মাত্র, পতিতা পল্লী থেকে বেরোলাম। আজকে কেনো জানি, অনেক ভাল্লাগছে। তাই খুশি খুশি মনেই গেট টা পার হচ্ছি আর ওমনি নিধি সামনে চলে এলো নিধিকে সামনে দেখে আমি যতটা না অবাক হয়েছি তার চেয়ে বেশি খুশি হয়েছি। অবাক না হউয়ার কারন, মেয়েটার মনে যখন কোন সন্দেহ জাগবে, যাই হয়ে যাকনা কেনো, আগে সন্দেহর কারন টা খুজবে তার সাথে সমাধান টাও খুজে নেই। আর তাছাড়া আমিতো চাইছিলাম, ও জানতে পারুক এটা। তবে আরো আগেই চাইছিলাম এই দিন টা আসুক। যাক অবশেষে দিনটাকে পেলাম। হাসি মুখটা নিয়েই গেলাম নিধির সামনে,
—নিধিয এখানে, তুমি?? কখন আসছিলা?? কি কারনে আসছিলা??(জয়)
—নিধি সামনে হাত বাড়ায়ে, আমাকে চুপ করতে বললো। তারপর কিছু না বলেই চোখ মুছতে মুছতে চলে গেলো। ওর চোখের পানি আমি একসময় সহ্য করতে পারতাম না আর এখন??
গত কয়েকদিন আগেঃ
—নিলা ভাবি আমাকে বললো, তুমি নাকি কোথাই যাও আজ কয়েকদিন ধরে?? উনি তোমাকে ওই গলি দিয়ে প্রতিদিন যাইতে দেখে(নিধি)
–খাওয়ার খেতে খেতে,কোথাই যাবো অফিস ছাড়া??(জয়)
নিধি চুপ করে আছে। মেয়েটাকে যতটা চুপচাপ স্বভাবের ভাবছেন, তেমন টা কিন্তু ও না। উচ্ছ্বাস, আনন্দ, দুষ্টুমি, হাসি থাকতো যেই মেয়েটার মুখে সব সময়। সেই মেয়েটার মাঝেই আজ কয়েক দিন হলো এগুলোর কোনটাই দেখা যায় না। জয়ের ভেতরটাতে কষ্ট হতো। কারন নিধির এই পরিবর্তনের জন্য দায় টা পুরো ওর ই । যা নিধি নিজেও জানে না।
পরের দিনঃ
—সাজ্জাদ ভাইয়া বললো, তুমি নাকি আজ অনেক আগেই অফিস থেকে বাসায় ফিরছো। বাসায় ফিরলে আমি কি অন্ধ যে তোমায় দেখতে পায় নি??(নিধি)
—আ, আ’ম, কিছু খুজে পাচ্ছিলাম না, কি বলবো??আমতা আমতা করছিলাম। হঠাত বলে দিলাম, তামসিয়া ভাবির বাসায় গেছিলাম বুঝলা, আরে বলো না, বাসায় আসছিলাম, হঠাত রাস্তাতেই ওনার সাথে দেখা। এত করে বললাম যে ভাবি অন্যদিন যাবো, আজ আমার মিষ্টিপরি আমার জন্য ওয়েট করছে। কিন্তু কে শোনে কার কথা? শুনলোই না।
—নিধি আগের মতোই চুপ করে রইলো। মনে হচ্ছে সব কিছুই মেনে নিচ্ছে।
আমিও হাপ ছেড়ে বাঁচছি। দিনটা ছিলো ওর বার্থডের আগের দিন বৃহষ্পতিবারঃ ইচ্ছাকৃতভাবেই রাত ১ টা অবধি থেকে এসেছি বাহিরে। বাসায় ঘুমে ঢুলে পড়ছি এমন অভিনয় করতে করতেই ঢুকলাম। রুম টা খুলে দিলো নিধি। মেয়েটাকে আজ এতটা সুন্দর লাগছে কিন্তু একটা কারনে জয়ের খারাপ লাগলো, কারন নিধির চোখেতে পানি চকচক করছে।
—সরি বাবুটা, আজ একটু দেরি হয়ে গেলো। আসলে অফিসে কিছু কা’ নিধি আর কিছু বলতে দিলো না।
—খাবার রাখা আছে টেবিকে, খেয়ে নাও। আমার ঘুম পাচ্ছে বলেই চলে গেলো।
প্রতিটা দিন মেয়েটাকে আমি ঠিক যতটা কষ্ট দিচ্ছি মেয়েটার চেয়ে ৫ গুন কষ্ট আমি নিজে পাচ্ছি, কিন্তু এটা ছাড়া আমার কিছু করারো ছিলো না। অন্য কোন মেয়ে হলে এতদিন হইতো আমাকে, লুচ্চা, বদমায়েশ, বলে চলে যেত ডিভোর্স দিয়ে। কিন্তু আমিতো এইটাই চাই ওর কাছ থেকে। কেনো আমাকে ও ঘৃনা করছে না?? আর কি করলে ও আমাকে ঘৃনা করবে?? শারিরীক আঘাত করলে?? যেটা আমি কখনো পারবো না করতে। গলা দিয়ে ভাত নামছিলো না, চোখ থেকে পানি পড়ছে ভাতের উপর টপটপ করে। মেয়েটাকে আমি আর এভাবে কষ্ট দিতে পারবো না। এবার এমন কিছু আমাকে করতে হবে যাতে ও আমাকে ঘৃনার সাথে ডিভোর্স টাও দেয়।
ওইদিন রাত্রেই প্রায় ৩ টার দিকে ঘুম ভেংগে দেখি পাশে নিধি নেই। তাড়াতাড়ি করে উঠে পরি। প্রতিটা রুম খুজি কিন্তু কোথাও না পেয়ে, ছাদেতে পা দিতেই থমকে যায়, নিধির সামনে একটা কেক রাখা, যাতে অনেকগুলো মোমবাতি জালানো। আর নিধি একাই একাই একবার আমার হয়ে আর একবার ওর হয়ে কথা বলছে, কথাগুলোর মধ্যে একটা কথা খুব লেগেছে, কথাটা এমন, নিধি নিজেকেই আমি হিসেবে বলছে, জয়, আমাকে তোমার এখন আর ভালো লাগে না তাই না?? তোমার বংশের বাতি আমায় দিয়ে জ্বলবে না জন্য আমার সাথে এমন করছো?? তুমি প্রতিটা দিন আমায় মিথ্যা বলেছো, আমি পরে সেই সবকিছুর সত্যতা জেনেছি। জানো জয়, খুব কষ্ট লাগে, বুকের বা পাশ দেখিয়ে, এইখানটাতে। শুনেছিলাম ভালোবাসাটা পরিস্থিতির কাছে হার মেনে যায়। আমার মনে হচ্ছে কথাটা সত্য। কিন্তু আমি সেটা হতে দিবো না। তুমি যতই আমায় মিথ্যা বলো না কেনো, আমি কখনো তোমায় ছাড়তে পারবো না। আমার ভালোবাসা এতটা ঠুনকো না।
ছাদের সিড়িটার কাছ থেকে কথাগুলো যখন জয় শুনছিলো মনে হচ্ছিলো কাছে গিয়ে বলে দেয়, আমিও তোকে ছাড়তে পারবো নারে পাগলি, এক পা আগাইও ছিলো, কিন্তু পরমুহূর্তেই আবার পিছিয়ে আসে। দেয়ালের উপর নিজের হাত টাকে শক্ত করে বারি দেয়। কেনো এমন টা হলো ওর সাথে?? পতিতা পল্লীর কাছে থেকেই জয় ভাবছিলো কথাগুলো। আজ সেই সময় এসেছে, যেটা এতদিনে আমি চেয়ে এসেছি। এই ধারনাটা আমায় আমার বন্ধু রাসেল দিছিলো। ওকে যখন বলি অফিসেঃ
–আচ্ছা দস্ত, একটা মেয়ে যদি জানতে পারে, তার স্বামী ওই নিষিদ্ধ পল্লীতে যাওয়া আসা করে, তখন মেয়েটা কি করবে রে??(জয়)
রাসেল হা হয়ে গেছিলো কথাটা শুনে, ওর চোখের চশমা টা ঠিক করে দিয়ে, মুখটা বন্ধ করে, উত্তর জানতে চাইছি(জয়)
–*তুই,এটা জানতে চাইছিস কেন??(রাসেল)
–এমনি, বলনা।(জয়)
–সাথে সাথে ডিভোর্স দিবে, আর তার থেকেও বড় কথা মেয়েটা ছেলেটাকে সারাজীবন ঘৃনা করবে।(রাসেল)
–এইটাই ত আমি চাই…(অস্ফুট স্বরে বললো জয়)
–কি,কি চাস তুই??(রাসেল)
–ক,কই কিছু নাতো(জয়)
–কি যেনো বললি তুই?(রাসেল)
–কাজে মনোযোগ দে,নইলে বস বের করে দিবে।(জয়)
ওইদিনেই জীবনের ১ম পা বাড়িয়েছিলাম এই নষ্টা পল্লীতে, আমি চেয়েছিলাম শুধু কয়েকটা মিনিট ভেতরে এমনি দাঁড়িয়ে থাকবো তারপর বেরোয়ে আসবো। যাতে সবাই মনে করে, আমি এই নষ্টামো সুখ টা নিতে এসেছি। এর জন্য ওখানকার পরিচালক নাজিয়া বেগম কে আমি প্রতিদিন টাকাও দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমার কথা না শুনেই আমাকে জোর করে একটা রুমে ঢুকায় দেয়। যেই রুমেতে ঢুকাইয়া দিলো সেই রুমের মেয়েটা বললে ভুল হবে, বয়সে উনি আমার বড় আপুর মতো হবে। ১ম কথাই আমার ছিলো, ক্ষমা করেন আমায় আপু। আমি তেমন টা যা যেমন টা আপনারা ভাবছেন।(জয়). মহিলাটা জয়ের কাছে এসে, নাম কি তোমার??
—জয়। বিশ্বাস করেন আমি তেমন না,
–এখানে ত পুরুষ মানুষ আসে সুখ নিতে, তুমি তাইলে এইটা বলছো কেনো??
—সব বলে দেয় ওনাকে। জানি না কেনো বলে ফেলি কথাগুলো। হইতো ওখান থেকে নিজেকে ঠিক রেখেই বাসায় ফেরার জন্য।
—ওনার দিকে তাকাতেই দেখি ওনার চোখেতে পানি। আরে, আপনি কাদছেন কেনো??(জয়)
–এতটা ভালোবাসা কেউ কাউকে বাসতে পারে ভাই
—জয় অবাক হয়ে যায়, ওনার মুখেতে ভাই ডাক শুনে।
–আপ, আপনি, আমাকে, ভা, ভাই??(জয়)
–তুই আমাকে আপু ডাকলে আমি পারবো না কেন??
–জয়ের চোখের কোনে পানি জমলো।
ওইদিনের পর থেকে জয় একবার হলেও ওই নিষিদ্ধ পল্লীতে ২ই টা কারনে যেতো, এক, নিজের ভালোবাসার মানুষ টাকে দূরে সড়ানোর জন্য, আর ২ই, বড় আপুর (তারিনা) ভালোবাসা নিতে। যাক আজ আমি সফল, হেসে দিলাম জোরে করে, তবে হাসিটার চেয়ে কান্নাটার শব্দই বেশি হলো। সারাদিন বাসায় যায় নি। মুখটাই দেখাতে ইচ্ছা করছে না আমার। কেমন করে যাবো আমি নিধির সামনে?? হঠাত মনে মনে বলে উঠলাম, আরে এইটাই ত আমি চাইছিলাম। তাইলে এমন ফিল করছি কেনো?? সমস্ত ভাবনাকে মাটি চাপা দিয়ে সন্ধার সময় বাসায় পৌছোলাম। রুম নিধি খুলে দিলো। মেয়েটা অনেক সেঁজেছে দেখছি। হাসিমুখ নিয়ে আমার হাত ধরে ভেতরে নিয়ে গেলো। তারপর আমার শার্ট টা খুলে জোরে ধাক্কা দিয়ে বেডে উপর ফেলে দিলো,
–এটা কি করছো নিধি?/(জয়)
–নিধি আমার ঠোঁটের উপর আংগুল দিয়ে, চুপ। একদম কথা বলবা না।
আমি আর কিছু বলি নি। কারন মেয়েটাকে আমি অনেকদিন পরে এভাবে পেয়েছি। শেষ রাত্রের দিকে, নিধি আমার বুকের উপর শুয়ে আছে, হঠাত বলে উঠলো,
–আমার ফি টা??(নিধি) জয় অবাক হয়ে, নিধির মুখটা ২ হাত দিয়ে নিজের দিকে করে, ফি মানে??(জয়)
–ওমা, রাত্রে যে আপনাকে সুখ দিলাম তার ফি আমার লাগবে না??(নিধি)
–জয় ঠাস করে একটা চড় বসিয়ে দেয় নিধির গালে।
–তুমি এমন কথা ভাবলে কেমনে??(জয়)
–নিধি জোরে জোরে হেসে, কেনো স্যার, আমি কি ওই পতিতাদের মতো সুখ দিতে ব্যর্থ জন্য আমাকে আপনি ফি না দিয়ে চড় দিলেন??(নিধি)
২বারের মতো থাপ্পড় পড়লো নিধি গালে, এবার ঠোঁট কেটে গিয়েছে। জয় নিধির ২ হাত শক্ত করে ধরে, পাগল হয়েছো তুমি??(জয়) নিধি জয়ের থেকে হাত টা ছাড়িয়ে নিয়ে, কেনো পাগল হবো কেনো?? এবার চিৎকার করে, তুমি আগে আমাকে বলতে পারতা যে নিধি তোমার কাছ থেকে আমি মুক্তি চাই। তোমাকে আমার ভাল্লাগে না। সত্যিই ত। আমায় এখন তোমার ভালো লাগবে কেন। আমিতো তোমায় সন্তানের মুখ থেকে বাবা ডাকের সুখ কোনদিনো দিতে পারবো না, শুধু শুধু আমায় কেনো ভালোবাসবা বলো।(নিধি) নিধি চুপ করো(জয়) নিধি বলেই চলেছে, জয়, তুমি আমায় আগে বলতে পারতা, তাইলে ওখানে যাওয়ার সুযোগ তোমায় দিতাম না ঠিকি কিন্তু ২য় কাউকে তোমার জীবনে আসার সুযোগ করে দিতাম(নিধি) জয় এবার নিধিকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়।
নিধি আবার হাসতে থাকে, তারপর কান্না করে দেয়, আর জোরে জোরে বলে, আরে তুমি আমায় আগেই বলতে পারতা, আমি তোমাকে ২য় কাউকে তোমার জীবনে আনতাম তারপর নিজেই সড়ে যেতাম। কেনো তোমার জন্য আমায় শুনতে হই, যে আমি তোমায় সুখ দিতে পারিনি জন্য তুমি ওই পল্লীতে গেছো। জয় এবার নিধিকে ধরে, কে বলছে তোমায় এই কথা??(জয়) ভুল কিছু হইতো বলেনি সে তাই না??(নিধি) চুপ করো নিধি প্লিজ(জয়) তুমি কালকেই মুক্ত হয়ে যাবা আমার থেকে। চিন্তা করো না, ভালোবেসেছি তোমায় মানে এইনা, তোমার সুখের কাল হয়ে দাড়াবো আমি।(নিধি)
জয় নিধিকে ছেড়ে দিয়ে, পেছনে সড়ে এলো। আমায় ক্ষমা করো জয়, তোমায় এতদিন অনেক প্যারায় রেখেছিলাম জন্য।(নিধি) জয় রাত্রেই বেরোয়ে আসে রুম থেকে। শেষরাত টুকু আর বাসায় ফিরেনি। পরেরদিন ২ জন একসাথে গিয়েই, উকিলের সাথে কথা বলে, উকিল বলে যে আপনাদের কয়েকটা পেপার সাইন করতে হবে তবে কয়েকমাস পর পর। আজ সেগুলোর মধ্যে একটা করতে হবে। নিধি অনেকটা সহজভাবেই সাইন টা করে দিলেও জয় সাইন টা করতে পারছিলো না। হাত কাপছিলো ওর, তখন নিধি নিজে জয়ের হাত ধরে সাইন টা করে নেয়। জয় শুধু তাকিয়ে ছিলো নিধির দিকে। আজ ১ মাস হলো, নিধি আর জয় অনেকটা দূরে অবস্থান করছে। অর্থাৎ নিধি ওর বাবার বাসায়।
এর মাঝে নিধি একবারো জয়ের খোঁজ নেয়নি। কিন্তু তারমানে এই না ও জয়কে ভুলে গিছে। প্রতিটা দিন সন্ধ্যায় বেলকুনিতে গিয়ে দাঁড়ায় থাকে শুধু একটা মানুষের অপেক্ষায়। যেইভাবে বিয়ের আগে জয় আসতো নিধিকে একটা নজর দেখার জন্য। কিন্তু নাহ, নিধির মনের আসা মনেতেই ফুরায়ে যায়। ২য় সাইন দেউয়ার একদিন আগের কথা, তুলিটা এসে বলে, নিধু আপু কে যেনো এসেছে তোমার সাথে দেখা করতে।নিধি জয় এসেছে ভেবে ছুটে চলে আসে। কিন্তু নাহ, একটা মহিলা এসেছে, যাকে নিধি চিনে না। তারিনা এখন বসে আছে নিধির ঘরে, এক এক করে সবকিছু খুলে বলে নিধিকে, নিধির চোখ থেকে পানি পড়তে থাকে। ও কত বড় ভুল করেছে, জোরে কান্না করে দেয় নিধি।
আজ প্রায় ২৯ টা দিন নিধিকে ছেড়ে আছে জয়। জয় বেঁচে আছে নাকি মরে গেছে বোঝায় যাচ্ছে না। বেডের উপর একটা ক্লান্ত শরীর পড়ে আছে। মনে হচ্ছে অনেকটা পথ পাড়ি দিয়ে মানুষ টা ক্লান্ত হয়ে আছে। জয়ের শরীর টা আজ কয়েকটা দিন ই খারাপ যাচ্ছিলো। অফিসেও যাই না। বাসা থেকেও বেরোই না। আজ হঠাত হাসপাতালে ডাক্তারের বলা কথাটা মনে পরে গেলো। নিধির অনেক শখ একটা মেয়ে বাবুর আম্মু হউয়ার। শখটা আমারো কম ছিলো না। কিন্তু ২,৩ বছরের মাথাতেও যখন কোন বাচ্চার মুখ দেখার ফিলিংস নিধি পাচ্ছিলো না, তখন আমাকে বলে, ওকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে, ডাক্তারের কাছে নিলে, ডাক্তার পরীক্ষার পরে রিপোর্ট দেয়, নিধি কোনদিনও মা হতে পারবে না। রিপোর্ট টা নিধি নিজেই দেখেছিলো আর যার জন্য ওর মুখের হাসিও ওইদিনের পর থেকে মলিন হয়ে যায়।
আমার নিজের কেমন যেনো ট্রাষ্ট হচ্ছিলো না, তাই ২য় বার আমি আবার ওকে পরীক্ষা করায়, ডাক্তারকে রিপোর্ট টা দিতে বললে ডাক্তার বলে সব ঠিক আছে। আমি অনেক খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু ডাক্তার বললো আপনার ওয়াইফের যখন কোন প্রব্লেম নেই তারমানে আপনা জয়ের মুখের হাসি মলিন হয়ে যায়। হ্যা, ডাক্তারের কথা ঠিক ছিলো। পরীক্ষার পরে দেখা যায়, জয়ের রিপোর্ট নেগেটিভ ছিলো। প্রতিটা দিন জয়ের ডিপ্রেশনে কেটেছে। নিধিকে ও নিজের থেকেও বেশি ভালো বেসেছে, তাই ওর নারীত্ব বা মাতৃত্ব নিয়ে ভবিষ্যত কেউ আংগুল তুলুক এটা জয় কখনোই চাইতো না জন্য এতকিছুর আয়োজন করেছিলো। জয়ের চোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে, নিধি আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। মিষ্টিপরিটা আমার, আমায় ক্ষমা করে দিয়ো।
হঠাত রুমের দরজাটা খুলে গেলো, সামান্য আলোতে দেখা গেলো নিধির মুখ। জয় ভাবলো এটাও হইতো কল্পনা, কারন আজ কয়েকটা দিন ই ও শুধু নিধিকে দেখতে পারছে, হাসিমুখে, দুষ্টুমি করতে। কিন্তু একি আজ কল্পনার মানুষ টার চোখে জল কেনো??(জয়) তবে কি নিধি ফিরে এসেছে??(জয়) নিধি বেডের কাছে আসতেই যেনো জয় শক্তি ফিরে পায়, নিধির মুখ টা ২ হাত দিয়ে ছুয়ে, কল্পনার মতো আবার হারিয়ে যাবা নাতো পাগলী??(জয়)
–নিধি জয়কে জড়িয়ে ধরে, কোনদিনো না। এতটা সার্থপর ভেবেছিলে আমায় তুমি জয়??(নিধি)
–জয় নিধির হাতটা শক্ত করে ধরে, ভালোবাসি যে তোমায় পাগলী। তোমার ভবিষ্যত আমি কেমনে নষ্ট করবো বলো(জয়)
–একদম চুপ। ওহ তারমানে আমার রিপোর্ট টাতে যদি প্রব্লেম থাকতো তুমি আমায় ছেড়ে যেতে??(নিধি অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে)
–জয় নিধির মুখে তে আংগুল দিয়ে, কোনদিনও না। তোমায় আরো শক্ত করে আগলে রাখতাম রে পাগলী(জয়)
–তাইলে আমার ক্ষেত্রে কেনো এর উল্টোটা হবে জয়??(নিধি)
–সরি রে পাগলি, বলেই নিধিকে কাছে টেনে নেয় জয়।
–এই বুকেতেই আমি সারাজীবন থাকতে চাই জয়, আমায় দুড়ে ঠেলে দিয়ো না প্লিজ।(নিধি)
–কখনো না পাগলী, কোনদিনো না।
জয়ের ঘোর যেনো কাটছেই না, নিধিকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। যা কিছু হয়ে যাকনা কেনো, ও নিধিকে আর এক মুহুর্তের জন্যও চোখের আড়াল হতে দিবে না।