এর আগ পর্যন্ত যা হয়েছে তার সব ‘ক্রাশ’। স্কুলের সেই ম্যাডাম থেকে শুরু করে ক্লাস টেনের বড় আপু সব।
প্রেমে পড়লাম ২০০৯ সালে। বুঝতে পারলাম প্রেম এবং ক্রাশের মধ্যে বিশাল পার্থক্য। মেয়েকে দেখি, হাঁ করে চেয়ে থাকি। প্রেমের প্রস্তাব পাঠাতে সাহস আমার হয় না। আমি নিশ্চিত, হবেও না। এ সময় উছিলা হয়ে এলো হাসনাত সুজন। আমার প্রেমের কথা তাকে জানালাম। তিনি আমার একটা গতি করার মহান দায়িত্ব নিলেন। আমার ফেসবুক পাসওয়ার্ড নিয়ে তিনি গম্ভীর গলায় বললেন, নিশ্চিন্ত থাক। বাকি দায়িত্ব আমার।
আমি দুরুদুরু বুকে অপেক্ষায় থাকলাম হাসনাত সুজন কী করেন তা দেখার জন্য। প্রতিদিন ফেসবুক মেসেজ ঘাঁটি, দেখি হাসনাত সুজনের অগ্রগতি কিরকম। কয়েকটি কথোপকথনের নমুনা নিম্নরূপ-
-হ্যাঁ, খাইসি।
-ওকে, গুড মর্নিং।
-ভাত খাইছো?
-হ্যাঁ, খাইছি।
-ওকে, গুড ইভিনিং।
-ভাত খাইছো?
-হ্যাঁ, খাইসি।
-ওকে, গুড নাইট।
হাসনাত সুজনের কেবল ‘ভাত খাইছো?’ জিজ্ঞেস করা দেখে আমি হতাশ হলাম। তবে আশা একদম ছাড়লাম না। আমি জানি হাসনাত সুজন পাকা খেলোয়াড়। সুজন ঝলক দেখালেন ৭ দিন পর। জানতে পারলাম মিশন কমপ্লিট। তিনি প্রেম প্রস্তাব করেছেন। তিনি আমাকে বললেন, আমার কাজ শেষ। এখন তোমার পালা।
এরপরের ঘটনা লিখে প্রকাশ করার মতো না। আমি দুনিয়াদারী ‘আন্ধার’ দেখতে লাগলাম। এখন কী করব?
তবে আমার কিছু করতে হলো না। বাকিটা মেয়েই করল। মেয়ে আমাকে এক দিন ফোন দিয়ে বললো, সেও আমাকে…
আমার দুনিয়া আরও আন্ধার হয়ে গেল। এরকম অবস্থায় একটা ছেলের কী করতে হয়? হাসনাত সুজনকে ফোন দিয়ে বললাম, কী করব।
সে ঝাড়ি দিয়ে বললো, তোমার প্রেম তুমি সামলাও।
বিপদে পড়লে গুগলের সাহাজ্য নিতে হয়। আমিও নিলাম। সমাধান আসল তিনটা।
প্রথমত, চুপচাপ বইসা থাকো।
দ্বিতীয়ত, মেয়েকে নিয়ে চাইনিজে যাও।
তৃতীয়ত, ফেসবুক ডিঅ্যাকটিভ করে ঘুম দেও।
আমি তিনটার কিছুই করলাম না। আমি পালালাম। কলেজে মেয়ে একদিকে থাকলে আমি হাঁটা দেই অন্যদিকে। মেয়ে যে তলায় থাকে আমি লিফটে করে ওই তলা ক্রস করে চলে যাই। পালাতে পালাতে কেটে গেল দুই মাস। তারও কিছুদিন পর মেয়ের বিয়ের খবর পেলাম। তারও কিছুদিন পর খবর পেলাম- লাখপতি স্বামী তার, হীরে আর জহরতে আগাগোড়া মোড়া সে, বাড়ি-গাড়ি সবকিছু দামি তার।
উলেখ্য, তার স্বামীর নাম হাসনাত সুজন।
কী কাকতালীয় ব্যাপার!