এইযে কি সমস্যা কি আপনার? (মেয়ে)
<< পকেটে টাকা নাই তাই হেটে হেটে যাচ্ছি। (আমি)
>> চুপ মিথ্যুক, সেই কখন থেকে দেখতে পাচ্ছি আপনি আমাদের ফলো করে আসছেন।
<< আমি?
>> হ্যা হ্যা আপনি।
<< আচ্ছা আপনার কেন মনে হলো যে আমি আপনাদেন ফলো করছি?
>> কেন মনে হলো মানে কি? সেই কখন থেকে দেখতে পাচ্ছি আপনি আমাদের পিছু নিছেন, আমরা তাড়াতাড়ি হাটলে আপনিও তাড়াতাড়ি হাটেন আমরা রাস্তার এ সাইডে গেলে আপনিও সে সাইডে যান কি কি সমস্যা কি?
<< আরে সমস্যা তো একটাই পকেটে টাকা নাই,
>> তো?
<< সে জন্যই তো হেটে হেটে যাচ্ছি।
>> আমাদের পিছু নিলেন কেন?
<< পিছু নিলাম কোই? আপনারই তো আমার সামনে সামনে হাটছেন।।
>> খুব প্যাচালো লোক তো আপনি।
<< আপনি কম কিসে?
>> চুপ করেন, রাস্তা ঘাটে সুন্দরী মেয়ে দেখলেই পিছু নেন ডিস্টার্ব করা শুরু করেন।
<< অয়েট অয়েট আপনি ভুল বললেন, বলতে হবে রাস্তা ঘাটে মেয়ে দেখলেই পিছু নেন ডিস্টার্ব করেন। কারন আপনি দেখতে মোটেও সুন্দর না হু।
>> এবার রাগে লাল হয়ে গেলো মেয়েটা।
<< এটা আমি বলতে পারে যে অনেক সুন্দ্রি মেয়েরা আমার সাথে প্রেম করার জন্য লাইন মারে।
>> এএএএ এই চেহারায় দেখতে তো একদম খাটাশের মতো আবার বলে কিনা মেয়েরা লাইন মারে।
<< তারপরেও আপনার চাইতে সুন্দর আছি, আপনাকে তো দেখা যায় পেত্নীর মতো, তারচাইতে আপনার পাশে যে বান্ধবি আছে তাকে অনেক সুন্দর দেখায় সে কিছু বলছে না পেত্নী মার্কা আসছে বক বক করতে।
>> চোখ গুলো বড় বড় করে আমার দিকে তাকালো।
<< আহা কি সুন্দর মায়াবী চোখ, কি সুন্দর নাক উফ দেখার মতো একদম যেনো নাইকা ক্যাটরিনা ( আসল যায়গায় বাশ দিছি ঠেলা সামলাও) আমার কথা শুনে পেত্নীর পাশে থাকে মেয়েটা দিব্বি ফুলে যাচ্ছে হাহাহা
>> আর পেত্নী লাল হচ্ছে রাগে, আপনার মতো খাটাশের সাথে কথা বলা মানে সময় নষ্ট করা বলেই হাটা শুরু করলো
আমি হাসতে হাসতে শেষ আমি অভি এবার অনার্স প্রথম বর্ষ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্ট পড়ছি। মামার বাসায় থাকি ক্লাশ শেষ করে বাসায় ফেরার পথে মাঝে মাঝে দেখা এদের সাথে মাঝে মাঝে বলতে যেদিন যেদিন আমি হেটে হেটে আসি সেদিন। মেয়ে দুটাকে আমি চিনি কিন্তু আমাকে চিনে না। যেটাকে পেত্নী বলছি সেটার নাম হচ্ছে আনিশা আর সাথেরটার নাম সাথী দুজনে এবার ইন্টার সেকেন্ডে ইয়ার। আনিশা খুব রাগি মেয়ে সেটা আমি জানি অন্য সবার থেকে একটু আলাদা। প্রথম যেদিন আনিশাকে দেখছিলাম বন্ধুর সাথে হাটতে গিয়ে তখনি মেয়েটাক ভালো লাগে কিন্তু বন্ধুকে বুঝতে দেই নাই। তারপর থেকে আনিশার পিছু নেওয়া বাসায় গিয়ে ফ্রেশ হয়ে খেয়ে দেয়ে একটা ঘুম দিলাম বিকালে মামা একটা ব্যাগ হাতে আর একটা লিষ্ট দিয়ো বললো বাজারে যেতে, বাজার করতে আমার ভালো লাগে তাই কোন কথা না বলে ব্যাগ নিয়ে চলে আসলাম।
<< মামা পাচ কেজি আলু , চার হালি ডিম তিন কেজি রসুন দেন তাড়াতাড়ি করেন।
^ ^ দিচ্ছি দাড়ান। উরিস্লা পেত্নিটা এখানে কি করে বাজার করতে আসছে নাকি। চোখাচোখি হতেই
<< হাই
>> খাটাইশ
<< বাজার করতে আসছো তাইনা? তোমার বাবা, ভাই নেই?
>> আনিশা একটা মহিলার দিকে তাকালো আবার আমার দিকে তাকালো।
<< বুঝলাম তার মা তাই কিছু বললাম না।
<< কি হলো তাড়াতাড়ি দেন, মাছ বাজার যেতে হবে।
খেয়াল করলাম আনিশা আমার নিচের দিক থেকে উপরের দিকে পর্যবেক্ষন করছে আর হাসছে, ঘটনা কি নিচে তাকিয়ে দেখলাম ওহ লুঙ্গি পড়ছি সে জন্য হাসছে এখানে হাসার কি হলো পেত্নী কোথাকার বাজার করে বাসায় চলে আসলাম খুব ক্লান্ত লাগছে রুমে এসে বসলাম কিছুসময় পর শুনতে পেলাম
== দেখছো অভি কতো সুন্দর করে বাজার করে আনছে একটা জিনিসও পঁচা নেই, তুমি আনলে তো বেশিরভাগই পঁচা থাকে। ঠিক মতো বাজারটাও করতে পারো না ছেলাটার গুন আছে। ওয়াও ওয়াও কি প্রশংসা, যাক বিয়ের পর বউ কোনরকম ঝামেলা করতে পারবে না।
~~ ঠিক আছে আজ থেকে প্রতিদিন বাজার অভিই করবে।
<< এ্যা গুষ্টি কিলাই বাজারের। মাইনকা চিপায় পইরা গেলাম
আজ আনিশাদের কলেজে বিদায় অনুষ্ঠান আমার এক বন্ধু নিয়া গেলো তাদের কলেজে। চারপাশ খুজতে লাগলাম আনিশাকে দেখা যায় কিনা আমার এটা দেখে বন্ধুর সন্দেহ হলো
== কিরে কারে খুজস?
<< কোই না কাউকে না।
== আমারতো মনে হয় কাউকে খুজছিস
<< আরে না কিছুনা।
== চল ওপাশটায় যাই।
<< হ্যা চল
এপাশে এসে তো আমি পুরাই অবাক পেত্নীটা আজ দেখি পুরো নীল পরী হয়েগেছে নীল শাড়ি সাথে নীল টিপ উফফ কি দারুন। একাবার চোখাচোখি হয় আল্লাহ একটা চোখটিপ মারবো হিহিহি কিন্তু না একবারও হলো না কি দুঃখ। অনুষ্ঠান শেষ সবাই চলে যাচ্ছে
<< এই আনিশা দাড়াও
>> আমার কথা শুনে দাড়িয়ে পিছনে তাকালো।
<< আজকে কিন্তু তোমাকে দারুন লাগছে একদম নীল পরীর মতো।
>> থ্যাংকু।
<< আচ্ছা আমি কি তোমার সাথে যেতে পারি?
>> জ্বি না
<< কেনো।
>> কারন আপনি খুব ঝগড়াটে, পথে পথে আমি ঝগড়া করতে পারবো না।
<< তুমি মনে হয় কম ঝগড়াটে শুধু আমার দোষ দিচ্ছো
>> এইতো শুরু করছেন।
<< আচ্ছা সরি চলো ঝগড়া করবো না।
>> আমি কিন্তু এখনো আপনাকে ভালো করে চিনি নাই।
<< চিনার কথাও না, আমার নাম অভি অনার্স ফাষ্ট ইয়ারে পড়ি এখানে মামার বাসায় থাকি মামার নাম আতিফ ইসলাম।
>> আতিফ আংকেল বাসায়?
<< হ্যা চিনো তুমি?
>> চিনবো না কি বলেন উনাদের সাথে খুব ঘনিষ্ঠতা আগে তো প্রতিদিনই বিকালে যেতাম এখন পড়ার চাপে যাওয়া হচ্ছে না।
<< কেন যে এতো তাড়াতাড়ি এক্সামটা আসলো
>> আমার নাম হচ্ছে
<< জানি আমি আনিশা তোমরা দুই বোন বড় বোন বিবাহিত বাবা মারা গেছে তোমার ছোট্ট একটা ভাই আছে ।
>> অবাক হয়ে আমার দিকে তাকালো এতোকিছু কিভাবে জানেন।
<< তোমাকে প্রথম দেখেছিলমা তোমাদের বাসার সামনে প্রথম দেখাতেই ভালো লাগে তারপর তোমার সম্পর্কে সব জানলাম এটাও জানলাম তুমি খুব রাগি এবং ঝগড়াটে। এবং এ কারনে তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছে।
>> আবার আমার দিকে তাকালো।
<< ভালো করে এক্সাম দিও দুআ রইলো।
বলেই চলে আসলাম ইয়াহু বলে দিলাম আজকে যা হবার হবে একটা। বেশ হাসিখুশি লাগছে। মামা মামি বুঝতে পারছে আসলে মামা মামি তাদের কোন সন্তান নেই আর হবেও না সমস্যাটা আসলে মামির যেহেতু ভালোবেসে বিয়েটা হয়েছে সেহেতু মামা বলছে সন্তান না হলে নাই তিনি মামিকে নিয়েই থাকবেন। আমাকে উনারা তাদের সন্তানের মতোই দেখে
~~ কিরে তোকে আজ বেশ খুশি খুশি লাগছে কারন কি? ( মামা)
<< কোই নাতো কিছুনা।
~~ প্রেমে টেমে পড়ছিস নাকি অভি (মামি) মামি কিভাবে বুঝলো মামির সাথে বিষয়টা শেয়ার করতে হবে। মামিকে সব বললাম
== আমার জানামতে আনিশা খুব রাগি তোকে পাত্তা দিবো তো
<< কিযে বলো প্রথম দিনে ঝগড়া দ্বিতীয় দিনে বলে দিছে ভালোবাসি
== কি বললো?
<< বলার আগেই চলে এসেছে।
== আমার মনে হয় এতো সহজে রাজি হবে না।
<< হবে হবে।
পরদিন আনিশা আমাদের বাসায় আসলো সামনে এক্সেম দুআ চাইতে আর মামার কাছ থেকে ফ্রিতে সাজেসন নিতে। আমি আমার রুমে বসে বসে পড়তেছি
>> আন্টি এই রুমে কোন ছাগলে থাকে কি নোংরা হয়ে আছে।
<< সুন্দর করে সাজিয়ে দিলেই তো পারো।
<< আমি কেন সাজাবো?
>> বিয়ের পর ঠিকেই সাজাবে
<< কখনোই না বিয়ের পর আমার স্বামীই সব করবে হুহু
<< মাইরও খাইবা
== ওই তোরা চুপ করবি আনিশা তোর আংকেল ছাদে আছে
<< আমার কাছ থেকে দুআ না নিলে ফেল নিশ্চিত।
>> খাটাইশ বলেই ছাদে চলে গেলো।
আনিশার এক্সাম তাই আর ওকে কোন প্রকার ডিস্টার্ব করলাম না। দেখতে দেখতে ওর এক্সাম শেষ প্রতিদিন বিকালে আসতো মামির সাথে গল্প করার জন্য যেহেতু মামা অফিসে থাকে আমি পড়ার থাকি মামি একা আনিশা আসলে শুরু হয় গল্প তাদের আমিও যোগ দেই শুরু হয় ঝগড়া সে কি প্রচন্ড কেউই হারতে রাজি না এটা যেনো প্রতিদিনের রুটিন হয়ে গেছে। মাঝখানে আমি বাড়িতে চলে আসছি nবন্ধ পেয়ে কতদিন মা বাবাকে দেখি নি হটাৎ একদিন মামি ফোন দিয়ে বলে
== কিরে কবে আসবি?
<< ১ সাপ্তাহ পর।
== তাড়াতাড়ি চলে আয় আনিশা তো আমার কান ঝালাফালা করে ফেলছে।
<< কেন?
== বলে কবে আসবে কবে আসবে, তোকে মনে হয় মিস করে।
<< দেখছো মামি বলছিলাম না পটে যাবে।
তারপরের দিনেই চলে আসলাম খুব ক্লান্ত এসেই ঘুম দরজায় নক করার শব্দে ঘুম ভাঙ্গে গেলো বিরক্ত নিয়ে দরজা খুলে দেখি আনিশা
<< কেমন আছো জানপাখি।
>> কে আপনার জানপাখি? (রাগিমুডে)
<< কি ব্যাপার এতো রাগ কেন।
>> কিসের রাগ সরেন ভিতরে ডুকে আমার গল্পের বই নিয়ে বিরিয়ে গেলো
বুঝলাম আমা যতদিন ছিলাম আমার রুমে হানা দিছে এই পেত্নী আর রেগেও আছে আমি না বলে বাড়িতে গেছি সে জন্য। ফ্রেশ হয়ে দেখি মামি আনিশা গল্প করছে
<< মামি আমার কথা আপনাকে বারবার জিঙ্গাসা করছে কে?
== মামি হেসে দিলো
>> রাগে ফোসতেছে
== এখন ঝগড়া শুনতে চাই না যা তো তুই অভি
আজকে আনিসার রেজাল্ট দিবে খুব টেনশনে আছে মেয়েটা সকালে দেখলাম মুখখানা শুকনো হয়ে গেছে।
দুপুরে ভার্সিটি থেকে বাসায়ে এসে দেখি হাসাহাসি চলছে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি দুটো বাঝে তারমানে রেজাল্ট দিয়ে দিছে আনিশা পাস করছে আমি জানি আনিশা অনেক ভালো ছাত্রী
<< কি ব্যাপার মামি এতো হাসাহাসি কিসের।
== আরে আনিশা এ + পাইছে
<< আরে দূর দেখেন নকল টকল করে পাশ করছে আরকি এতো ভালো ছাত্রী নাকি ও?
>> ওই ওই কি বললেন আপনি কি বললেন আমি নকল করি না
<< খুব খুদা পেয়েছে মিষ্টি আনছো তুমি
>> আনলেও সেটা আপনাকে দিচ্ছি না।
<< লাগবে না তোমার মিষ্টি খাবো না যাও বলেই রুমে চলে আসলাম ব্যাগ রেখে ফ্রেশ হয়ে এসে দেখি টেবিলে মিষ্টি রাখা এখন একটু ভাব নিতে হবে।
<< মামি আমি মিষ্টি খাবো না। রেখে চলে আসলাম
== কেন হইলো আবার তোর
<< কিছুনা ভাত দেন আপনি
>> সরি আসলে আমি দুষ্টামি করে বলছি প্লিজ একটা হলেও খান
<< এই দুইটা মিষ্টি কাউকে দেয় আমার ১ কেজি লাগবে এর কমে আমি খাই না।
<< দেখছেন আন্টি কি খাদকের খাদক রাক্ষস একটা।
কিছুদিন পর মোবাইল কিনলো একটা বাহ বাহ ভালোই হলো এবার ফোনে কথা বলা যাবে। একদিন ফোন দিলাম
<< আমার রেজাল্ট তো পেলাম না।
>> আমি আপনাকে ভালোবাসসি না
<< সত্যি তো
>> হ্যা সত্যি
<< তাইলে আমি বাড়িতে গেছি সে জন্য আমাকে মিস করছে কে মামিকে বারবার জিঙ্গাসা করতো কে কবে আসবো আমার রুমে ডুকে গল্প বই পড়তো কি ওগুলা কি ছিলো হ্যা কি ছিলো
>> কিছুনা বলেই ফোন কেটে দিলে রাত ৮ টায় আবার ফোন দিলো
>> আমাকে কিছু জোনাকি পোকা এনে দিতে পারবেন?
<<জোনাকি পোকা কোই পাবো আমি
>>আমি কি জানি
<< দিতে পারি একটা শর্ত আছে.
>> কিহ
<< আমাকে মিষ্টা শুরে আই লাভ ইউ বলতে হবে রাজি?
>> কিছুক্ষন চুপ থেকে আচ্ছা ঠিকাছে কোই পাবো জোনাকি পোকা যাক নেমে পরলাম জোনাকি পোকা খুজতে অনেক কষ্টে কতগুলো আনলাম আনিশার বাসায় সামনে এসে ফোন দিলাম
<< এনেছি এবার বলো
>> আগে পোকাগুলে ছেড়ে দেন
<< এতো কষ্ট করে ধরে আনছি ছেড়ে দেওয়ার জন্য
>> যা বলছি তাই করেন
<< ছেড়ে দিলাম ওয়াও কি সুন্দর দৃশ্য আমি নিজেই মুগ্ধ হয়ে গেলাম
<< হইছে হইছে এবার বলো।
>> আপনি খুব ক্লান্ত বাসায় গিয়ে ফোন দিয়েন সুন্দর করে বলে দিবো বাসায় এসে দেখি ফোন বন্ধ কি গুটিবাজি করলো মনটাই খারাপ হয়ে গেলো রাত ১১ টায় ফোন দিলো তাড়াতাড়ি রিসিভ করলাম
>> আই (চুপ) লাভ (চুপ) ইউ খাটাইশ কিছু বলতে যাবো অমনি কেটে দিলেআবার ফোন বন্ধ যাক এবার শান্তিতে একটা ঘুম দেই।