সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে দাঁত ব্রাশ করলাম। তারপর মা চা আর মুরি এনে দিলো তরি ঘড়ি করে চা মুরি খেলাম। খাওয়ার পর বাড়ি থেকে একটু দুরে গেলাম। কেন গেলাম হয়ত জানেন না আর জানার ও কথা নেই। কারন আমাদের এলাকায় নেটওয়ার্কের অনেক সমস্যা ফেসবুক চালাতে হলে দুরে গিয়ে চালাতে হয় তাই আমি ও দুরে গিয়ে ডাটা অন করলাম। অন করতেই অনেক গুলা বিজ্ঞপ্তি আসলো সব চেক করে দেখলাম।
দেখতে দেখতে হঠাৎ চোখে পড়লো একজনের আজকে জন্মদিন। দেখে মনটা যেন কেমন করে উঠলো তাকে উইস করার ও চিন্তা ভাবনা আসতে শুরু করলো। কারন মূলত তার জন্যেই আমার ফেসবুকে আসা। তাকে নিয়ে রোজ দু চারটা পোষ্ট করতাম সেই পোষ্টে মাঝে মাঝে তাকে খুজে পেতাম কমেন্ট বক্সে। সেখানে একটু ওর সাথে মজাও করতাম। ও আমাকে মাঝে মাঝে রাগ দেখাইতো কিন্তু আমার মিষ্টি মিষ্টি পোষ্টে তার রাগ যেন অনেক দুরে হারিয়ে যেতো।
যেদিন তার প্রথম ছবি দেখেছি ঠিক সেদিন থেকে আজ পর্যুন্ত তাকে পেত্নি বলে ডেকেছি পোষ্টে পেত্নি বলে ডাকতাম আর সে উত্তর দিতো। যাইহোক তার জন্মদিন বলে কথা কি করে হয় হোক উইস তো করতে হবে। তার সাথে দেখা হয়ত হবে না কারন তার বাড়ি ছিলো চট্টগ্রাম আর আমার বাড়ি নীলফামারী তাই ফেসবুকেই তাকে উইস করার জন্য কিছু কথা লিখলাম।
প্রিয় পেত্নি
অরফে সাদিয়া তাসমিন।জানিনা কেমন আছো আর জানার চেষ্টাও করতেছি না। কারন আমার মন বলতেছে তুই অনেক ভালো আছিস। আর ভালো থাকবি না কেন কারন আজ এই দিনে যে। পৃথীবীর দুই নর নারীর কোল ভরে জন্ম নিয়েছিলি তুই। বাড়িতে খুশির জোয়ার এসেছিলো। পাড়ার সবাইকে মিষ্টি মুখ করিয়ে ছিলেন আমার শ্রদ্ধেয় আংকেল মানে তোর বাবা।
তোর আর সম্পর্কটা কিভাবে তৈরী হয়েছে তা হয়তো তোর মনে নেই। কিন্তু আমার মনে আছে। ফেসবুকের একটা funny পেজ ছিলো ” চুপ কর ফইন্নি ” সেই পেজের আমি ইডিটর ছিলাম। একদিন হঠাৎ দেখলাম পেজের চ্যাট গ্রুপে তোকে এড করেছে। তখন পেজের এডমিনকে জিগ্যেস করলাম এটা কে? তখন তিনি জবাবে বললো আমাদের নতুন ইডিটর।
তখন মনে মনে একটা অন্য রকম আনন্দ এলো কারন আর যাইহোক ঝগড়া খুনশুটি করার জন্য তো একজনকে পেয়েছি। পেজের সবার নিকনেইম দেওয়ার দায়িত্বটা ছিলো আমার তখন তোর নিকনেইম দিয়েছিলাম পেত্নি। সেদিন থেকে আজ পর্যুন্ত তোকে পেত্নি বলেই ডাকি।
তারপর তোকে sms দিলাম সবকিছুই জানা হলো। জানার পর একটু খারাপ লেগেছিলো তুই আমার চেয়ে বয়সে বড় এবং তোর বাড়ি আমার বাড়ি থেকে সাত সমুদ্র তেরো নদী পাড় হয়ে যেতে হয়। মানে আমার বাড়ি নীলফামারী আর তোর বাড়ি চট্টগ্রাম ।
মনে পরে, প্রায় সবসমায় তোকে নক করে ডিস্টার্ব করতাম তোকে নিয়ে ডায়েরীর পাতায় কিছু জমানো কথা লিখতাম। তোকেও লিখে পাঠিয়ে ছিলাম। তখন তুই আমাকে বলেছিলি তুই শুধু আমার পিছনে লাগিস কেন আরো তো অনেক আছে এখানে। তখন একটু খারাপ লেগেছিলো। কিন্তু ততোটাও না।
এভাবে চলতে চলতে প্রায় ৬ মাস চলে গেলো তখন তোর সাথে আরো সম্পর্কটা গারো হতে লাগলো তাই বলে ভাবিস না যে প্রেমের সম্পর্ক সম্পর্কটা ছিলো ভাই বোনের খুনশুটি। তোকে রাগানোর মাঝেই যেন আনন্দ পেতাম। তুই ও রাগ হয়ে অনেক কথা শোনাতিস।
একদিন হঠাৎ দেখি পেজটা চুরি হয়ে গেছে মানে হ্যাক করেছে। তখন পেজের চ্যাট গ্রুপ থেকে সবাই লিফ্ট নিতেছে তুই নিলি আর বললি আর কখনো কথা হবে না। তখন খুব খারাপ লেগেছিলো পেজের সবাইকে মিস করেছিলাম।
কিছুদিন পর তোকে sms দিলাম রিপেলে দিয়ে বললি আজ থেকে আমাদের কমেন্টে ছাড়া আর কথা হবে না। বলেই ব্লক করে দিলি। কিছু একটা বলার ছিলো বলতেই পারলাম না।
তারপর থেকে তোকে নিয়ে পোষ্ট করতে লাগলাম তুই আমার পোষ্টে সবসমায় কমেন্ট করতিস। তখন অনেক ভালোলেগেছিলো আর যাইহোক কমেন্টে তো যোগাযোগ রয়েছে।
আর একটা কথা না বললেই নয় আমার পোষ্টের বানানের ভুল ধরিয়ে দেওয়া টা আমাকে অনেক ভালো লেগেছিলো কারন সবাই পোষ্ট পরে বাট কেউ ভুল বা সঠিক আছে কিনা তা ধরিয়ে দেয় না। থাক আর না লিখি হয়তো পরতে পরতে বিরক্ত হয়ে ভাবতেছিস পাগলটা কি সব লিখেছি।।
পরিশেষে এটাই বলতে চাই তোর সাথে যদি কখনো খারাপ ব্যাবহার করে থাকি তাহলে ছোট ভাই মনে করে ক্ষমা করে দিস। আর তোকে আমি সবসমায় নিজের বোন মনে করি।
জন্মদিনে সবাই তো গিফট দেয় আমিও দিতাম বাট দেওয়ার কোন বুদ্ধি নেই তোর বাড়ি অনেক দুর গিফট পাঠিয়ে দেয়ার সমায় ও হয়ত আর নেই। তাই তোর প্রফাইল থেকে তোর ভালো ছবিগুলো সেভ করে নিয়ে তোকে একটা ভিডিও তৈরী করে তোর টাইম লাইনে পোষ্ট করলাম অবশ্যই দেখবি ভালো লাগবে
শুভ জন্মদিন সাদিয়া ..
এই বলে পেত্নির টাইম লাইনে পোষ্ট করলাম একটুপর কমেন্টে ধন্যাবাদ জানালো তখন এত ভালো লাগতেছিলো যা বলে বোঝাতে পারব না। সে ছিলো আমার ফেসবুক ক্রাশ। তার সাথে খুনশুটি সবসবমায় হয়েই থাকে। ম্যাসেন্জারে ব্লক করে রাখলেও কমেন্ট বক্সে তার সাথে রোজ কথা হয়।
মাঝে মাঝে তার কথা ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পরি আবার পরেরদিন তাকে নিয়ে নতুন নতুন পোষ্ট বানাতাম তাকে নিয়ে পোষ্ট তৈরী করাটা যেন অনেক আনন্দের ছিলো।