আমি আশরাফুল ইসলাম।বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে চাকরি করি। আজ কে বাড়ি যাবার জন্য ছুটি নিছি। অনেক দিন হলো বাড়ি যাই না।বাড়িতে মা ,বাবা আর ছোট, ছোট দুই ভাই থাকে। বিকালে, বাড়ি যাবার জন্য বাসে উঠলাম ,তারপর গিয়ে বাসের জানালার পাশে সিটে বসলাম। বাস চলতে লাগল তার আপন গতিতে আর আমি চেয়ে আছি বাইরের প্রকৃতির দিকে। আজ অনেক দিন পর নিজেকে হালকা হালকা লাগছে। কাজের চাপে শরির যেন আর মানছিলো না। পকেট থেকে ইয়ার ফোন বের করে মোবাইলে লাগিয়ে, একটা গান চালু করলাম। গান চলতে লাগল বাসও চলতে লাগল,দুটোই তাদের আপন গতিতে চলছে। পৌছে গেলাম গ্রামের বাজারে, বাজার থেকে বাড়ি বেশি দুর নয়, হেটে যেতে মিনিট পাঁচেক লাগবে। কিন্তু আমি চেয়ে আছি বাজারের দিকে মাত্র আড়াই বছরে এত পরিবর্তন। বাড়ির রাস্তার দিকে হাটা ধরলাম। আর চার দিকে চোখ বুলাতে লাগলাম।
হঠাৎ একটা পিচ্ছি (১১বছরের মতন)ছেলে দৌরে এসে ,আমার শরিরের সাথে ধাক্কা খেয়ে পিছন দিকে গিয়ে পরবার আগেই ধরে ফেললাম। ছেলেটাকে তুলে মাথা সোজা করতেই দেখি একটি খুব সুন্দর (ত্রাস) মেয়ে দারিয়ে আছে।আর জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে। আমি বুঝে গেছি ওকে ওনিই দৌরাচ্ছিলেন। ও ওওও,তাইলে ওকে আপনি দৌরাচ্ছিলেন? হে ,তাতে আপনার কি? জানেন ও এখন পরে গেলে কি হত? ও পরত না যদি আপনি এদিকে না আসতেন। আমি না আসলে অন্য কারো সাথে ধাক্কা খেতো। ধাক্কা খেয়ে পরলে পরত তাতে আপনার কী? আপনি সরোন রাস্তা থেকে। একি রে আমার মাথাত চক্কর মারে এটা কি মেয়ে, না অন্ন কিছু অপরিচিত পুরুষের সাথে জগরা করে। আর এই মেয়েকেত আগে কখনো দেখছি বলে মনে হয় না। ও আপনার কী হয়? কেনো? ?আমার ভাই। কী? ?? আপনার ভাই অতছ এভাবে দৌরাচ্ছেন। ও আপনার উপর ইচ্ছা করেই পরছে । কী? ??
ওই ছেলেটার দিকে তাকিয়ে দেখি দাঁত বের করে হাসছে। আমি তাকাতেই দিলো দৌর। পিছন পিছন ওই বড় মেয়েটাও হেটে হেটে গেলো।কি থেকে হলো কিছুই বুঝলাম না ,তবে হ্যা আমি কিন্তু ওই মেয়েটার উপর ত্রাস খাইছি।বাড়ি এসে গেলাম, মা ,বাবা, ভাই দের সাথে দেখা করে আমার রুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে বসলাম।বিছানায় শুয়া মাত্রই ঘুম চলে আসছে, পরে উঠে রাতের খাবার খেয়ে আবার শুয়ে পরলাম। সকালে,,, ভাইয়া ও ভাইয়া ঘুম থেকে উঠে পর। আমার পিচ্ছি ভাই ডাকতাছে ও ক্লাস ফাইবে পড়ে। ঊ ,একটু পর উঠব তুই যা। আমি স্কুলে যাব ভাই । যাও। তুমি নিয়ে যাবে আজ। আচ্ছা নিয়ে যাব তৈরি হ। কী করব আদরের ছোট ভাই আবার অনেক দিন পর দেখা নিয়েই যাই। ঘুম থেকে উটে ফ্রেস হয়ে ভাইকে নিয়ে স্কুলের দিকে চললাম।
পৌছে গেলাম স্কুলে, আকরাম তুই যা স্কুলে।ভাই বাড়ি যাচ্ছি পরে এসে নিয়ে যাবো। ভাইয়ের নাম আকরাম। ভাইয়া তুমিও চলো না আমার স্যার ম্যডাম এর সাথে পরিচিত হবে। না আরেক দিন। না এখন চলো। কি ঝামেলায় পরলাম ,আমি স্যার দের সাথে পরিচিত হয়ে কি করব আচ্ছা পরিচিত থাকা ভালো গিয়ে পরিচিত হই।হু গেলাম, আকরামের ক্লাসে গিয়ে আমি টাস্কিত এত কালকের ওই মেয়েটা ক্লাস নিচ্ছে। আমার ভাই বলল, আসতে পারি ম্যডাম। হুম আসো। দরজার দিকে না তাকিয়েই।আমাকে দেখে নি। ও ভিতরে গেলো আমি আর গেলাম না ,আমিত আগেই পরিচিত। দরজার কাছে থাকতেই শুনলাম ভিতরে আমার ভাই বলছে, ম্যডাম আমার বড় ভাই আসছেন কাল বাড়িতে আপনাদের সাথে পরিচয় করাতে নিয়ে আসছি। বাইরে দারানো নিয়ে আসি। আচ্ছে নিয়ে আসো। আবার আসল বাইরে। ভাইয়া চলো। না ভাই আরেক দিন। না আজকে আমি ম্যডাম কে বলে দিছি। হু আজ না।
আমি যাই ,বলেই চলে আসলাম। ভাই আমার মন খারাপ করে আবার ক্লাসে গেলো। উফ আমার ভিতর আসান্তি প্রায় শুরু হয়ে গেছিলো। বাড়ি আসার পঁনের দিন পর,, দুপুরে খাবার টেবিলে বসলাম পরিবারের সবাই। ঠিক ওই সময় বাবা বলে উঠলেন, আশরাফ তুমার আর কতদিন ছুটি আছে? একমাসের উপর। আজ কয় তারিখ? ২০তারিখ। আগামি ২৫তারিখ তুমার বিয়ে। আমার মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পরল।একি শুনলাম আমি। বাবা আমারত বিয়ের বয়স এখনো হয় নি। ওমনি মা বলে উঠলেন, গত তিন বছর ধরে শুধু বয়স হয় নি বলছিস এবার বিয়ে করতে হবে। এই রে এখন কি করা যায়। আমিত ওই মাস্টারনি কে মনে মনে ভালোবেসে ফেলেছি।
আর আমাকে না জানিয়ে ,কনে না দেখিয়েই আমার বিয়ে ঠিক করছেন,মাত্র নামটা বলেছেন তানহা আক্তার । হায় কপাল আমার। দিন যেন দারায় না, দৌরায় এখন । বিয়ের দিন চলে আসছে , নিজের মত না থাকা সত্তেও করে ফেললাম বিয়ে। রাতে বাসর ঘরে ডুকে দরজা বন্ধ করলাম, করে খাটের দিকে ফিরে দেখি বউ নাই।হায় হায় আমার বউ কই বউ,খাটের নিছে না কি নাহ খাটের নিছে যাবে না। বারান্দার দিকে চোখ যেতেই দেখি বউ বারান্দায় দারিয়ে আছে। নতুন বউ আমার ,বিছানা ছেরে বারান্দায়। ব্যপার কী? আমি গিয়ে পাশে দারালাম। ওমনি সালাম করে ভিতরে বিছানায় গিয়ে বসল। আমিও গিয়ে বসলাম। এখনো মুখ দেখি নি। আমি কথা শুরু করলাম, ভালো আছেন? জী ভালো, আপনি? ভালো। কন্ঠ টা কোথায় শুনেছি মনে হয়। আপনার কী আমায় পছন্দ হয়েছে ? হুম।
আমি ভাবালাম ক্রাশ যেকোনো সময় খাওয়া যায়,কিন্তু ক্রাশ খেলেই যে ভালোবাসি এরকমত নয়। যেহেতু বিয়ে করে ফেলেছি বউ কে বউয়ের অধিকার টা দেই। আপনি জানেন আমি কি কাজ করি। হুম। আপনি কি করেন? অনার্স ১ম বর্ষে পড়ি আর মাঝে মাঝে বড়্র ভাইয়ের বদলে প্রাইমারী স্কুলে পড়াতাম। এই কতা শুনেই আমি বউয়ের দিকে মাথা তুললাম। গুমটা টা সরান। আপনি সরিয়ে দেখুন। নিজেই সরালাম ,সরাইতেই ধাক্কা খেলাম এত সেই মেয়েটা যার উপর আমি ক্রাশ খাইলাম। একি আপনি? হুম। কীভাবে? আপনার আর আমার নিয়ে আজ এক বছর ধরে ঠিক করে রাখা ছিল আর আমার ভাই আপনার ফটো দেখে ছিল তাই সেদিন গিয়ে ধাক্কা খায়। ওওও তাইলে ওটা পরিকল্পিত । ওটা আমার ভাইর পরিকল্পনা। বুঝেছি মাষ্টারনি। কী আপনিও আমায় মাষ্টারনি বললেন। সরি মাষ্টার তুক্কু বউ। আবার, সরি।
আমাকে কিন্তু অনেক ভালোবাসতে হবে। ওক্কে, কথায় আসি, শুনো আমি আমার মা, বাবা ,ভাইদের অনেক ভালোবাসি ।আমি মনে করি তুমিও তাদের নিজের মা বাবা ভাইয়ের মত ভালোবাসবে। মা বাবাকে সব সময় সম্মান করে চলবে।আর আমি প্রতি বছরে একবার ,২বা ১মাসের জন্য বাড়ি আসব। হু,এগুলা আমায় বলে দেওয়া লাগবে না কি। তবুও বললাম আরকি। আচ্ছা। তা চলো এখন শুয়ে পরি। না আজ সারা রাত বারান্দায় বসে গল্প করব। হায় হায় একি বলে।
আমার শরিরটা খুব ক্লান্ত। না এসব বললে চলবে না। প্লিজ। ও ও তুমি আমায় এই ভালবাসো। আচ্ছা চলো। এইত আমার লহ্মি বর। হু,মাষ্টারনি। আবার, তুক্কু সরি মাষ্টা আবার তুক্কু বউ। হু। অবশেষে,, বারান্দায় ই রাত কাটালাম।ভালই লাগছে রাতটা।ফজরের নামাজ পড়ে ঘুমাইছি।