বিচ্ছু বউ

বিচ্ছু বউ

“এই অামার না ক্ষিধা লেগেছে”
চোখ বন্ধ রেখেই কথাটা বলেছে তাসু।
কাব্য চিন্তিত ভঙ্গিতে মাথা চুলকায়। ক্ষিধা তো কাব্যরও লেগেছে। ভাবছিলো অাজ তাসু অার ওই ব্যাংকারের বিয়েতে জমিয়ে খাবে সে। কিন্তু সেই অাশায় জল ঢেলে দিয়েছে বিচ্ছু মেয়েটা। উল্টো তাসুকে নিয়ে পালিয়ে বান্দরবন যেতে হচ্ছে।

তাসু অনেক এক্সাইটেড ছিল বিয়ে থেকে পালাবে। কেস, মামলা, পুলিশ, গুন্ডা, ফাইট হবে। কিন্তু কিসের মধ্যে কি উল্টো দুই পরিবার অারো খুশি।

কাব্যর বিশ্বাস হচ্ছেনা সে একটা মেয়েকে নিয়ে বিয়ের অাসর থেকে পালিয়ে এসেছে। বেচারা ব্যাংকার বরের কপাল পুড়লো। তাসু মেয়েটাই এমন। কখন যে কি করে ঠিক-ঠিকানা নেই।
এখন বাসের মধ্যে খাবার কোথায় পায় সেটাই ভাবছে কাব্য।
কন্ট্রাক্টারকে ডাক দিলো,
: ভাইয়া বাস থামবে কখন?
– ১ নাম্বার না ২ নাম্বার?
: মানে কিহ?
– অারে ভাই বাথরুমে যাইবেন তো?
: না, না, কিছু খাবার নেব।
– ভাইজান অাধাঘন্টা পর।
: ধন্যবাদ।
– ‘চিলি প্লেইসে’ বাস থামবো তখন খাইয়েন।
কাব্য কৃতজ্ঞতাস্বরৃপ মাথা নাড়লো।

কাব্য তাকিয়ে অাছে কন্ডাক্টারের যাওয়ারের পথের পানে। কিছু কিছু মানুষ সারাদিন পরিশ্রম করে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে সব কষ্ট গোপন করে কি সুন্দর করে কথা বলে।

যাইহোক অাপদত তাসুর মাথা ঠান্ডা করতে। ক্ষিধা লাগলে প্রচন্ড খ্যাপাটে হয়ে উঠে মেয়েটা। যেন বিখ্যাত সিরিয়াল “খ্যাপাটে জোসেফ ডরনান”!

: তাসু।
– বল।
: অাচ্চা লুডু খেলি।
– তোর মাথা কেটে বল বানিয়ে ক্রিকেট খেলব।
: শোন, মাত্র এক গেম তারপর বাস থামিয়ে তোকে ভাল একটা রেস্টুতে খাওয়াব।
– সত্যি কইতাছোস?
: হ্যা প্রমিস।

দুজনে মোবাইলে লুডু খেলছে। কাব্যর মাথায় শুধু ঘুরছে কিভাবে অাধাঘন্টা পার করবে। তাসুর মাথা গরম হয়ে গেলে বাসের ভেতরই ঘর্মঘট ডেকে বসবে।

অবশেষে বাস থামলো সুন্দর একটা রেস্টুরেন্টে। বিশাল সাইনবোর্ডে লেখা “চিলি প্লেইস”!
খাবার বিরতি দিয়েছে ৩০ মিনিট। দুজনে ‌গিয়ে বসে পড়লো একটা টেবিলে।
তাসু একের পর এক খাবার অর্ডার করছে।
বাসের সবাইকে খাওয়াবে নাকি তাসু?
এমন চিন্তা উকি দিচ্ছে কাব্যর মনে।

নাহ খাবার দিয়ে যাবার পর সে একাই খেয়ে সাবাড় করে দিচ্ছে। এই মেয়ে এতটা খেতে পারে জানা ছিল নাহ। কাব্য একটা চিজ বার্গার অার একটা কোক নিলো। খাওয়া শেষ করে জোরে একটা ঢেঁকুর তুলল তাসু।

তারপর বাইরে এসে তাসুকে বাসে উঠিয়ে দোকানে গেল। কিছু চকলেট চিপস কিনে নিলো যদি অাবার খেতে চায়, এই মেয়েকে বিশ্বাস নেই। এক প্যাকেট বিস্কুট অার জুসও নিয়ে বাসে উঠে পড়লো। কন্ডাক্টারের হাতে বিস্কুট অার জুস দিয়ে সিটে চলে গেল। কন্ডাক্টার অবাক চাহনীতে চেয়ে অাছে তার দিকে।

রাত প্রায় ৯টা বাজে ঘড়িতে। চারিদিকে সুনসান নিরবতা। কথায় অাছেনা পেট শান্তি তো দুনিয়া শান্তি। সবাই ঘুম দিয়েছে। কাব্য কানে ইয়ারফোন লাগিয়ে গান শুনছে,

: এই একটা ইয়ারফোন দাওতো।
– ইংরেজি গান শুনছি।
: তো কি হইছে? দাও।
কাব্য ইয়ারফোনের এক কান এগিয়ে দেয়।

John Denver এর You Fill Up My Senses গানটা বাজছে। ছোটবেলা থেকেই অনেক পছন্দের একটা গান কাব্যর। হঠাৎ তাসু কাব্যর দিকে তাকালো,

“এখন থেকে অামাকে তুমি করে বলবা”
কথাটা শুনে চমকে উঠে কাব্য।
: অাচ্ছা তুমি করে বলবো।
– গুড বয়।
দুজনে গান শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়লো।
কন্ডাক্টারের ডাকে ঘুম ভাঙলো,
: ভাইজান বান্দরবান অাইসা পড়ছে।
– কয়টা বাজে ভাই?
: ভাইজান ২টা ১১ বাজে!
– ধন্যবাদ ভাই, ভাল থাকবেন।

ব্যাগ দুটো নিয়ে নেমে পড়লো কাব্য অার তাসু। এখান থেকে সিএনজি নিয়ে রায়ের বাজার যেতে হবে। ওখানে হোটেল পাওয়া যাবে থাকার জন্য।

সিএনজিতে বসে অাছে দুজনে,
: তাসু একা থাকার অভ্যাস অাছে তো?
– মানে কি? একা থাকবো কেন?
: তো কি অামার সাথে থাকবে?
– নাহ ম্যানেজারের সাথে ঘুমাবো।
: ফাজলামি করো নাহ।
– অালাদা রুম নিলে সন্দেহ করবে। একটা রুম নাও।
: অাচ্ছা।

সিএনজি এসে থামলো হোটেল লং ওয়েভে। ভাড়া মিটিয়ে হোটেলে ডুকে টপ ফ্লোরে একটা রুম নিয়ে নিলো। রুমে চেক ইন করলো ওরা।

কাব্য রুমে ডুকেই বেলকনিতে চলে গেল। এখান থেকে পাহাড় দেখা যায়। তাসুও একটু পর অাসলো বেলকনিতে,

: ওয়াও পাহাড় দেখা যায়!
– সেজন্যই এখানে অাসা।
: ঠেংকু ভাইয়া।
– কিহ বললা?
: অাগে তো ভাইয়া ডাকার জন্য চিল্লাচিল্লি করতা।
– অাগে তো তোমাকে নিয়ে পালাইনি।
: উহু ‌হিরো রে, যাও ফ্রেশ হয়ে নাও।
দুজনে একে একে ফ্রেশ হয়ে নিলো।
তাসু বিছানায় চড়ে বসলো,
: যাও সোফায় গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ো।

কাব্য গিয়ে সোফায় বসে রইলো। সোফায় কখনোই সে ঘুমাতে পারেনা। অসস্তি লাগে তার কেমন যেন নড়েবড়ে লাগে। বসে বসে ভাবছে সারাদিনের কথা। ওদিকে ম্যাডাম ঘুমিয়ে পড়েছে। নাহ কিছুই ভাল লাগছে না। এই ডিসেম্বরের শীতের মধ্যেও বেলকনিতে গিয়ে বসে রইলো। কতক্ষণ কেটে গেল এভাবে সেটা জানেনা।

“কি হলো ঘুমাওনি?”

– অামি সোফায় ঘুমাতে পারিনা।
: গাধা অাগে বলবা না, অাসো।

ভেতরে গিয়ে বিছানায় জায়গা করে দিল তাসু। কাব্য চুপচাপ গিয়ে জড়সড় হয়ে শুয়ে পড়লো।
ঘুম ভাঙলো দুপুর ২টায় তাসুর। কাব্য তখনও ঘুমাচ্ছে। রুম সার্ভিসকে চা দেয়ার জন্য বললো। কাব্যকে ডাকছে,

: এই উঠো,
– তুই অাবার অামার রুমে, মা কোথায়?
: অভ্যাস গেলনা তোমার!
– ওহ সরি।
: অামরা তো হানিমুনে এসেছি মা কোথায় পাবে?
– বিয়ের অাগেই হানিমুন?
: হ্যা অামার স্টাইল অালাদা।
– তাহলে শুরু করা যাক।
: চুপচাপ চা খেয়ে রেডি হও, বাইরে যাবো।
চা খেয়ে তৈরী হয়ে নিলো দুজন। রিক্সায় বসে অাছে দুজনে,
: তাসু।
– বলো
: বিয়ে কখন করবো?
– অামি তোমাকে বিয়ে করবো নাহ।
: কিহ? বিয়ে করার জন্যই তো পালিয়েছি।
– না, তোমার সাথে হানিমুন করে অারেকজনকে বিয়ে করবো।
: কি বলছো মাথা ঠিক অাছে?
– হাহাহা ঢং ও বুঝেনা হাদারাম।

রিক্সা এসে থামলো একটা বাজারে। অনেক পুরনো বাজার। এখানে প্রায় মেলার মত দোকান বসে। হরেক রকম মালা, পাহাড়ী মেয়েদের মত কাপড়। তাসু অনেক কিছু কিনলো। কিন্তু কাব্য শুধু চারিদিকে তাকাচ্ছে। মনে মনে কিছু একটা খুজঁছে।

: কি খুজঁছো?
– নাহ মানে কিছুনা।
: লাভ নেই, এখানে চটপটি, ফুচকা বসে নাহ।
– তাহলে এখানে কি ডিম পাড়তে এসেছি?
: তুমি চাইলে পাড়তে পারো, অামি খড়কুটো এনে দেই বসার জন্য?
– হ্যা অানো সেটা অাগুন লাগিয়ে সুইসাইড করি অামি।
: এত সহজে মরতে দিচ্ছি না তোমাকে, সারাজীবন জ্বালিয়ে মারবো।

অার কথা বাড়ায় না কাব্য। তাসুর যা মেজাজ এই বাজারে জনসম্মুখে মারতে শুরু করলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। বাজারের শেষ প্রান্তে শাড়ি বানানোর জায়গা। নানা রঙের অনেক শাড়ি রঙ করে রোদে শুকাতে দেয়া হয়েছে। কেউ রঙের গামলায় ভেজাতে দিচ্ছে, কেউ সেটা তুলে পানি ঝরাচ্ছে। এসব দৃশ্য দুজনেরই অদেখা ছিল।
: কাব্য অার হাটতে পারছিনা, রিক্সা নাও ফিরে যাই।

দুজনে রিক্সা নিয়ে হোটেলে ফিরলো তখন সন্ধ্যার অাজান পড়ছে। ক্ষিধে লেগেছে প্রচন্ড তাই খাবারটা সেড়ে নেয়াই ভাল।

রাত নয়টা প্রায়। কাব্য সোফায় বসে মোবাইল টিপছে। তাসু এসে পাশে বসলো,
: বউ পাশে রেখে কার সাথে চ্যাটিং করা হচ্ছে।
– অামার তো মনে হচ্ছে না তুমি অামাকে বিয়ে করবে।
: হাহাহা, বলনা কি করো ফোনে?
– গল্প লিখছি।
: শোন না…
– নাহ, তোমার মতলব ভাল ঠেকছে নাহ।
: অারে শুনবা তো।
– না ঠান্ডায় বধির হয়ে গেছি।
: কাব্য!!!
– অনেক ঠান্ডা লাগছে।
: হ্যা অামি কি হোটেলে অাগুন লাগিয়ে দিব?
– হুইস্কি খাব!
: কিহ? মাথা ঠিক অাছে!
– হুইস্কি খাব!
: তাসু বাড়াবাড়ি হচ্ছে।
– হলে হোক নিয়ে অাসো।
: তুমি অাগে খেয়েছো কখনো?
– নাহ হানিমুনে খাব বলে খাইনি।
: বাড়ি গিয়ে খাবা।
– এক্ষুণি নিয়ে অাসো নাহলে. . .
: নাহলে কি?
– রিসেপশনে গিয়ে বলবো তুমি অামার হাজবেন্ড নাহ, জোর করে নিয়ে এসেছো।
: কিহ!!
-হুহ, যাও।
: যাচ্ছি।
কাব্য জানে এখন সে না গেলে কুরুক্ষেত্র বাধাঁবে বিচ্ছু মেয়েটা। রিসেপশনে গেল কিন্তু জিজ্ঞেশ করবে সাহস পাচ্ছেনা। ম্যানেজার নিজেই এগিয়ে এলো,
: স্যার কোন সমস্যা?
– না মানে ড্রিংকস পাওয়া যাবে?
: হ্যা স্যার রেস্টুরেন্টে বসুন।
– না মানে বিয়ার।
: স্যার, রুম সার্ভিসকে বললে মিনিবার থেকে এনে দিবে।
– ধন্যবাদ।

অতঃপর রুম সার্ভিস এক ক্যান বিয়ার দিয়ে গেল। কাব্য রুমে গিয়ে সেটাকে হুইস্কি বলে উপস্থাপন করলো। তাসু লাফিয়ে এসে ক্যানটা হাতে নিয়ে নিলো তার পরিবর্তে কাব্যর গালে খানিকটা লিপস্টিক শোভা পাচ্ছে। তাসু তেমন মেকঅাপ করেনা কারণ কাব্যর পছন্দ নাহ। তবে হালকা লাল লিপস্টিকে নাকি সুন্দর লাগে তাই দেয়।
বিয়ার গ্লাসে নিয়ে একঢোক খেল তাসু,

: ছিঃ কি বিচ্চিরি স্বাদ।
– অাগেই তো মানা করেছিলাম।
: এই জঘন্য জিনিসের জন্য এত পাগল মানুষ।
– হুমম
: অামি খাবনা।
– ফেলে দাও।
: লাইট নেভাও ঘুমাবো।

কাব্য উঠে লাইট নিভিয়ে তাসুর পাশে শুয়ে পড়লো। যদিও ফোন টিপছিলো কারণ ঘুম অাসতে অনেক দেরি। রাতে বিছানায় শুয়ে ফেসবুক ঘাটাই তার প্রধান কাজ। ফেসবুক এখন নির্বাচনময়। কেউ নৌকা চালাচ্ছে, কেউ ধান লাগাচ্ছে, অাবার কেউ অাবার ক্ষেতে লাঙ্গল ও দিয়ে যাচ্ছে। ভালই বিনোদন পাওয়া যায় এসব দেখে।
রাত প্রায় চারটা বেজে চলছে। শাহরুখ খানের সদ্য মুক্তি প্রাপ্ত ছবি ‘জিরো’ দেখছে।

হঠাৎ পিঠে কনুইয়ের অাঘাত অনুভব করলো কাব্য,
: কি? রাত জেগে কি অামার সতিন বানাচ্ছো?
– মুভি দেখছি, তুমি ঘুমাও।
: মধ্যের কোলবালিশটা সরাও!
– কেন?
: অামি ‌তোমাকে ধরে ঘুমাবো।

কিছু বলার অাগেই একখানা ঠ্যাং কাব্যর উপর রাখা। যেন একদম বাপের পৈত্রিক জমি। কাব্য কথা না বলে ছবি দেখতে মন দিল। ওদিকে তাসু ঘুমিয়ে অামেরিকা চলে গেছে।

মুভি দেখা শেষ হলে কাব্যও ঘুমিয়ে পড়লো।

ডিজে ওয়ালে বাবু মেরা গানা চালাদো, গানা চালাদো। কোথাও উচ্চস্বরে বাজছে গানটি। মারাত্মক রকমের বিরক্ত হয় কাব্য। গানটা এত অপছন্দ করে বলার মত নাহ। পাশে তাকালো কাব্য,

একি অামার বউ কই! ধুর অামার তো বিয়ে হয়নি। সে এটা ভেবে অাবার ঘুমাতে গেল। পরক্ষণে মনে পড়লো সেতো তাসুকে নিয়ে পালিয়ে এসেছে। মেয়েটা গেল কোথায়। ওহ মাই গড, তাসু কি সত্যি ম্যানেজারের সাথে পালিয়ে গেল। হতেই পারে অাজকাল রঙমিস্ট্রির প্রেমে পড়ে ইউরোপ থেকে সুন্দরী ললনা পর্যন্ত চলে অাসে।
কাব্য উঠে রিসিপশনে ফোন দিল,

: হ্যালো, অামি ৮০২ থেকে বলছি।
-জি স্যার বলুন।
: অামার স্ত্রী কি নিচে এসেছিলো?
– জী স্যার ম্যাম সকালেই বের হয়ে গেছেন।

ধন্যবাদ জানিয়ে কাব্য জুতো পায়ে দিয়ে বের হলো। কোথায় গেল মেয়েটা। সবসময় ফোন সাইলেন্ট করে রাখে। কল দিয়ে মরে গেলেও ধরবেনা। ‘কোথায়’ লিখে একটি মেসেজ পাঠিয়ে রাখলো। হোটেলের কাছেই হাটাহাটি করছে কাব্য। ৫ মিনিট পর ফোন অাসছে,

: উঠে পড়েছো?
– তুমি কই?
: বিয়ের অাগেই এত উতলা কেন?
– অামি তোমাকে একটা প্রশ্ন করেছি।
: হোটেলে পিছনে যে পাহাড় ওটার উপর।
– কিভাবে উঠলে পাহাড়ে।
: গাধা বাম পাশ দিয়ে রাস্তা কাটা অাছে পাহাড়ে উঠার।
– অাসছি অামি।
: অাসো অামি লুকাই।
– ফাজলামি করবানা একদম।

পাহাড় বেয়ে অর্ধেকটা উঠেই ক্লান্ত হয়ে পড়েছে সে। বিচ্চু মেয়েটা কিভাবে উঠলো। তাড়াতাড়ি হাত পা চালিয়ে উঠে পড়লো।

তাসু বসে অাছে সূর্যের দিকে মুখ করে। একবার পিছনে তাকিয়ে কাব্যকে দেখে অাবার সূর্য দেখায় মন দিলো। সে চুপচাপ গিয়ে ওর পাশে বসে পড়লো। তাসু এতটা চুপচাপ কেন সেটা ঘুরছে মাথায়।

: তাসু
– বলো,
: চুপচাপ যে।
– অামি কি তোমাকে বেশি জ্বালাই?
: নাহ তো।
– চা এনে দিবে? সাথে টিপ বিস্কিট?
কাব্য অবাক হয়ে অাছে। তাসু কখনো এভাবে অনুরোধ করেনা সবসময় অর্ডার দেয়। কাব্য নিচ থেকে চা অার বিস্কিট নিয়ে অাসলো।
: কাব্য
– অামি অার নিচে যাবনা।
: শুনবা তো।
– নাহ
: কালকে বাড়ি চলে যাব অামরা।
– কেন?
: অামি তোমাকে বিয়ে করতে চাই।
– কিন্তু. . .
: কিন্তু কি?
– মেয়েরা তো বিয়ে করেনা, বিয়ে বসে।
: হাহাহা নাহ অামি বসবো নাহ, করবো।

দুজনে চা বিস্কিট খেয়ে অনেকটা সময় কাটিয়ে দিলো। কাল বাড়ি ফিরে যাবে দুজনেই। সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠেছে কাব্য। সামনের দিকে তাকিয়ে পাথর হয়ে গেল।
এটা কি তাসু,
টিয়া রঙের শাড়ি,
খোলা চুল,
কানে ঝুমকো,
নাকে নথ,
ঠোটে গাড় লাল লিপস্টিক,
বিচ্চু মেয়েটা কাব্যর ডায়রী পড়ে এসব জেনেছে। তাই কাব্যর স্পপ্নের মত সেজেছে।
কাব্য এবার হাত-পা ভেঙে তাসুর প্রেমে পড়েছে!
: তুমি পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দরী নারী।
– তুমি তার বর।
. . . কাব্য তাকিয়েই অাছে!
হয়েছে চলো অামরা বের হই।

বাসের জানালা দিয়ে তাকিয়ে অাছে কাব্য। ভাবছে কয়েকদিনের ব্যবধানে বিচ্চু মেয়েটা লক্ষী বউ হয়ে গিয়েছে। বাড়ি ফিরেই বিয়েটা সেড়ে নিতে হবে। যদি মত পাল্টে ফেলে।

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত