—-ঐ আমার ডিম গেলো কই(আপু)
—–তোর ডিম?তুই ডিম পারিস নাকি হি হি হি(আমি)
—-দেখ ডালিম ফাযজামি করবি না
—-আমি আবার কি করলাম।তুই তো জানিস আমি ভালো পুলা
—–আহারে আইছেরে ভালোর চারা তুই। আমার ডিম দে
—–কি মুসকিল তোর ডিম আমি কই পামু।আর তুই কি ডিম পারস নাকি ?যে তোর ডিম বলতেছিস?
—–দেখ বেশি ফাযলামি ভালো লাগে না।আম্মু আমার জন্য যে ডিম প্লেটে রেখে গেছে ঐটা দে !
—-তো বলতেই পারতি মুরগির ডিম দে
—–উফফ তু এত ফাযিল কেনোরে?
—-জানি না তো।তুই বলতো কেনো
—- তুই আস্ত একটা পেইন,, আব্বু যে মিসটেক বলে ঠিকি বলে।দে মুরগির ডিম দে
—-মুরগির ডিম তুই আমার কাছে চাস কেনো? আমি কি মুরগি নাকি যে তরে ডিম দিমু ?
—–উফফফ আল্লা আমারে বাচাও এই ফাযিল পুলার হাত থাইকা !
—–হি হি হি
—–হাসবি না বলে দিলাম নয়তো এক চড়ে তর ৩২ টা দাত ফালাই দিমু !
—–আর আমি ৩২ চড়ে একটা হা হা হা
—-ধুর
রাগ করে চলে প্রিয়া।প্রিয়া আমার বড় আপু। আম্মু নাস্তার সময় যখন আপুর প্লেটে ডিম আর রুটি রেখে চলে যায় আমি তখন আপির ডিম ওহ সরি মুরগির ডিমটা খেয়ে ফেলছি হা হা হা।এই মুরগির ডিম নিয়েই ঝগড়া। রাগ করে চলেই গেলো না জানি এখন আমার কপালে কি আছে কে জানে নিশ্চয় আম্মুর কাছে বিচার দিবে।উফফ বলতে না বলতেই আম্মু এসে হাজির।
—-ডালিম তুই নাকি তোর আপুর ডিম খাইছোস (আম্মু)
—-না আম্মু মিথ্যা কথা(আমি)
—–তুই আমার কাছে মিথ্যা কথা বলবি না। সত্যি করে বল খাইছোস কিনা?
—–সত্যি বলছি আম্মু
—–তাহলে প্রিয়া কি আমায় মিথ্যা বলছে (রাগের ইমু হবে)
—–হুম মনে হয় তোমাকে মিথ্যা বলে আমাকে বকা খাওয়াতে চাইছে
—-এই প্রিয়া এদিকে আয়
—–হ্যা আম্ম(প্রিয়া)
—-তুই আমায় মিথ্যা বলছিস কেনো।অ ডালিম তো বলছে ও তোর ডিম খাই নাই(আম্মু)
—-না আম্মু ও সত্যি আমার ডিম খাইছে(আপু)
—–ডালিম (আম্মু চিৎকার করে)
—–না আম্মু আমি ওর ডিম খাই নি।
আমি তো মুরগির ডিম খাইছি(আমি) বলেই দিলাম দৌড়। জানি এখন বাসায় থাকা যাবে না।বাসায় থাকলে আম্মুর বকা থাপড় খেতে হবে। যা খাওয়ার কনো রকম ইচ্ছা আমার নাই।এমনি আপির ডিম থুক্কু মুরগির ডিম খাইয়া পেট ভরে গেছে।
রাত হয়ে গেছে এখন বাসায় যাওয়া দরকারনা হলে বারোটা থেকে চব্বিশটা বাজাবে।বাসার কাছাকাছি এসে গেছিখুব ভয় করছে না জানি আম্মু আজ আমারে কিকরে।কলিংবেলটা বাজিয়ে একটু দূরেদাঁড়িয়ে রইলাম অবস্থা ভালো না হলে দৌড় লাগাবো।দরজা খোলার শব্দ পাওয়া যাচ্ছে আর আমিও রেডি হয়েই আছি দৌড় লাগানোর জন্য। যাক বাচা গেলো শেষমেশ আপুই তাহলে দরজাটা খুললো
—–আসেন ভালো পুলা ভিতরে আসেন(আপু)
——আম্মু কইরে(আমি)
——-লাঠিতে তেল দিতেছে
——কেনো(ঢুক গিলে)
—–আপনি ঢুক গিলছেন কেনো?আপনিতো ভালো পুলা আপনাকে মারবে না
—–তাহলে তেল দিচ্ছে কেনো
—–ফাযিল পোলাকে পিটাতে হি হি হি
——তুই না আমার লক্ষি আপি। এবারের মত বাচা প্লিজ
——-পারবো না যা ভাগ
—–প্লিজ প্লিজ প্লিজ আপি
—–আচ্ছা বাচিয়ে দিবো।নে এখন যা দেয়ার তাড়াতাড়ি দে(হাত বাড়িয়ে দেয় আমার দিকে)
—–কি দিবো
——কিছু না আমি গেলাম
—-না না শুন প্লিজ
——হুম বল
——–এই নে ধর(৫০০ টাকা দিলাম)
—–আম্মু রান্না করতেছে তুই আমার পিছু পিছু আয়।
—–ওকে
খুব ভয় করছে যদি আম্মু দেখে ফেলে।আস্তে আস্তে আপির পিছু পিছু আমার রুমে চলে আসলাম। না এখন আর ভয় করছে না এখন আরামের একটা ঘুম দিবো।ঘুমাতে যাবো ঠিক তখনি আম্মুর ডাক।
——ভালো পুলা এই দিকে আসো তো বাবা (আম্মু) আমার শরীরে ভূমিকম্প শুরু হয়ে গেছে তার পর ও আম্মুর কাছে গেলাম। আপুও আম্মুর কাছে বসে আছে আমাকে সাহস দিচ্ছে ইশারায় কিছু হবে না আমি আছি।
—-হ্যা আম্মু(আমি)
শুরু হয়ে গেলো ঝড়। অনেকগুলো বকা খেতে হল আমায়।রাগ করে রুমে চলে গেলাম।একটু পর আম্মুর ডাক ভাত খাওয়ার জন্য কিন্তু আমি যাই নি।আরো অনেকবার ডাকা হয়ছে কিন্তু আমি যাই নি।একটু পর আপু আসে ভাত নিয়ে। আমাকে টেনে তুলে বিছানা থেকে
—–ওই ওঠ(আপি)
—–খাবো না আমি যা(আমি)
—–খাবি না কেন
——খিদে নেই
——ওকে তাহলে আমিও খাবো না
——-তুই খাইলে খা না খাইলে না খা।
যা এখন থেকে। তোর জন্যই আজ আমাকে আম্মু এত বকা দিলো। কথা বলবি না আমার সাথে যা এখান থেকে। আপি আর কোন কথা না বলে চলে গেলো। কিছুক্ষন পর আম্মু আসলো রোমে
——ডালিম তোর সমস্যা কি(আম্মু)
—–কই কোন সমস্যা নেই তো(আমি)
——দেখ বাবা আমি কি তোকে একটু রাগ করে বকতেও পারবো না। আমি কি তোর খারাপ চাই বল??আমি তোদের দুজনকেই বকা দেই তা তোদের ভালোর জন্যই
——হুম (মাথা নিচু করে)
——তুই কি জানিস প্রিয়া এখনো কিছু খাই নি।সেই সকাল থেকে না খাওয়া শুধু তোর জন্য।
আমি অবাক হয়ে আম্মুর মুখের দিকে তাকালাম।কি কি বলছে এসব যে আপু আমার সাথে সারাদিন ঝগড়া করে আমাকে মারে আজ সেই আমার জন্য না খেয়ে আছে আর আমি তার সাথে খারাপ ব্যবহার করলাম।না আর দেরি করা যাবে না এখনি আমাকে আপুর কাছে যেতে হবে।চলে গেলাম আপুর রুমে।
—–এই আপু সরি(আমি)
—–(……..)
—–সরি তো।আমি আর কখনো তোর সাথে খারাপ ব্যবহার করবা না এবারের মত মাফ করে দে।এই দেখ আমি কান ধরছি।(আপু আমার দিকে তাকিয়ে আছে।চোখদুটি লাল হয়ে গেছে কান্না করতে করতে)
——–(……)
——-চল খেতে চল।আমার অনেক খুধা লাগছে (হাত ধরে টেনে তুললাম)
——তুই যা। আমার খিদে নেই(আপু)
——-চলনা আপু প্লিজ। আমি সত্যি আর এমন করবো না প্রমিচ
——হু আমি আম্মুকে ডাক দিয়ে বললাম আমাদের জন্য খাবার নিয়ে আসতে। আম্মু একটু পর খাবার নিয়ে আসে।
——হা কর(আমি)
—–(চুপ করে আছে)
——কিরে হা করতে বললাম না হা কর খাবারের প্লেট আমার হাত থেকে নিয়ে নিল
——তুই আগে হা কর(আপু)
খাবার আমার দিকে বাড়িয়ে দিলো। আমি শুধু অবাক দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম।এখনো কাদছে হ্যা অন্য কারো জন্য না আমার জন্যই কাদছে।যে আপু সারাদিন আমাকে বকে মারে যার সাথে আমি সারাদিন ঝগড়া করি যাকে মিথ্যা বলে আম্মুর কাছে বকা খাওয়াই সেই আপুটাই আমার জন্য কান্না করছে। নিজেকে আর আটকিয়ে রাখতে পারলাম না জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলাম।খুব ভালোবাসিরে আপু খুব ভালোবাসি তোকে।
সমাপ্তি