অফুরন্ত ভালবাসা

অফুরন্ত ভালবাসা

—ভাইয়া ভালবাসা মানে কি???
—-পার্কে গিয়ে প্রেমিকার ঠোঁটের লিপস্টিক নষ্ট করা(আমি)
—-ছি!ছি!ছি! ভাইয়া কি বলেন এসব!
—-বিশ্বাস না হওয়ার কি আছে?আশে পাশের পরিবেশটা একটু খেয়াল করলে বিষয়টা তো পরিষ্কার (আমি)
—-বালিকা চুপ! আরেকজন, ভাইয়া ভালবাসা মানে কি?
—-কেনো আপনি জানেন না বুঝি!এতদিন থেকে আপনি তো একটা রিলেশনে আছেন!(আমি)
—-না আপনি একটু বলেন ভাই
—-ভালবাসা মানে কিছুদিন পর পর রনির ফ্লাটে রাতে দুজন একসাথে রাত কাটিয়ে দেয়া।(আমি)
—-ছি!ছি!ছি! ভাইয়া কি যে বলেন না এইসব!আপনার কাছে ভালবাসার সুন্দর একটা ব্যাখা চাইছিলাম।
—- এর চাইতে সুন্দর ব্যাখা আমার জানা নাই।(আমি) অতঃপর বালিকা মুখটা বাঁকা করে চলে গেল! আরেক জন, ভাইয়া আপনার কাছে ভালবাসা মানে কি?
—-প্রেমিকার কোমরে হাত রেখে চলা।আর মাঝে মাঝে ঝোপ ঝারের নিচে গিয়েচাপাচাপি!(আমি)
—-ছি!ভাইয়া আপনার মুখে কি কিছুই আটকায় না?
—-মানুষ এসব নোংরা কাজ করে বেড়ায় তারা খারাপ না আর আমরা দেখলে বললেই খারাপ?(আমি) এবার ছেলেটাও মুখটা প্যাচার মত করে চলে গেল।যাক তাতে আমার কি! আসলে বর্তমান প্রেক্ষাপট আমি কথাগুলা সরাসরি বলেছি,এই জন্য হয়তো উত্তরগুলো পছন্দ হয়নি তাদের।

বর্তমানে ভালবাসা মানেই নোংরামি! (কিছু আছে ব্যতিক্রম )ব্যতিক্রম কখনো উদাহরণ হতে পারে না। বর্তমান ভালবাসা মানে কোমরে নাভির নিচে হাত দিয়ে প্রেমিকার সাথে রাস্তায় হাটা,মাঝে মাঝে পার্কে ঝোপের ঝারের মধ্যে চাপাচাপি আর নিজের যৌন চাহিদা মেটানোর জন্য রনির ফ্লাট, মোটামুঠি এসবের মধ্যই সীমাবদ্ধ।আপনি এসব করতে না পারেন তাহলে আপনি ক্ষেত,গেয়ো মার্কা ছেলে!!বাহ কি ভালবাসা।এই ছেলে/মেয়ে তোমাকেই বলছি!যদি তোমার যৌন চাহিদা মেটানোই হয় ভালবাসার ঊদ্দেশ্য।তাহলে বলবো ভালবাসাকে তুমি চরমভাবে অসম্মান করেছো।তোমার আর পতিতার মাঝে কোন কোন পার্থক্য নেই।তারা পেটের দায়ে এই পেশায় নেমেছে।তাদের আমারা অনেকেই ঘৃনা করি তাদের নাম শুনলে নাক ছিটকাই! আপনি তার চাইতেও খারাপ এতোই যদি ইচ্ছা হয় তো যান না পতিতালয়ে কিছু টাকা ইনকামও হবে চাহিদাও মিটবে।শুধু শুধু একটা মেয়ের সতীত্ব নষ্ট করার কি আছে।

আসলে বর্তমান ভালবাসা বলতে কিচ্ছু নাই।সব কাপর খোলার ধান্দা।সেটা দুদিন আগে হোক আর পরে হোক।আর কিছু মেয়েকেও দেখি।তাদের বয় ফ্রেন্ডের কাছে নিজের সতীত্ব বির্সজন দিতে!আমার প্রশ্ন হলো? নিজের সতীত্ব দিয়ে কি আপনার ভালবাসা প্রমাণ করেন?আহা ভালবাসা!একটা মেয়ের সব চাইতে বড় দামী জিনিস হচ্ছে তার সতীত্ব!আর সেটাই যদি না থাকে তাহলে বাসর ঘরে স্বামীর জন্য কি রাখলেন! একবার চিন্তা করেছেন এই নষ্ট শরীর নিয়ে কিভাবে দ্বারাবেন আপনার স্বামীর সামনে।একটা বার ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করবেন এই কাজটা করার আগে।আরেকটা কথা আপনারা হয়তো ভাবেন ছেলেটা তো আমাকে ভালবাসে।দুদিন পর তো সে আমাকে বিয়েই করবে।এটা করতে কি সমস্যা তাহলে।মনে রাখবেন ছেলেরা হলো মৌমাছি!মধু খোজার মিশনে তারা নামে মাঠে(সবাই এক রকম নয়) এই মধু আহোরণ করার জন্য যা যা করা দরকার সবই তারা করবে।তাই বলছি মেয়ে তুমি সাবধান!

আপনাকে যে সত্যিকারের ভালবাসে সে কখনো আপনাকে অপবিত্র করবে না বিয়ের আগে।সে সব সময় চাইবে সম্পর্টার মাঝে পবিত্রতা ধরে রাখতে।যে ছেলে এমন কিছু আবদার করবে আপনার কাছে তাকে যত দ্রুত সম্ভব ভুলে যান।কারণ আপনার সাথে রাত কাটানোর পর সে চিন্তা করবে আপনার মত আরেক জনকে পটানোর।বিয়ে তো দূরের কথা তখন শুধু আপনার চোখের জল ফেলানো ছাড়া কিছুই করার থাকবে না। অনেক সম্পর্কের মাঝে দেখা যায় ওরা নিজেদের ইচ্ছায় খারাপ কাজ করে মজা নেয় দুজনেই আর ছেলেটা যখন বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায় তখন দেয় ছেলেটার নামে ধর্ষণ মামলা!বিষয়টা খুব হাস্যকর লাগে অামার কাছে। এটা কোন ধরনের আইন।?বিচার হলে দুজনেরই হওয়া উচিত।

আসলে ভালবাসা খারাপ না ভালবাসার মানুষগুলা খারাপ।আমারা নিজেরাই ভালবাসাটাকে অপবিত্র,নোংরা করে ফেলি।এরকম লোকের সংখ্যা কম কিন্তু এই কম সংখ্যাক লোকের জন্যই সবাই এটাকে খারাপ দৃষ্টিতে দেখে।আপনার ভালবাসা, আপনারই পবিত্র রাখার দায়িক্ত। আপনি যেমন কর্ম করবেন তেমনই ফল পাবেন।আজ আপনি অন্য একজনের বোনের সাথে রাত কাটাবেন।দেখবেন একদিন আপনার বোনও কারো নিচে শুয়ে আহ!উহ! করছে।বোন না থাকলে মেয়েটা আপনার এমন হবে।।তখন বলার কিছু থাকবে না কারণ এসব আপনার পাপের ফল।তখন মেয়েকে, বোনকে শাসন করতে গেলে নিজের বিবেক বাঁধা দিবে আমি নিজেই তো এমন চরিত্রের ছিলাম।দুনিয়ার ধার দুনিয়াতেই শেষ। আমরা সব সময় অন্যের সমালোচনা করতে ভালবাসি।কিন্তু একবার নিজের পজিশনটা চিন্তা করুন অন্যকে খারাপ বলার আগে নিজে কতটা ভাল আপনি সেটা ভাবুন একবার।

রাস্তায় অন্যার বোনের দিকে হা করে তাকিয়ে থাকেন!মেয়েটা কিভাব হাটে কোমরের সাইজ,বুকের সাইজ এইসব খুজেন! তাহলে মনে রাখবেন আপনার বোন যখন রাস্তায় চলে তখন ঠিক তেমন ঘটনা ঘটবে। অন্যোর বোনের পোষাকের , মেক আপ এর সমালোচনা করেন অথচ এই আপনি আপনার বোনের জন্য মেকাপ বক্স,টাইট ফিট জামা কিনে এনে দেন আপনার বোনকে।অন্যকে সচেতন করার আগে নিজে সচেতন হোন। অন্যের দৃষ্টি ভংগি বদলানোর আগে নিজের দৃষ্টিভংগি বদলান।তাহলে বদলে যাবে সমাজ, বদলে যাবে সমাজের মানুষগুলা।আর কিছুদিন পর (১৪ ফেব্রুয়া) অাসছে নষ্টামির সেরা দিন।মানে ভ্যালেনটাইনস ডে!এই দিনটা সম্পর্কে অনেক লেখক অনেক কিছু লিখে গেছেন,এবং লিখবেন।

কিন্তু নোংরামি বন্ধ হবে না তাতে।এসব কথা তাদের কানে যাবে না।আমি শুধু বলতে চাই আপনি আপনার ছেলে,মেয়ের অভিভাবক থেকে বন্ধু হয়ে যান দেখবেন আপনার ছেলে মেয়ে সারাদিন কোথায় অাছে, কি করছে সব খবর আপনি জানতে পারবেন। সব নজরে রাখতে পারবেন। খারাপ পথ থেকে সরিয়ে আনতে পারবেন। আপনার বোন, আপনার মেয়ের সতীত্ব আপনারই রক্ষা করা দায়িক্ত।আপনার সন্তান , আপনার,ভাই বোনকে আপনিই খারাপ পথ থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন।। সব শেষে বলব! ভালবাসার জন্য কোন স্পেশাল দিন লাগে না! প্রত্যকটা দিন আপনি আপনার প্রিয়জনকে আপনার মত করে অবিরাম ভালবাসবেন। দেখবেন তখন আপনার কাছে ৩৬৫ দিনই ১৪ ফেব্রুযারী মনে হবে।

প্রকৃত ভালবাসা তো সেটাই যাকে আপনি চোখ বন্ধ করলেই দেখতে পান,দূরে থাকলেও কাছে আছে এটা অনুভব করেন,তার মায়াবী মুখটা দেখার জন্য অপেক্ষা করেন সে কখন ঘুমায়।তার কথা মনে হলে বুকের বাম পাশটা চিন চিন ব্যাথা করে,যার দেওয়া কষ্টগুলো আপনি সইতে পারেন,যাকে পাবেন না ভেবেই নিঃস্বার্ত ভাবে ভালবেসে যাচ্ছেন,যাকে একটু দেখার জন্য আপনার মনটা ছটফট করে,যার প্রতি রয়েছে আপনার শ্রদ্ধা, বিশ্বাস অার অফুরন্ত ভালবাসা।

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত