পার্ট:2 (শেষ পার্ট)
.
৫. সত্যিই নিশির মিস হিসাবে মিতাকে দেখে একটু অবাক হচ্ছি।যে মেয়ে পাঁচ বছর আগে
বিয়ে করে বিদেশ চলে গিয়েছে সে ক্যান আজ এই বেবি কেয়ারে। অনেক প্রশ্ন মনে ঘুর
পাক খাচ্ছিলো।মিতা কথা বলতে চেয়ে ছিলো। আমি কথা না বলে নিশিকে নিয়ে চলে
এলাম।এত দিনের অভিমান ভাংতে চাইছিলো না।
.
৬. আজ নিশিকে কেয়ারে রেখে আসি নি।মেয়েটা বাসায় আছে তাই আফিস যাইনি।কাল নিশির
মিস মানে মিতার সঙ্গে কথা না বলে আসার নিশির মন খারাপ।মুখটা ভার করে রেখেছে।
-মা তোমার মন খারাপ।
-(উওর নেই)
-মা কি হয়েছে।
-বাবা তুমি কুব পচা
-কেন মা
-কাল তুমি আমাল মিস
এর থংঙ্গে কথা বলোনি ক্যান।
-এমনেই মা।
-মিস আমাল উপল লাগ কলবে
-করবে না মা তোমার মিস খুব ভালো।
-বাবা জানো আমাল মিস আমাকে তোমাল মতো মা বলে আদল করে।
-ওহ তাই
-বাবা আজ আমাকে স্কুলে দিলা না ক্যান।
-আজ আমারদের ছুটি তাই
-কাল স্কুলে দিবা
-হুম মা।
.
৭. মেয়েটা অনেক অনন্দে ঘুমিয়ে পরেছে। রাত শেষ হলেই মিস এর কাছে গিয়ে আদর খেতে পারবে।
হয়তো আমি বাবা হয়ে ওকে ওর মায়ের আদর দিতে পারিনা তাই ওর মিস এর আদর ভালোবাসে।
মেয়েটা ঘুমিয়েছে নিশ্চিন্তে সিগারেট ফুকছি। অপরিচিত নাম্বার থেকে ফোন।
.
-হ্যালো কে বলছেন।
-(উওর নেই)
-হ্যালো
-আমি নিসির মিস
-ওহ বলেন(কন্ঠটা শুনে বুজার বাকি রইলো না এটা মিতার)
-আজ নিশি ক্যান জানি আসেনি।
-ব্যাস্থ ছিলাম তাই
-ওহ কাল আসবে তো
-হুম
বলেই কেট দিলাম।
মিতার কথা শুনে মনে হল কান্না করে কথা বলছিল।ওর এখন কান্না করে কোন লাভ
নেই এই কান্না টা আজ থেকে পাচঁ বছর আগে করা লাগতো।
.
৮. গত কাল আফিস না আসায় আজ আফিসে অনেক কাজের চাপ।সব
কাজ কম্পিলিট করে ফোনটা বের করে দেখি ৮:০০ বাজে।সময়টা
দেখে মাথাটা ঘুরে গেল। কেয়ার ৭টায় ছুটি হয় এখন বাজে ৮টা।গেট ম্যান এর কাছ থেকে
ফোন আসে নি। গেট ম্যানকে ফোন দিলাম। বল্লো নিশি চলে গেছে। খুব টেন্সন হলে
লাগলো।পিচ্চি মেয়ে ঠিক মত কথা বলতে পারেনা। বাসার
ঠিকানা যানে না।আর লেট না করে বেরিয়ে পলাম।অনেক খোজা খুজির পর হতাস হয়ে
বাসায় ফিরলাম। বাসায় এসে দেখি মিতা নিশিকে খাওয়াই দিচ্ছে। নিশিকে দেখে খুব
কান্না পাচ্ছিলো। কান্নাটা আর ধরে রাখতে পারলাম না। নিশিকে কোলে নিয়ে কান্না শুরু করে দিলাম।
-সত্যিই আমি খুব দুঃখিত নিশি এমন ভাবে
বল্লো না নিয়ে এসে পারলাম না।আমার
উচিত ছিলো তোমাকে ফোন দিয়ে জানানো। (মিতা)
-(উওর দিলাম না)
চোখের পানি মুছে নিজেকে সামলিয়ে নিলাম।
-মিতা কেমন আছ।
-যেমনটা আগে ছিলাম।
-ওহ
-তুমি কেমন আছো
-এইতো যেমন দেখতে
পাচ্ছো
-ওহ
-হুম তোমার হাজবেন্ট
বেবি এরা কেমন আছে
-(উওর নেই চোখের
কোনায় পানি)
-কি হল
-কিছু না কাল একটু
দেখা করতে পারবা।
-হুম পারবো।
.
৯. জুম্মুর নামাজ পরে এসে দেখি নিশি রেডি। সেই সকাল থেকে
অনেক বার জিঙ্গাসা করেছে মিস এর সঙ্গে কখন দেখা করতে জাবা।
-বাবা চলো
-কোথায়
-মিস এর….
-একটু অপেক্ষা কর এখনেই জাবো
-ঠিক আছে বাবা।
.
একটা পার্কে বসে আছি। দুর থেকে দেখতে পেলাম মিতা আসছে।নিশি মিতাকে
দেখে দৌরে গেল ওর কাছে।মিতা নিশির জন্যো কেন্ডি এনেছিল ও গুলা
নিশিকে দিয়ে খেলতে পাঠালো।তার পর কিছুক্ষন নিরাবতা। আমিই নিরাবতা ভেঙ্গে প্রশ্ন করলাম।
-কি জানি বলতে চেয়েছিলা।
-তোমার আমার শেষ যখন দেখা হয়েছিল তখন কি বলে ছিলাম।
-তোমার একটা বড় লোক ছেলের সঙ্গে বিয়ে হচ্ছে এবং
বিয়ের পর তুমি বিদেশ চলে জাবা।
-এই কথাটা এক দম মিথ্যা আমি বিয়ে করিনি। সেদিন তোমাকে মিথ্যা
বলেছিলাম যেন তুমি আমার জীবন থেকে সরে জাও।কারন আমি
কখনো মা হতে পারতাম না তাই আমার এই অপূর্ন জীবনে তোমাকে জরাতে চাই নি।
-এটা কি সুনাইলা তুমি
(চোখে পানি চলে এসেছে)
-যা সত্যি তাই।
নিশি দৌরে এসেছে আমাদের কাছে।চোখের পানি গুলো মিথা লুকানোর চেষ্টা করলাম।
-বাবা কাদছো ক্যানো মিস কি তোমাকে বকা দিয়েছে।
-না মা এমনেই কান্না করছি।
-মিস তুমিও কাদছো বাবা কি তোমায় বকা দিয়েছে।
-না সোনা(কথাটা বলেই মিতার কান্না আরো বেরে গেল আর নিশিকে কোলে নিয়ে
জরিয়ে ধরেছে) আর একটু সময় কাটিয়ে। বাসার আসার জন্যো বের হলাম। আমি এক
পাসে আর এক পাসে মিতা আর আমাদের দুজনের মাঝে দুজনের হাত ধরে হাঠছে
নিশি।সত্যিই দৃশ্যোটা অনেক সুন্দর।আর আজকের মত খুশি নিশিকে কখনো দেখিনি।
.
১০. রাতে নিশি ঘুমিয়েছে আমি ছাদে বসে আছি। আর চিন্তা করছি সত্যিই আমি একটা
খারাপ ছেলে। যে কিনা আমার ভালোর জন্যো আমাকে ছেরে গেছে তাকে এতটা খারাপ
ভেবেছি।ফোনটা হাতে নিলাম ভাবতেছি ফোন দিব কিনা।ভাবতে ভাবতে ফোনটা দিয়েই ফেল্লাম।
-হ্যা মিতা।
-হুম বলো।
-কি কর
-এইতো বসে আছি তুমি
-আমিও বসে আছি তুমি ঘুমাও নি
-না ঘুম আসছে না।
-ওহ
-হুম নিশি ঘুমাইছে
-অনেক আগেই ঘুমাইছে।
-ওহ
-একটা কথা বলবো।
-হুম বলো
-জানিনি বলাটা ঠিক হচ্ছে কিনা তবুও বলছি।
আচ্ছা আমরা কি বিয়ে করতে পারি না
-কি বলছো
-আমার জন্যো না হলেও নিশির জন্যো তুমি নিশির মা হবা আনেক ভালো মা
-সত্যিই বলছো আমাকে বিয়ে করবা
-হুম সত্যিই বলছি
-নিশি মেনে নিবে তো
-পার্ক থেকে আসার পথে নিশিই আমাকে এই কথা বলেছে।
-ও তাই
-হুম তাহলে কাল দেখা হচ্ছে।
.
বিয়ে করে এসেছি একটু আগে।বিয়ে বলতে তেমন কিছু না আমি নিশি আর মিতা
প্রথম কাজি আফিস তার পর মাওলানা সাহেব এর কাছ থেকে সোজা বাসায়।এখন রাত
একারোটা নিশি এখনো ঘুমায় নি ওন নতুন মা এর সঙ্গে খেলা করছে। আজ সত্যিই নিজেকে
অনেক খুশি লাগছে মেয়েটা মায়ের আদর পাচ্ছে।
-মা তোমার নতুন মাকে পেয়ে আমায় ভুলে গেলা।
-না বাবা মার সঙ্গে একটু খেলছি
-রাত অনেক হয়েছে মা
এখন ঘুমাও এখন থেকে তোমার মা সবসময় খেলবে
-ঠিক আছে বাবা।
মেয়েটা ঘুমিয়ে আছে। মিতা বেলকোনিতে দ্বারিয়ে আমিও গেলাম।
-কি ব্যাপার এখান কি
-এমনেই দ্বারাই আছি
-ওহ
-তোমাকে অনেক
ধন্যোবাদ
-ক্যান
-আমাকে নিশির মা বানানোর জন্যো।
-ওহ তুমি নিশির মা হয়ে খুশি আমার বউ হয়ে খুশি নও তাই না।
-নিশর মা মানেই তো তোমার বউ।
-ওহ বউ তাহলে তো_____
-এই সব করার জন্যো বুজি মেয়েটাকে তারাতারি ঘুমাতে বল্লা।