আমার সংসার

আমার সংসার

বিয়ের প্রথম রাতেই সে আমকে শাসিয়ে দেয়-আমার ‘মা’ ই আমার সব কিছুু, মাকে খুশি করতে পারলেই আমি খুশি।। নইলে তার মন পাওয়া যাবে না। অনেক স্বপ্ন নিয়ে এসেছিলাম। বাসর রাত নিয়ে কত স্বপ্নই থাকে মেয়েদের। কথাগুলো শুনে সব স্বপ্নই যেন কাঁচের মত ভেঙে যায়।। কিছু বলতে পারলাম না, কান্নাটাও চেপে গেলাম, নিজের নীয়তি ভেবেই সব মেনে নিয়ে এক পাশ হয়ে শুয়ে পড়লাম। আর ভাবতে লাগলাম এখন নীলয় (আমার এক্স বি এফ) থাকলে হয়তো একটু অন্যরকমই হতো।। নীলয়কে অনেক ভালবাসতাম, নীলয়ও আমাকে অনেক ভাল বাসতো,, ওর সাথে কাঠানো মুহুর্ত গুলো ভাবতে ভাবতে কখনযে ঘুমিয়ে যাই মনে নেই।।

মধ্যরাতে পেটের নিচের দিকটা কেমন যেন করে উঠলো, মনেহয় ওয়াশরুমে যেতে হবে।। তাকে ডাকতে চাইলাম না, তবু এ বাসায় আমি নতুন, কিছুই চিনি না। তাই না ডেকে পাড়লাম না। এইযে ঘুমিয়েছেন? হুম,, হ্যা,,,না, জি বলুন। (ঘুম থেকে আচমকা ডাকে ওঠে হয়তো এমন করলো) আমি একটু বাইরে যাবো আচ্ছা, দাঁড়ান, লাইটা জালিয়ে নিই। ভারী শাড়ি আর নারভার্স এর কারনে ১৫ মিনিটেরও বেশি সময় লাগলো ওয়াশরুম থেকে বেরুতে।। বেরিয়ে অবাক হয়ে যাই।। লোকটা ওয়াশরুমের সামনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ঘুমাচ্ছে।। ঘুমবেই না কেন, সারা দিনের ধকল, তার মাঝে এখন বাজে রাত ২ টা। এইযে শুনুন ও আপনার হয়েছে চলুন আপনার ঘুম পাচ্ছে রুমে গিয়ে শুয়ে থাকলেইতো পারতেন।

আপনি যদি ভয় পান তাই।। আচ্ছা রুমে চলুন সেদিনের মত দুজন ঘুমিয়ে পড়লাম,, ঘুম ভাংলো লোকজনের ডাকে।।  ওনি পাশফিরে আমার শাড়ির আঁচলে সুয়ে আছে। হয়তো দেখে নি। তাকে ডাকলাম-এইযে শুনছেন, উঠুন আবার ওয়াশরুমে যাবেন? না, সকাল হয়ে গেছে। ও আচ্ছা।। ওঠতেই আমি শাড়ি ঠিক করে বিছানায় বসে রইলাম, আর উনি দরজা খুলতেই, সবাই একটু তামাসা করে বলতে লাগলো- কিগো প্রথম দিনই এত লেট, সারা রাতে বুঝি ঘুম হয় নি, ইত্যাদি ইত্যাদি।।  এদিকে কথাগুলো শুনে গা জ্বলছে, ,, তবু নতুন বউ এর রীতিমত চুপ হয়ে বসে রইলাম।। আজ বৌভাত,  সবাই এসে চিড়াখানার প্রাণীর মত সবাই আমাকে দেখছে।। এমনিতেই খুব গরম পড়েছে, তার উপর আবার এত লোকের সমাগম।। একটু বিরক্ত বোধ হলো।। ভাবছি আজ বাসায় গেলে আর আসবো না।।

যথা রীতি সন্ধা সময় বাসার উদ্দেশ্য রওনা হলাম,,  বাসায় গিয়ে একটু হাফ ছাড়লাম, এবার আমার বাসায় এসেছি,, আমি স্বাধিন।। কিন্তু রাত ১০ টা বাজতেই মা বল্লো, জামাইকে নিয়ে শুতে যা। অনিচ্ছা হলেও তাকে নিয়ে রুমে গিয়ে শুয়ে পড়লাম,, এবাসায়ও বাসর ঘড় সাজিযেছে।। দেখে একটু রাগই হলো।  যথারীতি আগের রাতের মত বিপরীত পাসে মুখ ফিরিয়ে শুয়ে পড়লাম।। ভাবতে লাগলাম, কি আন রোমেন্টিক লোকের সাথে বিয়ে হলো, শুধু খাওয়া আর ঘুম ছাড়া কিছু বুঝে না। ভাবতেছি এখন যদি নীলয় থাকতো হাত ধরে কত কিছুইনা বলতো।। অনেক মিস করছি নিলয়টাকে।। ভাবতে ভাবতে অনেক রাত হয়ে যায়, মধ্যরাতে কারো স্পর্সে আমার ঘুম ভেঙে যায়,, আমি লাফদিয়ে উঠেই তাকে ডেকে তুল্লাম।।

এইযে শুনুন,,,,,,,,,,,,,,,, এইযে শুনুন,,, জি, জি, জি কি,, কি হয়েছে? ঘুমের ভান ধরে আমাকে ছোয়ার চেষ্টা করছেন? না আমি সত্যি ঘুমিয়ে ছিলাম আমার জানা আছে,,  বলতে বলতে অনেক কথাই শোনালাম গতরাতের শোধ নিলাম, আমাকে তার মায়ের কথা শুনতে হবে,, আজ আর ছাড়ি নি,, সত্যি বলতে ওনার চোখে বেশ ঘুম দেখতে পারছিলাম,, তবু মানুষ্টা একটা কথাও বল্লোন না। সে যাই হোক, আমি আমার মত শুয়ে পড়লাম।।  সকালে ঘুম থেকে উঠে তাকিয়ে দেখি সে পাশে নেই, হালকা শীতের ভেতর ঠান্ডা ফ্লোরে শুয়ে আছে।। আমি ডাকতেই উঠে পড়লো এইযে শুনুন হ্যা মেঝেতে সুইছেন কেন? আসলে, আপনার যদি টার্চ লাগে আপনি যদি রাগ করেন তাই আরকি।। নিজেকে বড্ড অপরাধি মনে হচ্ছে। এ কি করলাম আমি। এমন বাড়ির ছেলেকে ফ্লোরে শুয়ালাম। মানুষটাকে যা ভেবেছিলাম তা না। একটু বোকাও বটে।। যাইহোক উঠে নাসতা করার জন্য, ডাকলাম।।  কি যেন বাজারের ব্যাগ নিয়ে বরুলো,, তাদের বংশের নাকি রীতি, জামাই বাজার করার।।

বাজারে যাওয়ার আগে প্রশ্ন করলো, কিছু লাগবে কি না।। আমি লক্ষী মেয়ের মত না করে দিয়ে, ফিস ফিস করে বলে উঠলা ” ঢং দেখে বাচি না” বলতে না বলতেই পিছু ফিরে চায়।। শুনতে পেয়েছে বোধয়।। শুনলে শুনুক এই লোকটাকে কেন জানি সহ্য করতে পারছি না।।  বাজার থেকে বড় একটা বোয়াল মাছ এনেছে, ১৭ হাজার টাকা নাকি হইছে,। বেশ গর্বই হচ্ছে,, আমার স্বামী এনেছে।। একটা ছাগল আরো কি কি যেন এনেছে। আর যাই হোক লোকটার কলিজা বড় আছে।। বান্ধবির জামাই বাজার করেছিলো পরে আমাকে ডেকে ডেকে দেখাইছে।। ইচ্ছে হচ্ছে ওদের চুল ধরে এনে দেখাই। বাজার থেকে ফিরে রুমে এসে রেষ্ট নিচ্ছে, আমি নীলয়ের সাথে লুকিয়ে কথা বলছিলাম, হয়তো দেখে ফেলে। কিন্তু কিছু বলে নি। হয়তো বাসায় গিয়ে সাধ তুলবে।।

ভয় ভীতি তোয়াক্কা না করে কাছে গিয়ে জিগেস করলাম কিছু লাগবে? (আমি) আপনাকে ডিসটার্ব করলাম? ছিঃ ছিঃ তা কেন। ( ভেবেছিলাম বকা দিবে বা রাগ করবে) আচ্ছা,, আপনার কেও থাকলে, মানে কোন বান্ধবি -টান্দবি থাকলে নিমন্ত্রণ করতে পারেন। বাজার মাসআল্লাহ কম করি নি।। না আমার তেমন কেও নেই সেদিন যে এসেছিল তারা সমস্যা নেই ওদের নিমন্ত্রণ করতে হবে না।। আপনি একা একা বোর হচ্ছেন বোধয় আচ্ছা আমি ওদের ফোন করে বলে দিচ্ছি। ও হ ফোনের টাকাটাও এমন সময় ফুরোলো।। আমার কাছে ১০০ টাকার একটা কার্ড আছে,, এই নিন না ভরতে হবে না,, টাকা লাগবে না আরে ভরেনতো, আমি মাকে একটু ফোন দিবো,, আমার টায় রিচার্জ হচ্ছে না।।  এই নিন আপনার মাকে নাকি ফোন দিবেন,,  না থাক পড়ে দিবো আসলে তার মাকে ফোন দেয়ার জন্য আমার ফোনে টাকাটা ভরেনি,, কারন সে তার ফোনটা বিছানার উপর রেখে গেলে আমি দেখি তার মায়ের সাথে সে কথা বলেছে, আর ফোনেও ১২ টাকার মত আছে।।

লোকটাকি তবে আমাকে টাকাটা দেয়ার জন্যই মিথ্যে বল্লো।। সে যাই হোক নীলয়ের সাথে কথা বলা যাবে,, অমন সময় মায়ের ডাক,  সায়মা, সায়মা কি মাাাা জামাইকে নাসতা পানি কিছু দে।। মার কথামত নাসতা দিয়ে চলে আসলাম,, মা সেইরকমের গরম করে তাকালো।। জামাইর কি লাগবো দেখসনা! (মা) লাগলে হাত নাই, নিয়ে খাইবো তুই আর মানুষ হইলি না,, নতুন জামাই নিয়ে খাইবো? বলতে বলতে আমাকে ধাক্কা দিয়ে পাঠিয়ে দিলো।। রুমে গিয়ে দেখি এখনো খাবারে হাত দেয় নি,, কত ঢং জানে এই লোকটা আল্লহ জানে।। আপনি খাবার নেন নি কেন? আপনি খাবেন না? না আমি খাইছি, আপনি খান একটু খান,, খেলে খুশি হতাম আমি খাবো না, জোর করবেন না।। আর আমার উপর দাবি ফোটাতে আসবেন না উচ্চস্বরে কথাগুলো বলেতে লাগলাম। লোকটি কিছু বলছিলো না শুধু চারপাশে তাকাচ্ছিলো, হয়তো দেখছিল কেও দেখে ফেল্লো কি না।।

আচ্ছা Sorry ভুল হয়ে গেছে,, প্লিজ আসতে কথা বলুন।। আমার একটা সম্মান আছে। আমি এ বাসার জামাই। কথাগুলো বলেই লোকটি না খেয়ে বেরিয়ে গেলো।। আমি তাকে এভাবে হার্ট করতে চাইনি, তবু তার ন্যকামিটা সহ্য হচ্ছিল না।। মা জানলে আমাকে আস্তো রাখবে না,, মাকে বোধয় বলেই দিবে। আজ কপালে কিছু আছে বোধয়।। মা আর তার কথার শব্দ পাচ্ছি- বাবা নাসতা করছো (আমার মা) জি আম্মাজান কোন সমস্যা হয় না তো? না কোন সমস্যা নেই,, আর আপনার মেয়েতো আছেই,, সে আমার দেখাশুনা করছেতো ও একটু অন্যরকম বাবা,, তুমি একটু বুঝিয়ে শুনিয়ে রেখো আরে কি যে বলেন আম্মা,, ও অনেক বুদ্ধিমতি।। তাদের আলাপন শুনে একটু অবাক হলাম, মানুষটা মা কে বলতে পাড়তো। আর না খেয়ে মিথ্যা বল্লো যে খেয়েছে।। এগুলো নিশ্চই আমাকে দেখানোর জন্য। আর যাই হোক আমি তার প্রতি দূর্বল হচ্ছি না।। মানুষটাকে বাড়ির আর কোথাও দেখতে পেলাম না।। আমাকে দেখলেও কেমন যেন আমার সামনে দাঁড়ায় না।।

সকাল গড়িয়ে দুপুর হয়ে গেছে, তার দেখা নেই। ঐ বাসা থেকে সবাই আসলো, তার মা বাদে।। ছেলের মায়েদের নাকি ছেলের শ্বশুর বাড়ি আলাদা দাওয়াত করে আনতে হয়।।  সবাই খাওয়া দাওয়ার পর, পরিচয় পর্ব হচ্ছে।। বাইরে চেয়ার পাতা হয়েছে। সেখানে বসে একে একে সবাইকে পরিচয় করিয়ে দিতে লাগলো।। পাশাপাশি বসে থাকলেও আমার দিকে একটি বারও তাকালেন না। বেশ অভিমান হলো।। আমিকি দেকতে এতটাই খারাপ, স্কুলে কত ছেলেই পেছনে ঘুড় ঘুড় করতো, পাত্তা দিতাম না।। আর সে একটি বার তাকানোর প্রোয়োজন মনে করলো না।।  যখনই উঠতে যাবো, তখনই তিনি বলে উঠলো- আমার সম্মানের খাতির আর একটু বসে থাকুন কিছু বললাম না সোজা ঘড়ে চলে এলাম।। সবাই ডাকতে ডাকেতে আমি ঘড়ে পৌছে গেছি কিন্তু কান আমার খাড়া রয়েছে।। উনি বলতেছে।।

উনার মাথা ব্যথা করছিলো আমাকে বলছে।। তাই আমিই বলছি ঘড়ে গিয়ে শুয়ে থাকতে।। সন্ধা হলে মা -বাবা আমাকে বিদায় দিলো।। তাকে ডেকে মা বাবা অনেক কিছুই বল্লো।। বাবা আমার মেয়েটা অনেক আদরের, একটু দেইখা রাইখো।। যেটা না বুজে একটু বুঝায় দিয়ো।। ( বাবা) আব্বা আপনি টেনশন কইরেন না, আর আমার মা আর ছোট বোনতো আছেই।। তার দেখাশুনা করবে।। আর আমি মাঝে মাঝে বাইক দিয়ে ওকে সকালে দিয়ে যাবো বিকেলে নিয়ে যাবো।। টেনশনের কিছু নাই বাসা থেকে যেতে ইচ্ছে করছিলো না। তবু যাচ্ছি,, জানিনা কপালে কি আছে, হয়তো আজকের ঘটনাগুলোর ঝাল তুলবে।। ঐদিকে শ্বাশুরি আম্মা ফোনের উপর ফেন দিচ্ছে তাকে।। বাসায় পৌঁছেছি, গতকালের মত লোকের সমাগম চোখে পড়লো না।। শাশুরি কেমন করে যেন চাইলো,,  দেখে একটু বিব্রত বোধ করলাম, ইস মহিলাটার চেহারায় কেমন যেন পাজি পাজি ভাব আছে।।

বাসায় পাড়া দিতেই বউমা,, বউমা,, বউ,,,,, মাাা,,,,,, (শাশুরি) জি ডাক শুনতে পাও না! নাকি?? (একটু কড়া গলায়ই বল্লো) আমি রুমে ছিলাম কাপড় আর গয়নাগুলো খুলে আমার রুমে আসো।। বাসায় পাড়া দিতে দিতেই অত্যাচার শুরু, জানিনা কোথায় এসে পড়লাম, আল্লাহ আমাকে রক্ষা করো।। দ্রুতো কাপড় ছেড়ে, কামিজ পড়ে আসলাম।। শাড়ি আর গয়নাগুলো বাক্সে ভড়ে শাশুরির রুমে চলে এলাম।। আম্মা,, এইযে কি এগুলো? (উচ্চস্বরে বলতেই আমি একটু ভয় পাই) শাড়িটা আর, গয়নাগুলো এত বেশি বুঝ কেন? তোমার কাছে গয়না আর শাড়ি চাইছি? তাহলে আপনিযে বল্লেন, গয়না কাপড় খুলে আসতে হ্যা বলছি, নিয়ে আসতে বলছি? ওগুলো তোমার আলমাড়িতে রেখে দাও। আচ্ছা এখনই রেখে এসো এ আবার কেমন শাশুরিরে বাবা, গয়না শাড়ি কিছুই নিলো না,, মনে হয় আমাকে আলমাড়িতে রাখিয়ে চাবিটা নিয়ে যাবে।। মনে মনে ভাবতে ভাবতে শাড়ি আর গয়না গুলো রেখে শ্বাশুরির সামনে হাজির হলাম।।

শাশুরি কি প্যান প্যান করে কিসব নিয়ম কানুন শিখিয়ে দিলো।। আমি কোন কিছুই খেয়াল করি নি, শুধু হ্যা, হুর সাথে মাথা ঝাকালাম।। ননদটাকেও দেকলাম চুপ করে বসে আছে।। এতো আমার আশেপাশেই ছিলো চিনতে পাড়ি নি।। আর সেও বলে নি আমি আপনার ননদ।। যাইহোক খাবার দাবার খেয়ে শুয়ে পড়লাম কিন্তু সে যে খাবার খেয়ে বাইরে গেলো এখনো ফিড়ে নি। এখন ঘড়িতে ১১ টা বেজে ৪৩ মিনিট। মনে মনে ভাবতে লাগলাম আসলে আসুক, না আসলে নাই।। অনেক রাতে ঘড়ে ফিরলো, মনে হচ্ছিলো কেও ডাকছে কিন্তু কে বা কি দেখার প্রয়োজন মনে করি নি। পরে বোধয় শ্বাশুরিই দরজা খুলেছে।। সে রুমে ঢুকে লাইট জ্বালিয়ে কি কি যেন করতে লাগলো। ভয় লাগলো আজ বুঝি আর রক্ষা নেই। আজ বুঝি শারিরিক চাহিদার সাথে সাথে দিনের ঘটনাগুলোর সাধ তুলবে।। ভয়ে শরির যেন ক্রোমশ ঠান্ডা হয়ে আসতে লাগলো। পর পর কয়েকটা ডাক দিলো- এইযে ঘুমিয়েছেন,, এইযে ঘুমিয়েছেন। আমি জেগে থাকলেও সারা দিলাম না।।  সে আমার একপাশ হয়ে শুয়ে রইলো।।

তার এক হাত আমার আমার কোমরের উপর রাখতেই আমি নরে চড়ে উঠলাম, মানুষটা হাত সরিয়ে নেয়।। কিছুক্ষন পর লোকটি উঠে বারান্দায় গিয়ে সিগারেট ধরালো। কিন্তু আমি যতদূর জানি লোকটা সিগারেট খায় না, তবে কেন আজ সিগারেট খাচ্ছে,,  না জানা প্রশ্নটা, আর কৌতুহল যেন শুয়ে থাকতে দিলো না। উঠে বসে রইলাম।। আকাশের দিকে তাকিয়ে কি যেন দেকছে।  আমি ডাকলাম- এইযে শুনুন। ( বলতেই আমার দিকে ঘুড়ে সিগারটা ফেলে দিয়ে ধোয়াগুলো লুকানোর বৃথা চেষ্টা করলো) ওয়াশরুমে যাবেন? আমিকি সবসময় ওয়াশরুমে যেতে আপনাকে ডাক দেই? না আসলে এত রাতে আপনার ডাক,,, তাই ভাবলাম আচ্ছা আপনি সিগারেট খেলেন কেন? কই, না তো লুকানোর চেষ্টা করবেন না,, আমি যতদূর জানি আপনি সিগারেট খান না,, আমার চাচাতো ভাই আপনার বন্ধু বলেছে আসলে এমনি ভাল লাগছিলো না, তাই আজ একটা এমনিতেই আমিকি আপনাকে কোন ভাবে হার্ট করছি? না তা না,, আপনার সাথেতো আমার তেমন কোন কিছু হয়ই নি,,আপনার মনটাও পাই নি, মনের মতও হইনি হার্ট হবো কেন বলুন। তবু আমার কেন জানি মনে হচ্ছে আমি আপনাকে হার্ট করেছি। আচ্ছা অনেক রাত হয়েছে ঘুমান,, আমি ওয়াশরুম থেকে আসছি।।

কথাগুলো কেমন যেন এড়িয়ে গিয়ে সে ওয়াশরুমে চলে গেলে। আমার ডাওট হয়, হয়তো আমার মতো সে তার Gf কে মিস করছে,, তাই ফোনের ডায়াল নাম্বারগুলো চেক দিলাম। যা দেকলাম তা দেখে আমি অবাক হয়ে গেলাম।
ডায়ালারে , নীলয়ের নাম্বার,, ১২ মিনিট ৪৪ সেকেন্ড কথা হয়। লোকটাই দিয়েছিলো ফোনটা।। এর জন্যইকি লোকটা সিগারেট খাচ্ছিলো? তার স্ত্রীর প্রেমিক আছে এটা জেনেইকি তবে লোকটার চোখ ছল ছল করছিলো? কি কথা হয় দুজনের মাঝে? ওয়াশরুম থেকে ফিরে লোকটি একটা বালিশ নিয়ে বারান্দায় চলে গেলো,, কোন কিছু বলার প্রয়োজন মনে করলো না। বারান্দায় গিয়ে শুয়ে পড়লো।।। আমি কয়েকবার ডাকলাম কিন্তু কোন সাড়া দিলো না।। হয়তো ঘুমিয়ে গেছে, নয়তো আমার সাথে কথা বলার ইচ্ছে নেই তার।

আমিকি তবে তার জীবন নিয়ে খেল্লাম? আমিতো নীলয়কে ভালবাসি,,, ও কাজ পেলে আমাকে নিয়ে যাবে বলেছে।। কিন্তু আমিতো বিয়েটা না করলেও পারতাম। মানুষটাকেকি তবে ঠকালাম? ভাবতে ভাবতে কখনযে ঘুমিয়ে পড়ি মনে নেই।।। সকাল বেলা ওঠে দেখি লোকটা বারান্দায় নেই,, আমি ওঠে মুখ হাত ধুয়ে, কিচেনে চলে গেলাম,, শাশুরি নাস্তা রেডি করছে,, চা, রুটি, ডিম,ভাজি একে একে সব টেবিলে নিলাম, আর অতিপতি করে চাই লোকটা কোথায়। কিন্তু কোথাও দেখা মিল্লো না।। আজ সকাল সকাল কেন জানি তার প্রতি মায়া হচ্ছে,, এটাকি মায়া নাকি ভালবাসা?নাসতাগুলো নিয়ে আমি, শাশুরি আর ছুটকি(ননদ) বসলাম,,, কিন্তু সে এলো না।। তাই শাশুরিকে জিজ্ঞেস করলাম-  আম্মা, ওনি খাবেন না? ওতো সকালে উঠে বাজারে চলে গেছে। না খেয়েই? কি যেন বল্লো, বাজারে খেয়ে নিবে। কেন ওনিকি বাড়িতে নাস্তা করেন না? সবসময় বাড়িতেই করে, কিন্তু আজ কেনজানি বল্লো বাজার থেকে নাসতা করে আসবে।।

কথাগুলো শুনে চোখে জল চলে এলো। আমার জন্যইকি তবে সে নাসতা না করে চলে গেলো? হাত দিয়ে রুটি নাড়ছি, কিন্তু পেটে যাচ্ছে না। এদিকে আমার ফোনটাও নিয়ে আসি নি যে নীলয়ের কাছ থেকে জানবো কি কথা হয়েছে তাদের মাঝে।। বেলা ১১ টা বেজে গেলো তার আসার খবর নেই।। অবশেষে আসলো।। মায়ের হাতে বাজার তুলে দিচ্ছে আর মা বলছে- কিরে এত দেরি করলি যে, তুইতো এত দেরি করিস না।। অারে এক বন্ধুর সাথে দেখা হয়ে গেলো তাই একটু দেরি হলো।। যা ঘড়ে যা না মা একটু কাজ আছে,, দোকানের কর্মচারিটা ফোন দিছিল। সারাদিন কাজ আর কাজ,, বিয়ের পর সব ছেলে নাকি ঘরমুখো হয়,,তুই দেখি তার উলটা মা,, মা,,,,মাাাা,,,, এখন যদি বাসায় বসে থাকি তবে লোকে বলবে ” বউ এর আচল ধরে বসে আছে” তাতে কি হইছে, বলুক।

তুমিনা মা,,,আচ্ছা আসি তার সামনেই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কাথাগুলো শুনছিলাম, বার বার আমার দিকে তাকালেও কিছু বলার প্রয়োজন মনে করলো না।। এদিকে মা মাছ কাটতেছে, আর আমি সবজি কাটতেছি,,, শাশুরি মহিলাটা অত খারাপ না।। আমি না পাড়লেও দেখিয়ে দিচ্ছে,, কিন্তু কন্ঠস্বরে জোর আছে বলতে হবে।। দুপুর গড়িয়ে ৩ টা বেজে গেলো তার খবর নেই।। পরে এসেই গোছলে ঠুকছে, আমি তার মন রক্ষার্থে তোয়ালে নিয়ে বাথরুমের বাইরে দাঁড়িয়ে রইলাম।। বাথরুম থেকে মাথাটা বের করে তোয়ালেটা চাইলো তবে আমার কাছে না, তার মায়ের কাছে- মা, তোয়ালেটা দাও। আমি তোয়ালেটা দিতে এগিয়ে গেলে, মুখ থেকে সিগারেটের গন্ধ পেলাম।। আপনি সিগারেট খেয়েছেন? কই না তো।। ব্রাশ করে আসুন,, নইলে মুখের গন্ধে মা বুঝে যাবে।। সবাই টেবিলে বসে খাচ্ছি কিন্তু শুধু মা আর ছুটকি কথা বলছে।। আর কেও বলছে না।।

সে খেয়ে ঘুমোচ্ছে।। আমি আর ছুটকি টিভি দেখছি আর গল্প করছি।। ছুটকি, তুমি কোন ক্লাসে পড়ো? আমি ১০ম শ্রেণীতে পড়ি।।আর আমার নামতো ছুটকি না,বাবলি,, ভাইয়া আদর করে ছুটকি বলে, তাহলে আমিও তোমাকে ছুটকি বলবো।।  হি হি হি,।। আচ্ছা আমি তোমাকে তবে রাঙা ভাবি বলে ডাকবো।। আচ্ছা, ঠিক আছে।। আচ্ছা তোমার ভাইয়াকি কখনো প্রেম টেম করে নি? আমার কাছে কত মেয়েরা ভাইয়াকে প্রেম পত্র দিতো, ভাইয়া খুলেও দেখতো না।। তবে একটা মেয়েকে পছন্দ করতো কিন্তু মেয়েটা লোভি ছিল, যখন আরেক ছেলেকে দেখছে আমাদের চেয়ে টাকা বেশি, তখন ঐ ছেলের সাথে পালিয়ে যায়।। তাহলে তোমার ভাইয়া এত দ্রুত বিয়ে করলো কেন? আসলে.. ইয়ে মানে,,, কাওকে বলবেন না তো প্রমিস করেন প্রমিস আমাদের মা, আসল মা না,, সৎ মা।।

আমাদের মা তো আমাকে জন্ম দিতে গিয়েই মারা যায়।। বাবা তাকে বিয়ে করে, আমাকে ২ বছরের রেখে বাবাও মারা যায়।। মায়ের তখন নতুন বিয়ে,, মামারা মাকে অন্য জায়গায় বিয়ে দিতে চাইছিল। কিন্তু মা বিয়ে বসে নি।। আমাকে মানুষ করেছে।। আমাদের কখনো বুঝতে দেয় নি আমরা তার সৎ ছেলে মেয়ে।। আর আমরাও কখনো বুঝতে দেই নি যে সে আমাদের আসল মা না।। আর আর কি? মা বেশিদিন নেই, মায়ের কেনসার হইছে,, তাই মা তাড়াতারি ভাইয়াকে বিয়ে করিয়েছে।। ভাইয়াও না করতে পারে নি।। ছুটকির মুখথেকে কথাগুলো শুনে মহিলাটাকে দেখতে ইচ্ছে করছে।। যে মহিলা তার জীবন, যৌবনেরর মায়া ত্যাগ করে তাদের মানুষ করেছে।। এর জন্যই হয়তো লোকটি প্রথম রাতে বলেছিল” মা ই তার সব, মাকে খুশি করতে পারলে তার মন পাওয়া যাবে” রাতে খাওয়ার পরে মহিলাটা আমাকে ডাকছে,, কেন যানি মহিলাটাকে ভয় পাই।।

বউমা,, বউমা,,,জি আম্মা,,,এখানে এসো আমাকে কাছে কাছে টানতেই আমার হার্টবিট বেড়ে গেলো।। মহিলাটা আমার হাতে চাবিটা দিয়ে বল্লো।। বউ ঘড়ের লক্ষি,,, আমি আজথেকে লক্ষির হাতে সংসারের দায়িত্ব তুলে দিলাম।। আমার সন্তানদুটোকে একটু দেখে রেখো।।। বলতে বলতে চোখের জল ছেড়ে দেয়,, কি বলবো কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না।। যত দিন যাচ্ছে ততই অবাক হয়ে যাচ্ছি।। রাতে লোকটা রুমে এসে বল্লো- কাল বিকেলে একটু রেডি হয়ে থাকবেন, আপনাকে নিয়ে এক জায়গায় যাব।।।। তার পর যে যার জায়গায় শুয়ে পড়লাম। পরের দিন বিকেলে যথারিতী রেডি হলাম,, বাইকে করে প্রথম বার স্বামির সাথে কোথাও যাচ্ছি,, বেশ ভালই লাগছে, বাতাসে শাড়ির আচলটা দুলছে,, খোলা চুল যেন বাতাসে ঢেও খেলছে,, ,, কিন্তু ভাল লাগাটা বেশিক্ষন স্থায়ি হলো না।। যখন দেকলাম বাইকটা নীলয়ের সামনে গিয়ে থামলো।।

বাইকটা থামতেই বুকের হার্টবিট বেড়ে গেল, শরির যেন ঠান্ডা হবার উপক্রম। কিছু বলার ভাষা যেন হারিয়ে ফেলেছি। প্রথমবার হয়তো কোন মেয়ের সামনে তার পুরোন প্রেমিক আর স্বামী একসাথে দাঁড়িয়ে। যদি কাওকে বেছে নিতে বলে তবে কাকে বেছে নেব? ভাবতেই মাথা গুলিয়ে যাচ্ছে।। সে ই প্রথম কথা বল্লো-নেমে আপনারা কথা বলুন।,, আমি সামনের চায়ের দোকানে আছি। আমাকে নামিয়ে দিয়ে আমি কিছু বলার আগে, সা সা করে চলে গেলো,, এখান থেকে দেখা যায় দোকানটা,, লোকটা নামতেই দোকান থেকে সিগারেট ধরালো,, নীলয়ের ডাকে আমার দৃষ্টি পালটালো।।এইযে এদিকে? (নীলয়) হু বলো (আমি) কেমন আছো? ভাল। তুমি? দেখছোই তো। বাহ! ৩ দিনে দেখি স্বামির জন্য দরদ উতলে পড়ছে।।

এদিকে মনই নেই না তেমন কিছু না।। আসলে মানুষটাকে দেকছো কেমন করছে, সিগারেটের উপর সিগারেট ধরাচ্ছে, কোথাও স্থির থাকতে পারছে না, শুধু ছটফট করছে। ঐ গুলো আমার দেখার দরকার নেই।। চাকরি পাইছো? হ্যা পাইছি তাহলে আমাকে নিয়ে চলো।। আমার ঐখানে ভাল লাগে না। হা, হা,, হো,,, হো,,, হো,,, Sorry, Sorry কিছু মনে করো না।। হাসি পেল আমি তোমার সাথে মজা করছি? সেরকমইতো মনে হলো।। আমি সত্যি বলছি। আমাকে নিয়ে চলো তোমার কাছে তুমি বল্লা কোন মুখ নিয়ে? কেন আমি তোমাকে ভালবাসি।। সেকেন্ড হেন মাল আমি খাই না! What!! কি বল্লা তুমি? যা বলছি ঠিকইতো বলছি,, তোমার সাথে দেখা করার সাধ আল্লাদ, ইচ্ছা কোনটাই আমার ছিল না।। তোমার বলদা জামাই ফোনে পা ধইরা না কইলে আমি আসতামই না।।

মুখ সামলে কথা বলো।। আর একটা বাজে কথা উনার নামে বল্লে খুব খারাপ হয়ে যাবে। বাহ,,, তালিয়া,,, হো হো,, তালিয়া।।। সাধু সাজো? তুমিকি ভাবছো একটা মেয়ে আর একটা ছেলে এক রুমে, একই বিছানায় থাকবে আর তারা কিছুই করবে না,, এটা আমাকে বিস্বাস করাও? Please নীলয়,, এখন ঝগড়া করার সময় না, আর বিস্বাস করো লোকটা আমাকে ছুয়েয়ো দেখেনি।। হো, হো হো,,, আমি P.P ওয়ালা পুরুষ পুলা দিয়ে বিস্বাস করি না।। ছি তুই এতটা বাজে? এতটা ছোট মন তোর,,, এতটা অবিস্বাস করছ তুই আমারে! চেয়ে দেক মানুষটারে,, আমার ভালোর জন্য, তার বিয়ে করা বউ এর খুশির জন্য, সে তার নিজের কলিজা ছাই করতেছে, চেয়ে দেক,, একটার পর একটা সিগারেট ধরাচ্ছে আর এপাশ ওপাশ করছে।।

বলদতো তাই,,, বলদ না হইলেকি নিজের বিয়ে করা বউরে আরেক জনের কাছে রেখে যায়।। বলদ? না সে বলদ না।। বলদতো আমি,, আমি সোনা রেখে মনার গীত গাইছি।।। তুই তার জুতার সমান হওয়ারও যোগ্য না।। বলেই কাঁদতে শুরু করলাম, ভেবেছিলাম নীলয় চোখের জলটা মুছে দিবে।। লোকটাও অন্যদিকে চেয়ে আছে,, হয়তো দেখেনি আমার কান্নাটা, দেখলে নীলয়ের মত চুপ থাকতে পারতো না।। নেকা কান্না কেঁদে লাভ নেই।। আমার জি এফ আছে,, যান বলদটারে নিয়ে সংসার করেন,, আর ভুলেও যেন আমার ফোনে ফোন না আসে ।।। যত্তসব নীলয় সা সা করে হেটে চলে গেলো,, বার বার ডাকার সত্যেও পছু ফিরে তাকালো না।। আমার পায়ের নিচে থেকে যেন মাটি সরে গেলো।। একি স্বপ্ন বুনছিলাম আমি? কি করলাম আমি,, আমি সোনার জিনিস লাথি মেরে সরিয়ে দিলাম?  নিজের কপালে নিজেই আগুন ধরালাম। লোকটা হয়তো কোনদিনই আমাকে মেনে নিতে পারবে না।। আমার আত্মাহত্য ছাড়া আর কোন পথ রইলো না।।

কিন্তু আম্মা, আর ছুটকির কি হবে? থাক সে আমাকে স্ত্রীর আসনে না বসালেও তার দাসী হয়ে থাকবো।। ভাবতে ভাবতে চোখের জল মুছে দোকানের সামনে গিয়ে দেখি লোকটা তখনও সিগারেট খাচ্ছে,, তাকে ডাকলাম- শুনছেন। (সিগারেটা ফেলে তড়িঘড়ি করে দোকানদারকে টাকা দিলেন, ১৫ মিনিটে ৬ টা সিগারেট।। এত সিগারেট আগে খেত না) জি।। কথা হয়ে গেছে? হুম,, নীলয় কোথায়? চলে গেছে। মানে?,, এক কাপ চাঁ ও তো খেয়ে গেলো না।। বাসায় যাবো সামনেই মেলা চলুন ঘুড়ে আসি,,, যদি আপনার কোন আপত্বি না থাকে। আমি বাসায় যাবো। দাড়াঁন খালি হাতে গেলে মা বলবে কোথায় গেছিলি।।নিমকি, চানাঁচুড় নিয়ে যাই বলা যাবে মেলায় গেছিলাম।।

নিমকি আর চাঁনাচুড় নিয়ে ফিরতে ফিরতে সন্ধা হয়ে যায়।। বাইকে করে ফিরছি আর তিনি নিজেকে স্বাভাবিক রাখতে, এটা সেটা বলেই যাচ্ছে।। কি সব প্রলাপের মত বকেই যাচ্ছে।।। লোকটা বোধয় পাগলই হয়ে যাবে। আর এর পেছনের কারন হয়তো আমি।। বাসায় ফিড়ে রুমে গিয়ে কান্না করছি, লোকটা আমাকে ধরতে গিয়েও হাতটা গুটিয়ে নেয়। লোকটার চোখও কেমন যেন ছল ছল করছে। সে বেরিয়ে গেছে,, রাত ১১টা বেজে ৫২ মিনিট।। দরজায় ডাক শুনতে পেয়ে তরি ঘড়ি করে দরজা খুলে দিলাম,, কি বিচ্ছিরি গন্ধ।। পুরো শরিরে সিগারেটের গন্ধ।। কিছু বলার সাহস হলো না।। বালিশটা নিয়ে বারান্দায় শুতে যাচ্ছে আর আমি কথা বল্লাম- আপনি খাটে সন,, আমি নিচে থাকি।। তার আর দরকার হবে না,, আমার একটা অনুরোধ রাখবেন? (সে কাদো কাদো কন্ঠে বলতে লাগলো) জি বলুন।।

আপনি আমার স্ত্রী না হোন, স্ত্রী হওয়ার অভিনয় করেন প্লিজ,, আমার মা’টা বেশিদিন বাঁচবে না।। ততদিন একটু অভিনয় করুন।। এর পর কথা দিচ্ছি আপনাদের চার হাত আমি নিজে এক করে দিবো।। সুধু এটুকু সময় দিন আর প্রমিছ করছি কোনদিন আপনার শরিরে হাত দিবো না, আপনার প্রতি কোন অধিকার ফোটাতে যাবো না। কি বলবো বুঝতে পারছিলাম না। লোকটা বালিশ নিয়ে বারান্দায় চলে গেলো।। আমি লজ্জা সরমের মাথা খেয়ে বারন্দায় তার পাশে গিয়ে শুয়ে পড়লাম।।  কিছুক্ষন পর আমিই তার উপরে হাত রাখলাম, আর সে হাতটা সরিয়ে দিতে চাইলে আমি তাকে জড়িয়ে ধরেফেল্লাম।। লোকটি এবার আর বাধা দিলো না।। আমাকে জড়িয়ে তার বুকে টেনে নিল।। আমিও দিব্বি বুকে কিল দিতে লাগলাম।।আর বকতে লাগলাম- কুত্তা, বিলাই,, নিজের বউরে অন্যের কাছে দিয়ে আসস লজ্জা করছিল না!!? লজ্জা করে নাই,, বুকের বাম পাশটায় কেমন যেন করছিলো।। বলতে পারস নাই,,, মনে চাইতাসে তোরে গলা টিপা মারি।।  তুমি চলে গেলে আমি এমনিতেই মরে যেতাম। কথা দাও আমাকে ছেড়ে যাবে না। হুম, কথা দিলাম,, এবার আদর করো।।

একটা চুমা দিতে দাও, ওওওওও না, না,, এই,,,, না।। আগে ব্রাশ করে আসো। পারবো না,,,  তাহলে প্রমিছ কর, আর সিগারেট খাবা না,, সিগারেটতো তোমার জন্যই খাইছি।। প্রমিছ আর খাবো না।। কি যেন দিতে চাইলা। কি? আমার লজ্জা করে বলতে,,  ওমমমমাাা ওমমমমমমমমাাাা বিয়ে পর প্রথম দুজন দুজনের এত কাছে। আমার শরিরের প্রতিটা অঙ্গে যেন আগুন ধরে যাচ্ছে।।  সকালে ওঠে দুজনে গোসল করে, টেবিলের নাসতা করছি, কেন জানি লজ্জায় তার চোখের দিকে তাকাতে পারছি না, গত রাতের কথা ভেবে।। এদিকে শাশুরি আমাকে ছাড়া কিছুই বুঝে না,, ছুটকিটাও সারাক্ষন রাঙা ভাবি, রাঙা ভাবি,,  সেও বেশ ঘড়োয়া হয়ে গেছে।। সব মিলিয়ে ভালই আছি আমি আর “আমার সংসার”।।

সমাপ্ত

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত