাহাদ)
– হুম, ঠিকই বলেছি।(আমি)
– যদি কোনো সিনক্রিয়েট করে(ফাহাদ)
– থুর, আমি আছি না(আমি)
– চল, তুই সব সামলে নিবি। আর যদি কিছু হয় তোর দোষ বলে দিলাম( ফাহাদ)
– তুই ভয় পাসনা তো, আমি সব করবো, তুই খালি পাশে থাকবি(আমি)
– ওকে চল(ভয়ে ভয়ে)। ( ফাহাদ)
– বাস থেকে নেমে মেয়েটির কাছে গেলাম দেখলাম আরো কয়েকজন ফ্রেন্ড ও আছে। আমি মেয়েটির কাছে গিয়ে,,,
– এইযে নীল হিজাব(আমি)
মেয়েটি আমার দিকে অগ্নি চোখে তাকিয়ে বললো কি বললেন আপনি।
– দেখুন রাগ করবেন না, আসলে আপনার নাম জানিনাতো তাই।( আমি)
– ওহ, আচ্ছা। ( মেয়েটি)
পাশ থেকে কে যেন বলে উঠলো নাম জেনে কি করবেন? তাকিয়ে তো আমি নিজেই ফিদা, তবুও নিজেকে কন্ট্রোল করে,,
– হ্যালো এলাচি,, আপনাকে কিছু বলিনি, আপনি মাঝে আসছেন কেন??(আমি)
– কিহ,, আমি এলাচি?? আমার নাম তানজিনা।
– আমি আপনার নাম জানতে আসিনি, এসেছি ওর নসম জানতে( আমি)
– ভাইয়া আমার নাম সুমনা। (বন্ধুর ক্রাশ)
– ওয়াও, নাইস নেইম( আমি)
– থ্যাঙ্কস। (সুমনা)
– দেখো, আমার ফ্রেন্ডএর তোমাকে ভালো লেগেছে,,,,(আমি)
– ( কিছুটা অবাক হয়ে) মানে!!!!(সুমনা)
– অবাক হওয়ার কিছু নেই,,, আমার বন্ধু অনেক ভালো, তোমার অনেক খেয়াল রাখবে। এখন মোবাইল নাম্বার দাও বা ফেবু আইডি দাও( আমি)
– কিন্তু,,,,, (সুমনা)
– কোনো কিন্তু নয়( আমি)
– অবশেষে ফোন নাম্বার নিয়ে বললাম আমার বন্ধুর নাম ফাহাদ। আর আসার সময় সুমনার ফ্রেন্ড কে বললাম এই যে এলাচি আপনার বন্ধুর কাছ থেকে কিছু শিখুন।(আমি)

– আমার দিকে অগ্নি চোখে তাকিয়ে,,,,,,,মারার জন্য হাত দেখাইছে(তানজিনা)
তারপর বাসে করে সোজা হোস্টেল এ। হোস্টেল থেকে বাড়ি। বাড়ি গিয়ে বাবা মায়ের সাথে ভালই দিন কাটছিল। আর ফাহাদের প্রেম তো জমে ক্ষীর।
– কিরে, হারামি গার্লফ্রেন্ড পাইয়া তো আমারে ভুলেই গেলি( আমি)
– নারে, ভুলি নাই। মনে আছে। তো তুই বাড়িতে কি করোচ?( ফাহাদ)
– এই আরকি কম্পিউটার কোর্স এ ভর্তি হলাম( আমি)
– ওহ,, আচ্ছা( ফাহাদ)
– তো তোর প্রেমের কি খবর,,?? কেমন চলে?( আমি)
– হুম, ভালোই চলে। কয়েকবার দেখাও করছি,,,ঘুরতেও গেছি(ফাহাদ)
– আসমান থেকে পরার মতো,,,, কি কস্ ( আমি)
– হুম, সত্যি ( ফাহাদ)
– রিলেশনের একমাসে,,,😱😱😱( আমি)

– হুম, তুই মনে হয় শকট খেলি( ফাহাদ)

– মামা তুই তো সেরা,,,,,,( আমি)
তারপর ফোন কেটে দিলাম। ২ মাস কম্পিউটার ক্লাস করতেছি। একদিন মোবাইলে কল আসলো। অচেনা নাম্বার,,,,,,
– হ্যালো,,,,,( আমি)
– কেমন আছো?? ( ওপাশ থেকে)
– ভালো। কিন্তু আপনি ক???( আমি)
– আমি কে তা জেনে কি করবেন,,?? এখোন বলেন কম্পিউটার কতটুকু শিখলেন( অচেনা)
– রীতিমতো অবাক হয়ে,,,, আপনি এত কিছু জানলেন কি করে?? ( আমি)
– জানার অনেক পথ আছে,,। এখন কোথায় আছো??(অচেনা)

– বাড়িতে থাকবো আর কি!!!( আমি)
– আচ্ছা তুমি এমন কেন??(অচেনা)
– কেমন,,???(আমি)
– আমি তোমাকে তুমি করে বলছি, আর তুমি আমাকে আপনি করে বলতেছো,,,!!!!( অচেনা)
– অচেনা কাউকে হঠাৎ করে তুমি বলা যায় নাকি??( আমি)
– যায়,,,,,,আজ থেকে তুমি আমাকে তুমি করে বলবা,ওকে??(অচেনা)
– পারবো না,,,,,,,আপনি ফোন রাখেন, আমার কাজ আছে।( আমি)
– আচ্ছা পরে কল দিও। (অচেনা)
আমি কলটা রেখে ভাবতে লাগলাম কে হতে পারে যে আমার সব খবর রাখতেছে!!
আমি ফাহাদের সাথে শেয়ার করার পর জানতে পারলাম ও হলো সেই এলাচি মানে তানজিনা। আমি তো ভাবতে লাগলাম যে ও আমাকে কল দিবে কেন??? ভাবতে ভাবতে আমার কম্পিউটার ক্লাস শেষ হয়ে গিয়েছিল। আমি বাড়ি গিয়ে খাওয়া শেষ করে দিলাম এক দিব্বি ঘুম। বিকালে ঘুম ভাঙলো ফোনের আওয়াজে,,, মেজাজটাই খারাপ হয়ে গেল। তারপরেও রিসিভ করলাম। রিসিভ করার সাথে সাথে ওপাশ থেকে,,,,,,,
– কি,, তুমি ফ্রী হও নাই(অচেনা)
– ওহ, এলাচি। আপনি আমাকে ফোন দিয়েছেন কেন???( আমি)
– যাক, তাহলে তোমার এলাচিকে চিনতে পেরেছো!( তানজিনা)
– ওয়েট, তোমার এলাচি মানে???!!!( আমি)
– হুম, তোমার এলাচি,,,,( তানজিনা)
– সরি, কি বলতেছেন এই সব??( আমি)
– আমি ঠিকই বলছি তোমাকে আমি ভালবাসি, তুমিও আমাকে ভালবাসবা, অন্য কোনো মেয়ের দিকে তাকাবা না বলে দিলাম( তানজিনা)
– পাগল নাকি,,,,,মাথা ঠিক আছে, আমি আপনাকে ভালোবাসতে যাবো কোন দুখে??
আমার কি কোনো কাজ নাই নাকি,,,,!!( আমি)
– কে বলেছে কাজ নেই,,?? আমাকে ভালোবাসা দিবা এটাই কাজ( তানজিনা)
– পারবো না, আমি ফোন রাখলাম(আমি)
আমার মাথা কাজ করছে না। কি বলে মেয়েটা? পাগল হয়ে গেল নাকি,,এসব ভাবতেছি ঠিক তখনই মোবাইল এ মেসেজ আসলো চেক করে দেখি তানজিনার,,,,
দেখ তোমাকে আমি সত্যি ই ভালোবাসি,,,, বিশ্বাস কর। তোমাকে ছাড়া কিছু কল্পনা করতে পারি না। আরো কত কি লিখলো,,,,,,
এভাবেই ফোনালাপ চলতে থাকে আমাদের মাঝে তাও আবার কথা কাটাকাটি। কোনোভাবেই বোঝাতে পারি না ওকে আমি ভালোবাসি না। তবুও নাছোড়বান্দা। আর আমিও কেমন ওর প্রতি দুর্বল হয়ে যাচ্ছি। একদিন কথা না বললে হয় কি যানি হারিয়ে ফেলতেছি। অনেক ভাবার পর বুঝতে পারলাম আমিও ওকে ভালো বেসে ফেলেছি ❤ তাই আর দেরি না করে ওকে ফোন দিলাম। কিন্তু ওর ফোন বন্ধ,, মনে হলো বুকের ভিতরটা মুচড়ে উঠেছে। এক সপ্তাহ হয়ে গেল হাজার ফোন দিয়েছি কিন্তু বন্ধ ছাড়া আর কিছুই না। একদিন বিকাল এ দেখি তানজিনার ফোন সাথে সাথে রিসিভ করেই বলা শুরু করলাম,,,,
কোথায় ছিলে এই ৭ দিন, মোবাইল বন্ধ কেন,,তুমি জানোনা তোমার সাথে কথা না বললে আমি অস্থির হয়ে যাই,,কথা গুলো একনাগাড়ে বললাম।
– এতটাই টেনশন আর এতটাই মিস করছিলে??? (তানজিনা)
– তা জানিনা, আগে বল কোথায় ছিলে??(আমি)
– মোবাইল নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। (তানজিনা)
– কারো ফোন দিয়ে একটা মেসেজ ও করতে পারলে না!!(আমি)
– তোমার নাম্বার মুখস্থ ছিলনা,,তাই দিতে পারিনি( তানজিনা)
– এটা আমি বিশ্বাস করি না,,ভালোবাসার মানুষের নাম্বার মনে নাই এটা মানা যায় না( আমি)
– তুমি কেন এত অস্থির ছিলা( তানজিনা)
– কারন তোমাকে ছাড়া আমার ভালো লাগে না, আমিও তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবো না,,,আই লাভ ইউ( আমি)
– আমিও পারবো না তোমাকে ছাড়া বাঁচতে। আই লাভ ইউ ২.
এভাবেই শুরু হলো আমাদের ভালোবাসা,,,,,,,,,,,,,,,

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত