চারিদিকে পিনপতন নিরবতা। একটা গাছের পাতা পড়ার শব্দও যেখানে বিকট। যেদিকে চোখ যায় কেবলই ধুধু প্রান্তর। চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়েও কোনমতে দাড়িয়ে অাছে মাটি-কাঠের ঘরগুলি। প্রাণের অস্তি ত্ব বিদ্যামান প্রাণনাশের ভয়ে সব নিশ্চুপ। যেমনটা তুফান শেষে হয়। মাথা তুলে দেয়ালের ফাঁক দিয়ে তাকায় ক্লাস ফাইভেত পড়ুয়া ছাত্র রব। দূর রাস্তায় ধুলা অদৃশ্য হয়ে যায় একটি জীপ। রব অানন্দে উচ্ছসিত হয়ে সেটা সবাইকে জানান দেয়। অাশেপাশের মানুষজন বের হয়ে অাসে সরবে।
সবাই অাবার নিজ নিজ জিনিসপত্র গোছাতে থাকে। রবের বাবা অারো কয়েকজনকে সাথে নিয়ে লাশগুলো দুরে পাহাড়ের কাছে ফেলে অাসে। লোকালয়ে অাবার প্রাণ ফিরতে থাকে। দেশে সরকারী দলীয় লোক অার বিরোধী দলীয় লোকের মধ্যে ঝামেলা চলতেই থাকে। স্কুলটিও বন্ধ হয়ে পড়েছে। রব তাই ইদানিং গান বাজনায় মজেছে। দাদার রেখে যাওয়া তানপুরাটা নিয়ে নির্জন কোন জায়গায় গিয়ে গলা ছেড়ে গান গাওয়ার চেস্টা করে। কাপড়ের পুটলি দিয়ে বানানো ফুটবল। সেটাতে লাথিয়ে দুপুর পার করে দেয় গ্রামের ছেলেগুলা। অার বিকালে দূর কোথাও চলে তার গানের অাসর। যেখানে রব শিল্পী, রবই শ্রোতা। এভাবেই চলতে থাকে দিন। একদিন রবের বাবা তাকে দেখে ফেললেন গান গাওয়া অবস্থায়,
: রব তুমি এই গান কোথা থেকে শিখলে?
– জানিনা বাবা।
: এগুলো কখনো, কারো সামনে গাইবেসনা।
– কেন? স্বাধীনতা কি খারাপ কিছু?
: বাড়ি চলো সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে।
রব কথা না বাড়িয়ে তানপুরাটা কাধেঁ নিয়ে বাবার পিছুপিছু হাটা দেয়। স্কুল খুলেছে কয়েকদিন হলো। রব তার গানের জন্য স্কুলে সুপরিচিত হয়ে উঠেছে। তার গানে নাকি তারুণ্য অাছে। অাছে স্বাধীনতার ডাক। ধীরে ধীরে পুরো এলাকাজুড়ে পরিচিত হতে থাকে। স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে অার কলেজে যেতে ইচ্ছে হয়নি। গান নিয়েই পড়ে থাকে সারাদিন। বাপ দাদাদের দেখাদেখি তামুক খাওয়া শুরু করেছে। রবকে এই ব্যাপারে কিছু জিজ্ঞেস করলে সে বলে তামুকের ধোঁয়া ভেতরে না গেলে নাকি তার সঙ্গীতের সূর পোক্ত হয়না। সারাক্ষণ সঙ্গীত অার তামুকে বুদ হয়ে থাকে।
অাস্তে অাস্তে বিভিন্ন জায়গায় কনসার্টের ডাক অাসতে থাকে। বিভিন্ন শো করতে করতে পুরো দেশজুড়ে খ্যাতি অর্জন করে নেয় রব। একটা সময় রবের বাবা ও মা পৃথিবী ছেড়ে বিদায় নেন। রবের ভালো সময়টা দেখে যেতে পারেননি। রব তার বড়বোন রিতাকে নিয়ে শহরে একটি বিলাসবহুল বাড়ি নেয়। গাড়িও কেনা হয়ে যায়। দেশের মানুষজন কিছুটা অামোদপ্রিয় তাই গানবাজনা অনেটকটা পছন্দ করে। ততদিনে দেশের অলিএগলির বাচ্চা বাচ্চা পর্যন্ত রবের নাম জানে। রবের গানে নাকি জাদু অাছে। অকৃত্রিম ভালোবাসার কেন্দ্রবিন্দুতে পৌছে যায় রব। সে শহরে শহরে গিয়ে শোনাতো দেশকে ভালবাসার গান, মুক্তির গান। মানুষ উজ্বীবিত হতো রবের গান শুনে। দেশটা এখনো দাড়াতে পারেনি ঠিকমতো। স্বাধীনতার ২০ বছর হয়েছে মাত্র। সেই প্রথমবার নির্বাচনে যে জাতীয় জনতা পার্টির মানিক সাহেব প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেুন তিনি এখনো ক্ষমতায়। টানা ২০ বছর ধরে। অার বিরোধী দল শ্রমিক পার্টির হাবিব সাহেব চেস্টা করেই যাচ্ছে ক্ষমতায় অাসার জন্য।
