-কিরে কই
-ঘুমের দেশে
-তুই পাঁচ মিনিটের ভিতরে আমার বাসার সামনে আস
-কেন
-তরে বলছি আসতে
-রাখ,আসতেছি
আমি জুবায়ের।এই বছর ইন্টার ফার্স্ট ইয়ারে পড়ি।আর যার সাথে এখন কথা হলো, তার নাম ফাবিয়া।আমার ক্লাসমেট। ক্লাসমেট বললে ভুল হবে।আমার বেস্ট ফ্রেন্ড।একে অপরকে ছাড়া এক মুহুর্ত থাকতে পারি না। রাত্রে ফেসবুক থেকে ৩ টার সময় বিদায় নিয়ে ঘুম দিছি,ফাবিয়ার ফোনে ঘুম থেকে ওঠলাম।এই মেয়ে কোন সময় কি করে ফেলে,মেয়ে নিজেই জানে না।আমার এত স্বাদের ঘুমটা হারাম করে আমাকে বলে নাকি তার বাসার সামনে যেতে। তাড়াতাড়ি যাই,তা না হলে এই মেয়ের হাত থেকে আমাকে আজ নির্গাত মাইর খাইতে হবে।ফ্রেস হয়ে রওনা দিলাম। ফাবিয়ার বাসার সামনে গিয়ে ফোন দিলাম।
-কিরে এতক্ষন লাগে আসতে(ফাবিয়া)
-সরি দুস(জুবায়ের)
-চল
-কোথাই
-কলেজে
-মানে,আজ তো কলেজ বন্ধ
-আরে,বুদ্ধ বাসাত থেকে কলেজের নাম করে বেরিয়ে এসেছি,আমরা আজ ঘুরতে যাব
-কোথাই যাব ঘুরতে
-আমার সাথে আস
-না,আগে বল কোথাই যাব
-আমার সাথে আসতে তরে কইছি(আমার চুল গুলো ধরে এই কথাটা ফাবিয়া বলল)
-আরে আস্তে আস্তে,ব্যথা পাচ্ছি তো
-তাহলে চল
-চল
আমরা দুজনে চলে গেলাম পার্কে ঘুরতে। পার্কে ঢুকার সময় ফাবিয়া একটা ছেলের সাথে ধাক্কা খাই।ছেলেটা দেখতে অনেক সুন্দর।আমার চেয়েও বেশি স্মার্ট।দেখে মনে হয় বড় লোক বাবার সন্তান।যাই হোক তারা একে অপরকে সরি বলে চলে গেছে। আমি আর ফাবিয়া একটা বেঞ্চিতে বসে রইলাম।তখন ফাবিয়া বলল…..
-দুস আমি তো ক্রাশ খাইছি
-মানে
-আমিঐ ছেলেটাকে ভালোবেসি ফেলেছি
-তো এখন কি করা
-দুস তুই ঐ ছেলেটার সাথে আমার প্রেম করিয়ে দে
-আচ্ছা,আমি দেখতেছি
-ওকে দুস
সেদিনের মতো আমরা ঘুরে বাড়িতে চলে আসি।বিকেল বেলা ঐ ছেলেটার খুঁজে বেরিয়ে পড়লাম।খুঁজতে খুঁজতে এক সময় পেয়ে গেলাম।ছেলেটার নাম নাকি আরফান ইসলাম শান্ত।আমাদের পাশের পাড়ার ছেলে। সবাই এক নামে চিনে শান্ত ভাই।বড় লোক বাবার একমাত্র সন্তান। বিস্তারিত আরো অনেক কিছু জানতে পরলাম।সন্ধায় বাড়িতে চলে আসি।এসে ফাবিয়া কে কল দেই…
-কিরে দুস
-হে বল,কি খবর
-খবর ভালো, ছেলের নাম আরফান ইসলাম শান্ত।আমাদের পাশের পাড়ার ছেলে। সবাই এক নামে চিনে শান্ত ভাই।বড় লোক বাবার একমাত্র সন্তান।এই বছর অনার্স ফার্স্ট ইয়ারে পড়ে।
-থ্যাংক ইউ দুস্ত
-হুমম
-তাহলে এখন রাখি,কাল সকালে কথা হবে
এভাবে প্রায় সাপ্তাহানিক যাওয়ার পর, এক সময় ফাবিয়া শান্ত কে প্রপোজ করে। আমার মাধ্যমেই সব কিছু হয়েছে।শান্তও প্রপোজাল একসেপ্ট করে।এখন তারা প্রায় অনেক সময় ঘুরতে যাই।আমিও তাদের সাথে যেতাম,বাট এখন আর যাই না।কারন..
-আচ্ছা ফাবিয়া, জুবায়ের আমাদের সাথে আসে কেন (শান্ত)
-জুবায়ের আমার বেস্ট ফ্রেন্ড(ফাবিয়া)
-বেস্ট ফ্রেন্ড হলেই আসতে হবে
-আসলে সমস্যা কি
আমি দূর থেকে তখন তাদের সব কথোপকথন শুনতে ছিলাম। এর পর আমি সেখান থেকে চলে আসি।আসলেই তো আমি কেন তাদের সাথে যাব।তারা দুজনে প্রেম করে।একে অপরের কতো খতা বলবে, আমি কেন তাদের মাঝে যাই।না না আর যাব না।
এর পর থেকে আমি আর তাদের সাথে যাই না।অনেক দিন হয়ে গেল।ফাবিয়ার সাথে দেখা হয় না।আর ফাবিয়াও আমাকে কোনো ফোন দেই না।ভালই হলো আমি তাদের প্রেমটা করিয়ে দিলাম, আর আজ তারা আমার কোনো খুঁজ খবর নেই না। ফাবিয়া তো আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। ফাবিয়াও কি একটা খবর নিতে পারে না। এই বলে আনমনে হাঁটতেছি।হঠাৎ আমার পাশ দিয়ে একটা মোটরসাইকেল গেল। মোটরসাইকেলে আমি শান্তবে দেখলাম। সাথে অন্য একটা মেয়ে শান্তর সাথে বসা। তাহলে কি শান্ত না না তা হবে কেন.?আমি কি ভাবতেছি এগুলা।ফাবিয়া তো শান্তকে অনেক ভালোবাসে আর শান্তও। অনেক দিন পর ফাবিয়াকে ফোন দিলাম।
-Happy Birthday দুস্ত (আমি)
-তর মন আছে
-তো কি,আমি কি করে তকে ভুলে যাব
-আচ্ছা,আজ সন্ধায় আসতে পারবি
-কোথাই
-আমি আর শান্ত কেক কাটব
-তো আমি কি করব
-তুই থাকবি
-না না
-তরে বলছি থাকবি
-দেখা যাক
-তকেই আসতেই হবে
-আচ্ছা(ফাবিয়ার জুরাজুরিতে আর না করতে পারলাম না)
সন্ধায় ফাবিয়ার কথা মতো চলে গেলাম। গিয়ে দেখি ফাবিয়া বসে আছে।শান্ত এখনো আসে নাই।আমি গেলাম।যাওয়ার কয়েক মিনিট পরেই শান্ত আসল।কেক কাটা হয়ে গেল,খাওয়া ও হয়ে গেল। আমি হাত ধুয়ে আসার সময় শান্ত বলতেছে..
-আজকেও জুবায়ের কে আনতে হয়েছে
-আনলে কি সমস্যা
-না,আজকে একটা ভালো দিন,ভাবছিলাম
তুমি আর আমি দিনটা ভালো ভাবে কাটাব আমি তখন তাদের কাছে ফিরে আসে নাই। সেখান থেকেই চলে আসি। তারপর অন্য একদিন আবার শান্তকে দেখলাম মোটরসাইকেল দিয়ে যাইতেছে। তার পিছনে বসা অন্য একটি মেয়ে।তার মানে কি শান্ত। আমি যা ভাবছি তাই।না না এবার ফাবিয়াকে বলতে হবে।পরের দিন ফাবিয়াকে ফোন দিয়ে বললাম তর সাথে আমার কিছু কথা আছে।বিকালে দেখা করবি। বিকেলে ফাবিয়া আসে।তারপর আমি সব ফাবিয়াকে খুলে বললাম।ফাবিয়া কোনো ভাবেই তা বিশ্বাস করে না।তখনই শান্ত এসে হাজির।ফাবিয়া শান্তকে সাথে সাখে এসব কথা বলে।শান্ত বলে তোমার কি বিশ্বাস হয়,যে আমি এরকম।ফাবিয়া বলে না।তারপর ফাবিয়া যা বলল….
-শুন জুবায়ের তুই আমার বেস্ট ফ্রেন্ড,কিন্তু তুই যা বললি,তা কি মানা যাই
-বিশ্বাস কর ফাবিয়া
-ঠাসসসস
ফাবিয়া আমাকে থাপ্পর মারল আমি তখন সাথে সাথে সেখান থেকে চলে আসি। আর কোনো দিন ফাবিয়ার সাথে যোগাযোগ করি নাই।এভাবে চলে গেল অনেক দিন।আমিও ফাবিয়াকে কোনো ফোন দেই না।ভালই মনে হয় আছে ফাবিয়া। বড় লোক বাবার একমাত্র ছেলের সাথে প্রেম করে।তাহলে তো ভালই আছে। একদিন ফাবিয়া আমাকে ফোন দিন।প্রায় পাঁচটা রিং হওয়ার পরও আমি ফোন রিসিভ করি না।তারপর ভাবলাম তাহলে ফোনটা ধরি……
-হ্যালো
-ওপাশ থেকে শুধু কান্নার আওয়াজ শুনা যাচ্ছে
-কিরে কি হয়ছে
-কোনো শব্দ নাই,শুধু কান্না
-কিরে কথা বল
-দুস সরি রে,আমি সেই দিন তকে এই ভাবে অপমান করার জন্য,আবারাও কান্না
-আরে কি হয়ছে বল
-দুস,সেই দিন তর কথাটা না শুনার জন্য,আমাকে শান্ত তার সাথে রাত কাটানোর জন্য বলে,আমি না করি,তারপরও আমাকে অনেক জুরাজুরি করে,আমি না করে দেই,শান্ত অনেক মেয়ের সাথে রাত কাটিয়েছে।আমাকেও সেই অফার দিছে। আমি শান্তকে ব্রেকআপ দিয়ে চলে আসি।
-আমি তখন নিস্তব্ধ
-কিরে কিছু বল
-কি বলব
-সরি রে দুস,আমাকে ক্ষমা করে দিস
-ওকে
এরপর আমরা আবার আগের মতো একসাথে চলতে থাকি। আপনাদেরকে একটা কথা বলি আমিও ফাবিয়াকে পছন্দ করি। বাট বলব বলব বলে আর বলা হয়ে ওঠে নি।এর মাঝেই তো ফাবিয়া শান্তর সাথে রিলেশনে ঝড়িয়ে যাই।যাক তাহলে এখন বলব।
-ফাবিয়া একটা কথা
-কি কথা বল
-আমি তকে ভালোবাসি…অনেক আগে থেকেই তকে আমি পছন্দ করি।কিন্তু বলা হয়ে ওঠে নি।বলব বলে, এর মাঝেই তুই শান্তর সাথে রিলেশনে ঝড়িয়ে গেলি
-ঠাসসসস
-থাপ্পর মারলি কেন
-তুই যদি এই কথাটা আমাকে আগে বলতি তাহলে,আমি আর শান্তর সাথে কি রিলেশনে ঝড়াতাম না
-এবার তো বললাম
-তাহলে প্রপোজ কর
-সাথে তো ফুল নাই
-ফুল লাগবে না আমি শুণ্য হাতে, হাটু গেরে বসে ফাবিয়ার একটি হাত ধরে বললাম….
-আমি তোমাকে ভালোবাসি ফাবিয়া, হবে কি আমার জীবন সঙ্গীনি
-হুমম,আমিও তোমাকে ভালোবাসি