তোমাকে ভালোবাসি

তোমাকে ভালোবাসি

-আর কতো দিন চলবে তোমার এসব পাগলামি ( সাইমা)
– যতোদিন এই দেহে প্রাণ রবে। ( আমি )
– পাগলামো র একটা সীমা থাকে সুমন ।
– আমার পাগলামো র কোন সীমা নেই ।
– তাই বলে এতো রাতে তুমি আমার বাসার সামনে এসে দাড়িয়ে থাকবে ??
– আমার পাগলী কে যে খুব দেখতে ইচ্ছে করছিল ।
– তাই বলে আমার বাসায় চলে আসবে।
– তো কি করতাম ?
– কাল তো দেখা হতোই তাই না ?
– হুম ।
– এখন যাও।
– আর একটু থাকি
– না এখুনি চলে যাও।
– ওকে । কাল দেখা হচ্ছে । বাই।

কি করবো আপনারা ই বলেন । পাগলী কে যে খুব ভালোবাসি তাই দেখতে ইচ্ছে হওয়ার সাথে সাথে ওর বাসায় চলে গেছিলাম।

পরের দিন

– এমন পাগলামো কেউ করে ? ( সাইমা)
– কেন ?
– কাল রাতে যদি বাবা যেগে যেত ?
– জাগেনি তো।
– আর কখনো যাবে না ওকে।
– ওকে । সারাদিন ওর সাথে ঘুরলাম । রাতে বাসায় এসে ফোন দিলাম
– জান কি করো?
– কিছু না ।
– ওহহ। খাইছো?
– না। তুমি ?
– না।
– এই বাবা আসছে। বাই।।
– ওকে টেককেয়ার।

খুব ভালোবাসি ওকে । ও খুব ভালোবাসে আমায়। কলেজে আমার তেমন কোন মেয়ে বন্ধু ছিলো না। যদি ও রাগ করে এই ভয়ে । ও যখন যেটা করতে বলতো তখন সেটাই করতাম । ইদানিং ও আমায় কেমন জানি ইগনোর করে । আমায় আর আগের মতো সময় দেয় না । একদিন দেখি ও একটা ছেলের সাথে পার্কে বসে আছে ।

– সাইমা এখানে কি করো?
– তুমি ( অবাক হয়ে )
– হুম । কে ও?
– ও আমার bf…
– মানে ? আমি কে?
– আমার বন্ধু ।
– কি???
– হ্যা। ও এতোদিন বাইরে ছিলো তাই তোমায় সময় দিছি ।
– তার মানে তুমি আমায় ব্যাবহার করছো।
– হ্যা তাই ।
– ঠাসসসসসসস

একটা থাপ্পড় দিয়ে চলে আসলাম । আমি যাকে আমার নিজের জীবনের থেকে বেশি ভালোবাসলাম সে আমায় ব্যাবহার করলো। তারপর থেকে আর ওর সাথে যোগাযোগ করি নি। কিন্ত মনটা বড় বেহায়া । তাই ওর বাসার সামনে যেতাম ওকে একটা বার দেখার জন্য । কিছুদিন কেটে গেল। আগে বুঝতামনা কষ্ট কি। কিন্তু ভালেবাসা হারানোর পর এখন বুঝি কষ্ট কি। কিছুদিন পর কলেজ ছুটি দিলো ঈদের। মেস থেকে বাসায় আসলাম। আজ অনেক দিন পর বাসায় আসলাম। বাসার সবাই আমায় দেখে অনেক খুশি। কয়েকদিন খুব আনন্দেই কাটালাম। তবুও সাইমা কে মনে পরতো।

– কি ব্যাপার আম্মু আজ বাসাটাকে অন্য রকম লাগছে
– হুম।
– কেন?
– তোর আব্বুর বন্ধু এই প্রথম আমাদের বাসায় আসছে।
– ওহ।
– কই যাস।
– খেলতে।
– তাড়াতাড়ি আসবি।
– ওকে।

খেলা শেষে আড্ডা দিয়ে রাত ১০ টায় বাসায় চুপিচুপি ঢুকলাম। তারপর আমার রুমে এসে শুয়ে পরলাম। কিন্ত একি আজ আমার দুইটা কোলবালিশ আসলো কোথাথেকে। যাই হোক ভালোই হলো।কিন্ত এটা কোলবালিশ এতো ভারী কেন। টানলেও আসে না। জোরে টান দিতেই ঠাসসসসসসস।

– আম্মু ভূত ভূত।
– ভূত ভূত ভূত ( কোলবালিশটা) লাইট দিলাম।
– সাইমা তুমি?
– তুমি এখানে?
– এটা আমার বাসা।
– এটা বাবার বন্ধুর বাসা।
– ওহহ। ওকে তুমি ঘুমাও।

ওকে ঘুমাতে বলে বাইরে চলে আসলাম। এক এক করে আবার পুরনো ব্যাথ্যা গুলো সব জেগে উঠছে। মনে মনে ভাবছি এটাও কি হবার ছিলো? সকালে

– সুমন
– হ্যা আম্মু
– ও সাইমা।
– তো আমি কি করবো
– ওকে নিয়ে এলাকাটা ঘুরে আয়।
– পারবো….. যাচ্ছি তো। ওকে নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে একটু দূরে গিয়ে
– হ্যা রাফি কই তুই
– বাসায়। কেন
– আমি তোর বাসার সামনে।
– দারা আসছি। একটুপরে
– বল কি বলবি
– ওনি সাইমা।
– ওহ তোর সাইমা।
– আমার কেউ নাই। তুই ওনাকে এলাকাটা ঘুরে নিয়ে আয়।
– বস লাইন মারতে পারবো ( কানে কানে)
– মাস্ট বি।
– ওকে তুই যা।
– তুমি কই যাও।
– আমি পুরো এলাকা চিনি না। ও আপনাকে  ঘুরাবে। ও খুব ভালো ছেলে।
– কিরে তোরা এখানে কি করিস ( রিয়া)
– ওহ তুই। দোস্ত ওনাকে একটু এলাকাটা ঘুরাবি।
– ওকে। বাট উনি কে?
– পরে বলবো। রাফি তুই আমার সাথে চল।
– শালা একটা সুযোগ নিতে দিলি না।
– আপনি রিয়ার সাথে যান।

খুব সহজ সরল। শুধু দেখতে না। মন থেকেও অনেক ভালো। কখনো কাউকে ব্যাবহার করে না। কথাটা বলেই চলে এলাম। ওর সামনে আর একটু থাকলে হয়তো কেঁদেই দিতাম। আমি ওকে ঘুরতে নিয়ে যাইনি তবুও আশেপাশেই ছিলাম। ভালোবাসি তো। রাতে একা একা বসে আছি।

– কি করো?
– ওহ আপনি।
– এখন আপনি করে বলছো কেন?
– অপরিচিত তাই।
– এক সময় এই আমার জন্যই পাগলামো করতা।
– হুম ওটাই ছিলো আমার বড় ভুল।
– কেন?
– যার জন্য পাগলামো করেছিলাম সেই আমাকে পাগল বলে তাড়িয়ে দিয়েছে।

– যদি সে তোমায় আবার তার জন্য পাগলামি করতে বলে করবে?
– না।
– কেন?
– কারণ ন্যাড়া বেল তলায় একবারি যায়।
– সুমন আমায় ক্ষমা করা যায় না?
– আপনি আবার কি দোষ করলেন?
– সত্যি ভালোবাসা ছেড়ে অভিনয়েেের ভালোবাসার পেছনে ছুটেছি।
– তো এতে আমি কি করবো?
– আবার আমায় আগেরমত ভালোবাসতে পারবে?
– তোমায় ভালোবাসার মতো ভুলটা আর  একবার করতে পারি। কিন্ত বিশ্বাস করার মতো ভুলটা আর করতে চাই না।
– মানুষকে ভুল শুধরাতে একটা সুযোগ দেওয়া লাগে।
– যদি কেউ ভুল করে তবে তাকে সুযোগ দেওয়া দরকার। কিন্ত ছলনাময়ীকে না।
– আমি আর কখনো এমন করবো না।
– কি গ্যারান্টি আছে?
– আমায় বিশ্বাস করতে পার।

– আগেও তো বিশ্বাস করেছিলাম তার মর্যাদা রেখেছিলেন?
– এমন ভুল আর কখনো হবে না।
– আমারও এমন ভুল আর কখনো হবে না।
– কি ভুল?
– আপনাকে ভালোবাসার মতো ভুলটা।
– কেন?
– উনি ছিলো না তাই আপনি আমায় ব্যাবহার করছেন। কিছুদিন পর যদি আমি বাইরে যাই তবে নিশ্চই অন্য কাউকে ব্যবহার করবেন।
– আমার সম্পর্কে তোমার এই ধারণা?
– ধারণা ছিলো না আপনি জন্ম দিয়েছেন।
– সুমন একটাবার বুঝার চেষ্টা করো।
– আমি অবুঝ শিশু নই। অনেক রাত হয়েছে।

ঘুমিয়ে পড়ুন। আর এসব কথা আমায় বলবেন না। সাইমা কাঁদতে কাঁদতে চলে গেল। এখন আমার ইচ্ছা হচ্ছে চিৎকার করে বলতে আমিও তোমাকে ভালোবাসি আজও। কিন্তু বলতে পারছি না। যদি আবার আগের মত ব্যাবহার করে। কষ্ট একবার পেয়েছি। আবার পেতে চাই না। তবে আজ কথাগুলো বলতে পেরে নিজেকে অনেক হালকা লাগছে। হয়তো আজ রাতে চিন্তাহীন একটু ঘুম দিতে পারবো।

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত