মায়াবী হাসি

মায়াবী হাসি

নিউমার্কেট এর মেইন গেটের পাশের চা এর দোকানে বসে বসে সিগারেট টানছি আর বন্ধুদের সাথে আড্ডা মারছি এমন সময় মোবাইল বেজে উঠলো,রিসিভ করতেই রাগি রাগি কন্ঠে মামাতো বোনের আদেশ ভাইয়া এখনই হোস্টেলের সামনে আয় মেলায় যাবো।আমিও আড্ডা ছেড়ে রিকশা নিয়ে রওনা দিলাম।

ওহ পরিচয়টা দিয়ে নেই, আমি শুভ্র। বি. বি. এ. ফাইনাল ইয়ার এর স্টুডেন্ট। আর নিশি আমার বজ্জাত মামাতো বোন।হোস্টেলের সামনে পৌছে ফোন দিতেই নিশি বের হল।আমি মাথায় একটা টোকা দিয়ে “সারাক্ষণ সুধু ঘোরাঘুরির ধান্দা” কথাটা বলতে বলতে পাশে তাকাতেই ভুত দেখার মত চমকে গেলাম।এই তো সেই মেয়ে যাকে দেখে সেদিন হা করে তাকিয়ে ছিলাম,আর আমাকে মুখে মাছি ডুকবে বলে হাসি দিয়ে চলে গিয়েছিল।”এই ভাইয়া কি ভাবছিস” নিশির ডাকে আমি হুস ফিরে পেলাম।ও পরিচয় করিয়ে দিলো, “আমার বান্ধবী নীলা”। আমিও সুবোধ বালকের মত হায় বলে পরিচিত হলাম।নীলার হাসি দেখে তখন আমার বেহাল অবস্থা।এই মেয়ে যদি নিশির কাছে সব বলে দেয়, তাহলে আমার প্রেস্টিজটা ই পান্চার হয়ে যাবে।ভয়ে ভয়ে ওদের নিয়ে অটোরিকশাতে উঠলাম।

মেলায় পৌছে নিশি বললো চল আজ তুই চুড়ি কিনে দিবি,আমিও ভবিষ্যত লাভের আশায় রাজি হয়ে গেলাম। কেনাকাটা শেষ করে ফুচকার অর্ডার দিলাম,দুইটায় ঝাল বেশি আর একটায় একবারেই কম।নিশি আর নীলা বেশ মজা করেই খাচ্ছে কন্তুু এই কম ঝালের ফুচকাতেই আমার চোখে পানি এসে যাওয়ার মত অবস্থা ।আর আমার এই বেহাল অবস্থা দেখে ওরা হাসছে।আমিও কাঁদো কাঁদো চোখে অপলক দৃষ্টিতে দেখছি নীলার আপরূপ এই হাসি।কি সুন্দর মায়া মায়া মুখ,আমি হাসিতেই হারিয়ে যেতে চাই সেদিনের মত ঘুরাঘুরি শেষ করে ওদের পৌছে দেয়ার আগে খুব সাহস করে নীলার ফেসবুক আইডা চাইলাম।একটু থমকে গেলেও এক পর্যায়ে দিয়েই দিল।এ যেন ক্লাস ওয়ানে পড়া বাচ্চার জন্য পিথাগোরাসের উপপাদ্য প্রমান করতে পারার পরে পুরষ্কারপ্রাপ্তির মত অনুভুতি।সেদিনের মত বাই বলেই বিদায় নিলাম। টিউশনি শেষ করে রাতে বাসায় ফিরেই ফেসবুকে লগইন করেই নীলাকে রিকোয়েস্ট দিলাম।অপেক্ষা করছি কখন ও কনফার্ম করবে।এক একটা মিনিট যেন আমার কাছে এক এক ঘন্টার মত লাগছিল। অবশেষে রাত ১১.৪০ এ কনফার্মেশন আর এর কিছু পরেই একটা এস এম এস আসলো-” এভাবে হা করে তাকিয়ে থাকলে সত্যিই মাছি ঢুকে যাবে যাবে কিন্তু” রাতে আরও দুই একটা এস এম এস এর পর গুড নাইট বলেই ঘুমিয়ে গেলাম।

সকালে ঘুম ভাঙতেই নীলাকে নক দিতে মন চাইলো কিন্তু মন সায় দিলেও মগজ সায় দিল না।অস্থিটতায় কাটলো পুরোটা সকাল।ভার্সিটির ক্লাস ও বিকেলের আড্ডা আর অন্যান্ন কাজ শেষে বাসায় ফিরলাম।মন আর মগজের যুদ্ধে বিজয়ী হল মন।নক দিতে গিয়ে দেখি অফলাইন। মনটাই খারাপ হয়ে গেলো। মন খারাপের ধাক্কায় কাজের বুয়া রান্না করা প্রতিদিনকার আভারেজ খাবারটা আজ পুরোটাই বিষাক্ত লাগছিল।কোনমতে শেষ করে এসাইনমেন্ট এর কাজ করতে লাগলাম কিম্তু মনের কাছে হেরে যাওয়া মস্তিষ্ককে কোনভাবেই সৎ ব্যরহার করতে পারছি না, পরে কানে হেডফোন দিয়ে লেওনার্ড কোহেল এর মিউজিক প্লে করে শুনতে লাগলাম। কখন যে ঘুমিয়ে গেছি নিজেরাই মনে নেই।

সকালে ঘুম ভাঙতেই নীলার মায়াবী হাসিটা চোখে ভেষে উঠলো।কিন্তু সে যে এখন ও অফলাইন। কি আর করার অফ ডে ছিল বলে ফ্রেশ হয়েই চলে গেলাম নিশির হোস্টেলের সামনে। প্রায় ত্রিশ মিনিট অপেক্ষা করিয়ে বজ্জাতটা আসলো।অবশেষে ইজ্জতের ফালুদা করেই মামাতো বোনটাকে বললাম সব।সব শুনে গভীর কম্ঠে বললো “যদি পদ্মবিলে ঘুরতে নিয়ে যাস আর ট্রিট দিস তবে ভেবে দেখবো কি করতে পারি তোর জন্য।” নিরুপায় হয়ে রাজি হয়ে গেলাম।নিশির কাছেই শুনলাম নীলার জ্বর তাই অনলাইনে আসে না।কি আর করার চলে আসলাম বাসায়।এভাবে কাটলো আরও একটা দিন।

পরের দিন রাত ৯ টার দিকে নীলাকে অনলাইনে পাওয়া গেলো।হায় দিতেই রিপ্লাই আসলো। কেমন আছে জানার পরেই জানতে চাইলাম অনলাইনে না আসার কারন।উত্তর না দিয়েই একাটা হাসির ইমো দিয়ে বললো ” চুপিচুপি তাহলে আমার প্রোফাইল ফলো করা হয়”।।৷ আমি শুধু রিল্পইতে একটা হাসির ইমোই দিতে পারলাম।এভাবে কথা চলতে শুরু করলো।কিছুদিন চ্যাটিং এর পর ফোন নাম্বার আদান প্রদান করা হলো। বুকে অনেক সহস নিয়ে প্রথম বার ফোন দিলাম।শুরু হলো কথা বলা।কয়েক দিন কথা বলার পরে ওকে বললাম তোমার প্রবলেম না থাকলে চলো নৌকায় করে ঘুরে আশি।

পরের দিন ওর ফেবারিট কালারের একটা শার্ট পরে বের হলাম।চলে গেলাম পদ্মবিলে।নৌকায় উঠলাম আমি,আর নীলা উঠতে গিয়া পড়ে যায় যায় অবস্থা আর তখনই আমি হঠাৎ করে ওর হাতটা ধরে তুলতে তুলতে নিজের অজান্তেই মুখ ফুটে বলে ফেললাম “সরাটা জিবন এভাবে তোমার হাতা ধরে রাখতে চাই ও যেন শুনেও না শোনার ভান করলো,সারাদিন ঘোরাঘুরি করলাম কিম্তু নীলা কেন জানি কিছুটা নিশ্চুপ। লান্চ সেরে ওকে হোস্টেলে নামিয়ে দিতে গেলাম।গেটে ঢুকে গেল কিম্তু হঠাৎ করেই বের হয়ে মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে বললো -” অন্য মেয়েদের দিকে তাকালে চোখ তুলে নেবো কিন্তু” একথা বলেই ও চলে গেল।আমি আবারও হা করে তাকিয়ে রইলাম।মনে মনে আমার তখন দিলবার দিলবার গনে নাচতে মন চাচ্ছিলো এভাবেই শুরু হল জীবনের নতুন পথ চলা।উত্তেজনার পাহাড় নিয়ে খুশি মনে বাসায় ফিরলাম।শুরু হল আমাদের নতুন জীবনের স্বপ্ন বোনা। নীলা যখন কথা বলতো আমি নিরব দর্শকের মত মন দিয়ে শুনতাম।প্রায় প্রতিদিন বিকেলে দুজন পাশাপাশি বসে গল্প করতাম।আর যখন হোস্টেলে নামিয়ে দিয়ে আসতাম তখন মিষ্টি হাসি দিয়ে বলতো ” Love you babu”। এই কথাটুকুই ছিল আমার ভাল থাকার প্রধান মন্ত্র।