এদিীকে রব ও নতুন নতুন প্রেমে পড়েছে। তার ব্যান্ডের ড্রামার হাসির প্রেমে। বিয়েটাও তড়িঘড়ি করে সেরে ফেলে রব। রবের ছোটবেলার বন্ধু জনি এখন তার ম্যানেজার। রবের সবকিছুই এখন জনি সামলায়। নতুন বিয়ে অার শহর ঘুরে ঘুরে কনসার্ট দুটো মিলে সবকিছু ভালই চলছিলো রবের। ছ’মাসের মাথার হঠাৎ তার স্ত্রী হাসি মারা যায়। রব খুব বিষন্ন হয়ে পড়ে। গান গাওয়া অনেীকটাই কমিয়ে দেয় রব। দেশের অবস্থা অাবার খারাপ হয়ে গেছে। নতুন করে নির্বাচন দেবার দাবিতে অাবার অান্দোলনে নামে শ্রমিক পার্টির কর্মিরা। সরকার দল বিরোধী দল সদ্য যুবক হওয়া কর্মীদের হাতেও অস্ত্র তুলে দিয়েছে। দু’পক্ষের সংঘাত চলছে প্রতিদিনই। শতশত যুবকের তাজা প্রাণ ঝড়ে যাচ্ছে। রব যেহেতু দেশব্যাপি তুমুল জনপ্রিয়। সেহেতু দুটি দলই তাকে দলে ভেড়াতে চায়। কিন্ত সে বিনয়ীভাবে তাদেরকে ফিরিয়ে দেয়। রবের বাসার সামনে প্রধানমন্ত্রী মানিক সাহেবের দেয়া দুজন অস্ত্রধারী দেহরক্ষী সবসময় মজুদ থাকে।
দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যাক্তিটিকে নিরাপত্তা দেয়া তো একজন প্রধানমন্ত্রীরই দায়িত্ব।
রব দেশের এমন মারামারি, কাটাকটি অবস্থা সহ্য করতে পারেনা। বিভিন্ন দেশ থেকে অফার অাসতে থাকে শো করার জন্য। কিন্ত রব সাড়া দেয়না। সে দেশের জন্য কিছু করতে চায়। সে সারাদেশে শান্তি বজায়ের জন্য জাতীয় স্টেডিয়ামে ‘শান্তি কনসার্ট’ এর অায়োজন করে।
সেটার জন্য অাগেভাগে বিভিন্ন বেতারে, টিভিতে প্রচারণা চলতে থাকে।
কনসার্টের তারিখ ৫ ডিসেম্বর ১৯৯৬। সরকার দলীয় প্রধানমন্ত্রী মানিক সাহেব নিজ স্বার্থে ৬ ডিসেম্বর নির্বাচন ঘোষণা করলেন। যাতে মানুষ রবের কনসার্টকে তার প্রচারণা হিসেবে ধরে নেয়।
তারপরই কনসার্ট বাতিল করার জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে ফোন অাসা শুরু হয় রবের কাছে। অনুরোধ করা হয় কনসার্ট বাতিল করার জন্য। পরদিন রব সংবাদ সম্মেলন করে। সে জানায় এটি শুধুমাত্র শান্তি বজায় রাখার জন্য একটি কনসার্ট। এখানে রাজনীতিক কোন মতবাদ নেই। এবং সে কনসার্টের তারিখ কোনভাবেই পাল্টাবে নাহ।
কনসার্টের মাত্র ১ মাস বাকি ছিল। রাতে জনি ও তার বোনের সাথে বসে বসে গান করছিলো রব। গেটের সামনের দুজন প্রহরী উধাও। হঠাৎ দরজা দিয়ে একজন অস্ত্রধারী ঢুকে এলোপাতাড়িভাবে গুলি চালায়। গুলি চালাতেই থাকে ম্যাগাজিন শেষ হয়ে যাওয়া পর্যন্ত। রবের বোন রিতা ঘটনাস্থলেই মারা যায়। অার রবের দিকে তাক করা সব গুলি জনি নিজের পিঠে নিয়ে নেয়।
৮টা গুলি খেয়ে জনিও মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। অস্ত্রধারীর বন্দুকের ম্যাগাজিন শেষ হয়ে গেলে সেও পালিয়ে যায়। রবের সামনে পড়ে থাকে তার বোন রিতার লাশ, বন্ধু ও ম্যানেজার জনির লাশ। রবের প্রাণ বাচাঁতে নিজের প্রাণের অাত্মাহুতি দিল জনি। পুলিশ, এম্বুলেন্স এসে হাজির। লাশগুলো নিয়ে যাচ্ছে। রবের ডানহাতে গুলি লেগেছে। রবকে দেখতে হাসপাতালে বিশিষ্ঠ ব্যাক্তিদের ভীড়। রাতারাতি সারাদেশ উত্তাল। পরদিন সারাদেশ শোকাহত। সবকয়টি পত্রপত্রিকায় লেখালেখি হলো, রবকে গুলি করা হয়েছে! শান্তির প্রতীক রবও গুলির শিকার। রবকে কে মারতে চাইবেল? পুরো মিডিয়া অবাক রবের মত একজন মানুষকে কে মারতে চাইবে? বিভিন্ন গুণীজন রবকে বুঝাতে লাগলে কনসার্ট বাতিল করার জন্য,
: রব তারা তোমাকে অাবার মারতে চেস্টা করতে পারে।
– অামি শো বাতিল করতে পারবো নাহ।
: তোমার বাড়িতে ঢুকে তারা গুলি করে গেছে, তারা অাড়াই লক্ষ মানুষের ভিড়ে তোমাকে টার্গেট করতে পারবেনা?
– অামি শো করছি।
সবাই হতাশ হয়ে ফিরে যায়। রব ধীরে ধীরে সুস্থ হতে থাকে। কিন্তু বোন ও বন্ধু হারানোর শোক ভূলতে পারেনা। তামুকে বুদ হয়ে থাকে। মাথায় কেবল দেশের মানুষগুলোর চিন্তা, মুক্তির চিন্তা। ৫ ডিসেম্বর রবের প্রচন্ড জ্বর। তাও সে কনসার্টে উপস্থিত। সে গান গাইতেব শুরু করে। একটা সময় গানে গানে বলতে থাকে, অামাকে মারতে চাও? হাতে নয় বুকে গুলি করো, তবুও অামার প্রিয় মানুষগুলোকে মেরোনা। অামরা মুক্তি চাই, স্বাধীনতা চাই।
কনসার্টে কয়েকজনকে সরকারী দলের মানিক সাহেবের পোস্টার হাতেও দেখা গেল। অার পরদিন খবরের কাগজের হেডলাইনও সেটাই। ভোট চলছে, ফলাফল বিপুল ভোটে মানিক সাহেব অাবারো নির্বাচিত। রবের প্রচন্ড রাগ হয় নিজের উপর। তার কনসার্টকে রাজনৈতিক পুঁজি করে ফায়দা নেয়া হয়েছে। তাকে বলির পাঠা বানানো হয়েছে। রব সেই রাতেই হতাশ হয়ে ইংল্যান্ডের লন্ডনে চলে যায়। দেশে ঘৃণ্য রাজনীতিতে অনীহা চলে অাসে। সে চিন্তা করে অার দেশে ফিরে যাবেনা কখনো। লন্ডনেই স্থায়ীভাবে বাস করতে থাকে। প্যারিস, সুইজারল্যান্ড এসব দেশে কনসার্ট করতে থাকে। লন্ডনে সুন্দরী মিলির সাথে তার পরিচয়। ভাবের অাদান প্রদান ঘটে। ২য়বারের মত বিয়ে করে রব। কারণ তার অাপন কেও অার বেচেঁ নেই। শেষ রক্ষা মিলি। মিলিকে নিয়ে রব বিভিন্ন দেশ ঘুরতে থাকে। এভাবেই কেটে যায় দু বছর। রবের একটি পুত্র সন্তান হয়। রব জুনিয়র নাম রাখা হয় তার। এদিকে দেশ থেকে প্রায়ই ফোন অাসে দেশে ফেরানোর জন্য কিন্তু রব ফোন রিসিভ করেনা।
তার অার ফেরার ইচ্ছে নেই। দেশের অবস্থা তখন স্বরণকালের সবচেয়ে খারাপ পর্যায়ে চলে যায়। টিভিতে পর্যন্ত রবকে ফিরে অাসার অামন্ত্রণ দেয়া হয়। লাখো লাখো লোক রাস্তায় নেমে রবকে অামন্ত্রণ জানাতে থাকে দেশে ফিরে অাসার জন্য। টিভিতে এসব দেখে রবের অার সহ্য হয়না। এই মানুষগুলির জন্যই তো কিছু করতে চাইছিকল রব। তাহলে তাদের ডাক কিভাবে এড়িয়ে যায়? রব অনে ক ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নেয়। রব বিশ্ব মিডিয়ায় জানায় এবার তার দেশে সে শান্তি ফিরিয়ে দিবে। প্রধানমন্ত্রী মানিক সাহেবকে ফোন করে বলে একটি “পিস নেশন” কনসার্ট অায়োজনের জন্য। এবং তিনি যাতে সেই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিসথি হিসেবে অাসেন। রব অাগেরদিন রাতে ব্যাগ গোছাতে গোছাতে মিলির সাথে কথা বলে,
: তুমি যাচ্ছনা অামার সাথে।
– কেন?
: দেশে এখন সেইফ নাহ।
– তুমি গেলে অামিও যাবো।
: অামি ৩ দিনের ভিতর চলে অাসব।
– যাইহোরক অামিও যাচ্ছি।
রব মিলির সাথে কথায় না পেরে মেনে নেয়। বিকালে এয়ারপোর্টে রবকে রিসিভ করার জন্য এত মানুষ এসেছে যে তিল ধারণের ঠাই নেই। রব হাত নেড়ে সবাইকেঅ ধন্যবাদ জানায় এবং সুশৃংখলভাবে বাড়ি ফিরে জাওয়ার অনুরোধ করে। রব ও মিলিকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে উঠে। অতিবরিক্ত ক্লান্ত থাকায় শুয়ে পড়েছে তাড়াতাড়ি।
সারাদিন মিলিকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি, শহরের বাসা এসব ঘুরে ঘুরে দেখাতে থাকে। সন্ধ্যা থেকে কনসার্ট শুরু। রবের গানের জাদুতে দুলছে পুিরো স্টেডিয়াম। রব ও অাজ গানের সাথে সাথে নাচ করছে। যেন তার শত বছরের মনের বাসনা অাজ পূর্ণ হয়েছে। শান্তির বিচরণ চারিদিকে। প্রথম সারির একদিকে বসে অাছেন প্রধানমন্ত্রী মানিক সাহেব। অন্যদিকে বিরোধী দলের প্রধান হাবিব সাহেব। রব তাকে নিজেই ফোন করে দাওয়া দিয়েছে। কনসার্ট শেষের পথে একদম। রব স্বাধীনতা নিয়ে লেখা একটি গান ধরে। এবং হাতের ঈশারায় প্রধানমন্ত্রী এবং বিরোধী দলের প্রধানকে স্টেজে অাসার অামন্ত্রণ জানায়। দুজন স্টেজে উঠলে রব দুজনের হাত মিলিয়ে দেয়,
গভারমেন্ট,
বায় দ্যা পিপল,
অফ দ্যা পিপল,
ফর দ্যা পিপল।
তিনজনে হাসিমুখে কোলাকুলি করে। যুগযুগ ধরে হত্যাযজ্ঞ দেখার পর দুই নেতার এমন ভালবাসার মুহুর্ত দেখে উল্লাসে ফেটে পড়ে দর্শকরা। তারা গানের সুরে ধন্যবাদ জানাতে থাকে রবকে। রব কনসার্ট শেষ করে অাবার অাসবে কথা দিয়ে লন্ডনের উদ্দেশ্য বিদায় নেয়। তার কিছুদিন পর প্রধানমন্ত্রী মানিক সাহেব পদত্যাগ করেন এবং হাবিব সাহেবকে নিয়ে একটি সুন্দর নির্বাচন দেন। সেই নির্বাচনে হাবিব সাহেবের শ্রমিক পার্টি জয়ী হয়। দুই দলের মতবিনিময় শেষে শান্তি ফিরে অাসে দেশে। দুই দলেরই প্রধান রবকে ধন্যবাদ জানাতে থাকেন। তার একবছর পর তার স্ত্রী মিলি ও সন্তান জুনিয়র রবকে রেখে মারা যান রব।
ডাক্তার জানায় ক্যান্সার হয়েছিল তার। কারণ সে অতিতরিক্ত তামুক নিত। দেশের সবাাই শ্রদ্ধাভরে স্বরণ করে তাকে। সেই ঘটনার ৪০ বছর অাজ। এখনো তার দেশ অপরিসীম শান্তিতে। তার দেশের মানুষগুলো তার গান, ফুটবল, ক্রিকেটকে পুজি করে বেচেঁ অাছে। এতবছর পরও পৃথিবীর মানুষগুলো তাকে ভালোবাসে। স্বরণ করে অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে। একজন মানুষ চাইলেঅ পারে পরিবর্তন করতে। ওয়ান ম্যান ক্যান মেইক ডিফরেন্স সেটার চাক্ষুষ প্রমাণ রব।