–“তুই খুব সুন্দর আর্ট করতে পারিস।”
–“কে বলেছে?”
–“দেখেছি।”
–“কোথায়?”
–“ওইতো একটা প্রতিযোগিতায় কাল দেখলাম।”
–“হ্যাঁ একটু আকটু আঁকার চেষ্টা করি আর কি!”
–“কিন্তু দারুণ হয়।”
–“সত্যি?”
–“একদম সত্যি।”
মেয়েটার নাম নীলিমা। পরিচয়টা ফেসবুকেই। বেশ কিছুদিন কথা বলতে বলতে খুব ভালো একটা বন্ধুত্ব হয়ে গেছে। তবে এখন পর্যন্ত কেউই কাউকে দেখি নি।
–“আচ্ছা আসিফ একটা কথা বল তো।”
–“বল।”
–“আচ্ছা আমরা কি কখনও কেউ কাউকে দেখব না?”
–“অবশ্যই দেখব।”
–“কিন্তু সেইটা কবে?”
–“তা তো জানি না।”
–“তোর থেকে ছবি চাইলেও তো তুই দিস না।আমি দিতে চাইলেও তুই দেখতে চাস না।”
–“এটাই ভালো। যতদিন না আমি বলব,ততদিন কেউ কাউকে দেখব না।”
–“কিন্তু কেন?”
–“আমার ইচ্ছে।”
–“আজিব ধরণের ইচ্ছে তোর।যেখানে সবসময় ছেলেরাই আগ বাড়িয়ে মেয়েদের ছবি দেখতে চায় আর সেখানে আমিই আগে দেখতে চাচ্ছি কিন্তু তুই দিতে চাচ্ছিস না।”
–“ছেলেদের ছবি তো তাদের টাইমলাইনে দেওয়াই থাকে। মেয়েরা সেখান থেকে তাদের দেখে নেয়। যার জন্য তারা ছেলেদের কাছে ছবি চায় না। বলতে গেলে এইটা তাদের একটা ট্রিকস।”
–“হু বলছে তোরে!”
–“আর তাছাড়া আমি একটু ভিন্নরকম।”
–“অদ্ভুত ধরণের তুই!”
–“অনেকটা তেমনই।”
নীলিমা এই কথাটা ঠিকই বলছে। যেখানে সবসময় ছেলেরাই আগ বাড়িয়ে মেয়েদের দেখতে চায়,সেখানে কিনা নীলিমা ছবি চাওয়া সত্বেও আমি দিচ্ছি না! মেয়েরাও কিন্তু তাদের ক্রাশ কিংবা পছন্দের ছেলেকে তাদের টাইমলাইনে গিয়ে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখে। শেষে ফলাফল একই। যেই লাউ সেই কদু।
–“ভাবছি আজকে একটা মেয়ের ছবি আঁকব।”
–“কোন মেয়ে?”
–“তা তো জানি না।”
–“মানে?”
–“মানে এমনি নিজের মন মত একজনকে আঁকব।”
–“কখন আঁকা শুরু করবি?”
–“ভাবছি আজ রাতেই।”
–“আমাকে দিস। আমিও দেখব,আইডিয়ার উপর ভিত্তি করে তুই কেমন ছবি আঁকতে পারিস!”
–“আচ্ছা দেখিস।”
ছোটবেলা থেকেই ছবি আঁকা নিয়ে মাথা মধ্যে প্রচন্ডরকমের আগ্রহ কাজ করত। যখনই ইচ্ছে হত খাতা আর পেন্সিল নিয়ে বসে পড়তাম। তারপর নিজের মনমত এইটা ওইটার ছবি আঁকতাম। কখনও গ্রাম্য পরিবেশের চিত্র আঁকতাম আবার কখনও বা নিজের ছবি নিজেই আঁকতাম। এক অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করত এতে। বলতে গেলে এক রকমের নেশায় পড়ে গিয়েছিলাম এই ছবি আঁকা নিয়ে।
–“ছবিটা আমি এঁকে ফেলেছি তো।”
–“কই দেখা তো আমাকে!”
গ্যালারি থেকে আর্ট করা ছবিটা সিলেক্ট করে নীলিমার ইনবক্সে দিলাম।মিনিট পাঁচেক হয়ে গেছে। ছবিটা সেন্ড হলো সাথে ম্যাসেজও সীন হল। কিন্তু ওপার থেকে কোনো রিপ্লাই’ই আসছে না।
–“কি ব্যপার! চুপ করে আছিস কেন?”
–“হোয়াট দ্যা!”
–“কি?”
–“ছবিটা নিজে নিজে আঁকছিস?”
–“আমি ছাড়া আর কে আঁকবে!”
–“আইডিয়ার উপরে এঁকেছিস?”
–“হ্যাঁ।”
–“সত্যি তাই?”
–“একদমই তাই।”
–“এই মেয়েটাকে আগে কখনও দেখেছিস?”
–“আজব! আমি কল্পনার উপরে এঁকেছি। বাস্তবে এর কোনো মিল’ই নেই। আর তাছাড়া আমি এই মেয়েকে দেখবই বা কোথায়! নিছক একটা কল্পনা থেকে আঁকা।”
–“ওহহ আচ্ছা।”
–“কি হয়েছে বল তো?”
–“কই কিছু না তো!”
–“তাহলে এরকম করে প্রশ্ন করছিস যে?”
–“ও মা তুই এরকম একটা সুন্দর ছবি আর্ট করেছিস,আমি কি প্রশ্ন করতে পারি না বুঝি?”
–“না তা পারিস।”
–“ছবিটা অনেক সুন্দর হয়েছে। মনে হচ্ছে একদম সামনা সামনি দেখে আঁকা।”
–“তাই?”
–“সত্যি তাই। নাহ মানতেই হবে তুই খুব ভালো আর্ট করতে পারিস।”
–“থাক আর পাম দিতে হবে না।”
এভাবেই কেটে গেল প্রায় ৫/৬ মাস। দু’জনেই ব্যস্ত হয়ে পড়লাম নিজেদের ক্যারিয়ার নিয়ে। আমিও চাকরির পিছনে ছুটতে লাগলাম আর সাথে নীলিমাও। এই ব্যস্ততার মাঝেও শুধু রাতের বেলা অল্প একটু কথা হত আমাদের। কখনও ম্যাসেঞ্জারের ইনবক্সে আবার কখনও ফোন কলে। বেশ ব্যস্ত একটা সময় পার করছিলাম দু’জনই।
–“আসিফ!”
–“হ্যাঁ বল।”
–“একটা সংবাদ আছে।”
–“কি সংবাদ?”
–“বাবা-মা আমার বিয়ে ঠিক করে ফেলেছেন।”
–“ও মা তাই বুঝি?”
–“হ্যাঁ রে।”
–“চাকরি পেয়ে আর দেরি করল না তাহলে!”
–“আমি চেয়েছিলাম আরও কিছুদিন সময় নিতে কিন্তু বাবা-মা খুব চাপ দিচ্ছিলেন। পরে রাজীই হয়ে গেলাম।”
–“তা ভাইয়া কি করে?”
–“একটা ব্যাংকে চাকরি করে। দেখতে শুনতেও বেশ ভালো।”
–“তোর পছন্দ হয়েছে?”
–“বাবা-মার পছন্দই আমার পছন্দ।”
–“তারমানে তোর পছন্দ হয় নি?”
–“আমি কি তা বলেছি নাকি!”
–“কথাবার্তায় তেমনই বুঝা যাচ্ছে।”
–“আরে নাহ। ছেলে যথেষ্ট ভালো। ভালো চাকরি করে,সম্মানী পরিবার! আমার পছন্দ না হয়ে উপায় আছে বল!”
–“যাক তাহলে মনে হচ্ছে সামনে একটা বিয়ের দাওয়াত খেতে পারব।”
–“তুই তো এখন পর্যন্ত তোর ঠিকানাই বলিস নি। শুধু বলেছিস বাসা নারায়ণগঞ্জ। আর তো কিছুই বলিস নি। কার্ড পাঠাব কি করে?”
–“কার্ড লাগবে না। আমি এমনিতেই তোর বিয়েতে আসব।”
–“দাওয়াত ছাড়ায়?”
–“বন্ধুবান্ধবের বিয়েতে আবার দাওয়াত লাগে নাকি!”
–“তা অবশ্য ঠিক।”
–“আমি দাওয়াত ছাড়াই চলে আসব।”
–“বয়রা হয়ে গেছিস?”
–“হ্যাঁ কে? কি? কি হয়েছে?”
–“আমি যে ডাকছি সেইটা কি শুনতে পাচ্ছিস?”
–“না মানে খেয়াল করিনি।”
–“কি ভাবছিলি এত?”
–“না কিছু না তো।”
–“ভাবি সেই কখন থেকে বাসরঘরে একা একা বসে আছে। তা তুই যাবি নাকি আমি যাব?”
–“হারামী,তোরে উষ্টা দিয়া পাঁচতলা ছাদ থেকে ফেলে দেব।”
–“তাহলে এতক্ষণ ধরে যে ডাকছি কানে বাতাস যায় না?”
–“নিচে চল।”
জীবনে এমন দু চারটা হারামী বন্ধুবান্ধব থাকলে আপনাকে যে কতকিছু শুনতে হবে তাদের মুখ থেকে,তার কোনো কুল-কিনারা নেই। জীবনটাকে প্যারাময় করে তুলতে এমন দু চারটা হারামী বন্ধুই যথেষ্ট।
চাকরিটা পাবার সাথে সাথেই বাবা-মা আমার বিয়ে ঠিক করে ফেলেছেন। একমাত্র ছেলে,তার উপর আবার বয়স আঠাশ পেড়িয়ে ঊনত্রিশ ছুঁইছুঁই,এখন তো তাদের মাথায় আমাকে বিয়ে করানোর ভূত চাপবেই। ভূত চাপা থেকেই মেয়ে দেখা শুরু অত:পর সোজা বিয়ের স্টেজ পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া! বাসরঘরে ঢুকতেই দেখি মেয়েটা বিছানার উপরে বসে মোবাইল টিপছে। আর কিইবা করবে! অচেনা একটা বাড়ি,অচেনা একটা রুম,তারপর আবার অজানা,অচেনা একটা ছেলের সাথে একা একই রুমে! আমি রুমে ঢুকতেই মেয়েটা তার মোবাইলখানা বালিশের নিচে লুকিয়ে ফেলল।
–“কি করছিলেন?”
–“তেমন কিছুই না।গেমস খেলছিলাম।”
–“ভয় লাগছে?”
–“তেমন একটা না।”
–“আর ভয় লাগাটাই স্বাভাবিক। সবকিছুই অজানা,অচেনা। সাথে আমিও।”
–“আসলে একটা কথা কি,মেয়েরা যখন তিনবার কবুল বলে ফেলে,তখন থেকেই অজানা,অচেনা একটা ছেলেকেই তারা খুব আপন ভাবতে শুরু করে। কারণ বাকীটা জীবন এই ছেলেটার সাথেই তাকে কাটাতে হবে।”
–“ভালোই বলেছেন।” কথাবার্তায় মনে হচ্ছে মেয়েটা খুবই চালাক। একটু বেশিই স্ট্রেইট ফরোয়ার্ড।
–“আমার একটা কথা বলার ছিল।”
–“জ্বী বলুন!”
–“আপনি তো এখন আমার স্ত্রী,তাই না?”
–“সন্দেহ আছে?”
–“না তা নেই অবশ্য।”
–“তাহলে?”
–“আমি চাচ্ছিলাম কি আমরা আগে কিছুদিন একজন অন্যজনের সাথে একটু মিলামেশা করি। একজন অন্যজনকে একটু বুঝতে চেষ্টা করি। একটা বন্ধুত্বসুলভ আচরণে আসি।”
–“আমিও তাই চাই।”
–“তার জন্য তো কিছু সময়ের প্রয়োজন আছে।”
–“তা তো থাকবেই।”
–“আমরা তাহলে সেই সময়টা নিই?”
–“কেন নয়!”
–“আচ্ছা আপনি বিছানায় শুয়ে পড়ুন। আমি সোফাতে শুয়ে পড়ছি।”
–“সোফাতে কেন?”
–“আপনি একা ঘুমান। আমার ঘুমের মধ্যে বদ অভ্যাস আছে। ”
–“কিরকম?”
–“হাত পা খুব নড়াচড়া করি।কিছুদিন যাক,এইটা কন্ট্রোল করে নিই।”
–“ওওও আচ্ছা।”
মেয়েটার মনে একটুও ভয় নেই। ভেবেছিলাম মেয়েটা হয়ত একটু ভয়ের স্বরে কথা বলবে কিন্তু আমার ধারণা ভুল। এতটা স্ট্রেইট ফরোয়ার্ড যে হবে তাও ভাবিনি। আমি সোফাতে চলে আসার পরপরই মেয়েটা আবার তার মোবাইলটা হাতে নিল। নাহ থাক ঘুম না আসা পর্যন্ত গেমস খেলুক।
–“কি করছিস?”
–“এইতো বসে আছি।”
–“কোথায়?”
–“আর কোথায়! বাসাতেই।”
–“ওহহ আচ্ছা।”
–“তুই কোথায়?”
–“যেখানে থাকার কথা ছিল।”
–“কোথায়?”
–“আর কোথায়! শ্বশুরবাড়ি।”
–“বাসরঘরে?”
–“হুম।”
–“জামাইকে সময় না দিয়ে অনলাইনে কি?”
–“আর বলিস না। জামাইটা খুব ভালো রে। আমাকে এসে ডিরেক্ট বলল আমরা আগে একটা বন্ধুত্বে আসি,কিছুদিন সময় নেই।”
–“ভালো একটা জামাই পাইছিস।”
–“তা বটেই কিন্তু একটা কথা!”
–“কি?”
–“তোর সাথে রাগ করেছি খুব।”
–“কেন?”
–“আমার বিয়েতে আসলি না কেন?”
–“হাহাহা।”
–“হাসছিস কেন?”
–“না এমনি।”
–“আচ্ছা একটা কথা বলি?”
–“বল।”
–“আজকে অন্তত তোর একটা ছবি দে। একটু দেখি।”
–“দেখবি?”
–“কবে থেকেই তো ইচ্ছে করছে তোকে দেখতে।”
–“সত্যি দিব তো?”
–“জলদি দে।”
–“আচ্ছা দিচ্ছি কিন্তু কথা একটাই!”
–“কী?”
–“শকড হওয়া যাবে না।”
–“শকড হব কেন?”
–“না মানে আমাকে দেখার পর শকড হলেও হতে পারিস।”
–“কিন্তু কেন?”
–“তা তো জানি না।”
–“ধুর মাঝেমাঝে তোর কথার মাথামন্ডু কিছুই বুঝি না।”
–“বুঝতেও হবে না।”
–“ছবি দে এইবার।”
সাদা শার্ট,কালো প্যান্ট,চোখে চশমা,হাতে ঘড়ি পড়া একটা পরিপাটি ছবি নীলিমাকে পাঠিয়ে দিলাম। ছবিটা সেন্ড হতেই মোবাইলটা লক করে পাশে রেখে দিলাম। বেশ কিছুক্ষণ পর বিছানার দিকে তাকিয়ে লক্ষ্য করলাম মেয়েটা মানে আমার বউ আমার দিকে বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে আছে। কিছু বুঝে উঠার আগেই আমি জোরে হাহা করে হাসি শুরু করে দিলাম। আমার এই হাসার আসল অর্থটা কি সেইটা আমার বউ বুঝে গেছে। তৎক্ষণাৎ সে বিছানা থেকে উঠে এসে আমার সামনে দাঁড়িয়ে গেল।
–“এইসবের মানে কী?”
–“মানেটা কী এখনও আমাকে বুঝিয়ে বলতে হবে?”
–“আপনি না মানে তুই’ই কী তাহলে আসিফ?”
–“হ্যাঁ রে বউ আমিই তোর সেই বন্ধু আসিফ।”
–“আমি কিছুই বুঝতে পারছি না!”
–“না বুঝার কী আছে! এই সবকিছুই একটা ড্রামা।”
–“মানে কী? তোর আর আমার বিয়ে? কিভাবে কী?”
–“ফাহিম তোর কী হয়?”
–“মামাতো ভাই।তুই ফাহিমকে চিনিস কিভাবে?”
–“ফাহিম আমার বন্ধু।”
–“আমার কাছে সব কল্পনা মনে হচ্ছে।”
–“আচ্ছা সব বলছি। আমি তোকে ফাহিমের ফোনে প্রথম দেখেছিলাম। সেখান থেকেই এই কাহিনীর সুত্রপাত।”
–“কিন্তু বিয়েটা?”
–“আমার বাবা-মাকে তোর কথা বলেছিলাম। ছবিও দেখিয়েছিলাম। তারপর তারা তোর বাসায় প্রস্তাব নিয়ে গেছে। সাথে ফাহিম আর তোর মামা-মামীও গেছে। ছেলে ভালো,ফ্যামিলি ভালো,ভালো চাকরি করে তাই তোর বাবা-মাও বিয়েতে রাজী হয়ে গিয়েছে।”
–“এই সবকিছুই তাহলে তোর সাজানো প্ল্যান ছিল?”
–“প্ল্যানই বলা চলে।”
–“তারমানে ওইদিন যেই ছবিটা তুই এঁকেছিলি কল্পনার উপর ভিত্তি করে,সেইটা তুই আমার ছবি দেখে দেখেই আঁকছিস তাই না?”
–“একদমই তাই। নয়তো আমি কী কোনো মহাজ্ঞানী নাকি যে না দেখেই তোর ছবি এঁকে ফেলব কল্পনায়! ল্যাপটপে ছবিটা রেখে সেখান থেকে দেখে দেখে এঁকে ফেলেছি।”
–“তুই আমাকে দেখিস নি সেইটাও মিথ্যা তাই তো?”
–“একদমই তাই। আমি তোকে দেখেছি,অনেকবারই দেখেছি কিন্তু তুই আমাকে কখনও দেখিস নি।”
–“এতকিছু করার কারণ কী? আর আমাকেই বা এতদিন বলিস নি কেন?”
–“আজকের দিনটার জন্য। চেয়েছিলাম তোকে সারপ্রাইজ দিতে। দিয়েই দিলাম। এ জন্যই ছবি চাইলে দিতে চাইতাম না। আগেই যদি ছবি দিয়ে দিতাম তাহলে হয়তো আজকের এই চমকটা হত না।”
–“আমার সাথে এতবড় ধোকা!”
–“ধোকা কই! একটু গোপন করেছি এই তো।”
–“এক মিনিট,এখানেই দাঁড়া।”
আমাকে দাঁড় করিয়ে রেখে বউ আমার পুরো ঘর তন্নতন্ন করে কী যেন খুঁজছে।
–“কী খুঁজছ বউ?”
–“তুই এখানেই দাঁড়া। বুঝাচ্ছি তোকে কী খুঁজছি।”
–“ছিঃ ছিঃ জামাইকে কেউ তুই করে বলে!”
–“বললাম তো দেখাচ্ছি মজা! একটু অপেক্ষা কর।”
–“আচ্ছা কী খুঁজছ সেইটাতো বলবা!”
–“ঝাড়ু খুঁজছি ঝাড়ু!”
–“এই বউ তুমি এইসব কী বলছ? এতরাতে তুমি ঝাড়ু দিয়ে কী করবা? বিছানা তো পরিষ্কারই। ফ্লোর’ও তো পরিষ্কার। একটুও বালি নেই। তাহলে ঝাড়ু দিয়ে কী হবে বউ?” হঠাত বউ আমার বিছানার পাশে থাকা একটা ঝাড়ু পেয়ে গেল। বেস সেইটা হাতে নিয়ে আমার দিকে তেড়ে আসছে আর বলছে-
–“হারামী এই ঝাড়ুটা আজকে তোর পিঠে ভাঙব আমি। আমাকে না জানিয়েই এতকিছু হুম! বুঝাচ্ছি তোর মজা!”
–“আমি কিন্তু দৌড় দিব এখন!”
–“খবরদার এখান থেকে এক পা’ও নড়বি না। নড়লে তোর একদিন কী আমার একদিন! দাঁড়া দাঁড়া বলছি!”
কে শুনে কার কথা! বাসররাতে বউ এর হাতে ঝাড়ুর বাড়ি খেতে না চাইলে বিছানার চারপাশে দৌড়াতে হবে।
দৌড়া ভাই দৌড়া! জীবন বাঁচাইতে চাইলে দৌড়া! জীবন বাঁচাইতে দৌড়ের কোনো বিকল্প নাই রে ভায়া!!