ভাইয়া”””এই ভাইয়া শোন না। দেখ তো মেয়েটা কেমন? ইরার কথা শুনে মেজাজ টা খারা পহয়ে গেলো। বারবার বলার পরও কেন যে এমনকরে,বলি এখন বিয়ে করবো না। তারপরও শুনছে না। ছবিটা না দেখে চলে আসলাম,নীল শোন,(মা পিছু থেকে ডাক দিলো)
:-হ্যা মা বলো।
:-মেয়েটাকে দেখেছিস?
:-মা তোমরা কি শুরু করেছো,বলেছি তো এখন বিয়ে করতে পারবো না। তারপরও কেন করছো এমন।
:-তা করবি কেন?
দিনের পর দিন একটা অনিশ্চিত আশা নিয়ে বেঁচে থাকার নাম কি জীবন নাকি? আর যে চলে গেছে তাকে নিয়েভেবে জীবনটাকে নষ্ট করবি কেন? আর আমি মা হয়ে এটা সহ্য করতে পারবো না। হয় বিয়ে করবি না হলে আমি মরবো তোর জন্য।
:-মা পাগল হয়ে গেছো তুমি,কি বলছো এসব।
অবশেষে বাধ্য হয়ে মায়ের কথাতে রাঁজি হয়ে গেলাম। কিন্তু তখনও আমার মন জুড়ে শুধু একজন,যাকে আমি আমার জীবনের থেকেও বেশি ভালোবাসতাম। আমার কথা শুনে মা খুব খুশি হলো,
:-বাবা দেখ মেয়েটার ছবি।
:-না মা আমি দেখবো না,তুমি যেমনটা পছন্দ করো,তাকেই আমার জীবন সঙ্গি করে নিবো।
:-এই না হলো আমার শোনামনি।
বিয়েতে আমার রাজি হওয়াতে মা অনেক খুশি,কিন্তু আমি একটুও খুশি হতে পারছি না। কারন তখনও মন থেকে আগের স্মৃতি গুলোকে মুছে দিতে পারি নি। মায়ের কথা মতন বিয়ে করলাম,কিন্তু মেয়েটিকে আমি এখনো দেখি নি একবারো।দিন শেষে আসলো সেই রাত,যেটা সবার জীবনে একবার করে আসে (বাসর রাত) কিন্তু এটা নিয়ে আমার ভিতরে কোনো কৌতুহল এর রেশ মাত্র ও নাই। দরজা খুলে ভিতরে ঢুকে বেডের কাছে যেতেই। বেড থেকে নিচে নেমে সালাম করলো। কি বলবো কিছু ভেবে পাচ্ছিলাম না,
:-এই উঠেন,এত আদিক্ষেতা দেখাতে হবে না।
যান ঘুমিয়ে পড়েন সারাদিন অনেক ধকল গেছে,এখন ঘুম পাচ্ছে আমার।বলেই একটা বালিশ নিয়ে সোঁফাতেগিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম। আর একটা বারের জন্যও মেয়েটির দিকে তাঁকায় নি। ভোরে মেয়েটির ডাকে ঘুম ভাঙ্গলো।
:-গুড মর্নিং
:-গুড মর্নিং,চোখ টা খুলে দেখি গতকাল রাতের মেয়েটি, এত সুন্দর মেয়ের সাথে আমার বিয়ে হয়ছে। কিন্তু তারপরও মেয়েটিকে মন থেকে মেনে নিতে পারছি না কিছুতেই।
:-চা টা নিন
:-ওহ হ্যা,ধন্যবাদ।
:-কিছু মনে না করলে একটু বসতে পারি।
:-হ্যা বসেন।
:-ধন্যবাদ,কেমন আছেন আপনি,’ঘুম কেমনহলো?
:-হুম ভালো,বলেই চায়ের কাপে চুমুক দিলাম। অসাধারণ চা বানাতে পারে তো মেয়েটি। ওহ হ্যা মেয়েটার নাম নীলা,মানে আমার বউ।
:-আপনাকে কিছু প্রশ্ন করবো, যদি কিছু মনে না করেন?
:-হুম করেন।
:-আপনার সম্পর্কে সব কিছু শুনে তারপর কিন্তু আমি রাজি হয়েছি।
:-কি শুনেছেন আমার নামে?
:-তুমি করে বললে ভালো হয়,নিজের স্বামীর কাছ থেকে আপনি ডাকটা শুনতে কেমন লাগে।
:-আচ্ছা বলবো,
:-এই যে বিয়ের আগে আপনি একটা মেয়েকে খুব ভালোবাসতেন,কিন্তু মেয়েটির সাথে অন্যকারো বিয়ে হয়ে গেছে।
:-তাহলে সব জেনে শুনে বিয়ে করতে গেলে কেন?
:-বিয়ের আগে কাওকে ভালোবাসলে কষ্ট পেতে হয়,সে জন্য জীবনেকোনোদিন প্রেম ভালোবাসার ইচ্ছেটাও মনে পোষন করি নাই,যখন শুনলাম আপনি একটা মেয়েকে খুব ভালোবাসতেন কিন্ত সে তার মূল্যায়ন করে নি,তখন থেকে আপনাকে ভালোবেসে ফেলেছি।
:-কেন?
:-সেটা তো জানি না,তবে এখন থেকে আরও ভালোবাসবো। কারন আপনি আমার ১ম ভালোবাসা আর আমার স্বামী।
:-কিন্তু তোমাকে তো আমি মন থেকে মেনে নিতে পারবো না কোনোদিনও।
:-সমস্যা নাই,আমি আমার থেকে আপনাকে ভালোবাসবো,আপনি ভালো না বাসলেও চলবে। চা টা কেমন হয়ছে বললেন না তো?
:-হুম অনেক সুন্দর হয়ছে।
:-হুম খেতে আসুন,আর সবার সামনে একটু স্বামীর অভিনয় করবেন,এতে আপনার মা আর পরিবারের বাকি মানুষ গুলো খুব খুশি হবে।
:-আচ্ছা করবো।
যতদিন দিন যেতে থাকলো ততই নীলাকে ভালোলাগা শুরু হতে থাকলো,আসলে মেয়েটি অনেক ভালো। এই কই দিনে সবাইকে কেমন আপন করে নিছে। পরিবারে সবাই অনেক খুশি নীলাকে পেয়ে। কিন্তু আমি নীলাকে কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না। বিয়ের ৩মাস হয়ে গেছে,কিন্তু এখনো একবারো নীলাকে স্পর্শ করি নি। মেয়েটির কেয়ার করা,পরিবারের দায়িত্ববান দেখে সত্যি আমি মুগ্ধ। একটা মেয়ে এমন হতে পারে,যে সব ধরনের গুনের মিশ্রণ এ মিশ্রিত। নীলাকে এখন আগের থেকে অনেক ভালো লাগে,লাগবেই না কেন? নীলা কোনোদিক থেকে কম না,সব দিক থেকে পারফেক্ট। কিন্তু সাহস হয় না,কারন এতদিন নীলাকে অনেক অবহেলা আর কষ্ট দিয়ে ফেলেছি। অফিসে বসে বসে নীলার কথা ভাবছিলাম,হঠাৎ দেখি ইরার ফোন।
:-ভাইয়া তাড়াতাড়ি হাসপাতালে আই।
:-কেন রে,কি হয়ছে মা ঠিক আছে তো।
:-হ্যা মা ঠিক আছে,ভাবি পা পিছলা খেয়ে পড়ে গিয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে,অনেক চোঁট পেয়েছে। কথা গুলো শুনে মনের ভিতরে নীলার জন্য চেপে রাখা ভালোবাসার মাত্রাটা বেড়ে গেলো, এক দৌড়ে চলে গেলাম হাসপাতালে। গিয়ে দেখি নীলা সুয়ে আছে মা ইরার মাথাতে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।
:-কি হয়ছে মা।
:-পা পিচ্ছিল খেয়ে পড়ে গিয়েছিলো।
:-ডাক্তার কোই,কি হয়ছে নীলার।
:-জ্ঞান না ফেরা পর্যন্ত কিছু বলতে
পারবে না বলেছে। তুই একটু বস,আমি আসছি। বলে মা আর ইরা বাইরে চলে আসলো।নীলা চুপটি করে সুয়ে আছে,নিজের অজান্তে চোখ দিয়ে পানি ঝরতে লাগলো। এই চোখ খুলো,আর কত কষ্ট দিবা আমাকে।আমিও তো তোমাকে অনেক ভালোবাসি।কিন্তু কোনোদিন বলতে পারি নি,আজকে বলে দিলাম। নীলা চোখ খুলো, নীলার হাত ধরে কাঁদতে লাগলাম। পাগলিটাকে যে খুব ভালোবাসি।
:-ওগো নীলার কন্ঠ শুনে মাথা তুললাম,দেখি নীলা মুচকি মুচকি হাসছে।
:-তুমি ঠিক হয়ে গেছো।
:-হুম,একদম ফিট।
:-একটু সাবধানে চলতে পারো না,অনেক চোঁট পেয়েছো তাই না,ব্যাথা লাগছে।
:-উহু না,কে বলেছে ব্যাথা পেয়েছি,আমার কিছু হয় নি।
:-তাহলে ইরা যে বললো,আর তুমি হাসপাতালে কেন?
:-তোমার মুখ থেকে সত্যিটা বার করার জন্য,সামান্য একটু মিথ্যা বলতে বলেছিলাম মা আর ইরা কে।
:-তুমি জানো একটুর জন্য আমি মরে গেছিলাম,এমন কেও করে।
:-কেন আপনি তো আমাকে ভালোবাসেন না,তাহলে আবার।
:-কে বলেছে ভালোবাসি না,অনেক ভালোবাসি।
:-সারাজীবন এভাবে ভালোবাসতে পারবেন তো।
:-হুম সারাজীবন ভালোবাসবো
:-মনে থাকে যেন
:-হুম থাকবে
:-তাহলে একবার বলেন?
:-কি বলবো
:-কঁচি খুকা কিছু বুঝে না।
:-হুম,তুমি বলো আমি কিছু বুঝিনা।
:-যান বলতে হবে না।
:-হুম,বলছি, বলছি। আই লাভ ইউ নীলা।
:-লাভ ইউ টু প্রানের স্বামী।
অতঃপর বিয়ের ৪মাস পর আবার আমাদের বাসর রাত,হুম সেদিনের রাত আর আজকের রাত একদম এক। শুধু সময়টা পাল্টেছে। কিন্তু ভালোবাসাটা পরিবর্তন হয়ছে,সেদিন শুধু নীলা ভালোবাসতো।আজ আর আমিও নীলাকে খুব ভালোবাসি। নিজের থেকেও বেশি। আবার কি পড়বেন হুম,আর কিছু পড়ার নাই,,, থাকেন আপনারা ,আমি গেলাম রাত শেষ হওয়ার উপরে আজকের রাতটা শেষ হয়ে গেলে নীলা আমাকে ছাড়বে না। এমনিতেই এর আগে একবার ঘুমিয়ে কাটি