আর এভাবেই কেটে গেল প্রায় পাঁচ মাস।আসলো আমাদের ভালবাসার প্রথম ভ্যালেনটাইন ডে।১৪ই ফেব্রুয়ারী সকালে আমরা ঘুরতে বের হলাম।নীল শাড়িতে ওকে যেন অপ্সরীর মত লাগছে,আর আমি পড়েছি ওর পছন্দের কালো পান্জাবী।হাত ধরে রেল লাইনের উপর দিয়ে হাটার মুহূর্তগুলো যেন ঠিক স্বপ্নের মত কাটলো।আমি যখন নীলার পায়ে পায়েল পরিয়ে দেই আমার বন্ধুর তখন ছবি তুলছিলো,আর তখন লজ্জায় লাল হয়ে যাওয়া মিষ্টি মেয়েটাকে আরও সুন্দর লাগছিলো। আর এভাবেই কাটলো আমাদের প্রথম ভালবাসা দিবস। এর কিছুদিন পরেই বাধলো বিপত্তি। সরকারি ছুটির কারনে এক সপ্তাহ হোস্টেল বন্ধ।বাড়িতে যেতে হবে ওর।তাই সকালে ওকে গাড়িতে তুলে দিয়ে আসবো।যাবার সময় ও আমার দিকে তাকিয়ে কাঁদছে।আমি জানতে চাইলে বাচ্চাদের মত ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বললো “আমার কষ্ট হচ্ছ”৷অনেক বোঝানের পরেও কান্না থামলো না।শেষ মেষ বাধ্য হয়ে বাড়ি পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে আসলাম।৷ ওকে বুঝাতে পারলেও বাসায় ফিরে আমার অনেক একা একা লাগতে লাগলো।সাতটা দিন কাটতে যেন সাত বছর লেগে গেল।ফোনে কথা হতো তবে খুবই সীমিত। ফেরার দিন গারিতে উঠে আমাকে ফোন দিলো। আমি বাস স্ট্যান্ড এ গিয়ে দাড়িয়ে আছি।মনে হচ্ছে কত কাল দেখি না পাগলিটাকে।

বাস থেকে নামলো নীলা।আমি রিক্সা করে ওকে নিয়ে চলে গেলাম নদীর পাড়ের দিকে।যাবার পথে একটা কথাও বললো না। আমার ডাকে সারাও দিল না।আমি ততখনে ভয়ংকর ভাবে ভিতু হয়ে পড়েছি ওর বাসায় সমস্যা হয়েছে ভেবে।রিকশা থেকে নেমে সোজা নৌকায় উঠলো।আমি নৌকায় উঠে ওকে ডাক দিতেই নীলা আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।আমি তখন পাথর হয়ে গেছি।হঠাৎ মনে হলো আমার শার্টটা ভিজে যাচ্ছে।বুঝলাম ও কাঁদছে। জিজ্ঞাজা করতেই বুকে ছোট ছোট কিল দিতে দিতে কান্নার গতি বাড়িয়ে দিয়ে বললো ” তোমাকে না দেখে থাকতে আমার খুব কষ্ট হয়েছে,আই লাভ ইউ সো মাচ” ওর কথায় স্পস্ট ও আমাকে আমার চিন্তার থেকেও বেশি ভালবাসে। নীলা কাদছে,ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাদছে।৷

কান্না পেলে চেপে রাখতে নাই যে। তবে এ কান্না কষ্টের নয় প্রপ্তির শুধুই ভালবাসা প্রাপ্তিরকাঁদতে কাঁদতে নীলা মুখ কমলা লেবুর মত লাল হয়ে গেছে।রিকশা করে যখন হোস্টেলের দিকে ফিরছি,তখম কাধে মাথা রেখে গুন গুন করে গান গাইছে মেয়েটা ফোলা চোখ আর লাল লাল গালে ওকে পুরোটাই মিষ্টি আলুর মত লাগছে।হোস্টেলে নামিয়ে দিয়ে আমি সরাসরি ভার্সিটিতে চলে গেলাম।আবার শুরু হল আমাদের রুটিন লাইফ।আর এভাবে কেটে গেলো আমাদের ভালবাসার এক বছর।আমিও বি বি এ শেষ করে জব কচিং করছি।ভালোই চলছে আমাদের একদিন বন্ধুদের সাথে আড্ডায় বসে আছি,হঠাৎ নীলার ফোন।রিসিভ করতেই ভারি ভারি কন্ঠে মহারানীর হুকুম যেখানেই থাকো এখনই কলেজ গেটে আসো।সুবোধ বালোকের ন্যায় আমিও হাজির হলাম। গিয়ে দেখি রোদের মধ্যে ম্যাম পায়চারি করছেন।

“এভাবে রোদে হাটলে আমার বাবুটা তো কালো হয়ে যাবে” একথা বলতে না বলতেই দিল ধমক,”দাত কেলিও না,বাবা সব জানতে পেরে গেছে।মা ফোন দিয়েছিলো তারা আগামি সপ্তাহে আসছে, তোমাকে দেখা করতে বলেছে” এক নিশ্বাসে কথাগুলো বলে ও যেন হাপ ছেড়ে বাঁচলো।আর আমি শুনেই উল্টো দিকে হাটা দিলাম।পেছন থেকে শার্ট টেনে ধরে নীলা বললো “কই যাও,উল্টোপাল্টা করলে একদম মেরে ফেলবো” দুজন মিলে কফি সপে বসে আছি নিরবে।দেখলে মনে হবে বিরহের ছেসন চলছে।হঠাৎ করে ফোন বেজে উঠলো, আম্মার ফোন।রিসিভ করতেই বললো “কাল মেডিসিন এর ডক্টর এর সিরিয়াল দিসতো,সকালের গাড়িতে আমি আর মারিয়া আসতেছি।”মারিয়া হল আমার আদোরের একমাত্র ছোট বোন।সবকিছু কেমন যেন লাগছে।ভয়ে আমার গা শিউরে উঠছে।মাথায় হাত দিয়ে বসে আছি আর নীলা মুচকি হাসছে।রাগ লাগলেও কিছুই বললাম না।ওকে নামিয়ে দিয়ে চলে গেলাম সিরিয়াল দিতে।বাসায় ফিরে কিছু না খেয়েই নীলার সাথে কথা বলতে বলতে ঘুমিয়ে গেলাম।

আম্মার ফোনে সকালে ঘুম ভাঙলো।তরিঘরি করে বের হলাম। ডাক্তার দেখানে শেষ করে, আম্মা আর ছোট বোনটাকে নিয়ে আমার ফেবারিট রেস্টুরেন্টে খেতে বসলাম।আমি ফ্রেশ হতে ওয়াসরুম গেলাম। এসে পুরোই থমকে গেলাম।আম্মার পাশে নীলা বসে আাছে আর আমার ছোট বোনটা নিশির সাথে গল্প করছে।আমার তখন ভয়ে প্যারালাইজড হওয়ার উপক্রম। আম্মার ডাকে টেবিলে গিয়ে বসতেই বুঝলাম,সব প্রি-প্লানড। সব কিছুই নিশির চালাকি।রাগি রাগি কন্ঠে আম্মা বললো তোমার আব্বাকে আমি রাজি করাবো কিন্তু একটা ভালো জব হওয়ার পরে।আমি চুপ করে মাথা নেড়ে সম্মতি দিলাম।খাওয়া দাওয়া শেষ করে আম্মা নীলাকে তার হাতের একটা আংটি খুলে পড়িয়ে দিলো।আমি যেন বার বার শকড হচ্ছি।তারপর আমাকে কিছু উপদেশ দিয়ে আম্মা আর বোনটা গাড়িতে উঠলো।নীলাকে দেখলাম ছোটবোনটাকে একগাদা চকলেট দিল আর আম্মাকে সালাম করে বিদায় জানালো।আর আমি অবুজ বালোকের মত দাড়িয়ে রইলাম আম্মাকে উঠিয়ে দিয়ে,নীলাকে হোস্টেলে নামিয়ে দিবে এমন সময় ও বললো “বাড়িতে যাবো,আব্বু আম্মুর সাথে একসাথে ফিরবো।

এসে তোমাকে একটা সারপ্রাইজ দিব” প্রথমে অমত করলেও পরে আমি নিজেই নীলাকে নামিয়ে দিয়ে আসলাম।যাবার পথের পুরোটা রাস্তা আমার কাধে মাথা রেখে শুয়ে রইলো।আম্মার সাথে দেখা করে সে যেন খুশিতে আত্নহারা।আমি ফেরারা সময় মিষ্টি একটা হাসির সাথে একস্ট্রা পাওনা ফ্ল্যাইং কিস। বাসায় ফিরতে কিছুটা রাত হল।খুশিতে আমারও যেন আশাক ছুই ছুই অবস্থা।এভাবে কাটলো তিন দিন।পরদিন সকালে নীলার ফোন “আব্বু-আম্মু নিয়ে রওনা দিবে।তুমি কিন্তু হোয়াইট শার্টটা পরবা, আর হ্যা চুল ঠিক করে আসবা”আমি সুবোধ বালোকের মত হ্যা সূচক শব্দ করলাম।লাভ ইউ বলে ফোনটা কেটে সেভ করতে লাগলাম।ফ্রেশ হয়ে রেড়ি হয়ে টেক্সট করলাম, রিপ্লাই আসলো ” On the way “প্রায় তিন ঘন্টা ধরে অপেক্ষা করছি।নীলা এখনও পৌছায়নি। ফোনটাও বন্ধ।অনেক টেনশন কাজ করছে।এভাবে কাটলো আরও ঘন্টা খানেক।আমি পুরোই অস্থির হয়ে গেছি।

এমন সাময় আননোন নাম্বার থেকে ফোন,আমি ব্যস্ততার সাথে পিক করতেই অচেনা এক কন্ঠে বললে “হ্যালো ভাই,রাস্তাত একটা এক্সিডেন্ট হয়েছে,সাত জন মারা গেছে।তার মধ্যে এটা একজনের ফোন।লাস্ট কলে এই নাম্বার টা পেলাম তাই ফোন দিলাম।আপনি একটু আসুন”আমি তখন পাথর প্রায়।যখন স্পটে পৌছেছি,আমি আমার কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলেছি।নীলা আমার সামনে শুয়ে আছে। নীলা মুখটা যেন চেনা যাচ্ছে না,আমি নীলাকে ডাকছি কিন্তু ও যেন নিশ্চুপ।আমি শুধু চিৎকার করে ডাকছি।আর ও যেন অভিমান করে চুপ করে আছে।আর কিছুই যেন মনে নেই আমি যখন চোখ খুললাম, নিজেকে হসপিটালে আবিষ্কার করলাম।আম্মা পাশে বসে কাদছে।আর আমি চোখ মেলে শুধু নীলকেই খুজছি।উঠতে গেলেই ডাক্তার ইঞ্জেকশন দিল,আমি যেন ঘুমিয়ে গেলাম।

প্রায় ২ বছর পরঃ আমি এখন ব্যাংক এর সিনিয়র অফিসার। অনেক দায়িত্ব। আজ দুই দিনের ছুটি নিলাম।নিবোই না বা কেন,কাল যে নীলার জন্মদিন। পরদিন সকালে উঠে নামায পরেই নীলার কাছে চলে গেলাম।নীলা এখন আর আমার ডাকে সারা দেয় না।হয়তো আমি বিধাতার কাছে ঠিকভাবে চাইতে পারিনি।তাই আল্লাহ ওকে নিয়ে নিলো।কবর জিয়ারত শেষ করে আজ আর উঠতে পারছি,বসে গেলাম নীলার পাশে। আমি এখানে প্রতি শুক্রবারেই আসি।নীলার কবর এর সামনে দারিয়ে দোয়া করতে।কিন্তু আজ যেন নিজেকে সামলাতেই পারছিনা।আমি কাঁদছি,অজরে কাদছি কিন্তু কাদলে যে চলবে না।নীলার মায়াবী হসিটাকে সম্বল করে পাড়ি দিতে হবে অনেকটা পথ।

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত