পিচ্চি বউ টু

পিচ্চি বউ টু

এই নিয়ে দশ বার আব্বাই আমারে বাড়ি থেকে বের করে দিছে। দুঃখের কথা কীইইই আর কইতাম, যত ঝামেলা সব আমার সাথেই হয় ক্যান বুঝিনা। আর দুনিয়ার মানুষ গুলা ও আজব দূর ভালা লাগে না, রাতে ব্যাগ নিয়া স্টেশনে শুয়ে আছি। দুনিয়াই কীইইই কোন দয়ালু মহানুভব মানুষ নাইরে ভাই যে আমারে একটা কিছু কাজ দিব। পাড়িনা শুধু ওই একটাই কাজ সারাদিন খেঁচর খেঁচর করে পড়াশুনা করা। বাদবাঁকি সব কাজ পাড়ি, আহা স্টেশনে শুয়ে আছি আমি তো সালা ফইন্নি আগের জামানার লোকেরা ফকির ছিল। হি হি হি নিজেরেই নিজর গালি দিতেছি সালা  হামারি, কুত্তা সব বলে ফেলছি অলরেডি। আল্লাহ তিনশত কোটিরে যখন টপকাই আসছি, তাইলে এখন একটা কিছু কইরা দাও আল্লাহ পিলিজ। আমিন। না ঘুমানো দরকার আপনারাই কন এই শক্ত প্লাটফর্ম এ কী ঘুমানো যায়।

অনেক কষ্টে ঘুমাই গেছি, আশেপাশের কিছু লোক দেখতেছে কিন্তুু কোন প্রবলেম নেহি। কোন হালাই কীইইই কিছু খাইতে দিছে সব গুলা খালি সিনেমার মতো দেখতেছে। আসলে আমাগো দেশে বেশি চোর ছেঁচ্চর বেশির জন্য আজ আমার মতো ভালা পোলারে কেউ বিশ্বাস করে না। আহা নিন্দ্রা চলে আসছে। কেউ মনে হলো আমার নাক ধরে টানতেছে, এবার মনে হলে কান ধরছে, লাফ দিয়া উঠে দেখি একটা পিচ্চি আমার দিকে তাকাই আছে, দেখে অনেক কিউট, মার মুখে শুনছি আমি ও নাকি কিউট ছিলাম, বাট করো এমন নাক কান ধরিনাই, ডিরেক্ট হিসি করে দিতাম। সেই পাপের ফল সরূপ আজ এমন অবস্থা। এই যে পিচ্চি তোমার নাম কীইইই শুনি। কেন নাম বলব। ওরে বাবা মুখে মুখে কথা, নাম কী তোমার বুড়ি। আমার নাম তুবা, আচ্ছা তুমি এই খানে শুয়ে আছ কেন। আমার কপাল বাবু, তাই এই খানে শুয়ে আছি। আচ্ছা তুমি কীইইই কর।

আমি গল্প লিখি সোনা, তোমার বাবা, মা কই। জানি না, আব্বু আম্মুর সাথেই যাচ্ছিলাম তোমার নাকটা অনেক ভাল আমার ডল গুলোর মতো তাই টানছিলাম। হে আল্লাহ এই পিচ্চি মা বাবারে আবার হারাই দিও না তাইলে আমি শেষ। আচ্ছা তোমার নাম কীইইই। আমার নাম সাহরিয়া সোনা, তুমি তো বেশ কিউট। মোটে ও না তুমি আরো বেশ কিউট। ওকে বাবু, তোমার বাসা কই। আমাদের বাবা ঢাকা, এখানে ফুপির বাড়ি আসছিলাম। তাই বুঝি, আল্লাহ পিচ্চিটার বাবা মারে আইনা দাও হাইরা গেলে আমি পুরা ফাইসা যামু।(মনে মনে)  আচ্ছা সোনা এবার আমি উঠি কেমন। পিচ্চিটা হাত ধরে হাঁটতেছি, কোনদিন দেখিনি এমন একটা কোন পিচ্চি আপরিচিত লোকের সাথে এমন পটর পটর করে। সাহরিয়া আমি আইসক্রিম খাব, ওই বড়টা যাও এনে দাও। কী যে বিপদ, সোনা আমার কাছে না টাকা নাই, ললিপপ খাবে পিলিজ। ওকে যাও নিয়ে আস।

ও একটা আমি একটা ললিপপ খাচ্ছি। আচ্ছা সাহরিয়া তুমি এখানেই থাকো। না সোনা বাবা বাড়ি থেকে বেড় করে দিয়েছে , আমাকে ভাইয়া বলবা কেমন। না তুমি সাহরিয়া তোমাকে সাহরিয়া বলেই ডাকব। ওকে ওকে সাহরিয়াই বলো, পিচ্চিটা আর আমি একটা ব্রেঞ্চ এ বসে আছি। কীইইই পিচ্চি মেয়েরে বাবা, একটা অপরিচিত ছেলের সাথে বসে আছে, তাও মনে হচ্ছে কত দিনের চেনা। ওর মুখে বাবা, মার কোন কথাই নাই আমার সাথে দিব্যি বসে আছে। আচ্ছা সাহরিয়া তোমাকে বাড়ি থেকে বেড় করে দিছে কেন। আমি অনেক খারাপ তো তাই। তোমার প্যান্ট গেঞ্জি চুল গুলোর তো আমি প্রেমে পড়ি গেছি বুড়ি। হি হি সাহরিয়া তুমি ও অনেক ভাল, তোমার বাবা একটু ও ভাল না। এর মধ্যে একটা মহিলা তেমন বয়স না ২৫ বছর হবে হয়তো কেঁদে কেঁদে দৌড়ে এই দিকে আসছে, এসেই তুবাকে কোলে নিয়ে কাঁদতে লাগল, আমি বুঝে গেছি এটা ওর মা, একটু পরে ওর বাবা ও এল। আমি ওনাদের সব বললাম।

আচ্ছা তুমি কই থাক, (তুবার বাবা)  জ্বী মানে আংকেল আমি। বাবা সাহরিয়া বাবা ওকে বাড়ি থেকে বেড় করে দিয়েছে, ওর বাবা একটা পচা। আচ্ছা এখন আমি আসি আংকেল। বুড়ি ভাল থেক কেমন আমি যাই। না তুমি যাবা না সাহরিয়া, বাবা আমি সাহরিয়ার কাছে যাব, ওরে যেতে দিও না বাবা। ও অনেক ভাল ওর বাবা পচা। না বুড়ি তুমি যাও কেমন, আমি গেলাম। বাবা সাহরিয়া চলে গেল, আমি সাহরিয়ার কাছে যাব ও অনেক ভাল বাবা। হঠাৎ করে তুবার বাবার ডাকে কাছে আসলাম এই দিকে অনেক কেঁদে ফেলেছে পিচ্চিটা। একটু পরিচয়ে এমন করছে যেন কত বছর চেনে। আংকেল কে আমার লাইফ এর কাহিনী কইলাম, একটু হাঁসলে ও অনেকটা গম্ভীর হয়ে গেল। সাহরিয়া, তোমাকে আমি কীইইই কাজ দিব বুঝতে পাড়ছি না। স্যার যেমন হোক তেমন হলেই হবে। ওকে ঠিকআছে আমার মেয়েটে কারো জন্য এমন কাঁদেনি, আমার জন্য ও না, আজ তোমার জন্য এমন কাঁদছে কেন বুঝতেছিনা। আজ থেকে তোমার কাজ তুবাকে খুঁশি রাখা। পনের হাজার টাকা মাসে থাকা খাওয়া ফ্রি। যাক ভাল একটা চাকরি পেলাম। কিছু খেয়েছ। বাবা সাহরিয়া কাছে না টাকা নাই। তাই বুঝি মা অনেক গল্প করেছ তো। হুমমমম বাবা বললাম না ও অনেক কিউট।

আমরা তো হেঁসে দিছি সবাই। একটু পড়ে ট্রেন আসল। ট্রেনে যাচ্ছি ওনাদের সাথে। মা আমি সাহরিয়া কাছে বসব। ঠিকআছে মা যাও।- আচ্ছা সাহরিয়া তোমার চুল গুলো এমন এলোমেলো কেন হুমমমম, মাথা নিচু করো আমি ঠিক করে দিচ্ছি। ওকে বাবু, অনেক গল্প করতে করতে ওদের বাসাই চলে আসলাম। রাতে খাবার শেষে তুবার একটাই কথা সাহরিয়া সাথে ঘুমাবো। ও আমাকে জরাই ধরে ঘুমাই যেত। প্রতিদিন পিচ্চিটারে নিয়ে ঘুরতাম, এখানে ওখানে যেতাম, ওই কোন মেয়ের দিকে তাকাবা ওকে। হি হি পিচ্চি কী বলে। ওকে তাকাব না। একদিন একটা মেয়েকে দেখি বলছিলাম কত্ত সুইট মেয়েটা। পিচ্চিটা ওই মেয়ের কাছে গিয়ে কীইইই যেন বলে আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে বাসাই আসছিল। রাগ ভাঙ্গাতে পাক্কা দুই ঘন্টা লাগছিল। একটা শর্ত ছিল আমাকে ওকে ভালবাসতে হবে। হি হি পিচ্চি মেয়ে বলে কীইইই।

মা ওমা আমাকে শাড়ি পড়ে দাও, আজকে সাহরিয়ার সাথে ঘুরতে যাব। এমনি তো পিচ্চিটা অনেক কিউট তার উপর শাড়ি পড়ে আরো কিউট লাগছে। পিচ্চিটার সাথে একটু মজা করা যাক। তাই রুমে গিয়ে শুয়ে আছি। একটু পড়ে পিচ্চির আগমন সাহরিয়া চলো বেড়াতে যাব। না সোনা আজকে যাব না কালকে নিয়ে যাব কেমন। ওই আজকে না গেলে আর কথাই বলব না তোমার সাথে। হি হি যাব তো বুড়ি এমনি বললাম। হুমমমম চলো, আজকে নীল শার্টটা পড়বা কেমন।  হুমমমমম বুড়ি ওকে । তার পড়ে বুড়িটাকে  কোলে নিয়ে চলে গেলাম। একটা ব্রেঞ্চে বসে বসে আমি ললিপপ খাচ্ছি আর পিচ্চিটা কী যেন ভাবছে। সাহরিয়া আমি না তোমাকে ভালবেসে ফেলেছি যাও এখন আমাকে প্রপোজ করো না হলে কেঁদে ফেলব।

হায় হায় পিচ্চিটা কীইইই বলে। না প্রপোজই তো করে ফেলি, পিচ্চিটার সামনে একটা ফুল নিয়ে গিয়ে বললাম আই লাপ ইউ সোনা। পিচ্চিটা আমাকে জরিয়ে ধরে বলল বিয়ে কিন্তুু করতে হবে বুঝলা। হুমমমম বুড়ি আগে বড় হয়ে নাও তারপর। না আজকেই করতে হবে আমি বড় হতে হতে তুমি চলে যাবে, বলেই আমার হাত ধরে টানতে টানতে তার বাবার অফিসে নিয়ে গেল। সব স্টাফরা তো হা করে তাঁকিয়ে আছে। ওর বাবা একটা মিটিং এ ছিল তবু ও আমার হাত ধরে সবার মধ্যে নিয়ে গেল।

বাবা একটু শুনবা আমি সাহরিয়া কে বিয়ে করব। সবাই তো হা করে আছে, আর আমার ভয় ও করছে। হুমমমমম মা নিশ্চয় করবে, আগে সব আংকের দের সাথে কথা বলে নেই কেমন। ওই কোন সালাই মুখে পানি দিলরে। ওহ মাগো তাইলে এতক্ষণ সপ্ন দেখলাম,  তাই তো বলি আমার এমন ফাঁটা কপালে এতো সুন্দর কাহিনী কেমনে হয়। দূর যাক কীইইই আর করার, কিন্তুু পিচ্চিটা অনেক কিউট। না আর এখানে থাকা যাবে না হেব্বি খিদা লাগছে।  বলেই বাসার উদ্দেশ্যে হাঁটা দিলাম।

সমাপ্ত

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত