ভালোলাগার পথচলা

ভালোলাগার পথচলা

ফার্স্ট ইয়ার শুরুর দিকের ঘটনা। সম্পূর্ন নতুন পরিবেশ,শতশত নতুন মুখ,জীবনের নতুন অধ্যায় এইসব নতুনত্বের স্বাদ নিতে আমি প্রতিদিনই কলেজে চলে আসতাম।সত্যি বলতে আমার ভীষণ ভালো লাগত।শুধু যে স্যারদের লেকচার শুনতে কিংবা বন্ধুদের সাথে আড্ডা মারতে ভালো লাগত সেটা কিন্তু না।ভালোলাগার হাজারটা কারনের মাঝে আরো একটা বিশেষ কারন ছিল।হ্যাঁ একটা মেয়ে।মায়াবিনী,ছদ্মবেশিনী,রহস্যময়ী এক বিস্মিতা মানবী।সৃষ্টিকর্তার পূর্ন্য প্রিয়দর্শিনী অপরূপা ছিল সে।তার চোখ যুগল সাক্ষাৎ ফুটন্ত নীল পদ্ম।তাকে দেখলে মনে হত যেন স্বর্গলোকের কোন এক নিভৃতচারী অপ্সরা পথভ্রষ্ট হয়ে পৃথিবীর মাঝে এসে পড়েছে।যতবার দেখতাম তার মুখশ্রী প্রতিবারই সৃষ্টিকর্তার কাছে ধন্যবাদ জ্ঞাপিত করতাম এত নিখুঁত সৃষ্টির হেতু।তার সৌন্দর্যের বর্ণনা দিতে গেলে দিবারাত্রি একাকার হয়ে যাবে।

মেয়েটা উজ্জ্বল শ্যাম বর্ণের।সহজ ভাষায় আমরা যাকে কালো বলি।এবার আপনারা একটু ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলেন তাইতো?- কালো মেয়ে আবার কেমনে এত সুন্দর হয়! আসলে সব সৌন্দর্য রূপে নয় কিছু সৌন্দর্য হৃদয়ের মাঝেও লুকিয়ে থাকে।তবে সেই সৌন্দর্যরূপ দর্শনের জন্য এক ভিন্ন চোখের প্রয়োজন পড়ে।অন্তর নেত্র দিয়ে আমরা খুব সহজেই সেই সৌন্দর্যকে উপভোগ করতে পারি।কিন্তু দূর্ভাগ্যবশত আমাদের সমাজে কারোরই সেই চক্ষু নাই।যার ফলে আমরা তাদের কুতসিৎ,হতভাগি আরো নানা সম্বোধনে প্রতিনিয়ত কটুক্তি করে যাচ্ছি।অপরদিকে সাদা চামড়াওয়ালিদের নানাভাবে কাছে টেনে নিচ্ছি কখনো দিনের সচ্ছ আলোতে কিংবা রাতের ঘন আঁধারে।

স্যার ক্লাসে ঢুকার মাত্র ৫মিনিট আগে মেয়েটা ক্লাসে ঢুকবে আর সবকটা ক্লাস শেষ হলেই চলে যাবে।কারো সাথে যেচে কথা বলেনা মেয়েটা।কেউ কোন প্রশ্ন করলে তার প্রত্যুত্তর দেয় আর প্রয়োজনে দু-চারটা কথা বলে। এমন মনে হয় যেন পুরো ক্লাস জুড়ে তার কোন বান্ধবি নাই।অন্যান্য মেয়েরা যেখানে চিৎকার- চেঁচামেচি করে পুরো ক্লাসটাকে মাছের বাজার বানিয়ে ফেলছে সেখানে এ মেয়েটা কিভাবে চুপচাপ বসে থাকে বুঝিনা।একটু সবার সাথে মিশে হেসে কথা বার্তা বললে কি হয়।সারাক্ষণ খালি মুখটা ফ্যাকাসে করে রাখার কি আছে।এ বয়সে কিসের এত চিন্তা তার।বিয়েও তো হয় নাই যে স্বামী,বাচ্চার কথা ভাবতে হবে।মেয়েটার দিকে আমি প্রায়সময় হাবার মত তাকিয়ে থাকি কিন্তু সে আমার দিকে একদমি তাকায় না।মাঝে মাঝে তাকায় তবে সেটা ১-২ সেকেন্ডের বেশি স্হায়ী হয়না।

সাইফুল স্যার ক্লাসে ঢুকতে ঢুকতে এখানকার পরিবেশ শীতল হয়ে গেল।ভীষণ ভয় পায় আমরা সবাই ওনাকে।আইসিটি বিষয়ে ক্লাস নেন আমাদের।সপ্তাহে মাত্র দুইটা ক্লাস পান আর ওইদুইদিনই আমাদের সবার অবস্হা কাহিল করে ছাড়বে।আরে স্যার তো এদিকেই আসছে মনে হচ্ছে এখন আমাকে দাঁড় করাবে কিন্তু এটা কি হল স্যার তো ওপাশে ঘুরে গেল।এবং মেয়েটাকে দাঁড়াতে বলল।মেয়েটা রীতিমত ভীতিপ্রদ হয়ে দাঁড়াল।এমন মনে হচ্ছে যেন স্যার যা জিজ্ঞাস করবে সে কিছুই উত্তর দিতে পারবেনা।আমি তার ঠিক তিন বেঞ্চ আগে অপর সারিতে বসেছি।আর সেখান থেকে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি তার মুখমন্ডল।স্যার মেয়েটার কাছে এবার প্রশ্ন করে বসল-” বিশেষ গেইট কয়টি”? মেয়েটার মুখভঙ্গি দেখে মনে হচ্ছেনা যে মেয়েটা পারবে।না পারলে পুরো ক্লাস সম্মুখে লজ্জা পাবে সে ভীতিও তার মুখে দেখা যাচ্ছে।মেয়েটা তার ওড়নাটা মাথার উপর টানতে টানতে আমার দিকে তাকাল।আমি উত্তরটা জানতাম তাই দুটো আঙ্গুল নিজের মুখের কাছে নিয়ে নাড়াচাড়া করলাম।এটা বুঝাতে যে উত্তর হবে দুটি।সম্ভবত মেয়েটা আমার ইঙ্গিত বুঝতে পেরে স্যারকে বলল-” স্যার দুইটি “।”হুম বস” এই বলে স্যার মেয়েটার পাশ থেকে প্রস্থান করল।আমি একেবারে নিশব্দে উত্তরটা মেয়েটিকে বলে দিয়েছি।এবং কাজটা প্রায় ১মিনিটের মধ্যেই সম্পন্ন করেছি।

সেইদিন কলেজ ছুটির পর দেখলাম সবাই একেএকে ক্লাস বের হয়ে যাচ্ছে অথচ মেয়েটা বের হচ্ছেনা।তারমধ্যে তেমন কোন তাড়াহুড়াও দেখা যাচ্ছেনা।ক্লাসের ভীড় একটু কমে গেলে অামি তখনই বের হই।এটা আমার প্রতিদিনের অভ্যাস।অপরদিকে মেয়েটা তার অভ্যাসের বাইরে চলে যাচ্ছে।কারন প্রতিদিন সে ভীড়ের অারো অাগে ক্লাস থেকে বের হয়ে যায় অাজ ভীড় কমার পরেও না।মোটামোটি পুরো ক্লাস জনশূন্য হয়ে পড়েছে।কেবল পিছনের দুয়েকটা বেঞ্চে কয়েকজন বসে অাড্ডা দিচ্ছে।হঠাৎ-ই অামার মনে পড়ল অাজ তো প্রতিদিনের মত না।অাজ মেয়েটার অনেক বড় উপকার করেছি অামি।নিশ্চয় অামাকে কিছু বলার জন্যই দাঁড়িয়েছে। কিছুসময় পর মেয়েটা অামার কাছে এসে শীতল কন্ঠে বলল-

– ধন্যবাদ অাপনাকে। এই প্রথম তার কন্ঠ শুনলাম।বেশ মিষ্টি কন্ঠ।কোন সুরেলা বাঁশের বংশীর মত।অামি অপ্রস্তুত হয়ে বললাম- কেন?
– ‘কেন’ প্রশ্নটা করে দিলেন তো নিজেকে বোকা প্রমাণ করে। মেয়েটা অাবার বলল-
– এমনি এমনি কেউ কাউকে ধন্যবাদ দেয় না।অাজ আপনি অামার উপকার করেছেন তাই ধন্যবাদটা দিলাম।
– ও!

