স্বপ্ন বৃত্তান্ত

স্বপ্ন বৃত্তান্ত

দেড় ঘন্টার রূদ্ধশ্বাস যুদ্ধের পর বউ দরজা খুলে দিল..একে তো শীতের রাত,তার উপর গোসল করে ভেজা শরীরে ছিলাম এতক্ষণ ..রাত ৮টা থেকে প্রায় সাড়ে নয়টা পর্যন্ত বউ আমারে বাথরুমে আটকাইয়া রাখছিলো..ভিতরে থেকে কত করে ক্ষমা চাইলাম,আর ভুল হবেনা..কিন্তু দজ্জাল বউয়ের মন গলেনি..বউ তো নয়,যেন কসাই..

বউ বিকাল তিনটায় ফোন দিয়ে বললো,
-ওই কই তুমি.?
-আমি অফিসে জানপাখি
-আসবা কখন.?
-এইতো সাতটার মধ্যেই চলে আসবো আমার বাবুই পাখিটা কি করে বাসায়?
-আরে ধুর,বাল..এসব ন্যাকামো রাখো.বাসায় আসবার সময় দুই কেজি তেতুল নিয়া আসবা..নাইলে আজ ঘরে জায়গা নাই..এটা বলেই ফোন টা কেটে দিল

অফিসের কাজের ব্যস্ততায় তেতুলের কথা ভুলেই গেলাম..বাসায় এসে কলিং বেল চাপলাম..ঘরে ঢুকেই দেখি বউ হাতের দিকে তাকিয়ে আছে একটু পর বললো,তেতুল কই?

আনোনি.?

-বুঝলাম আজ খবর আছে..ঘামতে শুরু করলাম..কি বলে সান্ত্বনা দিব কিছুই বুঝতে না পেরে হঠাৎ ছোট বেলার কথা মনে পড়ে গেল..বউরে অনেক বুঝাইলাম, বুঝাইয়া কইলাম-

–ছোটবেলায় মা কয়েছিলো, কোন দিন তেঁতুল খাবি না তেঁতুল খাওয়া তো দূরে থাক গাছতলা দিয়েও হাঁটবি না তেঁতুল গাছে বড় বড় ভূত থাকে,আর তেঁতুলের মাঝেও নাকি বাবু ভূত থাকে তাছাড়া তেতুল খেলে নাকি রক্ত জল হয়ে যায় মেধাও কমে যায় এত কিছু ভেবে আমি তেঁতুল দোকানে গিয়েও আনিনি জেনে বুঝে তোমার ক্ষতি করতে পারি বাবুই পাখি.?

বউ আর কিছু কয় নাই আমারে..ভাবলাম,যাক ওষধে কাজ হইসে তাহলে..খুশি মনে লুঙ্গীটা পড়ে ‘লুঙ্গী ড্যান্স’ দিতে দিতে বাথরুমে ঢুকলাম..গোসল শেষে দেখি দরজা খোলেনা..বউ বাহির থেকে দরজা বন্ধ করে দিসে,আর বলতাসে,

-আমারে ভূতের ভয় দেখাও? আমি কিছু বুঝিনা না? তোমারে যদি আমি সোজা না করছি,আমার নাম রীনাখান না..সাথে সাথেই বাংলা ছবির রীনা খানের কথা মনে হয়ে গেল.. আর বুকটা ধরপাকড় খাচ্ছিল ছবিতে দেখা ছোট বেলার রীনা খানের অত্যাচারের কথা মনে করে..যাক দেড় ঘন্টা পর বউ দরজা খুলে দিল..শীতে কাঁপতে কাঁপতে রুমে গিয়ে কাপড় চেঞ্জ করলাম..

রাতে আর খাবার দেইনাই বউয়ে..একগ্লাস পানি খেয়ে শুয়ে গেলাম..মাঝ রাতে হঠাৎ বউ আমারে এক লাত্থি দিয়া খাট থেকে ফেলে দিল..কোমড়টা ভেঙ্গেই গেল বুঝি! ওমাগো! মরে গেলাম গো.! জোরে চিৎকার দিয়ে উঠলাম..

ঘুম ভেঙে গেল..
রাত চারটা পয়ঁত্রিশ মিনিটে এই স্বপ্ন দেখে ঘুম ভেঙে যায়..ভয়ে থরথর করে কাঁপছি আর ঘামছি..আর ঘুম হবে না হয়ত..টেনশন হচ্ছে অনেক..সকালে উঠে খিলক্ষেত যেতে হবে পাত্রী দেখতে..শুনেছি পাত্রী নাকি ৩৭তম বিসিএসে পুলিশ ক্যাডার..

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত