ভালবাসা আমার কাছেই ফিরে আসল

-আমি:আচ্ছা এই ঠান্ডার ভিতর দাড়িয়ে থাকাটা কি ভাল হচ্ছে???
-দীনা:একদম কোন কথা বলবা না।চুপচাপ দাড়িয়ে থাক।আমিও দাড়িয়ে আছি দেখছ না…
-আমি:তাইতো বলছিলাম।চল ঘরে গিয়ে লেপ মুরি দিয়ে দুইজনে ঘুমাই।আর এইখানে তোমারও কষ্ট হচ্ছে আমারও হচ্ছে।
-দীনা:আমার কষ্ট হচ্ছে।আর তাতে তুমি কষ্ট পাচ্ছো।
এক চড় দিয়ে কষ্ট দেখিয়ে দিব।
-আমি:আচ্ছা তুমি ঘরে গিয়ে যা ইচ্ছে তাই করো।
এখন চল ছাদ থেকে নামি।
-দীনা:মেরে তক্তা বানিয়ে দিব।এখন ভালবাসা বেয়ে বেয়ে পড়ছে।আমি যখন বললাম আজকে তারাতারি আসার জন্য তখন ভালবেসে তারাতারি আসতে পারো নি….
-আমি:আরে কাজ ছিল আর ভুলে গিয়েছিলাম তো।

-দীনা:হ্যা এখন তো ভুলবাই। আমি তোমার কী হই যে তুমি আমায় মনে রাখবে।
-আমি :আচ্ছা যাও কালকে তোমাকে নিয়ে সারাদিন ঘুরব।
-দীনা :তোমাকে আমি বিশ্বাস করি না।
-আমি:সত্যি বলছি।
-দীনা:৩ সত্যি বল।
-আমি:সত্যি সত্যি সত্যি। হইছে???
-দীনা:হুম।আমার একটা শর্ত আছে।।।।।
-আমি :কী???
-দীনা:আমাকে কোলে করে ঘরে নিয়ে যাবে এখন।।।।
-আমি:কী??এই মোটা বস্তা নিয়ে এখন নীচে নামতে হবে…….
-দীনা:কী বললা???এত বড় সাহস।।।(বলেই মার শুরু করে দিছে)যাও আমি এখন ঘরেই যাব না।।।।।।
-আমি:আরে রাগ করে না।আমি তো এমনেই বললাম।চল নিয়ে যাই।।।।

অতঃপর কোলে করে নিয়েই নামতে হল।।। আমি সিফাত। অনার্স ২য় বর্ষে পড়ি আর বাবার ব্যবসা দেখাশুনা করি।আর উনি আমার বৌ দীনা। ওর সাথে আমার হঠাৎ করে বিয়ে হয়। কাহিনীটা এরকম, বাবা ওনার সাথে একটা বিয়ের দাওয়াতে যেতে বলে কিন্তু আমি যাই নি।তো ওনারা যায়। মানে বাবা আর মা। তো আমি বাড়িতে একা। হঠাৎ বাবা ফোন দেয়।বলে দ্রুত যেতে সেই বিয়ের দাওয়াতে।মেজাজ খারাপ করে যাই। গিয়ে তো আরো অবস্থা খারাপ।গিয়ে শুনি আমার বিয়ে করতে হবে।আর কনে হচ্ছে যার বিয়ের দাওয়াতে আসছি তার সাথে।

কারণ তার বিয়ে যার সাথে হওয়ার কথা ছিল তারা বিয়ে ভেঙে দেয় কী একটা কারণে তা আমি তখন জানি নি।
তো বিয়ে করলাম এবং বাড়িতে বৌ নিয়া আসছি। বাসর ঘরে ঢুকলাম এবং সাথে সাথে ও বলে দিল এই বিয়ে তে ওর মত ছিল না।আর ও একজনকে ভালবাসে।আমি বললাম তাহলে আপনি কী এই বিয়ে ইচ্ছে করে ভাংছেন??? ও বলল না। আরে ও ও বলছি কেন। ওর নাম টা জানছি তো। নাম দীনা।আর ও আমার থেকে ৩ বছরের সিনিয়র।মানে অনার্স ৪র্থ বর্ষ।তো আমি বললাম তাহলে আপনি ডিভোর্স চান??দীনা বলল হ্যা। আমি বললাম তাহলে ৬ মাস অপেক্ষা করতে হবে। কারণ নতুন বিয়ের পর ৬ মাস পরেই কোর্ট ডিভোর্স দেয়ার ব্যবস্থা করবে। ও রাজি হল। আর বলল ও খাটে ঘুমাবে আর আমি সোফায়।

আমি বললাম যে তাহলে আপনি বাবা মায়ের সামনে একটু অভিনয় করবেন তাহলেই হবে। বলে আমি বালিশ নিয়ে সোফায় চলে আসি আর ও বিছানায়। এভাবে ৫ মাস কেটে যায়। ও ওর মত আর আমি আমার মত চলি। হঠাৎ একদিন সকালে আমি তো ঘুম।অনুভব করলাম আমার বুকের ওপর ঠান্ডা কিছুর। কিছুক্ষণ পর আরো বেশি ঠান্ডা। আমি লাফ মেরে উঠি আর দেখি আমার শরীর থেকে বরফের টুকরো পড়লো অনেকগুলো। পাশে দেখি দীনা হাসতাছে।আমি বললাম এটা কী হল??? ও বলল,অনেক্ষণ ধরে ডাকছিলাম কিন্তু তুমি মরার মত ঘুমাচ্ছো।তাই এই কাজ করছি। আজকে ওকে দেখে একটু অবাক হলাম।কারণ ও আমার সাথে এমনটা করে না সাধারণত। ও আজকে একটু সাজুগুজুও করেছে।কিন্তু আমার জন্য না। ওর সেই বিএফের জন্য।কারণ ও প্রায়ই এমনটা সাজে।যখন বিএফের সাথে দেখা করতে যায়।

তাই কিছু না বলে ফ্রেশ হতে যাচ্ছি তখন ও পিছন থেকে ডাক দিয়ে বলল, আমাকে কেমন লাগছে??? তখন আমি বললাম, সুন্দর। ও মনটা একটু খারাপ করে বলল কার জন্য এত সাজুগুজু করলাম জিজ্ঞাসা করলে না??? আমি তখন কিছু না বলে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম। ফ্রেশ হয়ে বের হতেই দেখি ও তোয়ালে হাতে দাড়িঁয়ে রয়েছে। আমি তোয়ালে নিয়ে বললাম, আজকে এত কিছু কোন কারণ আছে নাকি??? ও বলল, সময় হবে আজকে??? আমি বললাম, কেন??? ও বলল, আজকে একটু তোমার সাথে ঘুরতে বের হতাম। আমি বললাম, কেন তোমার বিএফ কোথায়??? ও বলল, নেই। আমি বললাম,মানে???? ও বলল, মানে কিছুই না। তারপর কান্না করতে করতে বলল,যে ওর বিএফ এখন অন্য কাউকে ভালবাসে।আর ওকে মেনে নেয় নি কারণ ও বিবাহিত তাই।তাই এক সপ্তাহ আগে ব্রেকআপ করে। আর ও এই এক সপ্তাহ অনেক ভেবেছে। আর ভেবে দুটো রাস্তা বের করেছে

১.সুইসাইড
২.আমাকে মেনে নেওয়া।

ও আমাকে মেনে নিয়েছে। কিন্তু আমি যদি ওকে না মেনে নেই তাহলে ও সুইসাইড করবে। কারণ ও বিয়ের রাতেই আমার কাছে ডিভোর্স চেয়েছিল। ও তখন আমার দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল।যে আমি কী বলি। আমি ওর দিকে তাকিয়ে শুধু একটা হাসি দেই যার অর্থ মেনে নিয়েছি। ও আমার বুকে দ্রুত ঝাপিয়ে পড়ল।আর বলল কখনও আমাকে ছেড়ে যাবে না তো। আমি বললাম, না।ও বলল, তাহলে এখন থেকে তুমি করে ডাকবে। আমি বললাম, আচ্ছা।সেই থেকে আমাদের ভালবাসা শুরু।যার কোন শেষ নেই। ও এখন আমার বুকে মাথা রেখো ঘুমাচ্ছে।ও আমাকে খুব ভালবাসে।যা আমি জানি এবং ওকেও আমি ভালবাসি।কখনও কষ্ট দিব না। আর কালকে ওকে ঘুরতে নিয়ে যাবই