ভালবাসা মানে কী জানো তো? যাকে তুমি ভালবাসবে তার মাঝে নিজেকে খুজেঁ পাওয়া। যদি তার মাঝে নিজেকেই খুজে না পাও তাহলে সেইটা ভালবাসা না বরং একপ্রকার মোহ। আর সেই মোহ কে তোমার কাছে ভালবাসা মনে হয়।
সকালবেলা ঘুমিয়ে আছি আজ ছুটির দিন বলে। তবে বাড়িতে অনেক আওয়াজের কারনে ঘুমটা ভেঙ্গে গেল। তবে ঘুমটা ভাঙ্গলো একটা চিৎকারে। ঘুম থেকে উঠে আমি বুকে হাত দিয়ে বসে পরি। মনে হচ্ছে আকাশে কোন গর্জন হলো। কোন মতে নিজেকে সামলিয়ে আমার রুম থেকে বের হলাম দেখার জন্য যে কে এমন আওয়াজ করলো। ঘর থেকে বার হয়ে দেখি মায়ের সাথে একটা মহিলা আর ওই মহিলার পাশে একটা মেয়েকে দেখতে পেলাম। আমাকে দেখা মাত্র মা আমায় ডাক দিলো। আমিও সবার সামনে গেলাম আর সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমাকে দেখিয়ে মা ওই আন্টিকে বলল
— এই হলো আমার ছেলে রঙ্গন। তবে ডাক নাম রং বলে ডাকি।
— ও আন্টি তুলি কই? তাহলে রং তুলি হয়ে যেত। কত কিউট একটা নাম। ( পাশের মেয়েটা হাসতে হাসতে বলল)
— কি সব বলছিস ছবি? চুপ করে থাকতে পারিস না। ( আন্টি ওনার মেয়েকে বলল)
আমি চুপ করে ওই মেয়েটার দিকে তাকিয়ে আছি। আর ও মুখে আঙ্গুল দিয়ে হেসেই যাচ্ছে। ওর হাসিটার মাঝে কেমন যেন একটা বাচ্চাদের পবিত্রা আছে। তবে ওর নাম ছবি এটা বুঝলাম। নাম তো খারাপ না তবে আমার সাথে যায় না। বরং কি যেন একটা মিসিং মনে হয়। আচ্ছা যাই হোক, আগে ওদের কথা শুনি। তখন মা বলল ছবি নাকি আমাদের এখানে থেকে ভার্সিটিতে ভর্তি পরীক্ষার জন্য কোচিং করবে। ওরা তো গ্রামে থাকে তাই গ্রামে থেকে প্রতিদিন আসা যাওয়া খুব কষ্টকর তাই আমাদের এখানে থেকে কোচিং করবে। তাছাড়া আমি ভার্সিটি পড়া শেষ করে আপাতত চাকরী করছি তাই বাড়িতে পড়ার জন্য হেল্প করতে পারবো।
তবে এই মেয়েটা শুধু আমায় দেখলে হাসে এটাই সমস্যা। বুঝতে পারি না আমায় দেখলে কেন হাসি আসে। হঠাৎ আমার ফোনে একটা কল আসলো তাই ওদের কথা থেকে আমি চলে আসি। ফোনে কথা বলা শেষ করে আর ওদের সামনে না গিয়ে আমি আমার রুমে চলে যাই। আজ যেহেতু ছুটির দিন তাই বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে যাবো বলে রেডি হচ্ছি। তারপর রেডি হয়ে বসার রুমে এসে মাকে বলে বাইরে চলে আসলাম। তারপর সকল বন্ধু মিলে মেতে উঠলাম মজায়। আড্ডা শেষ করে বাড়ি ফিরতে বিকাল হয়ে গেল। বাড়ি ফিরেই কাউকে বসার রুমে না দেখে আমার রুমে চলে গেলাম। তখন খেয়াল করি আমার রুমের পাশের বেলকনিতে কে যেন দাড়িয়ে আছে। আমি বেলকনিতে যেতেই দেখি ছবি আমার বেলকনির গাছ গুলোকে হাত দিয়ে দেখছে…….
— তুমি এখানে?
— কেন আপনার রুমে আসতে বুঝি মানা আছে?
— তা না তবে আশা করি নি যে তুমি এখানে।
— ও আচ্ছা তাহলে আমি বরং চলে যাই।
— তোমার যাত্রা শুভ হোক।
— কী?
— না কিছু না
আর কোন কথা না বলে মেয়েটা চলে গেল। আর আমি চুপচাপ শুয়ে মোবাইল টিপতে লাগলাম। এইসব অযথা কাজ করতে করতে রাত হয়ে গেল। তাই অফিসের কিছু কাজ ছিল তাই ল্যাপটপ নিয়ে বসলাম। হঠাৎ খেয়াল করলাম কে যেন আমার দরজার মাঝে উকিঁ মারলো।আমি বললাম
— কে এখানে?
— আপনাকে আন্টি খেতে ডাকছে।
— ও আচ্ছা যাও। আমি আসছি।
তার মানে এখানে ছবি ছিল। মনে হয় ভয়ে আমার রুমে আসে নি। কারন বিকালে একটু কথা শুনেছিল তো। খাবার টেবিলে যেতেই দেখি মা, বাবা আর ছবি বসে আছে। আমিও তাদের সাথে গিয়ে যোগ দিলাম। তখন মা বলল…
— তোর আন্টি আজ দুপুরের দিকে চলে গেছে। তুই ছবিকে কাল একটা ভাল কোচিংয়ে ভর্তি করে দিস তো।
— মা কাল তো আমার অফিস আছে।
— তা তো প্রতিদিনই আছে। তবে আজ তোর বন্ধুদের সাথে কথা বলে দেখ কোন কোচিং টা ভালো। তারপর কাল একটা সময় ছুটি নিয়ে এসে ভর্তি করে দিস।
— ওকে দেখি
খাওয়া দাওয়া শেষ করে আমি রুমে চলে আসি। একটু অফিসের কাজ গুলো দেখে তারাতারি ঘুমিয়ে পরি যেহেতু কাল আমার অফিস যেতে হবে। পরেরদিন রেডি হচ্ছি অফিসে যাবো বলে তখন মা আসলো
— কিরে কাল রাতে খুজঁ নিয়ে ছিলি যে কোন কোচিং টা ভালো।
— না আসলে খেয়াল ছিল না।আচ্ছা তবে আজকের মাঝে দেখি আমি কি করতে পারি।
— মনে থাকে যেন।
— আচ্ছা
বলেই আমার রুম থেকে বার হয়ে গেলসম। যাওয়ার সময় দেখি ছবি বসে বসে টিভি দেখছে। আমায় দেখে কেমন করে যেন একটু তাকালো তাই কৌতুহল বশত ওর সামনে গেলাম…….
— এভাবে তাকালে কেন?
— রাস্তায় বার হলে আরো ১০ জনে এমন করে তাকাবে তাই।
— কিন্তু কেন?
— আপনার টাই বাধাঁ দেখে?
— আসলে কি আমি ঠিক করে টাই বাধতেঁ পারি না। যদিও ইউ টিউবে ভিডিও দেখে এইটুকু শিখছি।
আর কোন কথা না বলতে দিয়ে ও নিজে থেকে এসেই বেধেঁ দিতে লাগলো। তবে এটা বলতে পারি যেনআমার হার্টবিট চরম স্পিডে ছিল। আমি শুধু ওর দিকেই তাকিয়ে ছিলাম।
— এই যে মিস্টার এতো তাকিয়ে কি দেখছেন? আপনার টাই বাধাঁ তো শেষ। এবার অফিস যান।
— ও।
আমিও ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলাম। আসলে ওর মাঝে একটা মায়া আছে যা আমায় মোহিত করছে। আমি চুপচাপ ঘর থেকে চলে আসলাম। নয়ত ওর চোখের মাঝে নিজেকে হারিয়ে ফেলতাম। অফিসে এসে কাজে মনোযোগ দিলাম। হঠাৎ খেয়াল হলো ওরে কোচিংয়ে ভর্তি করার কথা। আমার একটা বন্ধু সে আপাতত শিক্ষকতা কাজে নিযুক্ত থাকায় তাকে ফোন দিলাম আর জেনে নিলাম কোন কোচিং টা এইসবের জন্য ভালো। তবে বন্ধু যে কোচিং টার কথা বলল ওইটা একটু দূরে তবে ওর জন্য খুব ভালো। ওরে ভর্তি করাবো সেই কারনে দুপুরে ছুটি নিয়ে চলে আসলাম। কারন খবর নিয়ে জানলাম যে বিকালেও নাকি একটা ব্যাচ পড়ায়। তাই আর লেট না করে বাড়ি চলে আসলাম। এসে দেখি ছবি নিজেই ছবি হয়ে গেছে মানে ঘুমিয়ে গেছে। এবার ওরে কি বলে ডাক দেই। আবার মাকেও দেখলাম ঘুমিয়ে আছে। কি যে করবো বুঝতে পারছি না।
— এই যে উঠ?
— ( ঘুমে বিভোর)
ধ্যাত কি যে করি এমনি ছুটি নিয়ে আসছি। যদি এখন না নিয়ে যেতে পারি তাহলে হয়ত কোচিং বন্ধ হয়ে যাবে আর আমার সময়টাও কাজে লাগবে না। আরো কিছুখন ডাকলাম কিন্তু ও ঘুমিয়ে আছে তাই বাধ্য হয়ে ওর পাশের টেবিল থেকে জল নিয়ে পুরু এক গ্লাস জল ওর মুখে দিয়ে দিলাম। আর ও ভয়ংকর এক চিৎকার দিয়ে উঠে বসলো। তবে আমায় দেখে একদম চুপ হয়ে গেল।
— এটা কি হলো?
— কিছুই না। তোমার ঘুম ভাঙ্গালাম।
— কেন?
— এখন কোচিং যেতে হবে তোমায় ভর্তি করাতে।
— এটা ছাড়া কি ঘুম ভাঙ্গাতে অন্য কোন উপায় ছিল না?
— হুমম ছিল তবে অধিকার ছিল না।
— কী?
— আপাতত ফ্রেশ হয়ে নেন। আধ ঘন্টার মাঝে যেতে হবে।
— ওকে
আমিও রুমে চলে আসলাম আর নিজে রেডি হতে লাগলাম। তারপর মাকে ঘুম থেকে উঠিয়ে সব বলে বের হলাম। তারপর রিকশা দিয়ে যেতে প্রায় ২০ মিনিটের মত লেগে গেল। এরপর ওরে নিয়ে সরাসরি কোচিং এর অফিসে গেলাম। ওদের সাথে কথা হলো। মনে হলো এখানে পরলেই খুব ভাল হবে। তাই জানতে চাইলাম কোচিং টা কয় শীফটে ক্লাস হয়।
— সকালে সাড়ে ৬টা থেকে ১টা শিফট আর বিকালে ৫টা থেকে আরেকটা শিফট। এবার আপনাদের ইচ্ছা তবে দুঃখের বিষয় যে আমাদের বিকালের শিফটে কোন সিট খালি নাই। যদি আপনারা চান তাহলে সকালের শিফটে ভর্তি হতে পারেন। আমি ওদের কথা শুনে ছবির দিকে তাকালাম। ও বলল ওর কোন সমস্যা নাই। তাছাড়া ও খুব সকালেই ঘুম থেকে উঠে। তাই আমি ওদের হা বলে ভর্তি ফরম পূরন করে দিলাম। এইখানে ভর্তির সমস্ত টাকাটা আমিই দিলাম। যদিও ও নিজেই দিতে চেয়ে ছিল। তারপর ওরে নিয়ে রিকশা দিয়ে ভাল করে জায়গাটা চেনাতে চেনাতে নিয়ে আসলাম। তারপর মাকে এসে সব বললাম। পরেরদিন সকালে ঘুমিয়ে আছি। হঠাৎ কে যেন আমার মুখে পানি ঢেলে দিলো। আমি সাথে সাথে লাফ দিয়ে উঠলাম আর তাকিয়ে দেখি ছবি দাড়িয়ে আছে।
— তুমি এতো সকালে? কি হয়েছে?
— আমায় কোচিংয়ে দিয়ে আসেন।
— কাল না সব চিনিয়ে দিয়ে আসলাম।
— ভুলে গেছি।
— আচ্ছা তবে এভাবে জাগালে কেন? অন্য কোন উপায় ছিল না।
— উপায় ছিল কিন্তু অধিকার ছিল না।
— আচ্ছা আচ্ছা যাও আমি আসছি।
আর রাগ দেখিয়ে কি করবো? মাকে কিছু বললেও ওনি আমার উপর রাগ দেখাবে। তারপর ফ্রেশ হয়ে ওরে নিয়ে কোচিংয়ে দিতে গেলাম। ওরে রেখে যখন চলে আসতে যাবো তখন ও বলল…….
–আমায় বাড়ি নিয়ে যাবেন না। একা একা তো হারিয়ে যাবো। (ওর দিকে তাকিয়ে ভাবলাম আজ তো প্রথম দিন তাই থেকে যাই।)
— আচ্ছা তুমি ক্লাসে যাও। আমি বাইরে আছি।
ও আমার কথা শুনে একটা মুচকি হাসি দিয়ে চলে গেল। প্রায় ৩ঘন্টা বসে বসে মানুষের আসা যাওয়া দেখতে লাগলাম। পরে খেয়াল করলাম ওর কোচিং ছুটি হয়েছে তাই আমিও ওরে খুঁজতে লাগলাম। পরে দেখলাম ছবি একটা ছেলের সাথে হাসতে হাসতে আসছে। তবে ছেলেটাকে দেখে আমার কেমন যেন সুবিধার মনে হচ্ছে না। ও ছেলেটাকে নিয়ে সরাসরি আমার সামনে আসলো। আর পরিচয় করিয়ে দিলো। ছেলেটার নাম হলো নীল। তখন ছবি হাসতে হাসতে বলল
— আচ্ছা আমাদের ৩ জনের নামের মাঝে একটা মিল বাক্য আছে।
— কী?
— নীল রংয়ের ছবি।
ও বলেই হাসতে লাগলো। তবে আমার মাঝে হাসিটা কেমন যেন শুকিয়ে গেল। পরে নীলকে বিদায় দিয়ে ছবিকে নিয়ে আমি চলে আসলাম। এভাবেই দিন গুলো চলতে লাগলো। প্রায় মাঝে মাঝে আমি ছবিকে নিয়ে যাই কোচিংয়ে। একদিন হঠাৎ করে ও বলল যে ওকে আর কোচিং এ দিতে যেতে হবে না। আর খেয়াল করলাম ও বাড়িতেও তেমন পড়াশুনা করে না বরং মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পরেছে। আগে ওর কাছে মোবাইল দেখি নি। যখন জানতে চেয়ে ছিলাম মোবাইল কই থেকে আসছে তখন ও বলল নীল দিয়েছে। যা শুনে আমি অনেক অবাক হয়ে যাই। কারন কি এতো দামী মোবাইল দেওয়ার? আর একন তো ছবি আমার সাথে তেমন কথাও বলে না। আমার এইসব নিয়ে কোন মাথা ব্যাথা নাই তবে ভাবছি ও কোন ঝামেলায় জড়িয়ে পরলো না তো। এভাবে প্রায় দেড় মাস কেটে গেল। একদিন ছুটির দিন আমি ঘুমিয়ে আছি। তখন মা এসে আমায় ডেকে তুললো।
— মা কি হলো?
— দেখ না এখন ১০টার উপর বাজে কিন্তু ছবি এখনো বাড়ি আসে নি। তাছাড়া ওর মোবাইলও বন্ধ।
— কি বলো?
— হুমম তুই একটু কোচিংয়ে ফোন করে দেখ না।
আমি কোন মতে নাম্বারটা খুজে কোচিংয়ে ফোন দেই। কিন্তু ওরা বলে ও নাকি আজ আসে নি। এমন কি গত এক সপ্তাহের মাঝে মাত্র একদিন ক্লাস করছে। আমি তো অবাক হয়ে যাই এইসব শুনে। এইসব শুনে খুব টেনশনে পরে গেলাম। আমি কোন মতে শরীরে একটা শার্ট দিয়ে বেড়িয়ে ওর কোচিং এর উদ্দেশ্যে। কোচিং গিয়ে অনেক কথা বলি তারপর যা শুনি তাতে আরো অবাক হয়ে যাই। ওই নীল ছেলেটার যতদিন বন্ধ ওর ঠিক তত দিন বন্ধ। আমি ওদের সাথে কথা বলে নীলের নাম্বারটা নেই এবং কোচিং এর একটা মেয়েকে দিয়ে নীলকে ফোন দেওয়াই। তখন নীল নাকি বলে ওরা একসাথে আছে আর কোথায় আছে ওটাও বললো। আমি সাথে সাথে আমার দুই বন্ধুকে ফোন দিয়ে ওই খানে আসতে বলি। আমি ওইখানে যেতেই দেখি নীল ওর হাত ধরে টানছে। তখন আমি দূরে গিয়ে নীলের হাতটা ধরি। তারপর আমি নীলের উপর হাত তুলি। তখন নীল আর ওর এক বন্ধু আমায় মারতে শুরু করে। কিন্তু তখনই আমার বন্ধুরা চলে আসে আর নীল ও তার বন্ধুকে মারতে শুরু করে। মারতে মারতে আমার বন্ধুরা ওরে নিয়ে যায় আর আমি ছবিকে সাথে নি বাড়ি চলে আসি। আমি, মা আর বাবা ওর সামনে দাড়িয়ে আছি আর ছবি চুপ করে আছে।
— আজ যদি কিছু একটা হয়ে যেত তাহলে এর দায় ভার কে নিতো বরং আমাদের বদনাম হতো।আন্টি অনেক ভরসা করে তোমায় আমাদের কাছে দিয়ে গেছে এই দিন দেখার জন্য। ওনি চায় তোমার লেখা পড়ার যেন কো ক্ষতি না হয় তাই আমাদের এখানে রেখে গেছে। নয়ত গ্রামের অন্য মেয়েদের মত তোমার বিয়ে হয়ে যেত। মন চাইলে লেখাপড়া করবে না চাইলে করবে না যদি তাই ভেবে থাকো তাহলে লেখাপড়া করো না। আজ তোমার যদি কিছু হতো তাহলে দায়ী করা হতো কাকে বলো? কি হলে চুপ করে আছো কেন?
আমি মারাত্মক রাগের বশে ওরে এই কথা গুলো বলে চড় মেরে দেই আর ও কাদঁতে শুরু করে। আমিও এইখান থেকে চলে আসি। তারপর সাড়া দিন আর রুম থেকে বার হই নি। শুধু রাতে সাবার সাথে খেতে বসি। তখন খেয়াল করি ওর গাল এখনো লাল হয়ে আছে আর ও চুপচাপ খাচ্ছে। সকালে ঘুম থেকে উঠে অফিসের জন্য রেডি হচ্ছি কিন্তু টাই বাধঁতে পারছি না। যতবার বাধঁলাম ততবার আগের মত হচ্ছে তবুও ছবিকে ডাক দিলাম না। কারন অনেক আগে থেকেই ও আর বেধেঁ দেয় না। তাই টাই না বেধেঁ অফিসে চলে গেলাম। রাতে বাড়ি ফিরলাম একটু তারাতারি। খুব ক্লান্ত লাগছে শরীরটা। তখন মা আসলো আমার রুমে
— কীরে খেতে আয়। সকালে তো না খেয়ে চলে গেলি?
— যাও আসছি।
খাবার টেবিলে গিয়ে দেখি সবাই আছে শুধু ছবি নেই। তখন মায়ের কাছে জানতে চাওয়ায় মা বলে ও নাকি আজ সকালে চলে গেছে। কথাটা শুনার পর কেন জানি খারাপ লাগতে শুরু করলো। তখন যেন খেতেও ইচ্ছা করছে না।
— মা ছবিদের গ্রামে যেতে কতখন সময় লাগে?
— কেন?
— যাবো তাই।
— প্রায় দেড় ঘন্টার মত তো লাগেই।
— ওকে আমি গেলাম।
বাড়িতে সবাই জানে আমি যা করি খারাপ কিছু করি না। এক বন্ধুকে ফোন দিয়ে বললাম ওর বাইক বের করে আমার বাড়ির সামনে আসতে। আমিও বাড়ির বাইরে দাড়িয়ে রইলাম। পরে আমি বাইকের পিছনে বসে বাইকে যেতে লাগলাম। এতো তারাতারি যাচ্ছি তবু মনে হচ্ছে খুব আস্তে যাচ্ছি। ওরে বার বার বলছি আরেকটু জোরে যেতো।
প্রায় দেড় ঘন্টার রাস্তা ১ ঘন্টায় চলে আসলাম। আর গ্রামে গিয়ে পরলাম কাদাঁর মাঝে। কোন মতে ওদের বাড়ির ঠিকানা বলতে কয়েকজন ওদের বাড়িটা দেখিয়ে দিলো। আর এখন প্রায় ১১টার মত বাজে।
ওদের দরজায় নক করতেই আন্টি এসে দরজা খুলল।
— আরে রঙ্গন বাবা তুমি এতো রাতে।
— জ্বী আন্টি ছবি কোথায়?
— ও ঘরেই আছে তুমি ভিতরে আসো আর তোমার একি অবস্থা হয়েছে?
— ও কিছু না। একটু পরে গিয়ে ছিলাম। আমি কি ওর সাথে দেখা করতে পারি?
— যাও ভিতরে যাও।
পরে আমি ওর রুমে যেতে দেখি ও টেবিলে বসে পরছে তাই আমি তার পাশে একটা চেয়ার নিয়ে বসলাম। আমাকে ও আগেই খেয়াল করছে তাই তেমন অবাক হয় নি। শুধু চুপচাপ দেখেও না দেখার ভান ধরছে।
— আচ্ছা দুই দুই যোগ করলে কত হয়?
— ( প্রশ্ন শুনে কি যে একটা রাগি লুকে তাকালো)
— আস্তে তাকাও তো, পরে যাবো তো।আমি শুধু দেখতে চেয়ে ছিলাম পড়াশুনা কেমন চলছে।
— ( ও চুপ করে আছে) আমি ওর হাতটা ধরলাম তবু ও কিছু বলল না বরং চুপ করে আছে। আবার আমি বললাম
–ভালবাসা মানে কী জানো তো? যাকে তুমি ভালবাসবে তার মাঝে নিজেকে খুজেঁ পাওয়া। যদি তার মাঝে নিজেকেই খুজে না পাও তাহলে সেইটা ভালবাসা না বরং একপ্রকার ম