ভবিষ্যৎ বউ

ভবিষ্যৎ বউ

Excuse me সিটটা আমার। (অনিক)?(রিপা) এই যে আপনাকে বলছি। আমাকে বলছেন? জ্বি আপনাকেই। জ্বি বলেন। সিটটা আমার। তো! তো মানে? এখানে আমি বসব। আমার প্রবলেম আছে আমি জানালার পাশে বসব। বললেই হলো টাকা দিয়ে টিকেট কিনেছি জানালার পাশে বসার জন্য।

আমি কি ফ্রী তে উঠছি নাকি। তা আমি কি করে বলব? আমার সিট আমাকে দিন, সরুন। না এখানে আমি বসছি। আপনি অন্য সিটে জানালার পাশে গিয়ে বসেন। আজব তো আমার সিট নাম্বার যেখানে সেখানেই তো বসব। তো বসেন কেউ কি নিষেধ করছে? আপনি সরেন। আমি কেন সরব? আপনি তো আমার সিটে বসে আছেন। সিটের কোথাও কি লিখা আছে এটা আপনার সিট। নাম কেন থাকবে? টিকেটে তো সিট নাম্বার দেয়া আছে। তাতে আমার কি?? অনিক কোনো ভাবে না পেরে বাসের সুপার ভাইজারকে ডাক দিল। এই ভাইয়া একটু এদিকে আসুন তো। (অনিক) জ্বি বলুন স্যার। (সুপার) দেখুন তো এই সিটটা কোথায়?(অনিক) জ্বি স্যার এই তো এটা। (সুপার) কিন্তু এখানে যে মেয়েটা বসে আছে। (অনিক) ম্যাডাম আপনার টিকেটটা দিন প্লিজ।(সুপার) এই যে আপনার টিকেট চাইছে। (নীল) আমি শুনতে পেয়েছি। (রিপা) তো দিন। (অনিক) হুম নিন।(রিপা) ম্যাডাম এই সিটটা আপনার এখানে বসুন প্লিজ। [সুপার] রিপা আর কিছু বলল না। রাগে আগুন হয়ে পাশের সিটে এসে বসল আর অনিক জানালার পাশে। বাস ছেড়ে দিলো।

অনিক কানে হেডফোন লাগিয়ে দিয়ে গান শুনছে। আর হঠাৎ নিজে নিজে গানের সাথে তাল মিলাচ্ছে আর এটা শুনে রিপার রাগ ক্রমশ বাড়তে থাকে তবুও নিজেকে স্থির রেখেছে কিছুই বলছে না। অনিকের কন্ঠ খারাপ না কিন্তু রাগ তো তাই রিপার কাছে তো মিস্টি সুরও ফাঁটা বাঁশের মতো লাগবে। একটু পর এই যে মিঃ গান শুনছেন ভালো কথা শুনুন কিন্তু ছাগলের মতো মে মে কেন করছেন। কি.. আমার ইচ্ছে হচ্ছে তাই আমি গান গাই তাতে আপনার কি সমস্যা? সমস্যা বিদায় বলেছি। তো আমি কি করতে পারি? কি করবেন? এমন মে মে করবেন না। আপনার সমস্যা হলে আপনি কানে হেডফোন লাগিয়ে আপনিও গান শুনুন। যদি আপনার হেডফোন না থাকে আমি আমারটা শেয়ার করতে পারি। আমি কি করব নাকি করব না সেটা আপনার কাছে শিখব না। তো আমিও কিভাবে গান শুনব কি শুনব না সেটা কারো কাছ থেকে শিখতে চাচ্ছি না। শিখতে বলছি না চুপ করে গান শুনেন না।

অনিক যেন কিছু শুনতে পায়নি তাই সেে আগের মতো কানে হেডফোন লাগিয়ে আবা আগের মতো গান শুনতে থাকলো। আর গাইতে লাগলো। আর এইদিকে রিপা রাগে বেলুনের মতো ফুলতে আছে। কিছুই করতে পারছে না? অনিক নিজের মনে গান শুনছে আর এই দিক দিয়ে রিপা তাকে ইচ্ছে মতো মনে মনে বকে যাচ্ছে। কিন্তু অনিকও কম না সে আস্তে করে কানে হেডফোন রেখেই মোবাইলে গান বন্ধ করে দিয়ে রিপা কি বলে সেটা শুনে যাচ্ছে। এমন ফালতু লোক আর জীবনেও দেখিনি। আল্লাহ জানে তিনি এই ছাগলটাকে কি দিয়ে তৈরি করেছে? সিটটায় বসতে দিলে যেন ওনার ঢাকায় যাওয়া হবে না। ইচ্ছে করছে গলা টিপে মেরে পেলি। আমাকে মেরে কি জেলে যেতে চান নাকি। আপনার মাথা খারাপ নাকি? কি বলেন উল্টাপাল্টা? আপনি ভাবছেন আমি গান শুনি না। আমি তো আপনি আমাকে কি বলেন সেটা শুনতেছিলাম। তো আমি কি করব? আপনি আমাকে মারতে চান কেন? আমি কি করেছি?রআমার সিটে আমি বসছি।

তাতে আপনি এতো চ্যাঁতেন কেন? রিপা একটু পর বুদ্ধি করল, সে জানালার পাশে বসবেই। তাই সে বমি করার অভিনয় করে। ওওওয়া ওয়া(মুখ চেপে ধরে) আরে আরে কি করছেন? হুম হুম হুম(সরতে বলল) অনিক সরে গেল। রিপা অভিনয়টা করে জানালার পাশে বসল। আহ আহ আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আপনি যদি না সরতেন তাজলে ময়লাটা আপনার গায়ে পড়তো। আপনাকেও ধন্যবাদ আমাকে গায়ে যে পেলেন নাই। (আল্লাহ রক্ষা করছে আমাকে) আমি এখানে বসি আবার যেকোনো সময় আসতে পারে। বসেন বসেন। তবুও আমি সুরক্ষিত থাকতে চাই। ধন্যবাদ। রিপা তো মহা খুশি কাটা দিয়ে কাটা তুললো। ঢাকার কাছাকাছি এসেই রিপা অনিক কে বলল। কেমন দিলাম? মানে? মানে হচ্ছে অভিনয়টা কেমন হল? কিসের অভিনয়? ববববববমির। কি….?? আপনার এটা অভিনয় ছিল। (মিট মিটিয়ে হেসে হুম জবাব দিল রিপা) শুনুন আমরা মাথা খাটিয়ে কাজ করি আপনাদের মতো অন্যদের দিয়ে না। চোরা বুদ্ধি সব। (অনিক এখন নিজেই রেগে আগুন) আপনি চাইলে এখন আপনার সিটে বসতে পারেন। আপনি বসুন।

এ বলে অনিক বলল সুপার ভাইজারকে বলল। গাড়ি থামান নামব। অনিক নেমে চলে গেল। আর রিপার হাসি আনলিমিটেট চলছে তবে উচ্চসরে না মুচকি হাসি। যে যার মতো চলে গেল। অনিক ঢাকা ভার্সিটিতে নতুন ভর্তি হয়েছে। কাল থেকেই ক্লাস শুরু ভার্সিটিতে তার এখনো কোনো বন্ধু হয়নি। কারণ সে তো কারণ সে তো কাল প্রথম ক্লাস করতে যাবে। পরের দিন ভার্সিটিতে গেল। সবি তার কাছে নতুন এখানের কাউকে সে চিনে না। ধুরর একটা বন্ধু মিলে গেলে ভালো হতো। (মনে মনে বলতে লাগল) হাই. হ্যালো। নতুন ভর্তি? হুম । আমিও, আমি আরিফ। আমি অনিক। আমার নতুন ফ্রেন্ড অমিক। আমরা সবারই তিন অক্ষরের নাম তাই না? (অমিক) বন্ধুনা বুঝতে হবে বেটা। (আরিফ) হা হা হা (তিন জনেই হাসি দিল) অনিক মনে মনে না বলতেই দুইজন বন্ধু পেয়ে গেল। খুবই ভালো হলো অন্তত একা একা থাকতে হবে না।

