-এই যে,আযান দিয়েছে তো।উঠেন,নামায পড়বেন না?
–আমার ইচ্ছে হলে আমিই পড়ব,তোমার এতো ডাকতে হবেনা।নিজের কাজ করো গিয়ে,যাও।
–সময় চলে যাচ্ছে তো,উঠেন।
–এই তোমার সমস্যা কি?বলছি তো আমার ইচ্ছে হলে আমিই উঠবো।তোমাকে তো প্রথম রাতই বলে দিয়েছি আমার চিন্তা তোমাকে করতে হবেনা।মনে থাকে না?
–আচ্ছা,আপনি আমার সাথে এমন কেনো করেন?
–কারণ তুমি একটা মেয়ে এবং তোমার নাম জান্নাত।আর কিছু বলতে পারবোনা।
–আচ্ছা,ঠিক আছে।
রিয়াদ আর জান্নাত নব দম্পতি।বিয়ে হয়েছে মাত্র তিনমাস।জান্নাত অনেক ভালো মেয়ে,নামের সাথে তার কাজেরও মিল রয়েছে।পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়ে,নিয়মিত কোরআন পাঠ করে,ধর্মীয় সবকিছু মেনে চলে।এমনকি রূপের মতোই অধিক গুনে গুনান্বিত।প্রতিদিন ভোরে নামাযের জন্য রিয়াদ কে ডাকে আর এইভাবেই ঝাড়ি খায়।এতো রূপ-গুণ প্রভাবিত করতে পারেনি রিয়াদের মন কে।এমন কি এই তিনমাসে রিয়াদ কখনো ভালোভাবেও কথা বলেনি জান্নাতের সাথে।ঘুমানোর সময় মাঝখানে কোলবালিশ দিয়ে অন্যদিকে ফিরে ঘুমানো দৈনন্দিন রুটিন হয়ে গেছে।এভাবেই চলছিলো রিয়াদ-জান্নাতের বৈবাহিক জীবন।জান্নাত ভালো মেয়ে বলেই এতো কষ্ট সয়েও কাউকে কিছু বলছেনা।হয়তো ভাবছে একদিন না একদিন ঠিকই ভুল বুঝতে পারবে।জান্নাত জানার জন্য ব্যকুল হয়ে আছে রিয়াদ এমনটা কেনো করে।কিন্তু রিয়াদ কখনোই বলেনি।তাই সে রিয়াদের ফোন থেকে চুরি করে রবিউল নামের একটা বেষ্ট ফ্রেন্ডের নাম্বার নেয় এবং তাকে কল করে আস্ক করে রিয়াদ এমন কেনো।অতঃপর জান্নাত বুঝতে পারে এইসব কিছুর জন্য রিয়াদ দায়ী নয়।দোষটা তার মতোই অন্য একটা মেয়ের।তার নামও ছিলো জান্নাত।যার সাথে রিয়াদের রিলেশন ছিলো দুইবছরের।
খুব ভালোবাসতো রিয়াদ।কতো স্বপ্ন,আশা,প্রতীক্ষা,প্রতিজ্ঞা ছিলো তাদের সম্পর্কে।রিয়াদ পাগলের মতোই ভালবাসতো আগের জান্নাত কে।কিন্তু রিয়াদের পাগলকরা ভালোবাসা কে জলাঞ্জলি দিয়ে দুইবছরের সম্পর্ক কে বিচ্ছিন্ন করে অন্য সম্পর্কে মত্ত হয় জান্নাত।রিয়াদ অনেকবার তাকে নতুন করে ফিরে পেতে চাইলেও শুধু অপমানিতই হতে হয়েছে।তারপর থেকেই জান্নাত নাম এবং নারীর প্রতি ঘৃণা জমে গেছে রিয়াদের।কোনো মেয়ে কিংবা জান্নাত নামকে সে খুব ঘৃণা করে।তাই সে বিয়ে করতে চায়নি।কিন্তু একজন বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে সমাজ এবং পারিবারিক চাপে বাধ্য হয় বিয়ে করতে।বিয়ের পরই জানতে পারে তার নববধূর নামও জান্নাত।
তারপর দুই বেষ্ট ফ্রেন্ড রবিউল আর তারেক রিয়াদকে অনেক বুঝিয়েছিলো।কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।কারণ সে মনে প্রাণে মেয়েদেরকে ঘৃণা করে।তবুও তার বউ জান্নাত অপেক্ষায় রইলো তাকে ভালো স্বামী হিসেবে পাওয়ার।কারণ সে জানে,যে সত্যিকারে ভালোবাসতে পারে,সে সর্বোচ্চ ভালো হওয়ার ক্ষমতা রাখে।শুধু একটু ভালোবাসা ইনভেস্ট করলেই হয়তো সম্ভব।তারপর থেকেই রিয়াদ যেভাবে বলে,জান্নাত ঠিক সেভাবেই চলে।হাজার বকা খায় প্রতিদিন,তবুও সে হাসিমুখে সব মেনে নেয়।যখন একটু বেশি ধমক সুরে বকা দেয়,তখন কাঁদতে কাঁদতে এসে রিয়াদ কে জড়িয়ে ধরে।তারপর রিয়াদ আর কিছু বলার সুযোগ পেতোনা।
এভাবেই অতিক্রম হয়ে যায় ছয়মাস।রিয়াদ আজকাল জান্নাতের কাঁদতে কাঁদতে জড়িয়ে ধরাতে মত্ত হয়ে গেছে।একটু সুযোগ পেলেই ধমক দেয় যেনো জান্নাত তাকে জড়িয়ে ধরে।কিছুটা ভালোও লাগে রিয়াদের।সত্যিই মেয়েটা পাগল।তা নাহলে এতো অবহেলার পরও কেনো এতো ভালোবাসে।জান্নাতের পাগল করা ভালবাসায় কিছুটা মুগ্ধ রিয়াদ।তাই অতীতের স্মৃতিগুলোকে খরচের খাতায় ফেলে দেয় নিজেই।কিছুটা ইমপ্রেসও হয় জান্নাতের প্রতি।কিন্তু জান্নাতকে এই ব্যাপার টা বুঝতে দেয়নি। এভাবেই চলছিলো কিছুদিন।জান্নাত কিছুটা অসুস্থ,এর আগেও প্রায়ই অসুস্থ হতো জান্নাত।কিন্তু কখনো সেভাবে খেয়ালই করেনি রিয়াদ।এইবারই প্রথম রিয়াদ নিজেই জান্নাত কে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাচ্ছে।এতে জান্নাত অনেক খুশি।ডাক্তার কিছু টেস্ট দেয়।টেস্ট এর স্যাম্পল জমা দিয়ে চলে আসে দুজন।রিকশায় করে বাসায় ফিরছিলো।জান্নাত রিয়াদের কাঁধে মাথা ফেলে রেখে রিয়াদ কে জড়িয়ে ধরে রেখেছে আর বলছে…
–আচ্ছা,আমরা তো স্বামী-স্ত্রী,আমি তো আর আপনাকে ছেড়ে যাবোনা।তাহলে আমার সাথে একটু ভালোভাবে কথা বললে কি হয়?একটু ভালবাসা পেতে পারিনা?
–ভালোবাসার কথা আমাকে বলবেনা।কারণ টা তুমি জানো।
–সব মেয়ে কি খারাপ?সব জান্নাত তো আর খারাপ না।
–তুমি অসুস্থ,বেশি কথা বলোনা.সুস্থ্য হলে বইলো।
–আমি আপনাকে সত্যিই অনেক ভালোবাসি।(বলেই আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে শুরু করলো)
রিয়াদ কিছু বুঝে উঠতে পারছিলনা কি করবে।তবে রিয়াদের মন জয় করে নিয়েছে জান্নাত।সেইদিনই জান্নাতের অনুরোধে হাত ধরে প্রথম হেঁটেছিলো।বাসায় ফিরে এসে ইচ্ছে করেই একটু ধমক দিলো আর পাগলিটা এসে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো।জান্নাত রিয়াদকে খুব ভালোবাসে সেটা রিয়াদ বুঝতে পেরেছে।অথচ বিয়ে করা বউ হওয়া সত্তেও কোনোদিন রিয়াদ জান্নাতকে ভালোবেসে কাছে টেনে নেয়নি।কখনো দেয়নি বউয়ের অধিকার।
রিয়াদ আর জান্নাত পাশাপাশি শুয়ে আছে।ঘুম আসছেনা কারোরই।জান্নাত কথা বলার সাহস পাচ্ছেনা।রিয়াদ কিছু বলবে কিনা ভাবছে।দুইটা মেয়ের একই নাম,জান্নাত।দুইজন দুই ধরনের।একজন ভালোবাসা ধ্বংসকারী,ভালোবাসা এবং নারীর প্রতি ঘৃণা জন্মিয়ে দিয়ে গেছে,আর অন্যজন দেখালো ভালোবাসতে হয় কিভাবে।আসলে আমাদের চিন্তা ভাবনা নেগেটিভ,তাই একজনের দোষের ভার সবার উপরে চাপিয়ে দেই।একজন জান্নাত প্রতারণা করে গেছে,কিন্তু অন্যজন শিখাচ্ছে ভালোবাসতে হয় কিভাবে।এইসব ভাবতে ভাবতেই অনেক রাত।অতঃপর রিয়াদ…
–কি হলো,এখনো ঘুমাওনি?
–না,ঘুম আসছেনা।কালকে রিপোর্টে কি যে থাকবে?
–কি থাকবে?উল্টাপাল্টা চিন্তা না করে ঘুমাও।
–একটু ঘুম পাড়িয়ে দিবেন?মাথায় হাত বুলিয়ে দিবেন?
–হুম।
মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে ঘুমিয়ে পড়ে জান্নাত।রিয়াদ ভাবছে জান্নাতকে তার অনুভূতির কথা গুলো বলবে।কিন্তু জান্নাত ঘুমিয়ে পড়ায় পরেরদিনের জন্য জমা রয়ে গেলো।শুধু কপালে আলতো করে একটা চুমু খেয়েই ঘুমিয়ে পড়ে রিয়াদও।
পরের দিন সকালে ডাক্তার রিয়াদকে ফোন করে দেখা করতে বলে।জান্নাত কে সাথে নিয়ে চলে যায় হাসপাতালে।ডাক্তার জান্নাতের সব রিপোর্ট বিশ্লেষণ করে জানতে পারে তার Acute Myeloid Leukemia রোগ হয়েছে।সর্বোচ্চ তিনমাস বেঁচে থাকবে পৃথিবীর বুকে।চিকিত্সা করাতে অনেক টাকা লাগবে বিদেশ পাঠাতে।কিন্তু সুস্থ্য হওয়ার সম্ভাবনা মাত্র ৪%।এইসব শুনার পর রিয়াদের মাথায় ধরছিলোনা কি করবে।জান্নাত এইবার কোনো ধমক ছাড়াই রিয়াদকে পাগলের মতো জড়িয়ে ধরে হাউ মাউ করে কান্না শুরু।”আমি আরো অনেকদিন বাঁচতে চাই,আপনাকে আরো অনেক ভালোবাসতে চাই,আপনার ভালোবাসা পেতে চাই”।এইসব বলছে আর কাঁদছে অনবরত।রিয়াদের চোখ বেয়ে অশ্রু ঝরছে।শান্তনা দেওয়ার কোনো ভাষাই রিয়াদের নেই।কোনরকমে রিকশায় করে বাসায় নিয়ে গেছে।সেদিন প্রায় বেশিরভাগ সময় দুজনের কান্নার স্রোতে হারিয়ে যায়। শুয়ে আছে রিয়াদ জান্নাত।আগের চেয়ে অনেক কাছে।জান্নাত সাহস করেই কথা বললো আজ
–কালকে সকালে আমাকে আব্বুর বাড়িতে দিয়ে আসবেন।
–কেনো?ঐ বাড়িতে গিয়ে কি করবে?
–আব্বু-আম্মুর কাছে থাকবো।আপনাকে আর জ্বালাবোনা।
–এই বাড়িতে কি থাকা যাবেনা?
–আর থেকে কি হবে৷এতদিন সুস্থ্য অবস্থায় থেকেও আপনাকে বুঝাতে পারিনি কতোটা ভালোবাসি।
— কি বলতেছো এইসব?তুমি কোথাও যাবেনা,এই বাড়িতেই থাকবে।
–বাঁচবো আর কয়টা দিন,আপনাকে কষ্ট দিতে চাইনা আর।আপনার বোঝা হয়ে থাকতেও চাইনা।
–চুপ।তুমি আমাকে ছেড়ে কোথাও যাবেনা।যতদিন বাঁচি,একসাথেই বাঁচবো।তুমি আমাকে ক্ষমা করে দিও বউ।
–ছি ছি,ক্ষমা চাইছেন কেনো?আপনি আমার স্বামী।আপনি ক্ষমা চাইলে আমার পাপ হবে৷ক্ষমা না চেয়ে একটু ভালোবাসেন।
–তোমার উপর কতো অন্যায় করছি।তবে তোমাকে ইচ্ছে করেই একটু বেশি বকা দিতাম,যেনো তুমি এসে জড়িয়ে ধরো।ভালো লাগে খুব।
–সত্যি?তাহলে আমি সারাজীবন আপনাকে জড়িয়ে ধরে থাকতে চাই।
–হুম,আজ থেকে তুমিই আমার সব।বকা না দিলেও জড়িয়ে ধরবা।আগের চেয়েও অনেক বেশি ভালবাসবে।
–হুম,একটু আদর করবেন?বিয়ের পর তো কোনোদিন করেননি।
–কেনো নয়,আমার বউ কে আমি সব করবো।অনেক ভালবাসবো।
–আমি আরো অনেকদিন বাঁচতে চাই,আপনাকে আরো অনেক ভালোবাসতে চাই।(বলতে বলতেই হাউ মাউ কান্না শুরু)
এখন দুজন দুজনকে খুব ভালোবাসে,প্রায়ই দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে।জান্নাতের কোনো ইচ্ছেই অপূর্ণ রাখেনা রিয়াদ।হঠাত করেই ডাক্তার ফোন করে রিয়াদকে বললো,ওরে বাইরে পাঠিয়েও কোনো কাজ হবেনা মেবি।ওরে ভালো হাসপাতালে ভর্তি করে দাও।সবসময় হাসি খুশি রাখবা।ওষুধ যা লাগে,আমি পাঠিয়ে দিবো।
তারপর থেকেই জান্নাতকে খুশি রাখতে চেষ্টা করে রিয়াদ।সফলও হয়।এখন আর একসাথে কাঁদেনা।তবে আলাদা ভাবে কাঁদলেও সেটা ভালোবাসা হারাবে বলে।জান্নাতের চিকিত্সার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। জান্নাত হাসপাতালে ভর্তি হলো,কিন্তু রিয়াদ এখনো তাকে ছাড়ছেনা।সারাদিন-রাত জান্নাতের কাছেই থাকছে।জান্নাতকে খাইয়ে দেওয়া,ওয়াশ রুমে নিয়ে যাওয়া,সবই করছে রিয়াদ।দুজন হাসপাতালে থাকলেও সেটাকে প্রেমের স্বর্গোদ্যান বানিয়ে ফেলেছে।কেমোথেরাপি দেওয়ার ফলে জান্নাতের মাথার চুল সব পড়ে যায়,তাই রিয়াদও মাথা ন্যাড়া করে ফেলে।রিয়াদের এইরকম পাগলামি ভালবাসায় মুগ্ধ জান্নাত।আগের চেয়ে অনেক সুস্থ্য হতে থাকে জান্নাত।তিনমাস অতিক্রম করে যায় জান্নাতের রোগ।তা দেখে ডাক্তাররাও অবাক,হয়তো এটা দুজনের ভালোবাসার জোর। অনেক রাত হয়ে গেলো,রিয়াদ শোয়া থেকে উঠে জান্নাতের দিকে একনজরে তাকিয়ে থাকে।কি নিষ্পাপ মুখ,কি সুন্দর নাক,ঠোঁট,চোখের ভ্রু।মেয়েটা একটু বেশি ভালো।আল্লাহ হয়তো ভালো মানুষদের পৃথিবীতে খুব কষ্ট দেয়,বেশি দিন রাখেনা।তার জ্বলন্ত প্রমাণ জান্নাত।হঠাত করেই জান্নাতের ঘুম ভেঙ্গে গেলো…….
–আপনি ঘুমাননি?
–ঘুম আসছেনা।তোমাকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছিলো.।
–তাই?আচ্ছা,এখন কি আপনি আমাকে ভালোবাসেন,নাকি করুণা করছেন?
–চুপ,খুব ভালোবাসি তোমাকে।
–সত্যি?তাহলে একটু আদর করে দেন।
–হয়েছে?এখন লক্ষী মেয়ের মতো ঘুমাও।
–এই,আমার পাশে একটু শুয়ে থাকেননা।কেমন যেনো ভয় করছে।
–তোমার পাশে?এইটুকু বেডে দুজন শোয়া যাবে?পড়ে যাব তো আমি।
–পড়বেননা।আপনাকে খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরে শুয়ে থাকবো।আপনিও ধরবেন।
–এই প্রথম আমরা এক বালিশে দুজন।খুব ভালো লাগছে।
–সারারাত এইভাবেই থাকেন।খুব ভালো লাগবে।
–ঘুম আসলে পড়ে যাবো তো পাগলি।
–তাহলে ঘুমাবোনা।আপনাকে সারারাত জড়িয়ে ধরে পাহারা দিবো।
–এই পাগলি,অসুস্থ আমি নাকি তুমি?দুষ্টামি না করে ঘুমাও।
–আপনাকে আজকে খুব কাছে রাখতে ইচ্ছে করছে।
–সারাজীবনই তোমার কাছে থাকবো।এখন ঘুমাও বউ।গুড নাইট।
অতঃপর জোর করেই শুইয়ে দেয় এবং নিচে বিছানা পেতে শুয়ে পড়ে রিয়াদ।সকালে ঘুম ভাঙ্গলো দুই-তিনজন নার্সের কথায়।উঠে দেখে তারা জান্নাতকে ডেকে তুলতে চেষ্টা করছে।কিন্তু জান্নাত উঠছেনা।রিয়াদ জান্নাতের বেডের উপর বসতেই ডাক্তার এলো।জান্নাতের হাতের শিরা চেক করে রিয়াদ কে সরি বলে চলে যায় ডাক্তার।ততক্ষণে রিয়াদ বুঝে এই জান্নাতও প্রতারণা করে চলে গেছে।অথচ কাল রাত পর্যন্ত ভুলেই গেছিলো রিয়াদ জান্নাতের চলে যাওয়ার সময় এসে গেছে।রিয়াদের হাউ মাউ কান্না দেখে ভীড় জমলো।কেনো রাতে তার সাথে থাকলোনা,আফসোস করতে লাগলো তা নিয়ে।আর বলতে লাগলো…..
–প্রতারক,খুব তো বলে ছিলে আমাকে ছেড়ে যাবেনা।খুব ভালবাসো আমায়।তাহলে ছেড়ে গেলে কেনো একা ফেলে আমাকে?
হাউ মাউ করে কাঁদছে আর এইসব বলছে রিয়াদ।ভাবছে এইটাও প্রতারণা করলো তার সাথে।তবে শিখিয়ে দিয়ে গেছে কিভাবে ভালোবাসতে হয়,ভালোবাসা পেতে হয়।ভালোবাসা কখনো একজনের জন্য স্থির নয়,যে ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য,ভালোবাসা শুধুই তার জন্য।রিয়াদের কান্নায় পুরো হাসপাতাল এসে থামে রিয়াদের সামনে।রিয়াদের ভালবাসাময় ভাগ্যটা নড়বড়ে।হয়তো সত্যিকার ভালোবাসা গুলো এইরকম অপূর্ণই রয়ে যায়।