তোকে আমার বউ বানাবো

তোকে আমার বউ বানাবো

আরিফ ভাইয়া। তোমার কি গার্লফ্রেন্ড আছে? রুমকির মুখে এই ধরনের প্রশ্ন শুনে আরিফ যেন একটু। তাই অবাক চোখেই বলল

-কেন?
-তোমার ফেসবুক রিলেশন সিঙ্গেল। তাই বললাম।
-তুই আমার ফেসবুক রিলেশনও দেখিস নাকি?
-দেখতেই পারি।
-তাহলে তো আমার স্ট্যাটাস ও দেখার কথা। সেখানে কি বুঝিস?
-মনে তো হয় তোমার গার্লফ্রেন্ড নেই। আর ফেসবুক এর স্ট্যাটাস দেখে তো গার্লফ্রেন্ড আছে নাকি জানা যায় না।
-জেনে কি করবি?
-এমনিতেই।
-গার্লফ্রেন্ড আছে।

প্রশ্নটা করার সময় আরিফ রুমকির চোখে যেই চঞ্চলতা দেখেছিল উত্তর পেয়ে তার চেয়ে বেশি উদাস হতেই দেখলো। এতদিনে এইধরনের প্রশ্ন করে নি। কিন্তু আজ এই ধরনের প্রশ্ন করলো। আরিফ একদিন রুমকিকে জিজ্ঞেস করলো

-কিরে কয়টা প্রেম করছিস?
-যার সাথে প্রেম করতে চাই সেই তো এগিয়ে আসে না। তাহলে প্রেম করি কিভাবে?
-তুই দেখতে তো সুন্দরি। তাহলে এগিয়ে আসে না কেন?
-জানি না।

আরিফ রুমকিদের বাসা থেকে চলে যাচ্ছিল। আরিফ বলল

-এই খালা কোথায় গেল রে?
-জানি না।
-ওইরকম বাংলার পাঁচ হয়ে আছিস কেন?
-আমার ইচ্ছা।
-আচ্ছা আমিই ডাকছি। আমার একটা কাজ করে দিতে পারবি?
-কি কাজ?
-আমার জন্য একটা গার্লফ্রেন্ড খুঁজে দিতে পারবি?
-তোমার নাকি গার্লফ্রেন্ড আছে?
-এমনিই বলেছিলাম।

আরিফ যখন বাসায় ফিরবে তখন লক্ষ করলো রুমকির মধ্যে সেই উদাসিন ভাব নেই। মনটা মনে হচ্ছে চনমনে হয়ে গেছে। আরিফের সকাল বেলা ঘুম থেকে তারাতারি ওঠার দরকার ছিল। একটা জরুরি কাজ আছে। উঠতে দেরি হয়েছে তাহলে কাজ শেষ করতে একটু দেরি হয়ে যাবে। দেরি যখন হয়েছে তাহলে আরেকটু পরে গেলেই চলবে। ওয়াশরুম থেকে হাত মুখ ধুয়ে এসে দেখে খালার ফোন। ফোন ধরতেই ওপাশ থেকে বলল

-কি খবর জামাই? কেমন আছো?
-খালা। আমি আরিফ। আপনি কার কাছে ফোন করেছেন?
-আমি তোমার কাছেই ফোন করেছি জামাই।
-জামাই!! আপনি তো এতদিন আমাকে তুই করে বলতেন। আজ আবার তুমি করে বলছেন কেন?
-জামাই কে কি তুই করে বলা ঠিক?
-কার জামাই!! কিসের জামাই!!
-রুমকির স্বামি হলে তো তুমি আমার জামাই হবে। অবশ্য হবু জামাই।
-রুমকির হবু স্বামি মানে? আমি কি রুমকিকে বিয়ে করছি নাকি!
-তুমি কিছু না বললেও রুমকি কিন্তু আমাদের সবকিছু বলেছে। আর পালিয়ে বিয়ে করতেও হবে না। কারন তোমার বাবা মা এবং আমরা মেনে নিয়েছি। আমরাই তোমাদের বিয়ে দেব।
-আমি আপনার সাথে পরে কথা বলছি। এখন ফোন রাখেন।

ফোম রেখে আরিফ অবাক হয়ে গেল। কারন এসবের কিছুই আরিফ বুঝতে পারছে না। রুমকিকে ফোন করলো। রুমকি ফোন ধরতেই আরিফ বলা শুরু করলো

-তুই খালার কাছে কি বলেছিস? আমি নাকি তোকে বিয়ে করতে চেয়েছি! এসব বলেছিস কেন?
-তোমার গার্লফ্রেন্ড নাই তাই বলেছি।
-আমার গার্লফ্রেন্ড নেই মানেই কি তোকে বিয়ে করবো?
-করবেই তো।
-থাপড়িয়ে দাত ফেলে দেব। তোকে আমি বিয়ে করবো? তুই আমার কাছে ফোন করবি না। আর আমিও তাদের বাসায় যাবো না।

আরিফ এই বিষয়ে আর কোন কথা না বলে তার মত কাজে চলে গেল। কাজ শেষ হতে প্রায় দুপুর হয়ে গেছে। এখন মনেহল রুমকিদের বাসায় যাওয়া উচিৎ। রুমকিকে যেভাবে বলেছে তাতে রুমকি রেগে আছে মনেহয়। আর এই রেগে থাকা দেখতে হলেও আরিফকে যেতে হবে। ছোটবেলা থেকেই রুমকি খুব জেদি আর রাগী। তাই আরিফও রুমকিকে রাগানোর চেষ্টা করে। আর অন্যকে রাগাতে আরিফের খুবই ভাল লাগে। আর যদি সে জেদি হয় তবে তো কোন কথাই নেই। রুমকিদের বাসায় পৌঁছে খালাকে দেখে বলল

-খালা রুমকি কোথায়?
-জেদ করে ওর রুমে বসে আছে। সকাল থেকে কিছু খায় নি।
-আচ্ছা দেখে আসি। আরিফ রুমকির রুমে গিয়ে বলল

-কিরে কি করছিস?
-তুমি আমাদের বাসায় এসেছ কেন? তুমি নাকি আমাদের বাসায় আসবে না?
-আমি আমার শ্বশুরবাড়িতে আসতেই পারি।
-মানে!!
-দেখ। ছোটবেলা থেকেই আমি তোকে রাগানোর চেষ্টা করি। আর তোকে রাগাতে আমার ভালই লাগে। তাই ভাবলাম তোকে আমার বউ আমাদের করে নিয়ে যাব। আর তোকে রাগিয়ে আমি মজা নেব।
-খুব মজা আমাকে রাগিয়ে?
-হ্যা।
-বেশি রেগে গেলে কিন্তু তোমাকে মারা শুরু করবো।
-বউ এর হাতে মাঝে মাঝে আদরের মাইর খেলে ভালই লাগবে।
-উ। আমার বউওয়ালা এসেছে।
-এত কথা বলছি কেন? শ্বশুরবাড়ি এসে না খেয়ে থাকা যায়? ক্ষুধা লাগছে। আমার শ্বাশুরি কোথায় গেল?
-আজ তোমার বউ রান্না করে খাওয়াবে।
-বাহ আমার বউ শুধু রাগ না রান্নাও করতে জানে।

আরিফ রুমকিকে রান্না করতে বলে খালাকে খুঁজতে থাকলো। এখন খালার কাছ থেকে আদর পেতে হবে। জামাই বলে কথা।

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত