জেরিনঃ আমি তোমাকে খুব ভালবাসি ফারহান, বোঝার চেস্টা কর!
ফারহানঃ সরি জেরিন, আমি এটা করতে পারব না…
জেরিনঃ কেন ফারহান, কি সমস্যা, আমার মদ্ধে কি কমতি আছে?
ফারহানঃ তোমার কোন দোষ নেই, কিন্তু আমার তোমার সাথে সম্পরকে যাওয়া সম্ভব না।
জেরিনঃ দেখ ফারহান, আমি যে এই ভার্সিটিতে কত প্পুলার তা তো তুমি জানই, কত ছেলে আমার পিছনে ঘোরে, দেখ না। এত ছেলের যদি কোন সমস্যা না থাকে, তাহলে তোমার কি সমস্যা?
ফারহানঃ অনেক ছেলেই তো তোমার পিছনে ঘোরে, তাহলে ওদের কাউকে ধর, আমার মত একটা লো ক্লাস ছেলের পিছনে ঘুরতেস কেন?
জেরিনঃ আমি এখনও বুঝতে পারতেসি না যে তোমার আমার সাথে সম্পর্ক করতে সমস্যা টা কি?
ফারহানঃ দেখ জেরিন, তুমি সুধুই আমার ফ্রেন্ড, এর চেয়ে বেশি কিছুই না, আর এর চেয়ে বেশি কিছু হওয়ার চেষ্টাও করবে না, বুঝস এই কথাটা বলেই ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে আসে ফারহান। ফারহান হল ভার্সিটি স্টুডেন্ট। ওই একই ভার্সিটির স্টুডেন্ট হল জেরিন। ফারহান মধ্যবিত্ত পরিবার এর ছেলে, বাবা মারা গেছে ৭ বছর আগে। অপ্রদিকে জেরিন বিত্তবান পরিবার এর মেয়ে, তার বাবা অনেক বড় কোম্পানির হেড। ভার্সিটির প্রথম দিন থেকেই ফারহান কে ভালো লেগে যায় জেরিন এর। তখন থেকেই অর পিছনে পিছনে ঘোরে জেরিন, কিন্তু ফারহান কোনদিনই ওকে পাত্তা দেয় না।
মাহিনঃ ধুর শালা! তর সমস্যা টা কি? এত অস্থির একটা মেয়ে তোরে লাইন মারতে চায়, আর তুই ফিরাও তাকাস না, ওর পিছনে ভার্সিটির কত পোলাপাইন ঘুরে জানস, গুন্তে গেলে পাই এর মানের চেয়েও বড় হবে! এভাবেই ফারহানকে ঝারতে থাকে অর বেস্ট ফ্রেন্ড মাহিন।
ফারহানঃ অর পিছনে যত ছেলে ঘুরতে চায় ঘুরুক, আমি কেয়ার করি না। মাহিনঃ তোর সমস্যা টা কি বল তো?
ফারহানঃ তুই জানিস না আমার কি সমস্যা?
মাহিনঃ জানি, কিন্তু তাই বলে তুই সব কিছু বাদ দিয়ে……
ফারহানঃ থাক! যেটা আমার করা সম্ভব না, ওইটা নিয়ে আর কথা বলিস না, আমার এক্সাম আসে পড়তে দে, সর।
মাহিনঃ তোকে যে কি বলব, তোর মত পিস আমি আর এক্টাও দেখি নাই! জেরিন এর জালাতন যেন বেড়েই চলেছে। আগে তো খালি কেম্পাস এ থাকলে জালাইত, এখন তো পিছনে পিছনে বাসা পর্যন্ত চলে আসে। একদিন তো বাসায় এসে ফারহান এর মার সাথে কথাও বলে গেচে। ফারহান এর মা ফারহান কে জিজ্ঞেস করে,”মেয়ে টা কেরে?” ফারহানঃ আমার ভার্সিটির স্টুডেন্ট, আমরা একই ইয়ার এ পরি।
মাঃ মেয়েটা তোকে অনেক পছন্দ করে তাই না?
ফারহানঃ আরে মা! কি যে বল…
মাঃ আমারও মেয়েটাকে পছন্দ হয়েছে, আমি চাচ্ছিলাম যাওয়ার আগে ঘরে নতুন বউ দেখে যাব।
ফারহানঃ মা! তুমি এইসব কথা কেন বল, তুমি কোথায় যাবে? আমি তোমাকে কোথাও যেতে দেব না দৌড়ে অন্য রুমে চলে যায় ফারহান, দরজা বন্ধ করে ফুপিয়ে কাঁদতে থাকে। পরের দিনই আসে দুসসংবাদ। মাহিন দৌড়ে যায় হস্পিটালএ।
মাহিনঃকি হয়েছে ফারহান? আনটি কই? আর তুই কথা বলছিস না কেন? কি হয়েছে? ফারহান?এই ফারহান?
ফারহানঃসব শেষ রে দোস্ত, সব শেষ। মাহিন কে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে ফারহান। অনেক দিন কেম্পাসে ফারহান কে দেখতে না পেয়ে জেরিন এর আর ভালো লাগে না। মাহিন ভার্সিটিতে আসে। ওকে ধরেই জিজ্ঞেস করল,
জেরিনঃ মাহিন, ফারহান কোথায় অনেক দিন ধরে দেখছি না যে? মাহিন ওর কথার উত্তর না দিয়েই চলে যায়। প্রায় ২ মাস পরে ফারহান ভার্সিটিতে আসে। জেরিন তো ওকে দেখেই দৌড়ে আসে। জরিয়ে ধরে বলে,
জেরিনঃ এতদিন কোথায় ছিলা ফারহান, আমার যে কত খারাপ লাগতেছিঃল জান, কতদিন তোমাকে দেখি নাই, চলো, আজকে আমি তোমাকে ট্রিট দিব, চলো।
ফারহানঃ জেরিন, আমার তোমার সাথে কিছু কথা ছিল, একটু আসবে আমার সাথে জেরিন অনেক খুশী হয়, বুঝতে পারে ও কি বল্বে। মনে মনে বলে,”এত দিনে গাধাটার মাথায় বুদ্ধি আস্ল”। ফারহান জেরিন কে নিয়ে যায় লেক এর ধারে।
ফারহানঃ দেখ জেরিন, আমি তোমাকে প্রথম থেকেই পছন্দ করতাম। কিন্তু বলতে পারি নি, কারন আমার ওটা বলার মত সাহস ছিল না। জেরিনঃহুম।
ফারহানঃ আমার বাবা মারা যায় যখন আমি কলেজে পরি তখন। তখন থেকেই আমি আর আমার মা, এই নিয়ে আমাদের পরিবার। সব সময় মা এর পাশে পাশে থাকতাম, ভয় হত, বাবা কে হারিয়েছি, মা কে যদি হারিয়ে ফেলি।
জেরিনঃ তুমি কি বলতেছো ফারহান? ফারহানঃ ভার্সিটিতে যখন ভরতি হলাম, মা হঠাৎ একদিন অজ্ঞান হয়ে
পড়ে গেল, হাস্পাতাল এ নিয়ে জানতে পারলাম যে মার কেন্সার ধরা পরেছে। দ্রুত চিকিৎসা না করলে মাকে বাচানো যাবে না। চিকিতসার জন্য যা টাকা দরকার ছিল, তা আমাদের সব কিছু বেচলেও পাওয়া যেত না। কিন্তু আমি হাল ছাড়িনি। একটা চাকরি করতে শুরু করলাম। এর ওর থেকে ধার দেনা করে সব টাকা প্রায় চলেই এসেছিল হাতে। অপারেশন এর দিন মার শরীর টা যেন কেমন কেমন করছিল। আমি দ্রুত হাস্পাতাল এ নিয়ে গেলাম মাকে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত মাকে আর বাঁচাতে পারলাম না। ফারহান এইটুকু বলে নিস্তব্ধ হয়ে যায়। জেরিন আর কান্না থামিয়ে রাখতে পারে না।
জেরিনঃ সরি ফারহান, আমি জান্তান না যে আমি কত বড় ভুল করেছি……
ফারহানঃ মনে আছে তুমি, একবার আমার বাসায় গিয়েছিলে। তখন আমার মার তোমাকে খুব পছন্দ হয়েছিল, চেয়েছিলেন তোমার আমার বিয়ে টা দেখে যেতে, কিন্তু মায়ের শেষ ইছহা টা পুরন করতে পারলাম না। কারন তখন তোমাকে নিয়ে ভাবার মত অবস্থা আমার ছিল না, তা ছাড়াও এ যুগে একটা সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে যে পরিমান টাকার দরকার, তা খরচ করার মত সামরথও আমার নেই।কিন্তু ভাব্লাম, মায়ের শেষ ইচ্ছা টা পুরন করি। জেরিন কাঁদতে কাঁদতে বলল,”সরি ফারহান, আমাকে তুমি মাফ করে দাও” ফারহান জেরিন এর চোখ মুছে দিয়ে বলল,”কেঁদো না, তুমি কোন দোষ করনি”।জেরিন কে জরিয়ে ধরে ফারহান।
জেরিনঃ আমি ওভাবেই থাকব জেভাবে তুমি আমাকে রখবে, আমাকে যদি তোমার সাথে খলা আকাশ এর নিছেও থাকতে হয়, আমার কোন আপত্তি নেই , কারন তুমিই আমার সব। এইটাই হল আসল ভালবাসা। ভালোবাসা মানেই হল sacrifice, একে অপরকে বুঝতে পারা। আশা করি গল্পটা ভালো লেগেছে।