—কিরে তুই সিগেরট খাস.?(সিমি) (কিছুটা অবাক হয়ে সিগেরেট দ্রুতু ফেলাম।)
—তুই এখানে এসময়.?(আমি)
— কেনো আসতে পারি বুঝি.!
— না আসলে তা না।
— তাহলে কি.?
—- বাদ দে।সবে তো আসলি এখনি আমার সাথে ঝগড়া করতে ইচ্ছে করছে.?
— হারামি তোর কপালে মাইর আছে।আমাকে আনতে গেলি না কেনো.?
—- ভালো লাগে নাই তাই।
— আমি বুজি তোকে বিরক্ত করি.!(সিমি)
— তুই ছাড়া আমি অসম্পূর্ণ।
—- হইছে আর পাম দেয়া লাগবে না।
— তা তোর লন্ডনের বয়ফ্রেন্ডদের খবর কি.?
— আরে কেউ সামলতেই পারে নাই।আবার বয়ফ্রেন্ড।একবারতো একজনের মাথাই ফাটাইফেলছিলাম।পরে আবার সরিও বলছিলাম।তা তুই কি করছিস আজকাল.?
— বসে বসে আব্বু-আম্মুর অন্ন ধ্বংস করতাছি।
— কি বলছিস ঢাকা ভার্সিটিতে পড়েওচাকরি পাচ্ছিস না.?
— চাকরি পাচ্ছে না, না ছাই। বাসায় পর্যন্ত আসছিলো চাকরির প্রস্তাব নিয়ে।কিন্তু যেইসেই।(হঠাৎ আম্মু পিছন থেকে)
— এরকম করছিস কেনো রে.?(সিমি)
— পড়ে একসময় বলবো
— তুই আয় মা,তোর আম্মু তোকে খুজছে।
— আসছি।
সিমি আমার দিকে তাকিয়ে থেকে চলে যায়।আজই লন্ডন থেকে এসেছে সিমি।ওর সাথে পরিচয়টা ছোট বেলা থেকে।খুব ছোট থাকতে।ওরা আমাদের এইখানে ভাড়াটিয়া হিসেবে আসে।আর একসাথে দুজন একই স্কুলেও ভর্তি হই।এসএস সি তে দুজনেই গুল্ডেন পাই।তারপর সিমিতার লন্ডনের আন্টির বাসায় চলে যায়।আর বাংলাদেশেই।ভাগ্য সহায় ছিলো ঢাকাকলেজে চান্স পেয়ে যাই।তারপর ভাগ্যের কারণে আরো একবার ঢাকা ভার্সিটি।যাই যখন বাসায় গেলাম,তখন দড়জা দিয়ে ঢুকার সময় আম্মুকে বলতে শুনলাম।
— সিমি তুই আমার ছেলেটার দায়িত্বটা নিবি.?(আম্মু) আন্টিও পাশেই বসেছিলো।কিছু বলছিলো নাবরং মুখের মধ্যে একটা হাসি হাসি ভাব ছিলো।আমাকে ঢুকতে দেখে তারা কথারপ্রসঙ্গ পাল্টিয়ে ফেল্লো।আমিও কিছু না বলে রুমে চলে গেলাম। রাত দশটার দিকে আম্মু এসে খেে ডাকলো।আমি যখন ড্রয়িংরুম এ আসলাম তখন আম্মু পাশের ফ্লাটে গেলো সিমিকে ডেকে আনার জন্য। কিছুক্ষণ পর দুজনে একসাথে আসলো।সিমি আমারপাশেই বসলো।আমি চুপচাপ খেয়ে রুমে চলেআসলাম।কিছুক্ষণ ছাদে আসলাম।সিগেরেট টা ধরানোর সাথে সাথে সিমি আসলো।
— কিরে,আবার.?(সিমি)
— এবার আর ফেলতে পারবো না.!(আমি)
— হাসান
— কেনো এমন করছিস.?
