হৃদয় ঠিক এই মুহুর্তে নীলার সামনে বসে আছে।দুজনেই চুপচাপ, কেউ কোনো কথা বলছেনা।
হয়তো কেউ কাউকে কিছু বলার অপেক্ষায়…কেউ কারো থেকে কিছু শোনার অপেক্ষায়।
মনে হাজারো প্রশ্ন, হাজারো কথা জমা হয়ে আছে কিন্তু কেউই মুখ ফুটে জিজ্ঞেস করতে পারছেনা।
অথচ একটা সময় ছিলো যখন কারো কথা শেষ ই হতে চাইতনা,আর এখন কিছু বলার আগেও দু’তিনবার ভাবতে হচ্ছে।কি অদ্ভুত ব্যাপার তাইনা..?
.
.নীলা একটু পর পর হৃদয়ের মুখের দিকে তাকাচ্ছে, ওর কন্ঠ থেকে অধীর আগ্রহে কিছু শোনার অপেক্ষায়।আর হৃদয়..?
মাথাটা নিচু করে টেবিলে রাখা পেপার মনোযোগ সহকারে পড়ছে।এমন নয় যে ও কিছু বুঝতে পারছেনা।
মেয়েটা যে ওর দিকে কিছুক্ষন পর পর তাকাচ্ছে তা হৃদয় ঠিক ই বুঝতে পেরেছে… তারপরও মাথা টা নিচু করে পেপার পড়ার মিথ্যে অভিনয় করে যাচ্ছে।
কি লাভ আগ বাড়িয়ে কথা বলার?
.
এভাবে বেশ কিছু সময় চুপচাপ কোনো কথা না বলেই কেটে গেলো
.
.এতো অপেক্ষা, এতো নিরবতা আর সহ্য করতে পারছিনা (কল্পনা করে) মুখের কাছে হাতটা নিয়ে এসে নীলা কাশি দেয়ার মতো একটা আওয়াজ করলো ।
আওয়াজটা শুনে হৃদয় মেয়েটার মুখের দিকে একবার তাকালো তারপর আবার অন্যদিকে চোখ সরিয়ে নিলো।
কি দরকার আবার সেই চোখের মায়ায় পড়ার..?পুরনো কস্টগুলো আবার অনুভব করার?
.
মেয়েটা খুব আশা করেছিলো এতোদিন পর আমাদের দেখা… হৃদয় হয়তো প্রথমে কথা বলাটা চালু করবে!
আর সেজন্যে নীলা নিজেও এতক্ষণ চুপচাপ বসে ছিলো।কিন্তু না, এরকম কিছুই হলোনা!..
ভাবতেই অবাক লাগছে, সব সময় আগ বাড়িয়ে কথা বলা হৃদয় আজ আমার সাথে কথা বলছেনা, চুপচাপ বসে আছে অন্যমনস্ক হয়ে।..
আচ্ছা!ওর ব্যবহারে আমার এত খারাপ লাগছে কেন?আমার তো খারাপ লাগার কথা নয়!
কস্ট দিয়েছি তো আমি তবে নিজে কেন কস্ট পাচ্ছি ওর ব্যবহারে?
এই মানুষ টার পালটে যাওয়ার কারণ তো একমাত্র শুধুই আমি!
.
অত:পর সব নীরবতার অবসান ঘটিয়ে মেয়েটাই সবার আগে মুখ ফুটে কথা বলা শুরু করলো……
–অনেকদিন পর আজ আমাদের দেখা তাইনা?
……………..(হৃদয় চুপ)………….
–কতদিন পর হতে পারে আন্দাজ করতে পারছো?
…………..(হৃদয় কোনো কথা বলছেনা)….
পুরনো সেই ঘটনাগুলো হৃদয়ের মনে এখনো গেথে আছে, ব্যপারটা বুঝতে পেরে নীলা প্রসঙ্গ বদলালো..
–তো!ভালোই আছো তাহলে..?
–হুম,আগের থেকে অন্তত ভালো আছি।
–সব কিছু ঠিক ঠাক?
–হ্যা! সব ঠিক ঠাক।
–বিয়ে করেছো?
–তোমার বিয়ের দেড় মাস পড়েই করেছি ।
–ওহ, আচ্ছা।(আস্তে করে)
কোনো সুসংবাদ আছে? মানে.. বেবি-টেবি হয়েছে তোমার?
— বিয়ে যখন করেছি বাচ্চাও থাকবে স্বাভাবিক।
— ছেলে হলো না মেয়ে..?
–মেয়ে..!
–নাম কি রেখেছো ?
–সামিয়া
–বাহ, খুব সুন্দর নাম।
–হুম।
.
. . .. আবারো দুজনে চুপচাপ বসে থাকলো …
–আচ্ছা তোমাকে এত কিছু জিজ্ঞেস করলাম, আমার ব্যাপারে জানতে চাইবেনা? আমি কেমন আছি না আছি?
–একটা সময় জানার আগ্রহ ছিলো, সময়ের সাথে সাথে সেটা ফুরিয়ে গেছে।আর তোমাকে দেখে তো মনে হচ্ছে বেশ সুখে শান্তিতেই আছো।
তুমি সুখী হউ, আমিও তাই চেয়েছিলাম…
.
কথাটা শুনে নীলা আর কিছু বললোনা..এই কথার কোনো জবাব ওর কাছে এই মুহূর্তে নেই!
–সত্যি কথা বলতে কি জানো হৃদয়,আমরা যা চাই সব সবসময় তা হয়না, আমাদের ভাগ্যে যা থাকে তা মেনে নিতে হয়।
–এই কথাটা তুমি বলছো?তুমি?
–হুম,আমিই বলছি! একটা রিকুয়েস্ট করি রাখবে?
–তোমার অনুরোধ কোন দিন রাখিনি? আর রাখার মতো হলে রাখবো,
–আগের সেই স্মৃতিগুলো মনে চেপে রেখো না সেগুলো ভুলে যাও হৃদয়।
–কে বলেছে আমি মনে রেখেছি? অনেক আগেই সেগুলো মন থেকে মুছে দিয়েছি।
–সেই ভালো, তা এখন কি করছো? বিজনেস নাকি জব?
–এটা না হয় নাই বললাম।(অন্যদিকে তাকিয়ে)
–ঠিক আছে।
–আমার কথা ছাড়ো! শুনেছি তোমার হ্যাসবেন্ড অনেক ভালো। তার উপর নাকি তোমার খুব কেয়ার করে…,
খুব যত্ন নেয় মোস্ট ইম্পোর্টেন্ট তোমাকে নাকি অনেক ভালোওবাসে,তুমি ই বলো এমন স্বামীই বা কয়জন পায়?সত্যিই নীলা!
তুমি খুব ভাগ্যবতী মেয়ে যে এরকম একজনকে নিজের জীবনসঙ্গী হিসেবে পেয়েছো।
এরকম স্বামী কয়জন মেয়ের ভাগ্যে থাকে বলো?বরাবরের মত আবারো প্রমান করেছো আমাকে ছাড়ার ডিসিশনটা তোমার একদম উচিত ছিলো।
(নীলা হৃদয়ের দিকে একদৃষ্টিতে চেয়ে আছে. .চোখ পানিতে টলমল করছে,)
ছেলেটার আর কিছু বলার আগেই নীলার চোখ বেয়ে টুপ করে একফোঁটা পানি মাটিতে পরলো।
.
–একি..কি করছো.. কাদছো কেন? বিশ্বাস করো ইচ্ছে করে কথাটা বলতে চাইনি, প্রসঙ্গক্রমে উঠে গেছে।আর ভুল ই বা কি বলেছি বলো?
যা সত্যি সেটাই তো বলেছি এতে কান্না করার কি আছে বোকা মেয়ে?কেদনা..আশেপাশে লোকজন খারাপ ভাববে…,
(ব্যাগ থেকে টিস্যু বের করে ভেজা চোখ মুছতে মুছতে নীলা একটা অনুভুতিহীন হাসি দিয়ে বললো)
–কই না তো… কে বলেছে আমি কাদছি?
তুমি না আগের মতো এখনো খুব অদ্ভুত করে কথা বলো হৃদয় যা সোঝা একদম বুকে গিয়ে আঘাত করে।এ কথা কি জানো?
হৃদয় প্রশ্নের কোনো উত্তর না দিয়ে নীলার পাশে বসা ৪ বছরের ছোট বাচ্চাটিকে নিজের কোলে বসিয়ে বললো,’হয়তো বলি,পুরনো অভ্যাস কি আর এত সহজে ছাড়া যায়?..
যাক বাদ দাও এসব কথা,তোমার ছেলে তো দেখি একদম তোমার মতো দেখতে হয়েছে।
একইরকম চোখ, একইরকম মুখ..আংকেলকে দেখা আর তোমাকে দেখা এক তাইনা আংকেল?..বলে বাচ্চাটার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।
.
বাচ্চাটা এতক্ষন নীলার পাশেই বসেছিলো।ললিপপ খেতে খেতে এদিক ওদিক তাকাচ্ছিলো, এটা-সেটা করছিলো।
হৃদয় ওকে আচমকা কোলে নেওয়ায় ওর মুখের দিকে তাকিয়ে আছে.. ওর ছোটছোট হাত দুটো দিয়ে হৃদয়ের মুখ নাড়ছে আর একটু পরপর খিলখিল করে আপন মনে হাসছে।
বাচ্চারা এরকমই হয়।হৃদয় ও ব্যাপারটা বেশ উপভোগ করছে।
–তোমার ছেলেটা না সত্যি খুব কিউট..
(নীলা উত্তরস্বরূপ একটা মুচকি হাসি দিলো)
–আংকেল তোমার নাম কি?
(বাচ্চাটা তখনো এদিক ওদিক তাকাতে ব্যস্ত)
আবারো জিজ্ঞেস করলো
–আংকেল তোমার নাম কি?
(এবার হৃদয়ের দিকে না তাকিয়ে সোজা নীলার মুখের দিকে তাকাল)
নীলা ওকে ইশারা ইশারায় বলতে বলল,
‘বাবু আংকেল তোমার নাম শুনতে চাচ্ছে ওনাকে তোমার নামটা বলো’
–আমার নাম রিহান(অস্ফুট স্বরে বলল)
নামটা শুনামাত্রই হ্রদয় নীলার মুখের দিকে খুব অবাক হয়ে তাকালো, চোখের সামনে ঝাপসা হয়ে ভেসে উঠল হৃদয়ের বলা শেষ সেই কথাটা
.
৪বছর আগে,
সময়টা এখনকার মতো এরকম এলোমেলো ছিলোনা, খুব সুন্দরভাবে সাজানো গোছানো ছিলো,
ছিলো একেকটা রঙ্গিন মুহূর্ত যেগুলোকে অতিবাহিত করে সারাটাদিন পার করে দিতো দু’টো জীবন।কথা হচ্ছে হৃদয় আর নীলার।
.
সব সম্পর্ক শুরুর আগে ‘পরিচয়’শব্দটা খুব ম্যাটার করে।বলতে পারেন একটা সম্পর্কের পূর্বশর্ত ।
আর পাচটা ভালোবাসার গল্পের মতো ওদেরও গল্প শুরু হয়েছিলো এই পরিচয়ের মাধ্যমেই।
.
শুরু থেকেই হৃদয় সম্পর্ক টাকে নিয়ে অনেক সিরিয়াস ছিলো,মেয়েটা যে কম সিরিয়াস ছিলো এমনো না,,
প্রথম প্রথম রিলেশন করতে কার না ভালো লাগে?তা সে ছেলে হোক বা মেয়েই,কিন্তু দেখার বিষয় থাকে সেটা কতদিন টিকে থাকে।
সম্পর্ক শুরুর প্রথম দিকেই যেটা ভেঙ্গে যায় সেটা থাকে আবেগ আর যে সম্পর্ক টা শেষ পর্যন্ত নানা চড়াই উতরাই পেরিয়ে টিকে যায় সেটাই হলো ভালোবাসা।
.
.
হৃদয়ের আজও স্পষ্ট মনে পড়ে সেইদিনের কথা যেদিন ও নীলাকে প্রথম প্রপোজ করেছিল।অপেক্ষা করছিল উত্তরের। নীলা ওর মুখের দিকে কিছুক্ষন ফ্যাল ফ্যাল চোখে তাকিয়ে ছিলো।
উত্তরে বলেছিল,’তোমার সাথে ফান করার জন্যে তোমার প্রপোজের উত্তরে হ্যা বলবোনা,সময় কাটানোর জন্য তোমার সাথে কোনো রিলেশনশিপ করবোনা,
শুধু শুধু ঝগড়া করার জন্যে তোমার সাথে প্রেম করবোনা।তুমি শুধু আমাকে তোমার মতো করে ভালোবাসবে….
তারপর হাতটা বাড়িয়ে দিয়ে বলেছিল,’যদি সেই শর্তে হাত ধরো? তবে এই নাও! আর না পারলে তোমার প্রপোজাল ফিরিয়ে নাও..ভালোবাসতে এসোনা।’
.
ওইদিন নীলার হাত শক্ত করে ধরে হৃদয় বলেছিল,’আমার ভালোবাসা এত সস্তা না যে কিছু শর্তের কারনে পিছিয়ে যাবে।
তোমাকে আমি তেমন করেই ভালোবাসবো যেখানে একটা ভবিষ্যৎ থাকবে. .একটা স্বপ্ন থাকবে..প্রেম নামের সুন্দর একটা শব্দ থাকবে।আমাদের ভালবাসাটা হবে দীর্ঘস্থায়ী। ‘
.
খুব ভালো ভাবেই কেটে যাচ্ছিলো দিনগুলো।বিশেষ করে প্রথম দিকের প্রতিটা মুহূর্ত গুলো ছিলো অসাধারণ।
(শেয়ারিং -খুনশুটি-কেয়ারিং) মোট মিলিয়ে সম্পর্কের শুরুটা দারুণ ছিলো।
মাঝখানে কেটে গেলো দেড় বছর…..
এরই মাঝে হৃদয় নীলাকে সত্তিকার অর্থেই ভালো বেসেছিলো, ভেবেছিলো নীলাও ওকে ঠিক ততটাই ভালোবাসে যতটা হৃদয় ওকে (নীলাকে)ভালবাসে।
কিন্তু না! ব্যাপারটা এরকম ছিলনা।ছেলেটার এ ধারনা ভুল প্রমাণিত হয় যেদিন নীলা ওকে ফোন করে কোনো একজায়গায় দেখা করতে বলে।
হৃদয় বাধ্য ছেলের মতো সেখানে গিয়ে হাজির হয়ে দেখে নীলা আগে থেকেই সেখানে উপস্থিত।”
কি এমন জরুরী কথা যার জন্যে নীলা আমাকে এভাবে ফোন দিয়ে এখানে ডাকলো?”ভাবতে ভাবতে মেয়েটার সামনে এসে দাড়ালো হৃদয়।
.
–কি বলবে বলো..
–আসছো..!(উদ্বিগ্ন কন্ঠে নীলা পেছনে ঘুরে বলল)
–হুম, এখন বলো কি তোমার জরুরি কথা যার জন্যে এভাবে ডাকলে..?
–দেখো হৃদয় যা বলবো সেটা তুমি কিভাবে নিবে তা জানিনা বাট না বলে থাকতেও পারছিনা।
–কি কথা? তোমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে এ কথা?
–না..
–তুমি আমাকে পালিয়ে বিয়ে করতে চাও এ কথা?(বলেই হেসে দিলো)
–দেখো হৃদয়। আই অ্যাম সিরিয়াস! (রেগে)
–আচ্ছা.. আচ্ছা বলো তোমার সিরিয়াস কথা শুনছি (মুখে অাঙ্গুল দিয়ে)
.
অতঃপর নীলা বলা শুরু করলো,..দেড় বছর আগে আমাদের রিলেশনশিপ শুরু হয়েছিল।আমি জানি তুমি আমাকে অনেক ভালোবাসো।
বিশ্বাস করো প্রথম দিকে আমিও তোমাকে অনেক ভালোবেসে ফেলি।কিন্তু সময় যত যেতে লাগলো বুঝতে পাড়লাম সেটা ভালোবাসা ছিলনা!
ছিলো তোমার জন্যে আমার মনে জাগা ক্ষণস্থায়ী আবেগমাত্র।
আর আবেগ দিয়ে কি একটা রিলেশনশিপ টিকে তুমি বলো?তাই আমি একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমার বিশ্বাস তুমি সেটাকে সাপোর্ট করবে।
.
কথাগুলো শুনে হৃদয় কিছুক্ষনের জন্যে নিজের চোখ বন্ধ করলো।চোখ বুজা অবস্থায় বললো,”আর যদি সাপোর্ট না করি?”তখন কি করবে?
নীলা চুপ থাকলো কিছু বললোনা,
–তোমার কথা শুনে আমি যা বোঝার বুঝে গেছি,সম্পর্কটা শেষ করতে চাচ্ছো তাই তো?
ওকে ফাইন করবো, কিন্তু তার আগে একটা কথা, কি দরকার ছিলো প্রপোজ করার দিন ওই কথা গুলো বলার?আমাকে মিথ্যে অাশ্বাস দেওয়া?
–আমি জানি ভুল টা আমারি, আর এজন্যে যদি সরি বলি তবে সেটা তোমাকে খাটো করা হবে। তবুও বলছি আমাকে মাফ করে দেওয়া যায়না হৃদয়?
….আমরা ভালো বন্ধু হিসেবে সারাজীবন থেকে যেতে পারি।
–ভালো থাকবেন মিস আর লাস্ট একটা রিকুয়েস্ট নিজে যদি কখনো বিয়ে করেন,তবে ছেলে হলে রিহান আর মেয়ে হলে ইতি নাম রেখেন।
বলে আর এক মুহূর্ত দেরি না করে উল্টো পথে হাটা শুরু করলো,পিছনে ফিরেও তাকালোনা, শুধু নীরবে কেদে গেলো।
.
.
আজ ৪বছর পর আবারো ওর সাথে দেখা হলো,
.
এমন সময় পিছন থেকে কেউ ‘আব্বু’বলে ডাক দিলো।হৃদয় বাস্তবে ফিরে এলো।পিছনে তাকিয়ে দেখে মেয়ে সামিয়া ওর নানুভাই এর সাথে দাঁড়িয়ে।
–তোমার কোলে এই বাবুটা কে?(সামিয়া)
–মামণী এই বাবুটা তোমার ভাইয়া হয়…
.
নীলা সামিয়াকে দেখে হৃদয়কে জিজ্ঞেস করলো..’তোমার মেয়ে?’
হৃদয় মাথা নাড়িয়ে হ্যাসূচক উত্তর দিলো
নীলা সামিয়াকে কাছে নিয়ে এসে নিজের কোলে বসালো।কপালে একটা চুমু দিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
–মামনী তোমার নাম কি?
–আফিয়া মেহরিন সামিয়া।কিন্তু আপনি কে?
( নীলা একবার হৃদয়ের দিকে তাকালো তারপর সামিয়াকে বললো)
–আমি তোমার আব্বুর ফ্রেন্ড। তোমার আন্টি হই।
–ওও,আব্বুর কোলে বসা বাবুটা কি আপনার আন্টি?
–হুম মা ওটা আমার বাবু, তোমার ভাইয়া হয়।
তোমার আম্মু কোথায় সামিয়া?
.
সামিয়া ওর হাত দিয়ে আকাশের দিকে ইশারা করে বললো,’আব্বু বলেছে আমি যখন ছোট ছিলাম তখন আমার আম্মুটা আমাকে আর বাবাকে ছেড়ে ওই আকাশে চলে যায়,
তুমি যানো আন্টি আমার আম্মুটা না খুব পচা… যাবার আগে আমাকে আদর করে একটা পাপ্পিও দিয়ে যায়নি।আর আমার আব্বুটা অনেক ভালো।
আমাকে আদর করে,পাপ্পি দেয়, চকলেট কিনে দেয়।আই লাভ ইউ আব্বু।
সামিয়ার কথায় নীলার বুকটা ধুক করে উঠলো, পুরো ব্যাপারটা বুঝতে পেরে নীলা সামিয়াকে বললো,..
‘তোমার আম্মু পচা না মামনী, হয়তো ওনার কিছু কাজ আছে তাই আকাশে গেছে কাজ শেষ হলে আবার ফিরে আসবে।
ততদিন তুমি তোমার আর তোমার আব্বুর খেয়াল রাখবে..কি পারবেনা?’
–হ্যা পারবো
–এইতো গুড গার্ল।
এরই মাঝে নীলার স্বামী এসে গেলো,পরিচিতি পর্ব শেষ করে নীলা রিহান আর ওর স্বামী কে নিয়ে চলে গেলো।
দাঁড়িয়ে থাকলো হৃদয় সাথে ওর মেয়ে সামিয়া।