চল ক্লাসে যাই (আরিফ) চলেন আরে বেটা বাচ্চা নাকি আপনি আপনি করে কস। (আরিফ)  মনে হয়, তোর সুন্নত করাইছে তো? (অমিক) এত চালাক হইস না তুইও আমতা আমতা করছস আমার লগে কথা বলার সময়।(আরিফ) হইচে ভাই চল ঝগড়া করিস না। (অনিক) চল। ক্লাসে স্যার আসলেন সবার সাথে পরিচিয় হয়ে নিলেন। ক্লাস শুরু স্যার ক্লাস করাচ্ছেন। প্রায় ১৫মিনিট পর একটা মেয়ে আসলো। আসতে পারি? প্রথম ক্লাসেই লেট। সরি স্যার। নেক্সট টাইম যেন এমন না হয়। জ্বি স্যার। আসো। Thank You Sir. মেয়েটাকে দেখে অনিক হা করে তাকিয়ে আছে। আর সেটা দেখে আরিফ বলে কিরে ক্রাশ খাইলি নাকি?(আরিফ) মেয়েটা এখানে কেন??? (অনিক) কেন? তোর বাসায় থাকার কথা ছিল নাকি?(আরিফ) হা হা হা (সজীব + আরিফ দু’জনই হাসতে লাগল) সাইলেন্স (স্যার) ক্লাস শেষে এই যে শুনুন(অনিক) আরে আপনি। হুম আমি। আসলে কালকের ঘটনার জন্য আমি সত্যি সরি। আমি আপনাকে এতো বার বলার পরও আমার কথা শুনেন নাই তো তাই আমি এমনটা করছি।

আর আমার জানালার পাশে বসতে ভালো লাগে। সসসসসরি আমি আমাকে এতবার করে বলেছি আপনি তো সিট থেকে উঠতেই চাইছিলেন না। আমি তো বলেছি আমার সমস্যা আছে কিন্তু আপনি তো কিছুতেই শুনলেন না। আপনি কি সবার সাথে এমন ঝগড়া করেন নাকি। তা না। শুধু অপরিচিতদের সাথে আর কি। সব অপরিচিতদের সাথে এমন করেন। আরে না না আপনিই প্রথম। ওহ..যাই হোক বাদ দিন, আপনি এই ভার্সিটিতে। আমি কালই এডমিশন নিলাম। ওহ আমরা তো একি ডিপার্টমেন্টে । কি বলেন? আমি তো আজকে আপনাকে দেখতেই পেলাম না। দেখবেন কিভাবে আপনি কি চোখে দেখেন নাকি। কি….?? ঐ বেটা ক্লাস করে কোথায় উধাও হইলি। (আরিফ) এই তো এখানে। আরে মেয়েটা না? হাই আমি আরিফ। হ্যালো আমি রিপা। অনেক সুন্দর নাম তো, ঠিক” আপনার মতো। thanks ঐ বেটা থাম। এখনো আমিই পরিচিত হলাম না আর তুই এসেই। হাউ মাউ শুরু করে দিলি। তুই পরিচিত হবে কিভাবে তোর যেই.. আমি কি? কিছু না।

আপনারা ঝগড়া করেন আমি যাই। (রিপা)  হ্লা তোর লাইগা মেয়েটার লগে কথা কইতে পারলাম না। (আরিফ) তুই তো আইসা একবারে সালমান খানের মতো ওর লগে রসের আলাপ শুরু করে দিলি।(অনিক) তো তুই আমাদের মাঝে বিলেন হয়ে দাড়াইলি ক্যান। (অারিফ) চুপ কর হারামি, এটা তোর ভাবি। মানে আমি ভবিষ্যৎ বউ। আইচ্ছা তুই মেয়েটার লগে প্রেম করবি।(অারিফ) হুম। করমু তয় ভাবিরে রিসপেক্ট দিয়া কথা কইবি। (অনিক) ঠিক আছে কমু এখন চল।(আরিফ) সজীব কই (অনিক) বাসায় কি কাজ আছে তাই চলে গেছে।(আরিফ) ওহ। যে মেয়েটার সাথে অনিক বাসে ঝগড়া করেছে সেই মেয়েটাই তার ভার্সিটিতে একি ডিপার্টমেন্টে। প্রথমদিন তারা যেভাবে ঝগড়া করেছে আজকে তেমন করেনি। করবেই বা কিভাবে রিপা তো সরি বলে দিছে। অনিক রেগে থাকলেও সরি বলায় রাগটা চলে যায়। দুঃখের বিষয় এখনো তারা পরিচিত হতে পারেনি। শুধু একজন আরেকজনকে চিনে। আরিফের সাথে কথা বলার সময় নামটা জানছে রিপা।  আর কিছুই জানে না। রিপার সাথে কথা বলতে অনিকের বেশ ভালোই লাগল। প্রথম দিনই ভালো লেগেছে রিপাকে। কিন্তু এভাবে যে আবার দেখা হবে সে কল্পনাও করেনি। মেয়েটা দেখতে খুবই সুন্দর যে কেউ প্রেমে পড়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। অনিক ঝগড়া করলেও তারও রিপাকে খুব ভালো লাগে। তার কথা বার্তাও খুব ভালো লাগে।

সে জানে না এই ভালো লাগাটাকে কি বলে। এরপর থেকে একি সাথে চলাফেরা করে তারা দু’জন বলতে গেলে খুব ভালো বন্ধুত্ব। অনিক এখন বুঝতে পারে তার এই ভাল লাগাটা কি। সে বন্ধুদের বলে দেয় যে সে রিপার সাথে প্রেম করছে। কিন্তু রিপার এটার কিছুই জানে না। রিপা আর অনিক কেউ কাউকে ছাড়া চলতে পারে না। অনিক একটু বেশিই। রিপা একদিন ভার্সিটিতে না আসলে অনিক রিপাকে খুব বকে, কেন সে ভার্সিটিতে আসে না। একদিন না আসলে mount Everest সমান প্রশ্ন করেই যায়। অনিকের এসব প্রশ্ন থেকে বাঁচতে রিপা প্রতিদিন কলেজে আসে। রিপাকে দেখলেই অনিকের দিনটা খুব ভালো কাটে। আর রাতটা কাটে তাকে ভেবে তার স্বপ্নে ডুবে। অনিকের ভালবাসা তীব্র হচ্ছে দিন দিন। কিন্তুু বন্ধুত্ব নষ্ট হওয়ার ভয়ে বলতে সাহস পাচ্ছে না। একদিন কেমন আছেন ভাবি (আরিফ) ভাবি (রিপা) অবাক হচ্ছ নাকি? হবার তো কথাই। মানে? সেটা তো আমিও জানতে চাইছি।

তুমি আমাকে কেন ভাবি ডাকলে। অনিক! অনিক কি? না.. কিছু না? অনিকের কি হয়েছে? কিছু হয়নি। তাহলে? তোমাকে বলেনি? আমাকে কি বলবে? হ্লা আমাদের কয় তোমাকে ভালবাসে কথাটা বলে দিয়েছে। তোমার আর অনিকের রিলেশন চলছে।  কি অনিক এসব বলছে?  আজকে নাকি তোমার সাথে আমার পরিচয় যেদিন হয়েছে সেদিন থেকে ভালবাসে তোমাকে। অথচ তোমাকে বলার কোনো খবরই নাই। আর আমাদের চাপা মারে রিলেশন চলছে। তোমাকে সম্মান দিতে। এত কিছু বলেছে? হুম। অনিক কোথায়? ক্লাসেই আছে হয়ত। ওকে, তুমি অনিককে বলো না আমি যে এটা জানতে পারছি। ঠিক আছে। রিপা অবাক হচ্ছে এই জন্য তাদের মাঝে এমন তো কিছুই চলছে না। তাহলে অনিক এমন কথা বলার কারণ কি? আর এদিক দিয়ে তো আরিফ খুশিতে তাল গাছে উঠে গেছে। আজকে অনিকের খবর আছে মনে হয়। রিপা সোজা ক্লাসে কিন্তু ক্লাসে অনিক নেই। পুরা ভার্সিটি খুজে অনিককে পেল না। অবশেষে অনিককে একটা গাছের নিচে পেল।

তুমি এখানে আর তোমাকে আমি পুরা ভার্সিটিতে খুঁজতেছি। (রিপার কথা শুনে অনিক চমকে গেল, তাড়াতাড়ি নিজের চোখ মুচতে লাগল) হুম বলো। তুমি কাঁদছ কেন?? কই না তো এমনতি খারাপ লাগছিল। কি হয়েছে বলো?? কিছু হয়নি তো। তাহলে কাঁদছো কেন??? কোথায় কাঁদতেছি চোখে কিছু পড়ছে আর তাই পানি বের হলো(নিজের কান্না লুকাতে লাগলো রিপার কাছে) মাইর খাওয়ার আগে বলো কেন কাঁদতেছো। আরে এমনিতে আমি কাঁদব কেন??? বলো বলছি (চোখ লাল হয়ে গেল, এমনিতে রেগে আছে) কি বলব? যে কারণে কাঁদছো? কিছু না। অনিক(পুরা রেগে গেছে)  একটা মেয়েকে খুব ভালবাসি কিন্তু আজও বলতে পারিনি। এটার জন্য কাঁদতে হয়? খুব বেশি ভালবাসি তো। না বলার কষ্টটা সহ্য করতে পারছি না তো তাই নিরবে কেঁদে কষ্টটা একটু হালকা করি। বলদ…এখনকার সময় কেউ এতো ভিতু হয়? আমাকে বলো মেয়েটার নাম কি? আমি বলে দিব। ভিতু না আমি তাকে হারাতে চাই না তাই বলতে গিয়েও বলতে পারি না। অনেকবার ফিরে এসেছি। কোনো একটা বাধা আমাকে বলতে দেয় না। সে যদি অন্য কাউকে ভালবেসে পেলে তখন কি তা সহ্য হবে তোমার হুম।

তার চেয়ে ভালো আমাকে বলো আমি বলে দেই যা হবার তো তাই হবে তাই না। না থাক, বলতে হবে না। আচ্ছা মেয়েটার নাম কি আমাকে বলো। নাম বলে দিলে তো তুমি আর আমার কাছে থাকবে না সোজা তার কাছে চলে যাবে। যাব না বলো। না আমার মাথা খারাপ হয়নি। ওকে বলতে হবে না। তুমি কাঁদতে থাক। না কাঁদব না। কাদতে হবে না বসেই থাকো। আমি গেলাম। বসেও থাকবো না তোমার সাথে যাব। না আমার সাথে যেতে হবে না। না আমি যাব। আমি বাসায় চলে যাব। আমিও তোমার বাসায় যাব। নিবো না। নিতে হবে। না নিব না। তাহলে আমিও যাব না। ঠিক আছে। ? অনিক যে রিপার জন্য কাঁদছে রিপা খুব ভালো করে বুঝতে পারছে। কিন্তু বলেনি তার জন্য কাঁদছে। সে অনিককে আরও একটু কাঁদাবে তাই নিজের মতো করে একটা প্লেন করল। পরেরদিন রিপা সোজা অনিকের কাছে এসে বলে অনিক আমাকে একটা হেল্প করতে পারবে?(রিপা) কি বলো? আগে বলো করবে। তুমি বলো না কি। তুমি বল করবে। ওকে করব বলো। আমি অারিফকে ভালবাসি কথাটা বলে দিবে।

কথাটা শুনে অনিকের মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়লো। এক মুহূর্তে তার সব স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেল। সে আর একটা মুহূর্তের জন্য সোজা হয়ে দাড়াতে পারছে না। তার পৃথিবীটা যেন অন্ধকার হয়ে আসছে। তবুও নিজেকে কোনো ভাবে স্থির রেখে বলল ঠিক আছে বলবো (অনিক) Thank You So much. আচ্ছা আমি এখন আসি পরে কথা হবে। কোথায় যাবে? একটু কাজ আছে। ওকে বাই.  বাই অনিক নিজেকে ঠিক রাখতে না পেরে বাসায় চলে যায়। অনিকের কিছুই করার নেই, তার ভুলের কারণে সে আজকে রিপাকে হারিয়েছে। এসব ভাবতে ভাবতে সে নিজেকে শেষ করবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু সে তা করতে পারেনি কারণ তার একটা পরিবার আছে মা বাবা সবাই আছে তার। নিজের সুখের জন্য অন্যের মুখে তো কান্নার রোল বসাতে পারে না। তাই আর নিজের কিছু করলো না। আগের মতো স্বাভাবিক ভাবেই চলছে তবে হাসিটা হারিয়ে কান্নাটাকে সাথি বানিয়েছে।

পরের দিন ভার্সিটিতে এই আরিফ শুন (অনিক) কিরে কিচে?+আরিফ) তুই তো বেটা লাকি। ক্যান কিছে। রিপা তোকে ভালবাসে। ফাইজলামি করস আমার লগে। আরে দূররর ফাইজলামি করার সেইদিন কি আছে। কিন্তু তুই তো ওকে??? লাভ করি না।(আরিফ কথাটা বলার আগেই বলে দিল) আমি পারব না এসব রিলেশন টিলেশন করতে বলে দিস। প্লিজ দোস না বলিস না ও কষ্ট পাবে। ও কষ্ট পাইলে আমার কি। আমার তো অনেক কিছু। প্লিজ তুই না করিস না। হারামি “এতো লাভ করিস অথচ ওকে বলতে পারিস নি আর ওর হয়ে আমার কাছে ঘটকালি করতেছিস। বলে কি হবে বল ও তো তোকে লাভ করে। তুই না করিস না। কিন্তু এটা কি করে আমি করব বল। আমি প্রেম করব ওর সাথে আর তুই সেটা দেখবি। না দোস আমাকে মাফ কর আমি পারব না। হুম আমি দেখবো। তুই যদি না করে দিস তাহলে রিপা খুব কষ্ট পাবে আর রিপার কষ্ট আমি সহ্য করতে পারব না। ঠিক আছে আমি রাজি। থ্যাংকস দোস, আমি আসছি। কই যাস। রিপার কাছে।

ঠিক আছে যা (যা গেলেই মজা বুঝবি) রিপাকে খবরটা দিতে অনিক রিপার কাছে গেল। রিপা তোমার কাজ হয়ে গেছে।(অনিক) ঠাসসসসস্ রিপার হাতে থাপ্পড় খেয়ে অনিক একবারে থ হয়ে গেছে। ছোট্ট ছেলের মতো গালে হাত দিয়ে দাড়িয়ে আছে অনিক।  আমাকে এত ভালবাস নিজে এসে বলতে পার না আর আমি যখন বলছি আরিফকে ভালবাসি সেটা হুরর হুরর করে গিয়ে ওকে বলতেছ আসি আরিফকে খুব ভালবাসি। আরিফ না করার পর আবার ওকে জোর করা হচ্ছে আমি খুব কষ্ট পাব। ও যাতে না, না করে। নিজের কষ্টের কথা একটা বারও চিন্তা করলে না। একটা মেয়েকে ভালবাসি সেটা আমাকে বলে দিছো কিন্তু এটা বলনি মেয়েটা আমি। ভাবছিলাম তোমাকে আর একটু কাঁদাবো কিন্তু আরিফের কথায় যা শুনলাম তারপর আর কাঁদানোর সাহস পেলাম না।

আমাকে এতটা ভালবাসো একটা বার সাহস করে বললে না কেন??? তোমাকে হারানোর ভয়ে তুমি যদি আমাকে না করে দাও। তাই বলে এতটা ভালবাসার কথাটা বলতে পারলে না। বলার আগে তো তুমিই আমাকে এসে বলে দিলে আরিফের কথা। হুম বলেছি সেটা তোমার উপর রাগ করে। তার মানে সব তোমার প্লেন ছিল। হুম, তুমি যেদিন কাদতেছিলে সেদিনই আমি আরিফের কাছে জানতে পারি আমাকে তুমি ভালোবাসো কিন্তু তোমার কাছে এসে দেখি তুমি কাদো তারপর আর বকতে পারলাম না। আমি না হয় বলতে পারিনি। কিন্তু তুমি তো জানার পর আমাকে বলতে পারতে। ঐ আমি কি বলছি তোমাকে আমি ভালোবাসি। কিন্তু আমি তো জানি এখন তুমিও আমাকে ভালবাসো।

জ্বি না বাসি না। প্রপোজ না করলে কখনো বাসব না আমি তো করব না। তোমাকে করতে হবে । না তুমি করবে। না লেডিস পাস্ট। মাইর খাওয়ার আগে করতে বলছি। করছি করছি। লাপিউ.  কি…? করছি তো। এভাবে প্রপোজ করে। তো কিভাবে। ওকে করা লাগবে না তুমি থাক। ঐ ঐ করছি তো দাড়াও। তো তুমি বসে আছো কেন করো। আই লাভ ইউ রাক্ষুসী। আই লাভ ইউ টু রাক্ষস। কি? হুম। ওকে মেনে নিলাম শান্তি চুক্তি করলাম। পাগল।

 সমাপ্ত

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত