অনেকদিন ধরেই চাকরি খুজঁছিলাম৷ হচ্ছিল না কোনোমতেই৷ অবশেষে হলো৷ তাও আশেপাশে নয়৷ মা-বাবাকে ছেড়ে যেতেই ইচ্ছে হচ্ছে না৷ এতদিন মনে হতো, চাকরি হচ্ছে না কেন? আর এখন মনে হচ্ছে, চাকরিটা না হলেই বোধ হয় ভালো হতো৷ মা-বাবা কে ছেড়ে দূরে কোথাও থাকা হয়নি কখনো৷ আমাদের পরিবারটা ছোট্ট হলেও ভালোবাসায় ভরপুর৷ মা-বাবা আর ছোট ভাই৷ ঘর ছেড়ে গেলে মা-বাবাকে যেমন মিস করবো৷ তেমনি ছোট ভাইটার সাথে রিমোর্ট নিয়ে ঝগড়াটাকেও মিস করবো৷ কিন্তু বাস্তবতা তো মায়া জিনিসটার তোয়াক্কা করে না৷ ক্ষুধা কখনো আবেগ বুঝে না৷
অবশেষে চলে আসলাম শহরে৷ যান্ত্রিক জীবন৷ এখানে মানুষ নামক রোবটরা বাস করে৷ কেউ কারো দিকে তাকানোর সময় নেই৷ পরিবারের সাথে গ্রামটাকেও খুব মিস করবো৷ সাথে গ্রামের মানুষগুলোকেও৷
শহরে এসে যে জিনিসটার জন্য সবচেয়ে চিন্তায় ছিলাম সেটা খুব সহজেই পেয়ে গেলাম৷ বাড়িওয়ালার ৩ তলা দালানের উপরে ছোট্ট একটা রুম৷ আমার মত ছাপোষা মানুষের জন্য যথেষ্ট বড়ই বটে৷ বাড়িওয়ালা লোকটা কে দেখে কেমন জানি উদার টাইপের মনে হলো৷ যান্ত্রিক শহরে এরকম মানুষ পাওয়া দুষ্কর একটা ব্যাপার৷
কয়েকটা দিন ঘোরের মধ্যেই কেটে গেলো৷ চাকরির পর সন্ধায় বাসায় এসে মোবাইল নিয়ে ব্যাস্ত থাকি৷ আর রাস্তার মোড়ের রহিম চাচার ঝাঁলমুড়ির নিয়মিত কাষ্টমার আমি৷ ভালোই একটি সখ্যতা হয়েছে চাচার সাথে৷ নাহ! শহরের সব মানুষ রোবট না৷
বাড়িওয়ালা চাচাটাও খুব ভালো ৷ রোজ সকালে হাঁটতে বের হই চাচার সাথে৷ চাচা র দুই মেয়ে৷ একটা ৯ম শ্রেনীতে আর একজন লেখাপড়া শেষ করেছে কিছুদিন হলো৷ চাচা যখন তার মেয়ে সম্পর্কে বলছিলেন আমাকে৷ কেন জানি না খুব হাসি পাচ্ছিলো! আজকালকার ব্যাচেলর ছেলেদের এসব কেউ বলে নাকি? কোনদিন আবার উনার মেয়েকে নিয়ে পগারপার হবে ছেলেটা? এই ভয়েও কেউ বলে না৷ কিন্তু চাচা কি সহজভাবেই না বলে দিলেন৷ এসব ভাবছিলাম৷ তারপরেই বুঝতে পারলাম চাচা তার মেয়েদের বিবরণ কেনইবা দিলেন আমাকে?
চাচা বললেন,
-শুভ্র একটা কথা বলি তোমাকে?
-জ্বী অবশ্যই৷
-তুমিতো সন্ধায় ফ্রী থাকো৷ আমার ছোটমেয়েটাকে একটু সময় দিও৷ ভীষন ফাঁকিবাজ হয়েছে পড়ালেখায়৷
-জ্বী চাচা৷
সন্ধায় গেলাম চাচার বাসায়৷ ঠিক এই সময়টাতেই পরিবার কে মিস করি৷ যাক, ভালোই হয়েছে সময়টা কাটবে৷ চাচার সাথে হালকা কথা বলেই সোজা পড়ার টেবিলে ৷ ছাত্রী সাহেবা আসেন নি এখনো৷ টেবিলের উপরে আঁকিবুকি দেখেই বুঝলাম ছাত্রীর নাম অাদ্রীতা টাইপের কিছু৷
এর মধ্যেই ছাত্রীর আগমন ঘটলো৷
-কেমন আছেন স্যার?
-হ্যা ভালো৷ তুমি?
-জ্বী ভালো৷
“স্যার” কথাটা শুনেই কেমন জানি অন্যরকম লাগে৷ আমি আগে যখন টিউশন করতাম৷ তখন কাউকে স্যার ডাকতে দিতাম না৷ ভাইয়া বলতো সবাই৷ কিন্তু এখানে তা বলা যাবে না৷ কি না কি মনে করে৷
নাম অাদ্রিতা ৷ ছাত্রী মোটামুটি ভালোই৷ খুব গুছিয়েই পড়ে৷ তেমন একটা বুঝাতেও হয় না৷ আর চাচা কিনা বললো “ছাত্রী ভীষণ টাইপের ফাজিল”! এইসব ভাবছিলাম৷ তখনই ছাত্রীর ডাক৷
-স্যার একটা কথা বলি৷
-হ্যা অবশ্যই৷
-যদি কিছু মনে না করেন৷ আমি আপনাকে ভাইয়া বলে ডাকি? না মানে যদি কিছু মনে না করেন আরকি?
– আচ্ছা ঠিক আছে৷ (হালকা হেসে সাই দিলাম)
প্রায় মাসখানেক হলো পড়াচ্ছি৷ সময়টা ভালোই যাচ্ছিল৷ মা’র সাথে কথা হয়৷ ভালোই আছে৷ ছুটকুটা নাকি তেমন টিভি দেখে না আর৷ বলে কি, ‘ভাইয়াকে আসতে বলো সারাদিন ওর হাতেই রিমোর্ট থাকবে। হি হি৷’
আর চাচা-চাচীরাও খুব ভালো৷ আদ্রিতা মেয়েটাও খুব ভালোবাসে৷ একদম নিজের ভাইয়ের মত৷ আমিও ভালোবেসে মায়াবতী বলে ডাকি৷ যেদিন বলেছিলাম, আমার বোন নেই৷ সেদিন ঠোটঁ ফুলিয়ে বলেছিল, ‘আমি কি কেউ না তোমার হুহ?’ জবাবে মুচকি হেসেছিলাম৷
কিন্তু অবাক করা বিষয়! বড় মেয়েটাকে তো দেখলাম না৷ আসেনি সামনে কখনো৷ আদ্রিতা থেকে জিজ্ঞেস করেছিলাম৷ জবাবে বলেছিল, ওর আপু নাকি গত কয়েকবছর ধরে বেশ ধার্মিক হয়ে গেছে৷ অপরিচিত কারো সামনে আসে না৷ বাইরে বের হলেও, বৌরকা আর হাতে পায়ে মৌজা পরে বের হয়৷
তবে আমার কেমন জানি মনে হতো, পড়ানোর সময় দরজার ওপাশ থেকে কেউ দেখে আমাকে৷ কি জানি? মনের ভুল হয়তো৷
বাড়ি গিয়েছিলাম কিছুদিন আগে৷ সাথে আদ্রিতা ও গিয়েছিল৷ জোর করেই গিয়েছিলো৷ বলে কি, ‘এতবছর পরে ভাই পেয়েছি হু৷ একা যেতে দিব না কোথাও? হি হি৷’
বাড়িতে গিয়ে একদম মিশে গেছে আমার পরিবারের সাথে ৷ ফিরে আসার সময় আসতেই চাচ্ছিলো না৷ আসার সময় মা কে অনেক্ষণ জড়িয়ে ধরে রেখেছিলো৷ আমি পরিবার ছেড়ে আসার পর মার দুশ্চিন্তা ছিলো আমার খাওয়া দাওয়া নিয়ে৷ রান্না জানতাম না একদমই৷ কিছুদিন হোটেলে খেয়েছিলাম৷ পরে চাচা যখন বুঝতে পেরেছিলো, আর বাইরে খেতে দেয়নি৷ আর চাচীর অভিযোগ ছিল, আমি নাকি একদম কম খাই৷ অবশ্য মার অভিযোগ ও ছিল এইটা৷ দূর্ভাগ্যবশত চাচী কথাটা আদ্রিতার সামনে বলে দিয়েছিলো! সম্ভবত ইচ্ছা করেই৷ কারণ মেয়েটাকে যেদিন থেকে বোনের অধিকার দিয়েছি, সেদিন থেকেই ভালোই টাইট দেয় আমাকে৷
সেদিনতো বলেই দিয়েছে, ‘মা, দুপুরে আমি যতক্ষণ বাসায় না ফিরি৷ ততক্ষণ ভাইয়াকে ভাত দিবা না৷ আমি আসলে তবেই আমার সাথে খাবে৷ দেখি ক্যামনে কম খাই৷ বেশি ছেড়ে দিছিতো তাই বেড়ে গেছে!’
মনে মনে হাসতাম পাগলিটার কথা শুনে৷ এরকম কেউ করে নাকি! তাও এই ডিজিটাল শতাব্দিতে এসে৷ ভালই কাটছিলো দিনগুলি৷ বোনটাকে নিয়ে ছুটির দিনে ঘুরতে যায়৷ আমার হাত ধরে রাখবেই৷ আর কোনো মেয়ের দিকে তাকাতে দেয় না৷ বলে কি, ‘ভাইয়া ভাবী কিন্তু আমিই চয়েস করবো, ওকে?’
মি বলতাম, ‘জ্বী আপু৷ আপনিই ঠিক করবেন৷’
“আপনি” করে বললেই রেগে যেতো৷
-ভাইয়া কথা বলি একটা?
-পারমিশন নিচ্ছিস?
-উমম, কালকে ঘুরতে যাবো আমরা৷
– হ্যাঁ যাবি৷ নতুন কথা নাকি এটা হু?
-না মানে! কাল আরেকজন যাবে আমাদের সাথে৷
-কে শুনি?
-গেলেই দেখতে পাবা৷
-ঠিক আছে৷
নওরীন! ও এখানে কেন? যতই বোরকা, আর মৌজা পরুক৷ আমি চোখ দেখেই চিনেছি ৷ অনেকদিনের পরিচিত চোখ আমার৷ কলেজ জীবনে ২টা বছর আমি এই চোখের সাথে পরিচিত৷
-ভাইয়া বলছিলাম না তোমাকে আপুর কথা? (আমি তখনো নির্বাক চোখে চেয়ে রয়েছি!)
কলেজ জীবনের কথাগুলো ভাসছে চোখের সামনে৷ নওরীন আর আমি একই কলেজেই পড়েছি৷ মিশুক টাইপের ছিলো মেয়েটা৷ অল্প দিনেই খুব ভালো বন্ধু হয়ে পরেছিলাম দুজনেই৷ নিজের অজান্তেই পড়ে গিয়েছিলাম নওরীন এর সারল্যমাখা মুখের৷ তবে বলতে পারি নি বা বলতে চাইনি৷ কারণ আমি মধ্যবিত্ত৷ আর নওরিনদের বর্ণনা দেয়ারতো কিছু নেই৷ তারপরও ভালোই বন্ধুত্ব চলছিলো৷
সেদিন মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছিলো৷ যেদিন শুনেছি নওরীন ড্রাগস এ আসক্ত! এত কাছ থেকে দেখেও আমার কখন ও মনে হয়নি ৷ এই মিষ্টি মুখখানা এরকম অন্ধকার জগৎ এ পা দেবে৷ জিজ্ঞেস করেছিলাম নওরীন কে৷ জবাবে, “হ্যাঁ” শুনেছিলাম৷ তারপরও সরে যায়নি৷ অনেক বুঝিয়েছিলাম৷ আমি জানতাম আমার কথা ফেলতে পারবে না৷
হঠাৎ একদিন ফোন করে ডাকলো আমাকে৷ কলেজ বন্ধ ছিলো৷ হোষ্টেলে থেকে লেখাপড়া করতো মেয়েটা৷ বাসায় ও যেতো না তেমন একটা৷ যথারীতি গিয়েছিলাম সেদিন৷ আমার জীবনের অভিশপ্ত দিনগুলোর একটি ছিল৷ ২জন ছেলে আর ২টা বান্ধবী ছিলো ওর সাথে৷ যাদের আগে দেখিনি কখনো৷ ইচ্ছেমত অপমান করেছিলো সেদিন৷ ছেলেদুটো থাপ্পর মেরেছিলো কয়েকটা৷ তার চাইতেও বেশি বেদনাহত হয়েছিলাম নওরিন এর কথায়৷ ফিরে আসার আগে নওরিন এর দিকে তাকিয়েছিলাম শেষবারের মত৷ চোখ দেখেই বুঝতে পেরেছিলাম, অপরাধবোধ করেছিলো মেয়েটা৷
কেমন জানি মনে হয়েছিলো, আমার সাথে যা হয়েছে৷ এতটা নওরীন চায় নি৷ সেদিনের পর থেকে আর কোনোদিন দেখিনি মেয়েটাকে৷ কক্ষনো না৷ গায়েব হয়ে গিয়েছিলো একদমই৷ মিস করেছিলাম খুব৷ কিন্তু “জীবন মাঝে মাঝে থমকে গেলেও, থেমে যায় না” জীবন তার গতিতেই অবিচল৷
শরীর ভালো না লাগার অযুহাত দিয়েই চলে এসেছি৷ ঘুরতে যাওয়া হয় নি আর৷ চলে যেতে হবে এই বন্ধন ছেড়ে৷ আর থাকতে চাই না৷ কেমন জানি, মিথ্যে মিথ্যে লাগছিলো সব৷ চাচা-চাচী, বোন টা কে খুব মিস করবো৷ পাগলি বোনটা হয়তো কিছুই জানে না৷ না জানলেই ভালো৷
কাল সকালেই চলে যাবো৷ চাচা-চাচী কে বিদায় জানাতে গিয়েছিলাম৷ কারণ জানতে চেয়েছিলো৷ মিথ্যে অযুহাত দিয়েছি৷ বোনটাকে বলি নি৷ জানি, অনেক কাদঁবে, মিস করবে আমাকে৷ ওর নিজের ভাই থাকলেও হয়তো অতটা ভালোবাসতো না৷ যতটা আমাকে ভালোবেসেছে৷ কিছুদিন এর জন্য ভুলেই গিয়েছিলাম যে, আল্লাহ আমাকে বোন দেয় নি৷
চলে এসেছি গ্রামে৷ অফিস থেকে ছুটি নিয়েছি৷ আমি আসাতে পরিবারে প্রাণ ফিরে পেয়েছে হয়তো৷ ছুটকুটা বড় হয়েছে৷ এখন নাকি প্রেম ও করে৷ রাত হলে প্রেমকাহিনী শুনাবে আমাকে৷
ঘুমোচ্ছিলাম সকালবেলা৷ ঝপাস করে মুখের উপর পানি পড়লো৷ এই কাজ তো কেউ করেনি কোনোদিন৷ অনেক কষ্টে চোখ মেলেই যা দেখলাম, আদ্রিতা লাল টমেটোর মত চোখ দিয়ে তাকিয়ে আছে আমার দিকে৷ উঠতে যাবো তখন জড়িয়ে ধরলো৷ আর শুরু হলো হাজারো অভিযোগ৷
-কি মনে করেছো হু? আমি কিছু জানি না তাই না? যেদিন আপুর কথা জিজ্ঞেস করেছিলে সেদিনই আপু বলেছিলো তোমাদের অতীতগুলো৷ কিন্তু আমি বলিনি তোমাকে৷ আর তুমি কিনা এই বোনটাকে একটুও জানালে না?
-অাচ্ছা আপু ভুল হয়েছে৷ এবার শাস্তি দেন৷
-“খুন করে ফেলবো তোকে৷ আমারে না বলে চলে আসিস হু? ছেড়ে দিয়েছি বলে বেড়ে গিয়েছিস তাই না? বল ছেড়ে যাবি আর? বল?” মায়াবতীটা তুই করে বলে ফেলেছে৷ বলুক৷ খুব ভালোবাসে তো৷ )
-হা হা, আচ্ছা করিস৷ তা একা এসে গেছিস? চাচা-চাচীকে বলেছিস? (আমি)
-বাইরে আসো৷ বুঝতে পারবা৷ আমি যাচ্ছি৷ তাত্তারি আসো৷
রুম থেকে বেরিয়েই মনে হচ্ছিলো স্বপ্ন দেখছি৷ মধ্যবিত্ত মানুষ স্বপ্ন-কল্পণা এগুলো সবসময় সীমাবদ্ধ ছিলো৷ চাচা-চাচী ,মা-বাবা সব এক সাথেই বসে আছে৷ ছুটকুটা নওরীন এর কোলে উঠে বসেছে৷ বাহ!
আমাকে দেখামাত্রই মা বললো, ‘সাকিব নওরীন কথা বলবে তোর সাথে৷ রুমে নিয়ে যা৷’
দুজনই চুপচাপ৷ অস্বস্তি লাগছে৷ নওরীন হয়তো লজ্জাই কিছু বলতে পারছে না৷ আমিই বললাম,
-কেমন আছিস?
-দেখতেই তো পারছিস৷
-আদ্রিতা পাগলামি করছিলো তাই না? স্বপরিবারে নিয়ে এসেছিস। হা হা
-খোঁচা মারার অভ্যাসটা ফেলতে পারিস নি তাই না?
-মানে?
– তুই কি আমাকে একটুও বুঝতিনা৷ খুব ভালোবাসতাম রে তোকে৷ কিন্তু আমি চাইনি আমার জন্য তোর জীবনটা নষ্ট হয়ে যাক৷ যখন অনেক চেষ্টা করেও ফিরতে পারছিলাম না অন্ধকার থেকে৷ তখন মনে হয়েছিলো, তোকে আমার কাছ থেকে আলাদা করতেই হবে৷ আমি জানতাম, তোকে অপমান করার পরেও তুই আমার সাথে লেগে থাকবিই৷ কিন্তু তাতে করে তোর ক্ষতিটাই বেশি হয়ে যাবে৷ তাই তোকে ছেড়েই চলে গিয়েছিলাম৷ অনেক চেষ্টা করেই তোর কথাটা রেখেছি আমি৷ ফিরে এসেছিলাম অন্ধকার থেকে৷ আবার দেখতে পাবো তোকে সেটা ভাবিনি কখনো৷ কিন্তু উপরে একজন আছেন৷ তিনি কাউকে ঠকান না৷ যেদিন দেখেছিলাম আমাদের বাসায় তোকে৷ বিশ্বাস কর, আমার জীবনের সেরা দিনগুলোর একটি ছিলো সেদিন৷
(কথাগুলো একনাগারে বলেই ফুপিঁয়ে কাদঁছিলো মেয়েটা৷ বুঝ দেয়ার ভাষা নেই আমার৷)
-শুভ্র!
-হ্যাঁ বল৷
-সুযোগ দিবি আমাকে আরেকটা? প্লিজ৷ অতীত ভুলিয়ে দিবো তোকে৷ (নওরীন)”
-দিবে না মানে? ঠ্যাং ভেঙে দিবো৷ ওর এত বড় সাহস হয়নি যে ওর বড় বোনের উপরে কথা বলবে! তাই না ভাইয়ু? (আদ্রিতা)
-আপু এজন্যইতো তোকে এত্ত ভালোবাসি আমি৷ ভাইয়ের মনের কথাটাই বলিস সবসময়৷ আমিতো কনফিউজ হয়ে যায় মাঝে মাঝে৷ তুই আমার বোন? নাকি এই ডাইনিটার বোন?
-আবার তুই আমাকে নিজের বোন বললি না? খুন করে ফেলবো৷ (এই বলেই লাঠি খুজঁছিলো৷ দেরী না করেই জড়িয়ে ধরেছি মায়াবতী বোনটাকে৷ এই ছোট্ট জীবনে আল্লাহর কাছ থেকে পাওয়া সেরা পুরষ্কারগুলোর একটি পেয়েছি হয়তো।)
-খালি বোনকেই ধরলে হবে? বৌটা কে ধরবে না? আচ্ছা যায় ছুটকুকেই ধরি জড়িয়ে৷ (অভিমান কন্ঠে নওরীন)
আমি মনে মনে বললাম, ‘তোমাকে না হয় বাসর রাতেই ধরবো জড়িয়ে। হি হি৷’