— কেনো তুই জানিস না.!
— দায়িত্বটা ছেড়ে দে না।
— যে দায়িত্বটা ছোটবেলা থেকে নেয়ার চেষ্টা করছি সেটা ছেড়ে দিতে বলছিস!
— হুম!
— কেনো.?
— আমি আর আগের মতো নেই।কোনো এক অন্ধকারে হারিয়ে গেছি।বুজছিস না কেনো!
— আমি যাবার পর কি কি ঘটেছে.?
— অনেক কিছু।সব পাল্টে গেছে।আমিও।
— বুজলাম না.!(সিমি)
— কেনো বুজতে চাচ্ছিস.?
— অধিকার আছে তাই।
— আমিতো তোকে এই অধিকার দেই নি।
—কিছু কিছু ক্ষেত্রে কেড়ে নিতে হয়!
— (আমি কিছু না বলে আরেকটা সিগেরেট ধরালাম)
— কয়টা খাস দিনে.?
— এক প্যাকেটের মতো।
— কই পাস এতো টাকা.?
— জোগাড় হয়ে যায় কোনো না কোনো ভাবে।
— আঙ্কেল আন্টি জানে.?
— প্রথমে জানতো না এখন ঠোট দেখে অনুমান করে নেয়।
— একটা কথা বলবো.?(সিমি)
— পার্মিশন নেস কবে থেকে.?
— সব কিছু খুলে বল না আমায়!
— শুনে কি করবি।
— তোর কষ্টে ভাগ বসাবো।
—কেনো মায়া বাড়াচ্ছিস.?
— তুই বল আমি শুনছি।
— তুই এমন ক্যান.?(আমি)
— আমি এমনি তুই বল।(সিমি)
— যখন তুই চলে যাস তখন হঠাৎ একা অনুভব করতে থাকি নিজেকে।কিন্তু কোনো কিছুতেই একাকিত্বটাকে কাটাতে পারতাম না। বন্ধুদের বেশি সময় দিতে লাগলাম কিন্ত পরওকোনো কিছুতো একটা ঠিকই মিস করতাম। নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে ছিলাম সবার কাছ থেকে।কলেজে একটা মেয়ের সাথে পরিচয় হয়। নাম ছিলো রিয়া।তখন ওর সাথে সময় গুলোঅনেক ভালো কাটতে থাকে।ইন্টার ফাস্টইয়ার পর্যন্ত ভালো কাটছিলো দিনগুলো।
হঠাৎ একদিন আমাকে অবাক করে দিয়ে রিয়া আমাকে প্রপোজ করে বসে।জীবন প্রথম কেউপ্রপোজ করছিলো তাই এক্সাইটেড ছিলাম ছিলাম।আবেগেপ্রবন হয়ে সাথে সাথে হ্যা বলে দেই।কেননা ওর সাথে থাকলে আমি খুশি থাকতাম।সময় যতো যাচ্ছিলো ভালোবাসা তত বাড়ছিলো।ভালোবাসা যতো বাড়ছিলো শাসন ও সন্দেহও ঠিক ততটাই বাড়তে থাকে।আমাকে বলেছিলো সব ধরনের মেয়ে বন্ধুদের থেকে দূরে থাকতে। আমিও তাই করছিলাম। প্রথম ভালোবাসা বলে কথা।কিন্তু কখনো ভাবি নি যে ভালোবাসাটা শুধু কলেজ লাইফেই সিমাব্ধ ছিলো।পরীক্ষাও খুব ভালোদিয়েছিলাম।কিন্তু পরীক্ষার পর রিয়ার সাথে যোগাযোগ কম হতে থাকে। সেই একাকিত্ববোধটা বাড়তে থাকে।একদিন রিয়া আমাকে দেখা করতে বলে।খুব খুসি ছিলাম।যতটা খুশি নিয়ে ওর সাথে দেখা করতে যাই তার থেকে হাজার গুন কষ্ট নিয়ে বাসায় ফিরে আসি।
— মানে.!(সিমি)
— যা ভাবছিস তাই।ব্রেকআপ করে দিয়েছিলো।
কারণটা অজানা ছিলো। অনেকবার জানার চেষ্টা করছিলাম কারণটা। কিন্তু বলে নাই। অনেক কষ্টে সেদিনটা কাটে।আবার নিজেকে সবার থেকে গুটিয়ে নিয়েছিলাম। কিছুদিন পর রেজাল্ট দেয়। ভালো হয় রেজাল্ট কিভাবে যেনো ঢাকা ভার্সিটিতে টিকে যাই। দিনগুলো কাটতে থাকে কোনোরকমে কিন্তু রাত গুলো!
তারপর একদিন দোকান থেকে তিন প্যাকেটসিগেরেট আনি। প্রথমবার অনেক সংকোচের সাথে সিগেরেট ধরাই। প্রথম টানটা দেয়ার পর চোখ থেকে বের হয়ে এসেছিলো।প্রথমটা শেষ হবার পর আবার ধরাই। সেদিন সারারাত বারান্দায় বসে সিগেরেট খাই।তিন প্যাকেটই শেষ হয়ে যায়।এর পর ঘুময়ে সন্ধা ওঠেছিলাম।তারপর দু দিন মাথা টা ঝিম ঝিম করছিলো। তারপর থেকে যখনই রিয়ার কথা মনে হতো তখনই সিগেরেট খেতাম।কিন্তু ভার্সিটিতে ওঠার পর দিয়া নামের আরেকটা মেয়ে এসে প্রপোজ করে।সেইম বেচেই ছিলাম।প্রথমে না করে দেই।তারপর ও অনেক চেষ্টা করে আমাকে মানাতে কিন্তু সক্ষম হয় নি।তারপর একদিন রিয়া আমার সাথে দেখা করতে আসে।ফিরে আসতে চায়।
—- তুই কি বলেছিলি.?
— হাসবি শুনলে,থাক বলার দরকার নাই।
— আরে বল না এরকম করছিস কেনো.?
সেদিন ক্যাম্পাসে বসে ছিলাম।হঠাৎ কারো ছায়া দেখে বিরক্তি নিয়ে ওপরে তাকালাম। ভেবেছিলাম দিয়া হবে।কিন্তু রিয়াকে দেখলাম।যতটা অবাক হয়েছিলাম তার থেকেও বেশি খুশি হয়েছিলাম ওকে দেখে।রিয়া পাশে বসলো।
—তুমি! এখানে!
— চিনতে পেরেছো.?
—- কখনো ভূলারই চেষ্টা করিনি.!
–এখনো ভালোবাস আমায়.?(রিয়া)
— না।
— আবার নতুন করে শুরু করতে পারি না।
— ভালোবাসা কোনো ছেলে খেলা নয়।যে যখন মন চাইবে চলে যাবে যখন মন চাইবে আসবে।
— ও তোমার কাধে মাথা রাখতে দিবে একবার.? (রিয়া)
— যখন ভালোবেসেছিলে তখন তো কখনো বলোনি.?
— তখন তোমাকে বুজতে পারনি। রিয়া কিছু না বলেই আমার কাধে মাথা রাখে।
— জানো হাসান তোমাদের মতো ছেলে লাখে একজন, যারা পায় তারা খুব ভাগ্যবান হয়।
আর যারা পেয়েও হারায় তারা হয়তোবা আমার মতোই হয়। আমি কিছু বলিনি পাথর হয়ে গিয়েছিলাম সেদিন।কিছুক্ষণ পর রিয়া চলে যায়। রিয়া চলে যাবার কিছুক্ষণ পরেই দিয় আসে। সেদিন চুপচাপ অনেকক্ষণ পাশে বসেছিলো। আমি কিছু বলিনি।হঠাৎ আমাকে জড়িয়ে ধরে কেদে দেয়।আমি তারপরও ওকে কিছু বলতে পারি নি।ওই মুহুর্তে আমাকে সান্তনা দেয়ার জন্য ওকেই পাশে পেয়েছিলাম।আমি ওইদিনইদিয়াকে সব কিছু বলে দিয়েছিলাম।দিয়াসেদিন আমাকে যথাসম্ভব বুজানোর চেষ্টা করেছিলো।কি বলে ছিলো মনে নেই তবে শেষে বলেছিলো…
— আমাকে একবার সুযোগ না তোমাকে ভালোবাসতে কথা দিচ্ছি কখনো ছেড়ে যাবো না।আমি ওকে কখনো ভালোবাসি বলিনি।কিন্তুতারপরও ও আমাকে নিসার্থভাবে ভালো বেসে যায়।আমি ওকে প্রচুর ভালোবাসতাম কিন্তু কখনো ওকে বুজতে দেই নি।প্রকাশ করতে পারি কখনো।
হঠাৎ একদিন ওর এক্সসিডেন্ট এর খবর পেয়ে হাসপাতালে যাই।অনেক কষ্ট হইছিলো ওর খবরটা শোনে।আমার সাথে আমার এক ফ্রেন্ড গিয়েছিলো।ওই আমাকে বলেছিলো ভার্সিটি আসার সময় দিয়ার এক্সসিডেন্ট হয়। আমরা যখন হাসপাতালে যাই তখন ও আইসিও ছিলো।আমি ওকে বাহির থেকে দাড়িয়ে দেখছিলাম।ভিতরে যাওয়ার পার্মিশন পাই। তারপর দিন আইসিও থেকে বাহির করা হয়। প্রথমে ওর পরিবারের লোকেরা দেখা করতে যায়। তারপর আমরা।ডক্টর ওর আব্বু-আম্মুর সাথে কথা বলছিলো আমরা যখন ভিতরে যাই।ভিতরে ঢুকতেই রীতিমতো শক্ড খেলাম।মাথা ব্যান্ডেজ করা, মুখে অক্সিজেন মাস্ক লাগানো।আমরা কিছুক্ষণ বসে ছিলাম ওর পাশে চুপচাপ।মুখ দিয়ে কিচ্ছু বের হচ্ছিলো না।শুধু চোখ দিয়ে পানি পড়ছিলো।হঠাৎ দিয়া মাস্ক খুলে সানভিকে (আমার বন্ধু) বাইরে যেতে বলে।
— আরে মাস্ক খুলছো কেন.?(আমি)
— কিচ্ছু হবে না।(শান্ত গলায়) সানভি ততক্ষণে ফোনের বাহানায় বাইরে চলে গিয়েছে।
— মাস্ক টা লাগাও প্লিজ এরকম পাগ্লামি কেনো করছো.?
— আমিতো পাগলি ই ছিলাম,তা না কিতোমাকে এতো ভালো বাসতাম।
— (আমি কিছু বলতে পারলাম না।শুধু ওর দিকে তকিয়ে ছিলাম।) দিয়া কিছুটা শ্বাস নিয়ে আবার বলল
— আমার হাতে দু ঘন্টা সময় ছিলো।(দিয়া)
— মানে!(আমি)
— ডক্টর বলল।
— তুমি হাসছো কেনো
—- তুমিতো আমাকে ভালোবাস না তাহলে এরকম অস্থির হচ্ছো কেনো.?
— এখন এসব কথা বলার সময় নয় তুমি মাস্ক টা পড়।
— একবার বলো না আমাকে ভালোবাস
— কেনো এরকম করছো.!
— একবার শুনতে চাই,সময় নেই বেশি,যদি আর কখনো না শুনার সুযোগ না পাই।
— প্লিজ এভাবে বলো না
—একবার বলো না প্লিজ।
—- খুব ভালোবাসি তোমায়,যতটা ভালোবাসলে তোমার জীবনটা কাটয়ে দিতে পারবো অনায়াসে।
— একটু হাতটা ধরবে খুব শক্ত করে?
—- প্লিজ আজ তো না করো না।
— আমি একটু ঝুকে ওর হাতটা খুব শক্ত করে ধরি। হঠাৎ ও কেদে দেয়।চোখ অনবরত পানি পড়তে থাকে ওর।
— আমি বাচতে চাই.
ওই মুহুর্তে আমার কাছে ওকে বাচানোর একটা অপশন থাকলে আমি নিজের বিনিময়ে হলেও ওকে বাচাতাম।আমি ওকে খুব জোড়ে জড়িয়ে ধরে কেদে দেই।
— তুমি কেনো কাদছো।আমি আমার কথাটা রাখতে পারি নি তাই না।বলেছিলাম কখনো ছেড়ে যাবো না কিন্তু দেখ তোমাকে আবার মাঝ রাস্তায় রেখে চলে যাচ্ছি। ভূল বুজবে নাতো আমায়!
— আমি তখনো কাদছিলাম।কিছু বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছিলাম।
— আমি জানি আমি চলে যাওয়ার পর তুমি আবার সিগেরেট খাবা
একা হয়ে পড়বা,ভেঙ্গে পড়বা।তখন আমাকে সব দোষ দিয়ে দিয়ো,তাহলে তুমি ভালো থাকবা।সব সময় মনে করবা আমি বেইমান ছিলাম তোমাকে ঠকিয়েছি।তাহলে দেখবা খুব ভালো থাকবা। আর কখনো ভূলো না আমায়,আমি তোমার মাঝেবেচে থাকতে চাই।মনের এককোন একটু জায়গা দিয়ো আমায়। আরে কাদছো কেনো তুমি, দেখবা একদিন আমার থেকেও অনেক ভালো একটা মেয়ে পাবা তুমি।
— আমার শুধু তোমাকেই চাই!(আমি)
— কেনো শেষ মুহুর্তে মায়া বাড়াচ্ছো!
বিয়ে করে নিয়ো তোমার মনের মতো একটা মেয়েকে, যে তোমাকে তোমার থেকেও ভালো বুঝবে।জীবন কখনো থেমে থাকে না। আমার মরে যাওয়াতেও থামবে না।প্লিজ জীবনটা আবার গড়ে নিয়ো। হাসান আরেকবার বলবে ভালোবাসি।খুব শুনতে ইচ্ছে করছে!
— ভালোবাসি তোমায়,খুব খুব খুব ভালোবাসি।প্লিজ ছেড়ে চলে যেও না। আমি বাচবো না তোমায় ছাড়া।
— বাচতে হবে তোমায়, আমিতো তোমার মধ্যেই বাচতে চাই,তাহলে কেনো এরকম বলছো….
— দিয়া! দিয়া!
খুব জোড়ে একটা চিৎকার দিলাম। ওকে তখনো জড়িয়ে ধরে ছিলাম।প্রথমে সানভি এসে আমাকে ঠিক করলো।তারপর সবাই আসলো। আর দেখতে দেখতে এক সময় ওকে মাটিও দেয়া হলো।সব কিছু দেখতে হয়েছিলো চোখের সামনে।নিজেকে কিভাবে সামলিয়ে ছিলাম তাও জানি না।এখনো অদ্ভুত লাগে কিভাবে পেড়েছিলাম সেদিন। তারপর থেকে সিগেরেট এর মাত্রাটা বেড়ে যায়।
— সত্যিই তুই লাখে নস কোটিতে একজন।আর দিয়ার তুলনায় আমার আমার ভালোবাসাটা কিছুই না।তবে স্মৃতি নিয়ে বেচে থাকা খুব কঠিন যদি সেটা কারো সাথে সেয়ার না করতে পারিস।একজনকে খুজে নিস,যার সাথে সব কিছু সেয়ার করতে পারবি।বায় কাল দেখা হবে।আর দুই প্যাকেট খেয়ে ফেলছিস আর খাস না।দিয়া তোর মধ্যে বাচতে চেয়েছিলো। সিমি চলে যায়।তারপর দিন আম্মু হার্ট-অ্যাটাক করে।এই নিয়ে দুইবার।ডক্টর বলছে টেনশন থেকে এর আগেরও এটাই বলছিলো।
—আম্মু তোমার এতো টেনশন কিসের.?সব কিছুইতো ঠিক আছে,তাহলে টেনশন কিসের জন্য।
— তুই বিয়ে তাহলেই সন ঠিক হয়ে যাবে।
— তুমি আমার বিয়ের পিছনে কেনো পড়ছো!
— ওই কিরে তুই আন্টির সাথে এরকম করছিস কেনো.?যা বাইরে যা। আমি কিছু না বলে বাহিরে চলে আসলাম। কিছুক্ষণ পর সিমি আসলো…
— আন্টির সাথে এরকম ব্যাবহার কেনো করছিস.?
— কি করবো বল,আম্মুর কিছু হয়ে গেলে!
— তাহলে আন্টির কথা মেনে নে!
— তাহলে দিয়া!
—- এমন কাউকে বিয়ে কর যে দিয়াকেও মেনে নিবে।
— কিন্তু দিয়া যায়গা কাউকে দিতে পারবো না।
— তাহলে দিয়ার যায়গাটা বাদ দিয়ে মনের এককোনে কাউকে যায়গা দিস।
—পৃথিবীর কোনো মেয়ে মানবে না এটা।
— খুজে তো দেখ। আমার কয়েকটা বান্ধুবি আছে কথা বলবি ওদের সাথে!
—- কি করে পারিস এসব!
— মানে!(সিমি)
— আমাকে ভালোবেসেও বন্ধুর মতো ব্যাবহার করছিস,বান্ধুবির সাথে কথা বলতে বলছিস!
— পরিস্থিতি সব কিছু শিখিয়ে দেয়।বাদ দে এখন বল ওদের সাথে কথা বলবি!
— না থাক,তোর থেকে ভালো কেউ বুজবে না,বিয়ে করবি আমায়!
— হুম তবে একটা শর্ত আছে,
কখনে সিগেরেট খেতে পারবি না।আমার জন্যে না হলেও দিয়ার জন্য! দেখতে দেখতে বিয়েটা হয়ে যায়।সিমি কখনো আমার কাছে কোনো প্রকার অধিকারের দাবি নিয়ে আসে নি।একটা বেশ ভালো রকমের চাকরিও পেয়ে যাই।একদিন…
— কিরে তুই এতো পড়াশোনা করেও ঘুরে বসে আছিস কেনো!
— ভালোবাসা আর পরিবারের কাছে সব তুচ্ছ।
আমি চাই না চাকরি করে মা বাবাকে সময় কম দিতে,তোকে সময় কম দিতে।আর এমনওতো না যে ঘরে খাবার নেই।আর তুই যদি বলিস তুই চাকরি করবি না আমার করতে হবে তাহলে করতে পারি। আমি সেদিনও কিছু বলে পারিনি।আমার জন্য সব স্বপ্ন ছেড়ে দিয়েছিলো মেয়েটা আর আমি অবহেলা ছাড়া আর কিছুই দিতে পারি নি। সেদিনও খুব জোড়ে জড়িয়ে ধরেছিলাম সিমিকে। বিয়ের তিন বছর পর আমাদের একটা মেয়ে হয়। সিমি আমাকে বলেছিলো মেয়ে হবে আর নাম দিয়া রাখবে।জীবনটা সত্যিই কারো জন্য থেমে থাকে না।কিন্তু স্মৃতির পাতাগুলো উল্টিয়ে দেখলে মনে হয় জীবনটা যদি থেমে থাকতো তাহলেই হয়তো কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভালো হতো।
{{সমাপ্ত}}