আমি আমাদের মহল্লায় মাস্তানি করি। কলেজে পড়াশুনা করা সত্তেও মারামারি করা আমার নিত্ত্যদিনের কাজ হয়ে দারায়। কিন্তু এমন কেও আসে যে আমার পুরো জীবন টা বদলে দেয়।
কলেজে,
–এই ছেলে তোমার নাম কি? আর এই রকম অবস্তা কেনো? সার্টের বোতাম খোলা,আবার দেখি চুলে রঙ সাদা এই সব কি? আচ্ছা তোমার নাম কি? (কলেজের স্যার)
–স্যার, আমার নাম সাকিল আহমেদ সম্রাট আমাকে সবাই সাকিল বলে ডাকে। (আমি)
–আচ্ছা তোমার বাবা কি করে?
–স্যার,চাকরি করে?
–আচ্ছা আজকে কিছু বললাম না,বস তোর জায়গায়।
কলেজ ছুটি হয়ে যায়।
একটা ছেলে আমার _পাস দিয়ে যাচ্ছিলো
-ওই কই থাকোস,
-ভাই আমি ১৭ নাম্বার গোলিতে থাকি
-আমার এত কিছুর শোনার সময় নাই। ১০০ টাকা দে।
–ভাই আমার কাছে টাকা নাই?
–কি কইলি টাকা নাই।
ইচ্ছামত মারলাম
–যা আর আমার চোখের সামনে আসবি না।
–এই যে ভাইয়া। (নিলিমা)
–জি আমাকে ডাকছেন।
–আমি তো আপনাকে ছাড়া আর কাউ কে দেখতে পারছিনা।
–হুম কি হইসে বলেন?
—আপনে ওই ছেলে টারে মারসেন কেন?(নিলিমা)
–তাতে আপনার কি?
—কি আজব তো আমার কি মানে কি ওই ছেলে টা আমার বাসায় কাজ করে?(নিলিমা)
–ও আচ্ছা তাইলে তো আমি সরাসরি মালিক কেই পেয়ে গেসি। (আমি)
–মানে কি বুজাতে চাছেন! (নিলিমা)
–না,কিছু না তুমি বুজবা না।
–কি বললেন,?
—শুনো না, বললাম তুমি বুঝবা না?। (আমি)
–আমাকে না চিনেই আমার ব্যাপারে না জেনে তুমি বলা শুরু করসেন? (নিলিমা)
এই বলে নিলিমা চলে গেলো।
আমি ও চলে গেলাম আমার বাসার দিকে রউনা দিলাম।
#পরের_দিন
—স্যার, কিরে তুই এখন ও কি ঠিক হবি না।
—না স্যার,এই সাকিল কখনো ঠিক হবার নয়
আবার নিলিমার সাথে দেখা হয়।
সে তার বান্ধবিদের সাথে কথা বলতে বলতে আমার সামনে দিয়ে যাচ্ছিলো
সে আমার দিকে তাকিয়ে বলছে।
হঠাৎ আমার সামনে এসে দাঁড়ায়,
-এই শুনো,কাল থেকে চুল ছোট করে আসবে।আর সার্ট ঠিক করে আসবে।(নিলিমা)
একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে চলে যেতে লাগল
–এই দারাও।আমি কেন তোমার কথা শুনবো
-তুমি শুনবা
-না,শুনবো না।
সে একবারে কাছে চলে এসে পড়ে,
-কি হচ্ছেটা কি এটা।দূরে যান
-তুমি আমার কথা শুনবে।কি শুনবে
-হ্যা হ্যা শুনবো।
— কালকে যদি দেখি সব ঠিক ঠাক থাকে নইলে তোমার যে কি অবস্থা করব(নিলিমা)
সে চলে গেল।মাইরি কি মেয়েরে।কিন্তু কেন।আমি তার সামনে আসলে এত ভয় পেয়ে যাই।এখন কি করি
বাসায় গিয়ে ডায়রেক্ট আম্মুর থেকে টাকা নিয়ে সেলুন এ গিয়ে চুল টা কালো করি আরর চুল ছোট করি
সারা রাত তার চিন্তা আমার জ্বালাতন করে গেল।আচ্ছা আমি কি তাকে ভালোবাসি।আমার কেন জানি মনে হচ্ছে তাকে আমার জীবন অসম্পূর্ণ
#পরের_দিন
—স্যার, কিরে তুই আজকে এতো ভাল ভাবে কলেজে আসসোস।
—স্যার নিলিমা বলসেতো তাই। (আমি)
-কি বললি (স্যার)
—না স্যার কিছু না।(আমি)
কলেজ ছুটির পর আমি আজকে নিলিমাকে বলবো যে আমি তাকে পছন্দ করি
এই নিলিমা আমি তোমাকে পছন্দ করি। এইভাবে বলবো না I Love You বলবো। উফ কতো বড় জামেলা। যাই হোক আজকেই যেভাবেই বলি বলবো। ওই যে নিলিমা যাচ্ছে।
—এই নিলিমা,এই নিলিমা,,
—কি?আচ্ছা আপনে আমার নাম জানেন কিভাবে? (নিলিমা)
—ওই সব বাদ দাও। (আমি)
–আচ্ছা,বলেন কি বলবেন?(নিলিমা)
—কিভানে যে বলি??(আমি)
—কি হয়েছে,কি এমন বলবেন? (নিলিমা)
—আকাশের রং নিল,কাউয়ার রঙ কালো আমি তোমায় বাসিভালো (আমি)
-কি হল রেগে গেল।আমাকে কি মেনে নিবে না
-বুদ্ধু একটা
-কি
-তুমি একটা বোকা।তাইলে এইটা তো আগে বলবা।। (নিলিমা)
—মানে তুমি ও কি? (আমি)
—হুম (আমি)
হায় মাইয়া কয় কি।খুশি তো আমার ধরে না
-আমি খুশিতে বাসায় যাই। কিন্তু একটা কথা শুনে মন টা অনেক খারাপ হয়ে যায়।
—বাসায় গিয়ে শুনি আব্বু আমাকে বিদেশ পাঠাবে পড়াশোনার জন্য। বাবার কথা উপর কথা বলার সাহস নাই আমার, আমি যতো বড়ই খারাপ থাকিনা কেন? মাকে অনেক বুজেয়েছি । কিন্তু বাবার কথাই শেষ, আমাকে যেতেই হবে।
আমি সব কথা মাকে বলি মা আমার সাথে একমত কিন্তু একটাই সমস্যা বাবা,,,,
আমি নিলিমাকে ডাক দেই।
—নিলিমা শুনো।
—হুম বলো?
—তুমি কি আমাকে পছন্দ করো?
—কেন? কেনো করবো না?
—তুমি যদি আমাকে সত্যিই ভালোবাসো তাইলে ৪ বছর অপেক্ষা করবে?
—কেন?
—আমি পড়াশোনার জন্য বিদেশ যাচ্ছি।
—তাইলে আমি এখন কি করবো?
—তুমি আমাকে একটা হেল্প কর্তে পারবা?.
—কি হেল্প?(নিলিমা)
—তুমি ৪ বছর বিয়ে টা আটকে রাকবে.
—না এইটা সম্ভব না?
–প্লিজ,একটু চেষ্টা কর।
—দেখা যাক কি হয় (নিলিমা)
—আমি যতো তারাতারি আসার Try করবো।
—আচ্ছা ঠিক আসে ভালো থেকো। (নিলিমা)
—হুম।
—আচ্ছা তুমি যাবে কবে? (নিলিমা)
—কালকে?
—অহ
#৪ বছর_পর
মনের মাঝে অনেক শান্তি বয়ে যাচ্ছে।নিজ দেশে এসে যে কি ভালো লাগছে
বাড়ি থেকে সবাই আমায় নিয়ে গেল।।
সবাই হোই হুল্লুর শুরো করে আমায় নিয়ে পুরো বাড়িতে
—কিরে ফাহিম, নিলিমা কেমন? আসে? কিছু জানোস?
—ফাহিম,,আরেহ দোস্ত বাদ দে.. তো কেমন আসোস তুই?
—হুম আসি ভালো। তুই কেমন আসোস?
—হুম ভালো আসি। তাইলে কেমন বিদেশ টা?
—হুম,ভালো? আচ্ছা নিলিমা র বাসায় নিয়ে যা আমি যাবো?
—বাদ দে,তো কি খেলি?
—আচ্ছা তুই আমাকে শুধু কথা ঘুড়াচ্ছিস কেন?
—আমাকে নিয়ে যাবি? নিলিমার বাসায়?
—আচ্ছা চল তাইলে,,
—কিরে নিলিমার নুতন বাসা কবে আসলো?
—ওই যে নিলিমা (ফাহিম)
—আচ্ছা ফাহিম তুই যা তো..
নিলিমার সামনে গিয়ে দাড়ালাম
–ভালো আছো
—হুম (নিলিমা)
—আচ্ছা তোমার মন খারাপ কেন?
—না এমনি কি হইয়েছে বলো? (নিলিমা)
—তুমি এই রকম কথা বলছ কেন? আমাদের এখন তো খুশি হুওয়ার কথা। আচ্ছা এই বাবুটা কে? অনেকটা ঠিক তোমার মতো, তোমার ছোট ভাই।
—নাহ?
—তাহলে,খালাতো ভাই?
—না।সে আমার ছেলে।।।
—কি?
—হুম
—মজা করসো?
—না?
—-তাইলে কিভাবে কি?……আমার তোমার জন্য আসা
-আমি মজা করছি না
-মানে তোমার বিয়ে হয়ে গিয়েছে
-হ্যা
-তোমাকে বলেছিলাম না আমার জন্য অপেক্ষা করতে
-তুমি যাও। আমার ভালো লাগছে না
-তুমি এটা কীভাবে করলে।তুমি কি আমায় ভালোবাসো না
-না
অনেক বড় একটা শক খেয়ে যাই।
-তাহলে ওসব কি ছিলো।অভিনয়
-হ্যা।অভিনয়।তোমাকে ভালো করার জন্য
-না।এটা মানতে পারব।আমি আর ভালো থাকব না।কি হবে ভালো থেকে। দরকার নেই। না।দরকার নেই
সেখান থেকে চলে গেলাম।
কিছু ভালোবাসা সবার জন্য না। আমার ভাগ্যে হয়ত ভালোবাসা ছিল।
রাতে,
আমার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে অনবরত।এটা কীভাবে করল নিলিমা।আমি পাড়ছি না মানতে।কি আছে তাকে ছাড়া আমার জীবন এ।
এমন সময় ফাহিম আসলো,
-দোস্ত,নে
একটা কাগজ বাড়িয়ে দিল
-কি এটা
-পড়ে দেখ আমি গেলাম।আমার অনেক কাজ আছে
-আচ্ছা যা,
আমি কাগজ খুলে পড়তে শুরু করলাম,
প্রিয় সাকিল,
আমি জানি তুমি আমায় অনেক ভালোবাসো।আর আমি তোমাকে ভালোবাসি।তবে সব ভালোবাসা পূর্ণতা পায় না।তোমার চলে যাওয়ার ১ মাস পর থেকেই বাবা আমার উপর বিয়ের জন্য অনেক চাপ দিতে থাকে।আমি রাজি ছিলাম না।আমি তোমার কথা বলেছিলাম।বাবা রাজি হয় নি।বাবা আমাকে ইমোশনালি ব্ল্যাকমেল করতে থাকে।এক পর্যায় জোড় করে বিয়ে করিয়ে দেয়।সাকিল,সব ভালোবাসা একসাথে ঘর করাতে না।কিছু ভালোবাসা একে অপরকে ভালো রাখার মাঝে থাকে।তুমি যেমন আমার জন্য ভালো হয়ছিলে।কথা দেও তুমি ভালো থাকবে।তোমার সাথে আমার মিল হওয়াটা বিধাতা চায় নি।যদি চেতো তাহলে অব্যশই হত।তুমি আর কষ্ট পেও না।আর তুমি বিয়ে করে নেও।অন্তত আমার জন্য প্লিজ।আর আমি তোমার মাঝে করব।তুমি আমাকে তোমার মাঝেই পাবে
ইতি
নিলিমা
চোখদুটো ভিজে গেছে।বারান্দায় চলে গেলাম।কাগজটা বুকের মাঝে চেপে ধরে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকলাম
আর বললাম
-আমি ভালো থাকবো। শুধু মাত্র তোমার জন্য।তুমি আমার মাঝে আছো আর আমার মাঝেই থাকবে
||সমাপ্ত||