প্রথমদিন এইটুকুই কথা হয়েছিল অামাদের।এরপর মেয়েটা চলে গেল। মেয়েটার সাথে কথা না হলে সবকিছু ঠিকঠাকমত থাকত।কিন্তু সেদিন কথা বলার পর থেকে অার কিছু ঠিক নেই।ওর কন্ঠটা হৃদয়ে গেঁথে গিয়েছে।ইচ্ছে হয় বারবার ওই কন্ঠ শুনি।কথা বলার ওযুহাত খুঁজি।কন্ঠের পিপাসা জাগে।কিন্তু সুযোগ পায় না।সুযোগ দেয় না।তারপর একদিন সাইফুল স্যারের ক্লাসে মজার ঘটনা ঘটল।স্যার সবাইকে কয়েকটা শর্ট সার্কিট অাঁকতে দিয়েছিল।সবার মত অামিও অাঁকছিলাম।কোথা থেকে যেন স্যার এসে অামার খাতাটা নিয়ে নিলেন।খাতাটা নিয়ে স্যার সোজা ফোডিয়ামের উপর উঠে গেলেন।ভাবলাম কতটুকু অাঁকতে পেরেছি সেটা দেখার জন্যই নিয়েছে।তাছাড়া অামার অাঁকাও শেষ হয়েছিল তখন।অামি দাঁড়িয়ে গেলাম।স্যার খানিক্ষন খাতাটায় চোখ বুলানেন।তারপর অামাকে উদ্দেশ্য করে বললেন-

– নাম কী তোমার?
– সেতু জিৎ..
– একটু বড় করে বল, শুনতে পাইনি। অামি গলার ভয়েস বাড়িয়ে নামটা বললাম। এরপর স্যার ক্লাসের সবার উদ্দেশ্যে গলা ফাটিয়ে বললেন-
– স্টপ রাইটিং।দুই মিনিটের জন্য সবার কলম বন্ধ থাকবে। স্যারের কথামত সবাই কলম বন্ধ করে খাতার উপর রাখল।অামার কলম অাগে থেকেই বন্ধ ছিল।
– অামি কি বলছি সেটা মন দিয়ে সবাই শুনবে।তোমাদের বন্ধু সেতু জিৎ খুব সুন্দরভাবে সার্কিট গুলা অংকন

করেছে।অার কার কার অাঁকা শেষ হয়েছে হাত তুল দেখি?? পুরো ক্লাসে বিশ পঁচিশটার মত হাত উঠল।

– তোমাদের বন্ধু কি নাম যেন…
– স্যার সেতু জিৎ (সামনের বেঞ্চের একজন)
– তোমাদের বন্ধু সার্কিটের পাশে কি লিখেছে তোমরা জানো?? ক্লাসের পিছনের সারির কয়েকজন বলল-
– কি লিখছে স্যার??
– অামি পড়ে শুনাচ্ছি।

” তুমি কেমন জানি দেখতে দেখতে ঘোর লেগে অাসে,, বাউন্ডুলে মনটা অামার তোমার অাকাশে ভাসে “। কেউ বলছে ওয়াও, কেউ বলছে নাইচ, কেউ অাবার কবি বলতে লাগল।অন্যসব দিনের চাইতে আজ একটু বেশি সুন্দর লাগছিল মেয়েটাকে।কেবল চেয়েই থাকতে ইচ্ছে করছিল।এমন কোন এক সময় লিখাটা লিখে ফেলেছিলাম।সত্যি সত্যি অামি তখন ঘোরের মধ্যে ছিলাম।খেয়াল থাকলে স্যার সামনে অাসার অাগেই কেটে দিতাম।অাশেপাশে তাকিয়ে দেখি সবাই অামার দিকে চেয়ে অাছে।অামি বেচারা লজ্জায় টেবিলের দিকে চেয়ে রইলাম।
স্যার বলল-

– সেতু জিৎ, কাকে উদ্দেশ্য করে লিখেছ লিখাটা? নিশ্চয় এ ক্লাসেরই কেউ।
– না স্যার।
– কি না স্যার।তার নামটা হলেও অামাদেরকে বল অামরা একটু শুনি।
– জানিনা স্যার।
– এটা অাবার কেমন নাম জানিনা।কাঞ্চনা শুনেছি, রঞ্জনা শুনেছি, অঞ্জনা শুনেছি এমন অদ্ভুদ নাম তো কোনদিন শুনিনি।

স্যারটাও অাজকে অামাকে নিয়ে লেগেছে।মেয়েটা কেমন ফ্যাল ফ্যাল করে অামার দিকে চেয়ে অাছে।মনে মনে কি ভাবছে কে জানে।ভাগ্যিস তখন ঘন্টা পড়ে গিয়েছিল। সেদিন কলেজ ছুটির পর দ্বিতীয়বারের মত দাঁড়িয়েছিল মেয়েটা।অামার কাছে এসে বলল-

– কাকে নিয়ে লিখলেন এমন লিখা?
– তোমাকে….
– মানে?
– মানে অামি বলতে চেয়েছি তোমাকে কেন বলব।কিন্তু তুমি পুরোটা বলতে দাওনি।তোমাকে বলতেই থামিয়ে দিলে।
– ও অাচ্ছা। তারপর মেয়েটা পকেট থেকে একটা কার্ড বের করে বলল-
– এইটা রাখেন।
– কি এটা।
– দেখতে পাচ্ছেন না বিয়ের কার্ড…
– কার বিয়ে?
– সেটা কার্ড খুললেই দেখতে পাবেন।অাসবেন কিন্তু।

এরপর মেয়েটা ক্লাস থেকে বের হয়ে গেল।অামার কেন জানিনা কার্ডটা খুলে দেখতে ইচ্ছে করছিলনা।টিভি সিনেমার গল্পে দেখেছি প্রেমিকার বিয়ের কার্ড প্রেমিকের হাতে ধরিয়ে দিতে।অামার সাথেও বোধই এমনটাই হতে চলেছে।শুরুর অাগেই শেষ হবে প্রেমটা।হঠাৎ করে কেমন চুপ হয়ে গেলাম।

তখন মধ্যরাত।বাইরে ঝিঁঝিঁ পোকা খুব জোরে শব্দ করছে।মাঝে মাঝে শেয়ালের ডাক শুনা যাচ্ছে।পাহাড়ের পাশে বাস করা মানুষগুলোর এতক্ষনে অর্ধেক ঘুম হয়ে গেছে।অামার ঘুম অাসছেনা।একটু হাহাকার লাগছে।লাইটটা জ্বালিয়ে দিলাম।অাধশোয়া হয়ে বসে রইলাম কতক্ষন।ঝিম ধরে অাসছে।টেবিলের উপর পানির বোতল রাখা অাছে একটু খাওয়া উচিৎ।যা পারলাম ঢকঢক খেয়ে নিলাম।বালিশের নিচে কার্ডটা রেখেছিলাম।খুলেও দেখা হয়নি সেটা।কার্ডটা হাতে নিলাম।এইটা যতক্ষণ পড়া হবে না অামার কিছুতেই ঘুম অাসবেনা।পুরোটা পড়লাম।পাঁচদিন পর বিয়ে।বারবার চোখ পড়ছে কনের নামটার দিকে।
কনে- ঊর্বশি।

পরপর তিনদিন অার কলেজ যাইনি।কেন যাইনি সেটার স্পষ্ট উত্তর অামারও জানা নেই।সেদিন সন্ধ্যায় মনে হল যে, মেয়েটার নামটা একবার জেনে নেয়া উচিৎ।হতে পারে কার্ডে যে নাম দেয়া অাছে সেটা ওর বোনের।ব্যাপারটা অাগে কেন অামার মাথায় এল না দূররর…..।পরদিন কলেজে গিয়ে দুইঘন্টা ক্লাস করে অামি কলেজ থেকে চলে অাসলাম।ভেবেছিলাম মেয়েটা অাসবে।অামি নিজ থেকে তার কাছে গিয়ে নাম জিজ্ঞেস করব।কিন্তু সেটা হয়নি।কারন মেয়েটা কলেজেই অাসেনি।তাছাড়া কলেজে তেমন পরিচিত কেউ নেই যে, ওর কথা জিজ্ঞেস করব।এমনিতেই সাইফুল স্যার সেদিন অামার রেকর্ড যথেষ্ট খারাপ করে দিয়েছে।পরদিনও সে অাসেনি।হয়ত বিয়ের কেনাকাটায় ব্যস্ত।নামটা জানা হল না।

বিয়ের সানাই বাজছে।ছোট ছেলেমেয়েরা ছোটাছুটি করছে।আমি অারেক পা বাড়াতেই মেয়েটা অামার সামনে এসে দাঁড়াল।চেনাই যাচ্ছেনা এই সেই মেয়ে।পার্লারে সাদা মুরগির মত সেজেছে।তবুও মায়াবি লাগছে।যাকে প্রথমবার মন থেকে সুন্দর লাগে তাকে যেমন-তেমন সাজেও সুন্দর লাগে।আমি খুব বড় একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়লাম।একটা বিষয়ে নিশ্চিত হলাম বিয়েটা অন্য কারো হচ্ছে।অামি যাকে ভালোবাসি তার নয়।সে বলল-

– ভালো করেছেন এসেছেন।অামি তো ভাবলাম অাপনি অার অাসবেননা।
– তুমি করে বলা যায় না? ক্লাসমেট হিসেবে।
– যায়।
– তোমার নামটা কি যেন?
– নাম গ্রাম সব বলব অাগে ভিতরে অাস।
– চল…. ( অামি)

মেয়েটা আমাকে ভিতরে নিয়ে গেয়ে ডিরেক্ট খাবার টেবিলে বসিয়ে দিল।অামারও ক্ষুদার চাপ ছিল।অাসব কি অাসবনা এইটা ভাবতে ভাবতে সময় লেগে গেছে।অাচ্ছা মেয়েটা কি অামি অাসার অপেক্ষা করছিল? হয়ত হ্যাঁ অাবার না।অামি পেট ভরে খেয়ে নিলাম।তারপর হাত মুখ ধুয়ে সেখানে গিয়ে বসলাম যেখানে মেয়েটা অামাকে থাকতে বলেছিল।খানিক্ষন বাদে মেয়েটা এসে বলল-

– এত তাড়াতাড়ি খাওয়া শেষ? অামি অাসলেই অাজ একটু দ্রুত খেয়ে নিয়েছি।বললাম-
– হুম। মেয়েটা অার কিছু বলল না।অামি অাবার বললাম-
– তোমার ভয়েসটা অনেক মিস্টি।
– তাই নাকি। বাই দ্যা ওয়ে আমার নাম অারশি।অার তুমি সেতু জিৎ।
– তুমি অামার নাম কিভাবে জানলে?
– সাইফুল স্যারের ক্লাসে।( অারশি)
– ও! (অামি) অারশি বলল-
– তুমি একটু বস।অামি এক্ষুণি চলে অাসব।

অামি মাথা ঝাকিয়ে হ্যাঁ বললাম।এরপর অারশি সামনের দিকে কোথায় চলে গেল।অামি বাসায় বলে এসেছি ফিরতে রাত হবে নয়ত কাল ভোর হবে।যেন ওরা অামার জন্য মিছেমিছি চিন্তা না করে।অারশিকে এদিকেই অাসতে দেখা যাচ্ছে।ওকে দেখেই কেমন খুশি খুশি লাগছে।অারশি চেয়ারে বসতে বসতে বলল-

– বোর লাগছে তোমার এখানে?
– না।অাচ্ছা অামাদের কলেজ থেকে অার কেউ অাসেনি?
– ইনভাইট করলে তো অাসবে।
– পুরো কলেজ থেকে শুধু অামাকেই ইনভাইট করেছ??
– হ্যাঁ। ( অারশি)

মনে মনে একটু খুশিই হলাম।শুধু অামাকে ইনভাইট করেছে।তার মানে নিশ্চয় কাছের কেউ ভেবেছে।বললাম-

– শুধু অামাকেই কেন?
-বলব।তার অাগে তুমি বল সেদিন সাইফুল স্যারের ক্লাসে কাকে ভেবে লিখেছিলে লিখাটা?সত্যি করে বলবে।
– তোমাকে ভেবে।
– অামাকে? কিন্তু কেন…
– তুমি মানো অার না মানো তোমাকে অামার ভীষণ ভালো লাগে অারশি।এবার তুমি বল।
– যেদিন তুমি অামাকে সাইফুল স্যারের হাত থেকে বাঁচালে ওইদিনি তোমার প্রতি অামি ঋনি হয়ে যায়।পুরো

কলেজে প্রথম তোমার সাথে কথা বলেছি ভালোও লেগেছে তাই ইনভাইট করেছি। অারশি অার কিছু বললনা।চুপচাপ হয়ে সামনের দিকে চেয়ে রইল।অামিও অার কিছু বললাম না।শুধু মনে হয়েছে এ মেয়েকে অামি নিজের করে পাব।এবং সেটা খুব শীঘ্রই।বললাম-

– এতক্ষনে বিয়ে শুরু হয়ে গেছে। চল বিয়ে দেখি।
– হুম চল।

চোখাচোখি থেকে ভালোলাগা শুরু হয়েছে।দুজনের ভালোলাগা থেকে শুরু হল পথচলা।অার সেই পথচলা গিয়ে থামবে ভালোবাসায়।

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত