আমার নাম আকাশ ছোট বেলা থেকে খুব দুষ্ট।দুষ্টামি করা আমার জীবনের একটা অংশ হয়ে গেছে।আমি দেখতে তেমন স্মার্ট না তবে সবাই বলে আমার চেহারায় অদ্ভুদ মায়া আছে,যে কাউকে মুগ্ধ করবে।
রাস্তার পাশেই ছিলো আমাদের বাসা, আমি প্রতিদিন বিকাল বেলা ছাদে বসে আশেপাশের দৃশ্যগুলো দেখতাম, আমার প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে খুব ভালো লাগে।
আমাদের বাসার ছাদ থেকে রাস্তা স্পষ্ট দেখা যায়,আমি তো খুব দুষ্ট তাই রাস্তার মধ্যে কাউকে দেখতে পেলেই চুপিচুপি ঢিল মারতাম, ঢিল মেরে আমি লুকিয়ে থাকতাম, কেউ আমাকে দেখতে পায়না।
এভাবেই চলতে থাকে আমার দুষ্টামি,
সামনে আমার ইন্টার ফাইনাল পরীক্ষা তাই কয়েকদিন যাবত ছাদে বসে তেমন আড্ডা দিতে পারিনা মা সব সময় বখা দেয় সামনে পরীক্ষা ঠিকমতো পড়া-লেখা করিনা।
তাই মায়ের ভয়ে তেমন ছাদে যাওয়া হয়না।
হঠাৎ একদিন ছাদে যাওয়ার জন্য মনটা খুব চটপট করছিলো তার মাঝে লোডশেডিং তাই ভাবলাম এখন চাদে যাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ মা দেখলে ও কিছু বলবেনা।
ছাদে গিয়ে চুপচাপ বসে থাকলাম মনটা ও তেমন ভালোনা আজ আমার দুষ্টামি কোথায় যেনো উধাও হয়ে গেলো দুষ্টামি করতে ইচ্ছা হচ্ছেনা।
রাস্তা দিয়ে একটা মধ্যবয়সী ছেলে যাচ্ছে ছেলেটা দেখতে খুব ভদ্র।
মনে মনে ভাবলাম একটা ঢিল মারি
ঢিল মাইরাতো আমি ভয়ে একদম অন্যরকম হয়ে গেছি।
ঢিল টা ভুলবসত একটা মেয়ের গায়ে পড়ে গেলো।
মেয়েটা ও আমায় দেখে পেলেছে।
মেয়েটাকে দেখে বুঝতে পারলাম রাগে একদম লাল হয়ে গেছে।
মেয়েটা দেখতে খু্ব সুন্দর মেয়েটার চেহারা ও খু্ব মায়াবী।
এদিকে তো আমার খুব চিন্তা হচ্ছে মেয়েটা এখন কি করবে বাসায় আসবেনাতো ?।
এসব ভাবতে ভাবতেই দেখি আমাদের বাসার গেটের আওয়াজ শুনা গেলো। আমার আর বুঝার বাকি রইলোনা মেয়েটা বাসায় ঢুকেছে।
আমি ভাবতেছি মা কে বললে তো আমার ১২টা বেজে যাবে আর বাসায় যখন ঢুকেছে মা কে তো বলবেই।
আমি ও চুপচাপ ছাদে বসে আছি।
হঠাৎ নিচ থেকে কে যেনো ছাদে আসছে অনুভব করতে পারলাম।
আমি ভাবলাম মা ছাড়া আর কে হবে।
আমি বসে রইলাম পিছনে থাকিয়ে দেখি আমার ছোটবোন
ভাইয়া আম্মু তোমায় ডাকছে (আমার বোনের নাম বিথী)
কেনো কি হইছে মা কে গিয়ে বল এখন আসতে পারবোনা (আমি)
ভাইয়া কে যেনো আসছে তোমার সাথে দেখা করতে আমি গেলাম তাড়াতাড়ি চলে এসো না হলে আম্মুর বখা শুনতে হবে (বিথী)
আমি ভাবলাম কি করা যায় এখন মেয়েটা কি মা কে সব বলে দিছে আর বিথী বললো আমার সাথে দেখা করতে আসছে।
কি করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না নিচে না গেলে মায়ের স্পেশাল বখা শুনতে হবে মনে হয় মায়ের মেজাজ এমনিতেই গরম হয়ে আছে অবশেষে বুকের মধ্যে সাহস নিয়ে নিচে চলে গেলাম।
গিয়ে দেখি মা মেয়েটাকে নিয়ে গল্প করছে আমি না দেখার বান করে আমার রুমে চলে গেলাম রুমে ঢুকতেই মা ও হাজির আমি তো ভয়ে শেষ মাকে এখন কি বলবো।
কিরে ছাদ থেকে আসতে এতো সময় লাগে মেয়েটা এতক্ষন ধরে তোর জন্য অপেক্ষা করছে (মা)
মে…মে…মেয়ে আবার কে আমি তো কোনো মেয়েকে চিনি না (মা)
তোর আবার কি হলো মে..মে… করছিস মেয়েটা বলেছে তোর সাথে দেখা করবে ও নাকি তোর সাথেই পড়ে
এতো কথা না বলে গিয়ে দেখ দেখলেই চিনতে পারবে (মা)
মনে মনে ভাবলাম মেয়েটা মা কে কিছু বলে নাই বাচা গেলো পরে কি হবে আল্লাহই ভালো জানেন।
গিয়ে দেখি মেয়েটা ছুপার রুমে বসে আছে মা ও আমার সাথে আসছেন।
কিরে কেমন আছিস (মেয়ে)
হুম….ভালো তুই কেমন আছিস (আমি)
ভালো……?(মেয়ে)
কিরে আকাশ তুই না বললে কোনো মেয়েকে চিনিস না (মা)
আমি কি বলবো ভেবে পাচ্ছিলাম না।
আকাশ তোরা বসে গল্প কর আমি আসছি(মা)
তারপর মা চলে গেলেন।
এই যে mr: এদিকে আসেন (মেয়ে)
সরি,,,,বুঝতে পারিনি আমি না দেখে আপনার গায়ে ঢিল মেরেছি। (আমি)
এই যে মিথ্যা কথা বলছেন কেনো,,,, আপনি না দেখে ঢিল মারছেন! আমি আপনার আম্মুকে সব বলছি দাড়ান। (মেয়ে)
প্লিজ আম্মুকে বলবেন না আপনি আমায় ক্ষমা করে দিন আর কখনো এ রকম করবোনা। (আমি)
ক্ষমা করতে পারি তবে একটা শর্ত আছে? (মেয়ে)
কি শর্ত বলুন (আমি)
আমার সাথে বাহিরে যেতে হবে। (মেয়ে)
সরি,,,,আমি পারবোনা। (আমি)
আন্টি,,,,,,,,আন্টি,,,,,,,,,,(মেয়ে)
আমি মেয়েটার মুখে চেপে ধরে বল্লাম চুপ করুন,,, মা কে ডাকবেন না প্লিজ,,,, আমি আপনার সাথে যাবো? আমি বুঝতে পারলাম মেয়েটা লজ্জায় লাল হয়ে গেছে। তারাতারি হাতটা সরিয়ে নিলাম। (আমি)
যাক বাবা দুষ্টটা কে বুঝাতে পারলাম,,,,,আপনি তারাতারি রেডি হয়ে আসুন,,,,,আমি অপেক্ষা করছি (মেয়ে)
আমার আর কি করার চুপচাপ আমার রুমে চলে আসলাম।।।
এই ভাইয়া এই ভাইয়া মেয়েটা দেখতে খুব সুন্দর মেয়েটার তোর কি হয়রে? (বিথী)
মেয়েটাকে আমি চিনিনা! (আমি রাগে বললাম)
রাগ করছ কেন,,,,,,আমাকে বললে বুঝি সমস্যা হবে। (বিথী)
বললাম,,,,,,,,তো চিনিনা! (আমি)
আম্মু বললো ও নাকি তোর সাথেই পড়ে,,,, আর তুই আমাকে মিথ্যা বলছিস। (বিথী)
তোকে সব কিছু পরে বলবো এখন যা তো আমার কাজ আছে । ( আমি)
ভাইয়া মেয়েটা কে তোর সাথে খুব মানাইছে। (বিথী চুপিচুপি বলে দৌড় দিয়ে চলে গেলো)
আমার খুব চিন্তা হচ্ছে,,,এখন কি করবো মেয়েটা ও অপেক্ষা করছে।
চিনিনা জানিনা একটা অপরিচিত মেয়ের সাথে কোথায় যাবো,,,, না গেলে তো মা কে সব বলে দিবে।
অনেক কিছু চিন্তা করে রেডি হয়ে মেয়েটার কাছে গেলাম।
মা আর বোনের সাথে বসে বসে মেয়েটা গল্প করছে,,,,
আমার বোনটা ও আমার মতো খুব দুষ্ট,,,,, আমার নামে না জানি কত কিছু মেয়েটা কে বলেছে।।।।
মা আমাকে দেখে বুঝতে পারলো আমি বাহিরে কোথাও যাবো।
কিরে আকাশ কোথায় যাবি। (মা)
আন্টি,,,,আকাশ কে আমার সাথে একটু নিয়ে যাবো,,,,,,আজ আমাদের এক ফ্রেন্ড এর জন্মদিন তাই আকাশ কে নিতে আসলাম। (মেয়ে)
আকাশ গিয়ে কি করবে আর আকাশের তো সামনে পরীক্ষা । (মা)
আন্টি তারাতারি চলে আসবে,,,, আকাশ না গেলে সবাই রাগ করবে. (মা)
তাহলে নিয়ে যাও,,,,,এই আকাশ তারাতারি চলে আসিস (মা)
ওকে আম্মু তারাতারি চলে আসবো। (আমি)
দোয়া করবেন আন্টি,,,,, আসি?(মেয়ে)
সাবধানে যেও মা,,,,,,আর মাঝে মধ্যে বেড়াতে এসো(মা)
ওকে,,,,,আন্টি,,,,, (মেয়ে)
মেয়েটা মা আর বোনের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আমাকে নিয়ে চলে আসলো,,,,,,,,
আমাকে নিয়ে কোথায় যাবেন। (আমি)
চুপচাপ আমার সাথে আসেন কোনো কথা বলবেন না। (মেয়ে)
আমি ও কিছু না বলে মেয়েটার সাথে হাটতে থাকলাম,,,,,আমার খুব চিন্তা হচ্ছে কারন এখনো মেয়েটার নাম ঠিকানা কিছুই জানিনা
একটা অচেনা মেয়ের সাথে কোথায় যাচ্ছি।
এই যে mr: রিক্সা ডাকেন। (মেয়ে)
আমি পারবোনা,,,,,, আমি আপনার বডিগার্ড নাকি। (আমি)
এতো রাগ করেন কেনো। রিক্সা না ডাকলে হেটে হেটে যাবেন। (মেয়ে)
আচ্ছা কে আপনি? আর সামান্য ভুলের জন্য আমাকে এতো শাস্তি দিচ্ছেন কেনো (আমি)
আমি তো আপনাকে কিছু বলিনি কোনো শাস্তি ও দেইনি,,,,,,, আপনি শুধু শুধু মিথ্যা বলছেন কেনো? (মেয়ে মায়াবী মায়াবী কন্ঠে বললো)
আচ্ছা আপনার নামটা তো এখনো জানা হলোনা,,,,, আপনার নামটা কি জানতে পারি। (আমি)
আমার নাম,,,,,,,,,, ভূত। (মেয়ে)
হা,হা,হা,হা ভূত কারো নাম হতে পারে নাকি? (আমি)
কেনো! আমি সত্যি বলছি আমি ভূত (মেয়ে)
ফাইজলামি বাদ দেন তো,,,,,,আপনার নামটা কি বলেন? (আমি)
আমার নাম,,,,,,,,,, পরী। (মেয়ে)
আপনার নামের সাথে আপনার যথেষ্ট মিল আছে,,,,, আপনি পরীর মতো খুব সুন্দরী। (আমি)
কিইইইইইই,,,,,,,,,,,কে বললো আমি পরীর মতো সুন্দরী, আপনার চোঁখে মনে হয় কোনো প্রবলেম আছে,,,,ডাক্তার দেখাতে হবে। (পরী)
সত্যি,,,,,,,,,আপনি খুব সুন্দর। (আমি)
জি,,,,,না আপনি এইসব মিথ্যা কথা বলা বাদ দেন। (পরী)
আমি বুঝতে পারলাম মেয়েটা খুব লজ্জা পাচ্ছে,,,,,, সত্যি মেয়েটা দেখতে খুব সুন্দর,,,, খুব সুন্দর করে কথা বলে, মায়াবী মায়াবী কন্ঠ,,,,যে কোনো ছেলে দেখলে পছন্দ করবে,,,,,মেয়েটার হাসি ও খুব সুন্দর,,,,
পরী আর আমি চুপচাপ হাটতে লাগলাম,,, কিছুক্ষণ যাওয়ার পর,,,
কি হলো আপনি চুপ করে আছেন কেনো,,,,,কথা বলতে ইচ্ছা হয়না নাকি?(মেয়ে)
কি বলবো,,,,,, আপনি তো বললেন আপনার সাথে চুপচাপ হাটতে। (আমি)
পরী আর আমি হাটতে হাটতে একটা পার্কের সামনে চলে আসলাম।।।।
চলেন না পার্কের ভিতরে একটু ঘুরে আসি আর আমার পা টা কেমন জানি ব্যাথা করছে একটু বসতে হবে। (পরী)
চলেন,,,,,,আর এই পার্কটা দেখতে ও খুব সুন্দর,,, পার্কের ভিতরটা দেখলে আপনার পা ব্যাথা কমে যাবে। (আমিআমি আর পরী পার্কের ভিতরে ঢুকলাম,,,,, পার্কটা দেখতে খুব সুন্দর,,,,,আমি প্রায় সময় বন্ধুদের নিয়ে এখানে ঘুরতে আসি,,,,,, পার্কটা আমার খুব ভালো লাগে।আকাশ,,,,,,চলেন না কোথাও গিয়ে বসি,,,আমার পা টা খুব ব্যাথা করছে (পরী)
চলেন,,,,,,ঐ জায়গায় গিয়ে বসি। (আমি)
তারপর আমি আর পরী বসলাম,,, পরীর মনটা জানি কি রকম হয়ে আছে,,,,,, পরী চুপচাপ বসে আছে, পরীর দিকে অপরূপ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি, পরী কে নিয়ে আমার মনের ভিতরে কেমন জানি অনুভূতি হচ্ছে,,,,,,কখনো কোনো মেয়েকে আমার ভালো লাগেনি,,,,,, কিন্তু পরী আমার মন কেরে নিয়েছে,,,,,,,, জানিনা এটা আমার আবেগ নাকি ভালোবাসা,,,,,,,,,
আমার দিকে এভাবে তাকিয়ে আছেন কেনো? (পরী)
কই,,,,,না,,,,,তো(আমি)
মিথ্যা বলাটা মনে হয় আপনার অভ্যাস হয়ে গেছে,,,,,,তাইনা mr:(পরী)
না,,,,আমি কখনো মিথ্যা কথা বলিনা।(আমি)
আচ্ছা,,,,আপনি এতো দুষ্ট কেনো?আমার গায়ে ঢিল মেরেছিলেন কেনো?(পরী)
আমি না দেখে মেরেছিলাম ভুলবসত আপনার গায়ে পরেছে। (আমি)
জানেন,,,,,,আজ আমার গায়ে না পরে যদি অন্য কারো গায়ে পরতো,তাহলে কি হতো! (পরী)
কি আর হতো মায়ের বখা শুনতে হতো। (আমি)
আদি,,,,,,বিষয়টা এতো সহজ মনে করোনা,,,,আর এইসব দুষ্টামি না করলে কি হয় না। (পরী)
ঠিক আছে আর কখনো করবোনা। (আমি)
প্রমিজ,,,,,আর কখনো করবেন না(পরী)
প্রমিজ,,,,,,,,,করবোনা। (আমি)
আমার পা টা কেমন জানি ব্যাথা করছে,,,, আর বেশিক্ষণ থাকতে পারবোনা বাসায় চলে যেতে হবে,,(পরী)
একটা কথা বলি রাগ করবেন না তো!!! (আমি)
বলো,,,,রাগ করবো কেনো? (পরী)
আমরা কি বন্ধু হতে পারি? (আমি)
জানেন,,,,,আমার ও খুব ইচ্ছে আপনার সাথে বন্ধুত্ব করবো,,,,,,, কিন্তু সাহস করে বলতে পারিনি(পরী)
তাহলে এখন থেকে আপনি আর আমি বন্ধু। (আমি)
এখন থেকে আর কখনো আপনি করে বলবেনা তুমি করে বলবে,,,,, কেমন!!!(পরী)
ওকে,,,,,,ম্যাডাম (আমি)
আমাকে ম্যাডাম বললে কেনো? (পরী)
সরি,,,,,,,,,,,,,আর বলবোনা।(আমি)
এখানে বসে আর লাভ নেই,,,,,চলো একটু পার্কটা ঘুরে দেখি (পরী)
চলো,,,,,,,,,(আমি)
আমি আর পরী হাটতে লাগলাম,,,,,,, পার্কটা আমার খুব পরিচিত,,,,,, পার্কের ভিতরে একটা ফুছকার দোকান দেখতে পেলাম,,,, ভাবলাম পরী কে নিয়ে ফুছকা খাওয়া যাবে,,,,,,
পরী ফুছকা খাবে,,,,(আমি)
না,,,,,,তুমার খেতে ইচ্ছে করছে নাকি? (পরী)
না,,,,,,তুমার যখন ইচ্ছা নাই আমার ইচ্ছা দিয়ে আর কি হবে!!! (আমি)
আমি ফুছকা খাবো,,,, চলো,,,,(পরী)
না,,,,, আমি খাবোনা,,,,,, (আমি)
ওলে ভাবালে,,,,,,,,, বাবুটা লাগ কলছে বুঝি,,,,,, (পরী)
আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে,,,,আমি পরীর দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি,,,,,এতো তারাতারি আমার হাত ধরে নিলো,,,,,এতো আপন হয়ে গেলো,,,,পরী কে দেখে বুঝা যায় পরীর ভিতরে অনেক ভালোবাসা আছে,,,,,
মামা,,,,২টা ফুছকা দেন?(পরী অর্ডার দিলো)
আমি চুপচাপ বসে আছি,,,,, মনে মনে ভাবলাম মেয়েটা আমার সাথে এতো তারাতারি কিভাবে মিশে গেলো,,,,,
এই নাও,,,,,,,,,(পরি)
আমি খাবো না (আমি)
নাও বলছি
ভাইয়া,,,,,,, এই নে তোর চা। (বিথী)
টেবিলের উপরে রেখে যা,,,,,,(আমি)
ভাইয়া,,,, তোর মনটা খারাপ কেনো রে,,,,কোনো কিছু হইছে নাকি।(বিথী)
কই,,,না তো মন খারাপ হবে কেনো?(আমি)
ভাইয়া,,,,এখন বল তো মেয়েটা কে? (বিথী)
তোর,,,ভাবি,,,,,,,,,,,,,(আমি)
কিইইইইই,,,,,,,,সত্যি বলছিস। (বিথী)
তোকে মিথ্যা বলবো কেনো। (আমি)
এই শুন না,,,,, ভাবী তোর নামে অনেক কিছু জানতে চাইছে,,,,,,আমি ও সব বলে দিছি।(বিথী)
কি জানতে চাইছে,,,,,? (আমি)
বলতে পারি একটা শর্ত আছে।(বিথী)
কিসেের,,,শর্ত?(আমি)
ভাবি কে আমাদের বাসায় একদিন নিয়ে আসবি? (বিথী)
ওকে নিয়ে আসবো,,,,এখন বল কি জানতে চাইছে? (আমি)
না,,,,,তেমন কিছু না,,,,,,,,, আমাকে বলেছে তুই কোনো মেয়ের সাথে প্রেম করিছ কি না?(বিথী)
তারপর তুই কি বললি?(আমি)
কি আর বলবো,,,, বলেছি আমার ভাইয়াটা খুব ভালো এখনো কোনো প্রেম করেনি,,,,,,ভাইয়ার প্রেম করার মতো সময় নাই,,,, সারাদিন শুধু বাচ্চাদের মতো দুষ্টামি করে?(বিথী)
আর,,,,কি বললি? (আমি)
আরো অনেক কিছু বলেছি,,,,,, তোকে বলা যাবেনা। (বিথী)
ঠিক আছে বলতে হবে না,,,,, চা টা নিয়ে যা আমি খাবোনা,,, তুই এখন যা আর শুন মা কে কিছু বলবিনা? (আমি)
তোর কোনো কিছু কোনোদিন মা কে বলেছি,,,, ঠিক আছে বলবোনা। (বিথী)
ঠিক আছে,,,,,যা(আমি)
আমার একদম ভালো লাগছেনা,,, পরীর কথা খুব মনে পরছে,,,,,, পরী কে? কোথায় থাকে আর আমি প্রেম করি কি না তা জানতে চাইলো কেনো,,,,,,কোনো রহস্য তো আছেই।।।
ক্রিং ক্রিং ক্রিং ক্রিং ক্রিং।
পরী ফোন ব্যাক করছে,,,,,
হ্যালো,,,,,পরী(আমি)
কে,,,,,,,আপনি? (পরী)
আমাকে চিনতে পারছনা? আমি আকাশ,,,,(আমি)
আকাশ!!!কেমন আছ? (পরী)
ভালোনা তুমি?(আমি)
আমি ভালো আছি,,,তুমি ভালোনা কেনো?কি হইছে তোমার?(পরী)
না কিছু হয় নাই,,,, ভালো লাগছেনা তোমার কথা খুব মনে পরছে? (আমি)
আমার কথা মনে পরবে কেনো? (পরী)
কারন,,,,,,,,তোমাকে,,,,,,(আমি)
আমাকে কি,,,,,,,,,,,,(পরী)
কিছুনা,,,,,,,,বাসার সবাই কেমন আছেন? (আমি)
সবাই ভালো,,,,,,,, বলবেনা? (পরী)
পরে বলবো এখন সমস্যা আছে?(আমি)
ঠিক আছে,,,,,,, পরে বলতে হবে কিন্তু!!! (পরী)
হুম,,,,,,,অবশ্যই বলবো!!!(আমি)
বিথী,,,, কেমন আছে? (পরী)
ভালো,,,,,,বিথীর সাথে কি কি গল্প কেরছো জানতে পারি?(আমি)
আমার আর বিথীর পারসোনাল কথা??তাই তোমাকে বলা যাবে না (পরী)
ঠিক আছে বলতে হবে না…..(আমি)
এইভাবে প্রতিদিন আমার আর পরীর কথা হয়,,,,,,আমি ও বুঝতে পেরেছি পরী আমায় ভালোবেসে পেলেছে,,,,আমি ও পরী কে খুব ভালোবাসি,,,,, কিভাবে মনের কথা পরী কে জানাবো বুঝতে পারছিনা?
সামনে আমার ফাইনাল পরীক্ষা ঠিক মতো পড়া লেখা ও করছি না,,,,
পড়া লেখা করবো কি করে সারাদিন শুধু পরীর কথাই মনে পরে,,,,,আমার কোনো কিছুই ভালো লাগেনা,,,,,
খুব ইচ্ছে হচ্ছে পরীর সাথে কথা বলবো কিন্তু পরীর ফোন বন্ধ,,,,,, কি করবো এখন,,,
ভাবলাম ফেসবুকে পরী কে একটা মেসেজ দেই,,,,,, আমি তো একদম অবাক পরী আমায় ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট দিয়া দিছে,,,,,একটা মেসেজ ও দিছে,,,,,, মেসেজে লেখা ছিলো আকাশ তোমায় খুব miss করছি,,,, জানিনা তোমার কথা এতো মনে পরছে কেনো,,,,,,,আমার ইচ্ছা হচ্ছে তোমার সাথে দেখা করবো ,,,,, আগামিকাল বিকাল ৫টায় বসুন্ধরায় আমার সাথে দেখা করবে,,,,,,, তোমার সাথে অনেক কথা আছে,,,,,
আমার বাসা থেকে বসুন্ধরা তেমন দূরে নয়,,,ভাবলাম হঠাৎ আমার সাথে দেখা করতে চাইছে কেনো?
আমার খুব চিন্তা হচ্ছে কি করবো পরীর ফোনটা ও বন্ধ,,,
এইসব ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে গেছি বুঝতে পারিনি,,,,
ভাইয়া এই ভাইয়া ওঠ,,,, অনেক বেলা হইছে(বিথী)
যা,,,,,,তো বিরক্ত করিছ না।(বিথী)
আম্মু বলেছে তোকে ডাকতে,,,,, তারাতারি ওঠ না হলে তোকে মায়ের বখা শুনতে হবে(বিথী)
তুই,,, যা আমি ওঠছি,,,,,, (আমি)
তারাতারি ফ্রেশ হয়ে আয়,,,,,আমি গেলাম (বিথী)
ফোনটা হাতে নিলাম,,,, দেখি ৮ টা বেজে গেছে,,, আর ১০ টা মিসকল,,,, আমি চমকে গেছি এতো রাতে পরী ফোন দিয়েছিলো কেনো?
সাথে সাথে ফোন ব্যাক করলাম পরীর ফোন বন্ধ,,,,
লাফ দিয়ে ঘুম থেকে ওঠলাম মা বখা শুরু করে দিয়েছে
তারাতারি ফ্রেশ হয়ে নিচে গেলাম,,,, গিয়ে দেখি বাবা এসেছে,,,
আমার বাবা চিটাগাং থাকেন সেখানে তিনি একটা কোম্পানিতে চাকরি করেন,,,,, আমি বিথী আর আমার আম্মু গুলশানে থাকি,,,,, আমাদের বাসা গুলশানে,,,,
আসসালামুআলাইকুম আব্বু,,,,, কেমন আছেন?(আমি)
ওয়াআলাইকুম আসসালাম,,,,, আমি ভালো আছি,,,তুই কেমন আছিস (আব্বু)
ভালো,,,,,,আব্বু,,,, আপনি কখন আসলেন(আমি)
এইতো অল্প কিছুক্ষণ হলো আসলাম। কেনো তুই জানিস না আমি আজ আসবো!!!! (আব্বু)
না,,,,আব্বু জানিনা আর গতকাল তারাতারি ঘুমিয়ে গেছিলাম আম্মুর সাথে কথা হয়নি। (আমি)
জানবি কি করে আমি তো সবাইকে না জানিয়ে এসেছি তোদের কে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য? (আব্বু)
কিসের সারপ্রাইজ আব্বু। (আমি)
আমাদের কোম্পানি আমায় ঢাকা ট্রান্সফার করে দিয়েছে,,,,,এখন থেকে আমি বাসাতেই থাকবো।সবাই খুশি তো? (আব্বু)
আমি সব চাইতে বেশি খুশি কারন ভাইয়ের দুষ্টমি টা কিছু কমবে? (বিথী)
এই পেত্নী কে বললো আমি দুষ্টমি করি। (আমি)
দেখেন আব্বু আপনাকে দেখে একদম সাধু হয়ে গেছে ভাইয়া। (বিথী)
ঠিক আছে তোরা এবার থাম। আমি একটু বিশ্রাম নিবো (আব্বু)
ঠিক আছে আব্বু আপনি গিয়ে বিশ্রাম নেন? (বিথী)
আব্বু নিজের রুমে চলে গেলেন,,,, বিথী ও বিথীর রুমে চলে গেছে,,, আমি নাস্তা করে রুমে গেলাম,,, পরীর কথা খুব মনে পরছে,, বাবা ও বাসায় চলে আসলো এখন কি হবে কিছুই বুঝতে পারঝিলাম না,,,,
এইসব চিন্তা করতে করতে বিকাল হয়ে গেলো।
তারাতারি রেডি হয়ে পরীর সাথে দেখা করার জন্য বাহির হলাম,,,
তারপর,,,,,,,,,হঠাৎ পরী কেবিনে ঢুকে পরলো। আমি পরীর দিকে তাকিয়ে আছি,, পরী মুচকি মুচকি হাসছে পরী লজ্জায় কিছু বলতে পারছেনা,,,,
আমি পরীর হাতটা ধরলাম,,,পরী ও আমার হাতটা শক্ত করে ধরেছে।
২য় পার্ট টা খুলে দেখতে পারো। (পরী)
ঠিক আছে দেখছি। (আমি)
২য় পার্ট টা খোলার পর একটা আংটি আর চিরকুট পেলাম,,,,,, চিরকুটে লেখা ছিলো।
আকাশ আমি তোমাকে প্রথম দেখেই তোমাকে ভালোবেসে পেলেছি। জানিনা তুমি আমাকে ভালোবাস কি না?
আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি,,, তোমাকে ছাড়া আর কাউকে কখনো ভাবতে পারিনা,,,
তোমাকে ছাড়া আমি বাচতে পারবোনা,,,,,আকাশ তুমি আমায় ফিরিয়ে দিওনা,,,,,,,,
তুমি যদি আমায় ভালোবাস তাহলে কার্ডের ভিতরে যে আংটি আছে সেটা দিয়ে তুমি আমায় প্রপোজ করবে ।।।
আমি কিছুক্ষণ চুপ করে বসে থাকলাম,,,, পরীকে দেখে অনুভব করতে পারলাম পরী খুব চিন্তা করছে।
চিন্তা করার কথাই তো আমি কিছু বলছিনা।
পরী হয়তো ভাবছে আমি পরীকে ভালোবাসিনা পরীকে প্রপোজ করবোনা।
পরী মাথা নিচু করে চুপচাপ বসে আছে আমি পরীর হাতটা ধরলাম পরী অবাক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।।
পরীকে আংটি পরিয়ে দিয়ে বললাম
আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি,,,, তুমি কখনো আমায় ছেড়ে যাবেনা তো?
তোমার জন্য জীবন দিয়ে দিব তবুও তোমাকে ছেড়ে কোথাও যাবনা!!! (পরী)
পরীর কপালে চুমু খেলাম তারপর পরীকে জরিয়ে ধরলাম ,, পরী ও আমায় শক্ত করে জরিয়ে ধরেছে।
আমাকে সারাজীবন তোমার ভালোবাসা দিয়ে এভাবে ধরে রেখো। (পরী)
ছাড় আমায় মেরে পেলবে তো?? (আমি)
একটু লজ্জা পেয়ে পরী আমায় ছেড়ে দিল।
তারপর পরীকে নিয়ে রেষ্টুরেন্ট থেকে বাহিরে চলে আসলাম,,,,,,
পরীকে নিয়ে শপিং মহলে গেলাম,,,,
এখানে নিয়ে আসছ কেন? (পরী)
আমার বউয়ের জন্য একটা শাড়ী কিনব!!! (আমি)
পরী মুচকি হাসি দিয়ে বললো,,,,,এতো তারাতারি বউ হয়ে গেলাম। (পরী)
তোমাকে যখন ভালোবাসি তাহলে তো তোমাকেই বিয়ে করবো,,,,,, বউ বললে সমস্যা কোথায়? (আমি)
তারপর পরীকে নিয়ে শারীর দোকানে গেলাম,,,,,, পরীর জন্য একটা শাড়ী কিনলাম,, ,, পরী নিজে পছন্দ করে শাড়ীটা কিনেছে,, ,, শাড়ীটা আমার ও খুব পছন্দ হয়েছে কারন আমার নীল কালার খুব প্রিয়,,,, শাড়ীর রংটা ও ছিল নীল,,,, পরী পছন্দ করে আমার জন্য একটা পান্জাবী ও কিনেছে,,,পান্জাবীর রংটা ও নীল,,,,,তারপর পরীকে নিয়ে চলে আসলাম,, ,,,,
পরী,,,,,আমাকে তারাতারি বাসায় যেতে হবে না হলে মায়ের বখা শুনতে হবে,,,, বাবা ও বাসায় আছে,,,,(আমি)
সবকিছু শেষ তো এখন চলে যাব,,,,, চল। (পরী)
আমার হাত ধরে আছে পরী,,,, আমার খুব ভালো লাগছে,,,,, আমি আর পরী গাড়ীর কাছে চলে আসলাম,,,,,, দুজন গাড়ীতে ওঠে বসে আছি,,,,,,
গাড়ী ও দ্রুত গতিতে চলছে,,,, আমার হাত ধরে আমার কাঁধে মাথা রেখে পরী গাড়ীতে বসে আছে।
আমি আর পরী চুপচাপ বসে আছি কেউ কিছু বলছিনা।
এই,,,পরী চুপ করে আছ কেন? কিছু বলছনা কেন?? (আমি)
আকাশ,,,,,আমার না খুব ভয় হয় তোমাকে নিয়ে? (পরী)
আমাকে নিয়ে কিসের ভয়? (আমি)
তুমি আমায় কখনো ভুলে যাবেনা তো? (পরী)
আস্ত পাগলি একটা,,,,, ভালোবেসেছি ভুলে যাওয়ার জন্য নাকি,,,,,আমি তোমাকে কখনো ভুলে যেতে পারবনা,,,,,, যতদিন এই পৃথিবীতে বেচে আছি তোমাকেই ভালোবেসে যাবো? (আমি)
জানি,,,,,,,কখনো আমাকে ভুলে যাবেনা তবুও কেন জানি তোমাকে হারানোর ভয় হয়? (পরী)
সত্যিকারের ভালোবাসা কখনো হারিয়ে যায়না,,,,,এইসব তোমার মনের ভুল। (আমি)
আমি পরীর দিকে তাকিয়ে দেখি পরী খুব কান্না করছে,, ,,, আমি বুঝতে পারছিলাম না কিভাবে পরী কে বুঝাবো,,,, আমি পরী কে জরিয়ে ধরলাম পরীর চোঁখের পানি মুছে দিচ্ছি আর পরীকে বলছি এই পরী কান্না করছ কেন তুমি কান্না করলে আমার খুব কষ্ট হয়,,,, তুমি কি চাও আমি কষ্ট পাই,, ,,
পরী আমার গালে একটা চুমু দিয়ে আমাকে আরো শক্ত করে জরিয়ে ধরে বলছে তুমি যদি আমার পাশে থাকো তাহলে আমি কখনো কান্না করবোনা কষ্ট পাবোনা তোমাকে ও কষ্ট দিবনা। ,,,, আমি সবসময় তোমার পাশে আছি সারাজীবন তোমার পাশেই থাকবো প্রমিজ,,,,,,
আমি পরীকে জরিয়ে ধরে বসে আছি,,,,,
আকাশ,,,,,,শাড়ীটা তোমার পছন্দ হয়েছে।(পরী)
খুব পছন্দ হয়েছে,,,,, তোমার নীল কালার খুব প্রিয় তাইনা? পরী!!!,,,,,(আমি)
তোমার ও তো নীল কালার খুব প্রিয়,,,, তাই শাড়ীর সাথে মিলিয়ে তোমার জন্য একটা পান্জাবী নিলাম। (পরী)
কে বলল আমার নীল কালার প্রিয়,,, আমার সাদা কালার সব চাইতে প্রিয়? (আমি,পরীকে মিথ্যা বললাম)
মিথ্যা বলছো কেন? আমাকে বিথী বলেছে তোমার নীল কালার নাকি খুব প্রিয়? (পরী)
বিথী তোমাকে এই কথা ও বলে দিয়েছে? (আমি)
বিথী নিজের ইচ্ছায় বলেনি আমি জানতে চাইছিলাম তাই বলেছে। (পরী)
পরী আমার সাথে কথা বলতে বলতে ঘুমিয়ে পরেছে।
হঠাৎ গাড়ীটা থেমে গেছে বাহিরে থাকিয়ে দেখি বসুন্ধরায় চলে আসছি।
পরী এই পরী ওঠ আমরা চলে আসছি। (আমি)
তোমাকে আমি বাসায় পৌছে দিয়ে আসবো।(পরী)
না,,,,আমি যেতে পারবো তুমি চলে যাও। (আমি)
বাসায় দিয়ে আসলে প্রবলেম নাকি। (পরী একটু রেগে গিয়ে বলল)
ঠিক আছে,,,,,,চল। (আমি)
ড্রাইভার আঙ্কেল,,,,,,,আমাদের গুলশানে নিয়ে যান। (পরী ড্রাইবার কে বলল। )
ওকে,,,,,,যাচ্ছি। (ড্রাইভার)
তারপর,,,,,,, আমার বাসার সামনে চলে আসলাম পরী ড্রাইভার কে গাড়ী থামাতে বলল।
আমি পরীর গালে একটা চুমু দিয়ে গাড়ী থেকে নেমে গেলাম।
পরী আমার হাতে পান্জাবীর ব্যাগটা দিয়ে বলল আমি যেদিন বলব সেদিন পান্জাবীটা পরবে মনে থাকে যেন?
পরী,,,,,সাবধানে যেও। (আমি)
ঠিক আছে,,,,,,,আসছি,,,, রাতে কথা হবে। (পরী)
পরী চলে যাচ্ছে আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। আমার চোঁখ দিয়ে কখন যে জল চলে আসছে বুঝতেই পারিনি।
চোঁখের জল মুছতে মুছতে বাসায় ঢুকে পরলাম।
ভাইয়া কোথায় গিয়েছিলি। (বিথী)
পরীর সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম। (আমি)
ভাবি কেমন আছে? (বিথী)
ভালো আছে? (আমি)
এই ভাইয়া পান্জাবীটা ভাবি দিয়েছে নাকি। (বিথী)
তোকে বলবো কেন? (আমি)
বুঝেছি ভাবি দিয়েছে ভাবির পছন্দ আছে পান্জাবীটা খুব সুন্দর । (বিথী)
ভাইয়া তুই ফ্রেশ হয়ে নে আমি তোর জন্য কফি নিয়ে আসছি।
আমি ফ্রেশ হয়ে বিছানায় শুয়ে আছি,,,,, কিছুই ভালো লাগছেনা পরীর কথা খুব মনে পরছে,,,,,
ভাবলাম পরী কে একটা ফোন দিয়ে দিকে বাসায় পৌঁছেছে কি না???
পরী ফোন রিসিভ করছেনা!!! হয়তো ব্যাস্ত আছে,,, আমি শুয়ে শুয়ে পরীর কথা ভাবতেছি হঠাৎ আমার ফোনটা বেজে উঠল।।।।
তাকিয়ে দেখি পরী ফোন ব্যাক করেছে।
তারাতাররি ফোনটা রিসিভ করলাম।
হ্যালো,,,,,,,পরী,,,,,, (আমি)
আকাশ,,,,,,,, আমি বাসায় পৌছে গেছি ফ্রেশ হয়ে তোমায় ফোন দিবো প্লিজ রাগ করোনা। (পরী)
একটা কিস দাও না হলে রাগ করব কিন্তু?(আমি)
উম্মা,,,,,,,,,,,,,,,, হয়েছে। (পরী)
হুম,,,,,,,তারাতারি ফ্রেশ হয়ে ফোন দিও। (আমি)
ঠিক আছে,,,,,,রাখছি।(পরী)
একটু ফেসবুকে ঢুকলাম,,,, দেখি অনেক গুলো মেসেজ আসছে,,, সবাই বলছে ভাইয়া আপনার গল্পের পরের পার্ট টা কখন দিবেন।
আমি পরীর সাথে দেখা করতে গিয়ে গল্প লিখতে সময় পাইনি।
তাই পরের পার্টটা লিখতে পারিনি।
ভাবলাম পরের পার্টটা লিখে পোস্ট করি।
তখনি বিথী কফি নিয়ে আসলো?
ভাইয়া কফিটা খেয়ে নে। (বিথী)
ঠিক আছে,,,,, টেবিলে রেখে যা খেয়ে নেব। (আমি)
তারাতারি খেয়ে নিবি না হলে ঠান্ডা হয়ে যাবে,,,, আমি গেলাম। (বিথী)
তারপর বিথী চলে গেল, আমি গল্প লিখতে শুরু করলাম,,,,,হঠাৎ পরীর মেসেজ মোবাইলের স্ক্রীনে ভেসে উঠলো।
জানু,,,,,,,,,,কি করছো? (পরী)
গল্প লিখতেছি আর তোমার কথা ভাবতেছি। (আমি)
তোমার গল্প গুলো আমার খুব ভালো লাগে,,,, অনেক ভালো গল্প লেখ তুমি,,, তবে??? (পরী)
তবে,,,,,,,,,,,,কি? বলো!! (আমি)
তোমার গল্প পরে অনেক মেয়ে তোমার প্রেমে পরে যাবে,,,,,(পরী)
হাহাহাহা,,,,,,,,গল্প পরে আমার প্রেমে পরতে পারে তবে আমার পিক দেখলে সবাই পালিয়ে যাবে? (আমি)
কেন পালিয়ে যাবে, তুমি তো খুব সুন্দর,, নিজের কাছে নিজেকে কখনো ভাল লাগেনা? সত্যি বলছি তোমাকে যে কোনো মেয়ে পছন্দ করবে? তখন তো আমায় ভুলে যাবে। (পরী)
আমাকে সবাই ভালোবাসলে কি হবে আমি তো ভালবাসবনা,,,,,আমি যে আমার পরী কে ছারা কাউকে কখনো ভাবতে পারিনা। (আমি)
যদি অন্য কোনো মেয়ের সাথে প্রেম করবে তাহলে খুন করে পেলবো? (পরী)
হিহিহিহি,,,,,,পাগলী একটা!!!!!!! (আমি)
জানু,,,,,,,,ফোনে চার্জ নাই পরে কথা হবে। (পরী)
ওকে,,,,,,,,উম্মা””””””””(আমি)
উম্মা,,,,,,,,,,,উম্মা,,,,,,,,,,,,,উম্মা। (পরী)
এভাবেই চলতে থাকে আমাদের সম্পর্ক,,,,,,,,,,,,,আপনাদের তো পরীর পরিচয়টা এখনো ভালো করে দেওয়া হয়নি।
পরী তার মা-বাবার একমাত্র সন্তান,,,,,,, পরী আমার সাথেই ইন্টার ২য় বর্ষে পড়ে,,,,,,তবে পরী মহিলা কলেজে পড়ে আর আমি সরকারি কলেজে,,,,,পরীর বাসা বসুন্ধরায়,,,,
এই হলো পরীর সিম্পল পরিচয়।
আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম
আগামিকাল আমার আর পরীর ফাইনার পরীক্ষা, সারাজীবন শুনেছি মানুষ প্রেমে পরলে নাকি সব কিছু ভুলে যায়,,, এখন তো তার প্রমান আমি নিজেই।
৭ম পার্ট(শেষ পার্ট) দিতে একটু বেশি সময়ই লাগবে,,,,কারন,,,ওইজে বললাম কালকে আমার পরিক্ষা আছে,,,তবে হ্যা পার্টটা কালকেই দেবো,,,,,একটু তারতারিই
আগামিকাল আমার ইন্টার ফাইনাল পরীক্ষা,,,,,,বই নিয়ে পড়তে বসলাম কিন্তু পড়তে মন চাইছেনা তবু ও একটু পড়লাম।
ভাবলাম পরীকে একটা ফোন করি,,,,পরী ফোন রিসিভ করছেনা,,,,
পরী নতুন একটা ওয়েলকাম টোন সেট করছে।
গানটা আমার খুব প্রিয়,,,,,
ভালোবাসা ফুরায়না,,,,,
প্রেম কভু হারায়না,,,,,,
অনুভবে থাকে যার যা,,,, কেউ না জানুক আমি তো জানি আমি তোমার।
কেউ না জানুক তুমি তো জানো তুমি আমার।
ফোন দিয়েই যাচ্ছি আর গান শুনতেছি,,,, হঠাৎ পরী ফোন রিসিভ করেছে।
আকাশ,,,,,,কেমন লাগলো। (পরী)
কিইইইইই,,,,,,,,,,,, (আমি)
ওয়েলকাম টোন। (পরী)
তার মানে! এতক্ষন ইচ্ছে করেই ফোন রিসিভ কর নাই? (আমি)
হুম,,,,,,,,,,,,,কেমন লাগলো সেটা কিন্তু এখনো বললেনা? (পরী)
খুব ভালো লাগছে,,,,,,,,,, আমার প্রিয় গান? (আমি)
হুম,,,,,,,,,,আমার ও খুব প্রিয়? (পরী)
আচ্ছা এইসব কথা বাদ দাও,,,,,,,,, তুমি কেমন আছো?(আমি)
ভালো,,,,,,,,,,,,তুমি?(পরী)
ভালো,,,,,,,,,,তবে!!!! (আমি)
তবে,,,,,,,,,,,,,কি?(পরী)
আগামিকাল পরীক্ষা তাই একটু চিন্তা হচ্ছে? (আমি)
চিন্তা করার কি আছে। ভালো করে পরীক্ষা দিবে। (পরী)
পরীক্ষার প্রস্তুতি কেমন নিলে। (আমি)
মোটামোটি,,,,,,,,, পড়তে ভালো লাগেনা। (পরী)
শরীর খারাপ নাকি?(আমি)
আরে,,,,,,না!!!! (পরী)
তাহলে,,,,,,,,??????(আমি)
তোমার জন্য? (পরী)
আমি আবার কি করলাম? (আমি)
তোমার ভালোবাসায় পাগল করে দিছো? (পরী)
ওহহহহহহ,,,,,,তাই!!! (আমি)
আচ্ছা অনেক রাত হইছে,তারাতারি ঘুমিয়ে পর সকাল উঠতে হবে। (পরী)
ঘুম আসবেনা। (আমি)
কেনো,,,,,,?(পরী)
ঘুমের ঔষধ লাগবে? (আমি)
উম্মা,,,,,,,,,উম্মা,,,,,,,,,,উম্মা। ঔষধ দিয়া দিছি এখন ঘুমিয়ে পর। রাখছি গুড নাইট। (পরী)
গুড নাইট। (আমি)
পরীর সাথে কথা বলা শেষ করেই ঘুমিয়ে পরলাম।
বিথীর ডাকে খুব ভোরে ঘুম ভাঙ্গল। তারাতারি ফ্রেশ হয়ে ব্রেকফাস্ট করে কলেজের উদ্দেশ্য বের হলাম।
রুটিন অনুযায়ী পরীক্ষা দিয়ে যাচ্ছি ও পরীক্ষা খুব ভালো হচ্ছে।
কয়েকদিনের মধ্যেই পরীক্ষা শেষ হয়ে গেল।
প্রতিদিন পরীর সাথে ঘন্টার পর ঘন্টা কথা হয়, ফেসবুকে প্রতিদিন চ্যাট হয়।
কয়েকদন পর পর দু জন দেখা ও করতাম।
সব মিলিয়ে ভালোই চলছিলো আমাদের সম্পর্ক।
তারপর রেজাল্ট বের হলো আমি আর পরী দু জনেই প্লাস পেয়েছি।
আমার ছোটবেলা থেকে খুব ইচ্ছা ঢাকা ভার্সিটিতে পড়া-লেখা করবো।
আমার মনের ইচ্ছাটা পরীকে জানালাম।
পরী বলেছে পরী ও নাকি ঢাকা ভার্সিটিতে পড়া-লেখা করবে।
আমি আর পরী দুজনেই ঢাকা ভার্সিটিতে পরীক্ষা দিলাম দু জনেই চান্স পেয়েছি।
আগামিকাল ভার্সিটিতে প্রথম ক্লাস আমার অনেক আনন্দ হচ্ছে।
আমি আর পরী এক সঙ্গে ভার্সিটিতে গেলাম।
ভার্সিটিতে আমাদের কোনো বন্ধু নেই বন্ধু থাকবে কি করে আমরা তো কারো সাথে বন্ধুত্ব করতে চাইনা।
কারন আমি চাইনা পরী কোনো ছেলের সাথে বন্ধুত্ব করুক।
পরী ও চায়না আমি কোনো ছেলে বা মেয়ের সাথে বন্ধুত্ব করি।
দু জনের মনের ভিতরে সন্দেহ যদি নতুন কেউ এসে আমাদের সম্পর্কটা নষ্ট করে দেয়।
দেখতে দেখতে চলে গেলো ৩টি বছর।
আমি আর পরী দু জনেই অনার্সে 1st ক্লাস পেয়েছি।
আমি মাষ্টার্সে ভর্তি হলাম।কিন্তু পরী আর পড়া-লেখা করবেনা।
পরীর আব্বু আম্মুর ইচ্ছা পরীকে বিয়ে দিয়ে দিবে।
পরী তার আব্বুকে অনেক বুঝিয়েছে কোনো লাভ হয়নি। পরীর আব্বু এক কথার মানুষ যা বলেন তাই করেন।
কি করবো বুঝতে পারছিলাম না।
কিরে ভাইয়া তোর কি হয়েছে সারাদিন মন মরা হয়ে বসে থাকিছ। (বিথী)
নারে,,,,,,,,, তেমন কিছুনা। (আমি)
কি হয়েছে আমায় বল? ভাবির সাথে কোনো প্রবলেম হইছে নাকি? (বিথী)
চুপ,,,,,,,,,,,,,,,,,(আমি)
বুঝেছি কিছু একটা হয়েছে। আমাকে কি বলা যায়না। (বিথী কেদে কেদে বললো )
আরে কাদছিস কেনো! তুই এইতো আমার সব,,, তোকে না বললে কাকে বলবো বল? (আমি)
আমায় জরিয়ে ধরে হাউমাউ করে কাদছে বিথী,
ভাইয়া,,,,,,,তুই আমার সব,,, তোর কষ্ট আমি কখনো সহ্য করতে পারবোনা। তোর জন্য আমি সব করতে পারি। তুই আমায় শুধু বল কি হয়েছে।(বিথী)
আমার চোঁখ দিয়ে যে কখন জল চলে আসছে বুঝতে পারিনি। আমার একটা মাত্র বোন আর আমি ওর একমাত্র ভাই। আমায় বড্ড ভালোবাসে,আমি আমার বোনকে জীবনের চাইতে ও বেশি ভালোবাসি, আমি চাইনা আমার জন্য আমার আদরের বোনটার কষ্ট হউক।
ঠিক আছে তোকে সব বলবো তুই কান্না বন্ধ কর? তোর কান্না আমি সহ্য করতে পারিনা আমার বড্ড কষ্ট হয়। (আমি)
তুই ও তো কান্না করছিস,,, শুধু তোর কষ্ট হয় আমার কষ্ট হয়না বুঝি? (বিথী)
তোর কান্না দেখলে আমার চোঁখের জল সামলাতে পারিনা। (আমি)
ঠিক আছে আর কখনো কান্না করবোনা,, এখন বল কি হয়েছে । (বিথী)
নারে ,,,,,,কিছু হয়নি আর পরী ও কিছু করেনি,,,,,তবে পরীকে নিয়েই খুব চিন্তা করছি কারন পরীর মা-বাবা পরীকে বিয়ে দিতে চায়। কারন পরীর বাবা গত কয়েকদিন আগে স্ট্রোক করেছেন। পরীর জন্য ওদের নাকি খু্ব টেনশন হয়। আমাকে পরী সব বলেছে কিন্তু আমি এখন কি করবো বুঝতে পারছিনা। আমি এখনো বেকার কোনো চাকরি করিনা আর পরীর বাবা নাকি ভালো একটা চাকরীজিবির কাছে পরীকে বিয়ে দিতে চান। আমার মাষ্টার্স কমপ্লিট হতে আরো ১বছর লাগবে তারপর চাকরী আর মা-বাবার ইচ্ছা মাষ্টার্স কমপ্লিট করে কোনো কিছু করবো। মা বাবাকে বললে ও তারা রাজি হবেন না কিন্তু পরীর হাতে একদম সময় নেই। তুই বল এখন আমি কি করবো। (আমি)
আমি যা বলছি তুই মন দিয়ে শুন (বিথী)
তখনি ফোনটা ক্রিং ক্রিং করে বেজে উঠলো ফোনটা হাতে নিয়ে দেখি পরী ফোন করেছে,,, ফোনটা রিসিভ করবো নাকি করবোনা বুঝতে পারছিলাম না।
বিথী বলে উঠলো কিরে ফোনটা রিসিভ কর ভাবি কি বলতে চায় শুন।
কি আর করবো অনেক কিছু চিন্তা করে ফোনটা রিসিভ করলাম।
হ্যালো,,,,,,,,,পরী(আমি)
কোথায় ছিলে এতো দেরি হলো কেনো ফোন রিসিভ করতে? (পরী)
না মানে,,,,,,,,(আমি)
আচ্ছা ঠিক আছে বলতে হবেনা। (পরী)
কেমন আছ তুমি? (আমি)
এইসব কথা বাদ দাও,,, আগামিকাল আমার সাথে দেখা করবে? (পরী)
কেনো কি হইছে। (আমি)
কাল সব বলবো,,,,,,,,বিকাল ৪টায় চলে এসো বসুন্ধরায়,,, এখন রাখছি? (পরী)
টুট টুট করে ফোনটা কেটে গেলো।
ভাইয়া ভাবি কি বলেছে (বিথী)
আগামিকাল দেখা করতে বলেছে অনেক কথা আছে হয়তো কোনো প্রবলেম হয়েছে। পরীর জন্য খুব চিন্তা হচ্ছে রে।
পরী খুব কষ্টে আছে আমার কোনো কথা না শুনেই ফোনটা কেটে দিলো। (আমি)
চিন্তা করার কোনো কারন নাই আগামিকাল ভাবির সাথে দেখা করবি।এখন আমার কথা শুন। (বিথী)
বল,,,,,,,,,,,,(আমি)
তোকে মাষ্টার্স কমপ্লিট করতে হবেনা, তুই ভালো একটা চাকরির জন্য এ্যাপ্লাই কর আর তোর যদি মাষ্টার্স করার ইচ্ছা তাকে তাহলে বিয়ের পর না হয় কমপ্লিট করবি। (বিথী)
কিন্তু মা-বাবা কখনো রাজি হবেনা। আর আমি মা-বাবার ইচ্ছার বিরুদ্ধে যেতে পারবোনা। (আমি)
তুই কোনো চিন্তা করিছনা, মা-বাবাকে আমি ঠিক মেনেজ করে নেব। (বিথী)
তুই পারবি তো???? (আমি)
হুম,,,,,,,,,তা নিয়ে তোকে ভাবতে হবেনা। এখন তুই ভালো একটা চাকরি এ্যাপ্লাই কর। বাকি সব কিছু আমি দেখছি। (বিথী)
ঠিক আছে,,,,,,,,, তবে একটা চিন্তা হচ্ছে রে? (আমি)
কি,,,,,,,,,,,,(বিথী)
এতো তারাতারি কোথায় চাকরি পাব? (আমি)
আরে,,,,,,,পাগল চাকরির খবর পড়লেই অনেক চাকরির পোষ্ট পাবি। তারপর তোর পছন্দ অনুযায়ী এ্যাপ্লাই করবি। আর তোর তো পয়েন্ট ও খুব ভালো দেখবি ঠিক চাকরিটা হয়ে যাবে। আমি এখন আসছি মা ডাকছে। (বিথী)
তারপর অনলাইনে চাকরির খবর পড়তে লাগলাম। সব চাকরিতেই মাষ্টার্স কমপ্লিট চাইছে।মেজাজ টা একদম খারাপ হয়ে গেছে।
হঠাৎ একটা চোঁখে পরলো নিম্নে অনার্স কমপ্লিট লাগবে।
ডেটেইল পরতে লাগলাম একটা কোম্পানির ম্যানেজার পদে চাকরিটা। কি আর করবো এ্যাপ্লাই করলাম। ।
৭দিন পর জানাবে।
রাত অনেক হইছে তারাতারি ঘুমিয়ে পরলাম।
অনেক দেরিতে ঘুম ভাঙ্গলো মোবাইলটা হাতে নিয়ে দেখি প্রায় ১২টা বেজে গেছে। কেউ আমাকে ডাকলোনা ব্যাপার
কি? তারাতারি ফ্রেশ হয়ে ব্রেকফাস্ট করতে গেলাম।
চুপ করে টেবিলে বসে থাকলাম বিথী আমায় দেখে খুব হাসছে। কি ব্যাপার কিছুই বুঝতে পারছিনা কেউ কিছু বলছেনা মা ও চুপ করে আছে।
তারপর মা ব্রেকফাস্ট দিয়ে বললো,,,,,
বিথী যা বলেছে তা কি সত্যি। (মা)
আমি কি বলবো বুঝতে পারছিনা,,,, খুব ভয় হচ্ছে। কিছু না বলে চুপ করে ব্রেকফাস্ট করছি।
কি হলো বল। (মা একটু রেগে)
একচোয়েলি আম্মু আমি এমনটা করতে চাইনি কিন্তু কিভাবে হয়ে গেলো আমি বুঝতে পারিনি। আপনার ইচ্ছা না থাকলে আমি সিদ্ধান্ত বদলে নিব। (আমি)
মা কিছু বলছেনা।।।
আমি তো ভেবেছিলাম মা রাজি হবেনা।
কিন্তু মা হঠাৎ কেদে দিয়ে বললেন,,,,,, তুই কোনোদিন আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনো কিছু করছ নাই,,,, আজ ও বলছিস আমার ইচ্ছা না থাকলে সিদ্ধান্ত বদলে পেলবি। তোর মা কি এতোটা নিষ্টুর তোর কোনো চাওয়া পাওয়া পুরন করবেনা। আমার কোনো আপত্তি নাই তুই পরীকেই বিয়ে করবি। (মা)
আমি তো খুশিতে লাফ দিয়ে মা কে জরিয়ে ধরে কতোটা কিস দিয়েছি নিজেই বলতে পারবোনা। আমার লাফালাফি দেখে মা খুব হাসছে।
বিকাল বেলা পরীর সাথে দেখা করতে চলে গেলাম বসুন্ধরায়।
মা কখনো আমাকে আমাদের গাড়ী নিতে দেয়নি আজ মা কে বলতেই মা না করলোনা।
বসুন্ধরায় চলে আসলাম তাকিয়ে দেখি রাজকুমারী নীল শাড়ী পরে রাস্তার এক কোণে দাড়িয়ে আছে। খুব সুন্দর লাগছে , আকাশের নীল পরীকে কখনো দেখেনি কিন্তু আকাশের নীল পরী আমার পরীর কাছে হার মানবে। বিকাল বেলা সূর্যের কিরন আরো আলোকিত করে দিয়েছে।
আমি গাড়ী থেকে নামলাম, নামতে না নামতেই পরী দৌরে এসে আমায় জরিয়ে ধরে হাউমাউ করে কাদতে শুরু করে।
এই পরী এভাবে কাদছো কেনো? কি হয়েছে তোমার।(আমি)
আকাশ,,,,,আমি তোমাকে ছাড়া বাচতে পারবোনা,,,, বাবা বিয়ে দেওয়ার জন্য পাগল হয়ে গেছে। আমি এখন কি করবো, আমি কখনো অন্য কারো হতে পারবোনা,,,,, তোমাকে না পেলে আমি এ জীবন শেষ,,,,,,,,,,,(বিথী)
কখনো এ রকম কথা বলবেনা,তুমি আমার, সারাজীবন তুমি আমারি থাকবে আর কারো হতে হবেনা। (আমি)
পরীর চোঁখের জল মুছে দিয়ে পরীকে গাড়ীতে বসালাম তারপর ড্রাইভ করে একটা রেষ্টুরেন্টে গেলাম।
পরীর মুখে কোনো হাসি নাই অন্ধকার আকাশের মতো হয়ে আছে।
আমি আর পরী কেবিনে বসে আছি।
পরী কি খাবে?(আমি)
কিছু খাবনা,,,,,,,, চল বাহিরে যাই? (পরী)
কিছু খাবে তারপর বাহিরে যাব। কি খাবে বলো?(আমি)
তুমি অর্ডার দাও। (পরী)
চল,,,,,কিছু খেতে হবেনা। (আমি একটু রেগে বললাম)
ওলে,,,,,,,বাবালে,,,,,,,লাগ কলছো কেনো,,,,, আমি লাচ্চি খাবো? এবার একটু হাস? (পরী)
কি আর করবো রাগ করে থাকতে পারলামনা। হেসেই দিলাম।
পরী,,,,,,, আমার পরিবার সবাই রাজি, আমি তোমাকেই বিয়ে করবো আর একটা চাকরী ও এ্যাপ্লাই করেছি। ৭ দিন পর জানাবে, চাকরিটা হয়ে গেলে খুব ভালো হবে। তোমাকে আর কোনো চিন্তা করতে হবেনা।(আমি)
সত্যি,,,,,বলছো,,,,,, তোমার মা-বাবাকে কিভাবে রাজি করলে? আর চাকরিটা না হলে তো বাবা তোমার সাথে বিয়ে দিবেনা। (পরী)
মা-বাবাকে বিথী মেনেজ করেছে আর চাকরি না হলে বাবা ব্যবস্হা করে নেবে। (আমি)
উম্মা,,,,,,,উম্মা,,,,,,,,,উম্মা। (পরী)
পরী খুশিতে অনেক কিস দিয়েছে আমায়,,,, পরীর মনে আমার জন্য অনেক ভালোবাসা আছে পরীর ভালোবাসা আমায় পাগল করে দিয়েছে,,,,,তারপর পরীকে নিয়ে চলে আসলাম পরীকে তাদের বাসার সামনে নামিয়ে দিয়ে আমি বাসায় চলে আসলাম।
দেখতে দেখতে ৭ দিন চলে গেলো।
রাত হয়ে গেলো এখনো কোনো খবর পেলাম না তার মানে চাকরিটা হয় নাই। খুব চিন্তা হচ্ছিলো হঠাৎ ফোনটা বেজে উঠলো থাকিয়ে দেখি একটা অপরিচিত নাম্বার থেকে ফোন আসছে তারাতারি ফোনটা রিসিভ করলাম।
হ্যালো,,,,,,আসসালামুআলাইকুম। (,,,,,,) ওয়া,,,,,,,,সালাম। আপনি কি মিঃ আকাশ বলছেন। জি,,,আমি আকাশ বলছি, আপনাকে ঠিক চিনতে পারলামনা। (আমি) আমি মনসুর আল মাহমুদ বলছি,,,,,আপনি চাকরির জন্য এ্যাপ্লাই করেছিলেন,,, আপনার চাকরিটা হয়ে গেছে আগামি ৩তারিখে চাকরিতে জয়েন করবেন। আমি তো খুশিতে লাফালাফি করছি,,,,,,,,, বাসায় চিৎকার দিয়ে বল্লাম আমার চাকরি হয়ে গেছে। বিথী মা-বাবা সবাই চলে আসলো। ভাইয়া,,,,,,,,,,,,, আমার জন্য স্পেশাল গিফট চাই। (বিথী) তোর যা ইচ্ছা তাই পাবি। (আমি) মা-বাবা অনেক খুশি হয়েছে। পরীকে বিথী ফোন করে সব বলে দিছে ভেবেছিলাম সারপ্রাইজ দিবো কিন্তু হলোনা।
আর ২দিন পরে চাকরিতে জয়েন করবো কতো খুশি আমি। এই সব কিছু বিথীর অবদানে হয়েছে না হলে আমি কিছুই করতে পারতামনা। যাই হউক চাকরিতে জয়েন করলাম দেখতে দেখতে ৩মাস চলে গেলো। সেলারি ও খারাপ না ২৩৫০০। আমার জন্য এতোটুকুই যথেষ্ট। প্রথম মাসের সেলারি পেয়ে অর্ধেক টাকা বিথীকে দিয়ে বল্লাম তোর যা কিছু প্রয়োজন নিয়ে আয়, বিথী নিতে চায়নি একধরনের জোর করে দিয়েছি। মা-বাবার জন্য কিছু শপিং করেছি আর পরীর জন্য একটা শাড়ী। কিছু টাকা রয়েছে এইসব দিয়ে আমার পকেট খরচ। আপনাদের তো বলাই হয়নি, চাকরিতে জয়েন করার ১৫দিন পরেই মা-বাবা পরীর বাড়িতে গিয়ে পরীর মা-বাবার সাথে আমাদের বিয়ের কথা বলেছেন। পরীর মা-বাবা অল্পতেই রাজি হয়ে গেছেন। বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করা হলো আগামি ০৭-৭-২০১৭ আমার আর পরীর বিয়ে আপনারা সবাই আমন্ত্রীত।
শীঘ্রই নতুন গল্প আসছে।
সমাপ্ত