আয়নার দিকে তাকিয়ে,তাকিয়ে নিজেকে নিজেই আস্তে মিস্টি সুরে বলে উঠলাম “ভালোবাসি”।
এ কথা বলার পরেই নিজের অজান্তেই ঠোঁটের কোনায় হাসির রেখা ফুটে উঠলো। টিপটা কপালে দিয়ে আয়নার দিকে তাকিয়ে লজ্জায় লাল হয়ে উঠতেছি।
হুম, টিপটা আজ ও ঠিক করে লাগাইনি কারন ঠিক করে লাগালে যে অয়ন আর ঠিক করে দিবে না কাছে এসে এবু ওর তপ্তনিঃশ্বাসটা ও আমার পাওয়া হবে না আর।
জানি অয়ন অভিমান করে টিপ টা ঠিক করে দিতে, দিতে বলবে জান্নাত তুমি জ্যামেতিতে খুব কাচা।টিপ এর ব্যাস-ব্যাসার্ধ বুঝোনা তুমি। কি করে সাইন্সে যে পড়ো আল্লাহ এ ভালো জানে।
এসব ভাবতে ভাবতে আলমারি থেকে অয়ন এর দেয়া প্রথম শাড়িটা বের করে পড়লাম আর ওর দেয়া চুড়িগুলো হাতে পরে নিলাম।
অহ বলতেই ভুলেগেছি যে, অয়ন আজ ২ বছর পর বাইরে থেকে আসতেছে।
2 বছর আগে ও বাইরে যাবার সময় বলেছিল যে ঠিক আজকের তারিখ এ ও দেশে আসবে।
আজকে একটু বেশি এ সাজতেছি। কারণ আপনি যতই সুন্দর হোন না কেনো প্রিয় মানুষটার কাছে যাবার আগে সবাই চায় তাকে সবার থেকে আলাদা ইকটু সুন্দর লাগুক তাই ইকটু বেশি সাজ আর কি..!
রেডি হয়ে অয়ন কে রিসিভ করার জন্য বাসা থেকে বেড় হবার আগে আম্মু কে বলতে গেলাম….
– আম্মু(আমি)
– বলো জান্নাত (আম্মু)
– ইকটু এয়ারপোর্ট এ যাবো।
– কেনো?
– ওমা ভুলে গেলা আম্মু? আজ যে অয়ন আসবে.!
– জান্নাত!
– কি হলো এতো রাগীলুক নিয়ে ডাকলা কেনো?
– আর কতোবার বলবো যে অয়ন নামের কেউ আর তোমার জিবনে নেই।
– আম্মু মজা করার টাইম নেই আমার হাতে। আসলে কইরো।লেট হলে অয়ন রাগ করবে আমার উপর আবার।
– জান্নাত। অয়ন বেঁচে নেই। বিদেশ যাবার সময় প্লেন ব্লাস্ট হয়ে ও মারা গেছে। এই সহজ কথাটা মানতে চাওনা কেনো তুমি?
পাগলামি করা ছেড়ে দাও। কারলো জন্য কারো জীবন থেমে থাকে না। তেমনি তুমি ও সব মেনে নিয়ে স্বাভাবিক ভাবে চলো।
আর অয়ন, বেঁচে নেই মাথায় রাখো এটা।
অয়ন বেঁচে নেই, অয়ন বেচেঁ নেই!
নাহ আমার অয়ন বেচেঁ আছে। আম্মু মিথ্যা বলছে। আমার অয়ন এর কিছু হতে পারে না।
আচ্ছা আমার মুখে নোনা পানির স্বাদ কেনো.?
আমি কি কাদঁতেছি তবে.?
তবে কি সত্যি আমার অয়ন আর নেই..!