মধ্যবিত্তের ভালবাসা

মধ্যবিত্তের ভালবাসা

কাল বিকাল পাঁচটায় আমি রবীন্দ্র সরোবর অপেক্ষা করবো। আচ্ছা। আমি যেই শার্ট টা দিয়েছি সেটা পরে আসবা। হুম। আর শুনো। কি? রিক্সা করে আসবা। আচ্ছা। আমি রাখছি এখন রাতে কল দিবো। আর শুনো কষ্ট করে অন্তত ফোনটা রিসিভ করো। হুম।

ফোনটা রেখে চেয়ারটাতে হেলান দিয়ে বসলাম। খুব ক্ষুধা লাগছে । কিছু না পেয়ে হাতের কাছে পানির বোতলটা পেলাম। এটা দিয়ে আপাতত কাজ চালাতে হবে। নীলিমার বলা সময় মতো ওর দেওয়া শার্টটা পরে বের হলাম। পকেটে আছে একটা পঞ্চাশ টাকার নোট, একটা বিশ টাকার নোট আর একটা পাঁচ টাকার পয়সা। ভাড়া লাগবে চল্লিশ টাকা। বাকি থাকে পঁয়ত্রিশ টাকা। পয়ত্রিশ টাকা দিয়ে আজ রাতের খাবারের ব্যবস্থা করবো ঠিক করলাম। গন্তব্যস্থলে এসে দেখি নীলিমার সাথে ওর বান্ধবী মিতা ও আছে। আমাকে দেখে বলল আরে নয়ন ভাইয়া!! কেমন আছেন?? হুম ভাল। তুমি?? ভাল। তারপর মিতা নীলিমাকে আমার সামনেই বলল-ইলমা দেখ। আমার বিএফ এই আংটিটা আমাকে গিফট করছে। নয়ন ভাইয়া আপনিও দেখেন তো?? সুন্দর না? সুন্দর জিনিসকে সুন্দর বলতে হয় কিন্তু আমার এটা দেখে গলা শুকিয়ে গেল। মিতার বিএফ ওকে হীরার আংটি দিয়েছে কিন্তু নীলিমাকে গত দেড় বছরে কিছু দেওয়া হয়েছে কি না ইতিহাস ঘাটাঘাটি করতে হবে।

তারপর নীলিমা হঠাত আমার হাতটা ধরলো। হঠাত এরকম করার কারণ টা বুঝলাম না। হাতটা ধরে যেটা বলল শুনে আমি ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলাম। ও বলল এই শুনো না। আমারো বসুন্ধরাতে একটা আংটি পছন্দ হয়েছে। কিনে দিবা?? কি বলবো বুঝতে পারছিনা। যদি নীলিমা একা হতো তাহলে কিছু একটা অজুহাত বলতে পারতাম কিন্তু এখন সামনে নীলিমার বান্ধবী। যদি আমি এখন না করে দেই তাহলে নীলিমা আমার সাথে নিশ্চই রিলেশন ব্রেক আপ করে দিবে। তখন আমার কি হবে? যা হবার হবে বলেই ফেললাম আচ্ছা দিবো। কবে দিবা? তুমি যেদিন বলবা সেদিন। তাহলে এখনি চলো। এখনি?? হুম। বলেই নীলিমা মিতাকে বাই বলে আমার হাত টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছে। ভাবছি ওকে এখন বলবো যে নীলিমা আমার কাছে টাকা নাই। কিন্তু বলতে ভয় করছে। চুপ করেই ওর সাথে হেঁটে চলছি। তারপর রিক্সা নিলো। কিন্তু রিক্সাওয়ালাকে বলল নিউ মার্কেট যেতে। মনে হয় রিংটা নিউমার্কেট দেখেছে।

নিউমার্কেট পৌছে গেলাম। নীলিমা রিক্সা থেকে নেমে আমাকে নামতে বলল। নেমে ভাড়া নীলিমা মিটিয়ে হাঁটা দিল। কিন্তু আমার এগোচ্ছে না। আচ্ছা নীলিমা কি সেটা খেয়াল করছে না?? ও তো জানে আমার কাছে টাকা নেই। নীলিমা আমার হাতটা ধরে হাটছে। হাটতে হাটতে ফুটপাতে একটা দোকানে নিয়ে এসেছে। এখানে অনেক কিছুই বিক্রি করছে। যেমন, কানের দুল, চুড়ি, পায়েল, আংটি আরো অনেক কিছু। কিন্তু সব গুলোর দাম ৫০ টাকার মধ্যে। তারপর আমি জিজ্ঞাসা করলাম এখানে কেন? আমার আংটি লাগবে না। একটা পায়েল কিনে দিবা?? আমি কথাটা শুনে ওর দিকে তাকিয়ে আছি। মনের মধ্যেকার চিন্তাটা নিমিষে হারিয়ে গেল। মেয়েটা আমাকে খুব ভালবাসে আর খুব বুঝে আমাকে। কি ব্যাপার দিবা না?? আমার কাছে পঁয়ত্রিশ টাকা আছে। তারপর নীলিমা দোকানদার কে জিজ্ঞাসা করলো ভাইয়া পায়েল প্রতি পিস কতো?? ত্রিশ টাকা পিস আপা।

দোকানদারকে একটা ধন্যবাদ দিতে ইচ্ছা করছিলো। তারপর ওকে একটা পায়েল কিনে দিলাম। রাতের খাবারের টাকাটা শেষ হয়ে গেল সেটার প্রতি আমার কোনো আফসোস নেই কারণ ওর হাসিটা এর চেয়েও বেশি দামী আমার কাছে। আমি আর নীলিমা বসে আছি। ওর পায়ে পায়েলটা বেশ মানিয়েছে। নীলিমা আমার কাঁধে মাথা রেখে বলল টাকা আছে?? আমি চুপ করে রইলাম। নীলিমা বুঝলো আমার কাছে টাকা নেই। তারপর ও ওর ব্যাগ থেকে দু হাজার টাকা দিয়ে বলল এটা রাখো। মেয়েটার কাছ থেকে এর আগেও অনেক টাকা নিয়েছি তাই লজ্জা লাগছিলো। সেজন্য বললাম না না। আমার টাকা লাগবে না। বাহ। বেশ বড়লোকগিরি দেখাচ্ছো। রাখো বলছি। কথাটা একটু ধমক দিয়েই বলল তাই না করতে পারিনি। টাকাটা নিয়ে বললাম ধন্যবাদ।

আজ দুদিন যাবত নীলিমা আমাকে কল দিচ্ছে না। কেন দিচ্ছে না সেটা জানি না। আর ফোনে টাকাও নাই যে ফোন দিয়ে জানবো। ওর দেওয়া দুই হাজার টাকা দিয়ে আগের পাওনা মিটিয়ে ফেলেছি। হঠাত ফোনটা বেজে উঠলো। নীলিমা কল দিয়েছে। রিসিভ করে বললাম কেমন আছো?? ভাল। সরি। কেন? দুদিন কথা বলতে পারিনি। আসলে বাড়িতে খুব ঝামেলা হচ্ছে। কি ঝামেলা?? বিয়ে নিয়ে। কথাটা শুনে আমার ভিতরটা মোচড় দিয়ে উঠলো। তারপর কাঁপা গলায় বললাম তোমার?? ও কিছুক্ষণ চুপ করে আছে। তারপর বলল হুম। সামনের শুক্রবার বিয়ে। আমি চুপ করে আছি। কথা বের হচ্ছে না মুখ দিয়ে। নীলিমা তারপর বলল কাল একটু শেষ বারের মতো দেখা করতে পারবে?? কোথায়??

যেখানে সব সময় দেখা করি।আচ্ছা।বলেই ফোনটা রেখে দিলাম। হঠাত করে খেয়াল করলাম আমার হাতের উপর এক ফোটা পানি পরলো। ছাদের দিকে তাকালাম কিন্তু পানি দেখলাম না। অতঃপর বুঝতে পারলাম আমার চোখের পানি এটা। পালিয়ে যেতে পারবে?? নীলিমার পাশে বসতেই ওর প্রশ্ন শুনে হকচকিয়ে গেলাম। এখন নীলিমার প্রশ্নের উত্তর কি দিবো আমি। মধ্যবিত্তের ঘরের ছেলে আমি, রাগকরে বাড়ি ছেড়েছি তারউপর আবার বেকার। এমন অবস্হায় কি নীলিমাকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়া আদৌ সম্ভব? আমি আর নীলিমা বসে আছি। ওর কথার উত্তর দিতে গিয়ে মনে পরলো আমি আজ দুপুরে খাইনি। দুপুরে খাওয়ার জন্য যে টাকাটা রেখেছিলাম সেটা দিয়ে চাকরীর জন্য আবেদন করে ফেলেছি। বেশ ভাল একটা চাকরী।যদি ভাগ্য ভাল থাকে হয়ত আবার বাবার সামনে যেতে পারবো। আর নীলিমাকেও নিজের করে নিতে পারবো।

আসলে বাড়ি থেকে বাবার সাথে একবার কথা কাটাকাটি হয় তখনি বাবার উপর রাগ করে এসে পরি। বলে এসেছি যেদিন চাকরী পাবো তখনি যাবো ওদের সামনে। তারপর থেকেই আমি আলাদা থাকি। এখন প্রায়ই আম্মু আমাকে কল করে বলে ফিরে যেতে কিন্তু আমি যাই না।তাই এই মুহুর্তে নীলিমার প্রতি আমার ভালবাসা প্রকাশ করে ওর কষ্ট বাড়িয়ে দিতে চাই না। ভালবাসা হয়ত এখন খুব জমে আছে কিন্তু যখন অভাব আমাদের ভালবাসায় প্রবেশ  করবে তখন ও বলবে আমাকে বিয়ে করে সে নিজেকে খুন করে ফেলল।কি হলো চুপ করে আছো যে??নীলিমার ডাকে কল্পনা কাটিয়ে বললাম নাহ। কথাটা হয়ত নীলিমা আমার কাছে আশা করেনি। এরকম কথা শুনে নীলিমা আর কিছু বলল না। টানা পাঁচ মিনিট তেত্রিশ সেকেন্ড নীরবতা পালনের পর আমি উঠে দাঁড়ালাম। এখানে আর থাকা যাবে না। টিউশনে যেতে হবে। টিউশনে গেলে হালকা পাতলা নাস্তা দেয়। তাই নীলিমাকে বললাম বাবা মা যার সাথে বিয়ে দিচ্ছে তাকে নিয়ে সুখী হও। ভাল থেকো। কথাটা বলেই চলে আসলাম নীলিমার চোখের পানি দেখতে হবে সে জন্য নয়, আসলে আমার চোখের পানি লুকাতে হবে। আমাকে অনেক অনেক স্বার্থপর হতে হবে।

কাল নীলিমার বিয়ে। আজ সকালে আমি ঐ চাকরীটার ইন্টার্ভিউ দিয়ে এসেছি। চাকরী হয়ে গেছে। চাকরীটা পেয়েই আম্মুকে জানাই। তারপর নীলিমাকে কল দেই কিন্তু ও রিসিভ করেনি। ভেবেছিলাম চাকরীটা যেহেতু হয়েই গেছে এখন ওকে নিয়ে পালালেও সমস্যা নেই। কিন্তু নীলিমা আমার ফোনটা রিসিভ করলো না। হয়ত অভিমান করেছে আমার উপর। আমি এখন দাঁড়িয়ে আছি ওদের বাসার সামনে ঠিক ওর রুমের বারান্দা বরাবর। প্রায়ই এখানে আসি ওকে দেখতে। আজো দেখার খুব ইচ্ছা হচ্ছে। কিন্তু দেখতে পারছি না। অতঃপর দেখলাম বারান্দাতে নীলিমা এসেছে। আমাকে দেখে তাকিয়ে আছে। আমি ইশারা করে বললাম ফোনটা ধরো। কিন্তু ও বারান্দা থেকে চলে গেল। ফোন দিলাম কিন্তু ধরলো না। বুঝতে পারলাম আমার আশায় গুড়ে বালি।একটু পর একটা ছেলে নীলিমদের বাসা থেকে বের হয়ে আমার সামনে আসলো। একটা ইনভাইটেশন কার্ড ধরিয়ে দিলো। বুঝলাম নীলিমা আমাকে দাওয়াত দিলো ওর বিয়েতে আসার জন্য।

সারারাত কান্না করে ভোর বেলা ঘুম দিলাম। ঠিক দুপুরবেলা ঘুম ভেঙ্গে গেল। আসলে খিদা থাকলে ঘুম হবে কিভাবে? কাল রাত থেকে খাই না কিছু। তাই ঠিক করলাম ইলমার বিয়েতে যাবো। বউ সাজে ওকে দেখাও হয়ে যাবে আর দুপুরের খাওয়াও হয়ে যাবে। হঠাৎ নীলিমার বিয়ের কার্ডটা চোখে পরলো। এখনো খুলে দেখিনি। কার্ডটা খুলে দেখলাম যে কিছু টাকা আর একটা চিরকুট। চিরকুটে লেখা একটা পাঞ্জাবী কিনে বিয়েতে এসো। আমিই মনে হয় প্রথম ব্যক্তি যাকে তার প্রেমিকার বিয়েতে আসার জন্য প্রেমিকা নিজে টাকা পাঠায় পাঞ্জাবী কিনার জন্য। তারপর খেয়াল করলাম ওর হবু স্বামীর নামটা দেখলাম”ডাঃ আহমেদ আসিফ” মনে হয় খুব বড় মাপের ডাক্তার। যাক। ও সুখে থাকবে তো এতেই আমার ভাল লাগবে। নীলিমাদের বাসা বেশ সুন্দর করে সাজানো হয়েছে। অনেক মানুষে ভরপুর। আমি খুঁজছি নীলিমাকে। কোথাও পাচ্ছি না ওকে।

এ দিকে আমার পেট ক্ষুধায় চোঁ চোঁ করছে। হঠাত বিরিয়ানীর গন্ধ পেলাম। ডানে বামে তাকিয়ে দেখি যে খাবার পরিবেশন করছে। তারপর আমিও বসে পরলাম। প্লেটে বিরিয়ানি। যখনি হাত দিতে যাবো তখনি আমার পিছন থেকে পাঞ্জাবীর কলার টেনে ধরলো। তাকিয়ে দেখি নীলিমা। বেশ সেজেছে মেয়েটা। কিন্তু ওকে দেখে আমার মনে হচ্ছে  না যে আজ ওর বিয়ে। তারপর ও বলল চলো। কোথায়?? হাতটা অন্তত ধুয়ে খাও। বাসায় ধুয়ে আসছি তো। চুপ। আসো। তারপর ও আমাকে একটা রুমে নিয়ে গেল। তারপর বলল ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে আসতে। আমি ফ্রেশ হয়ে এসে দেখলাম টেবিলে অনেক রকমের খাবার। আমি অবাক হয়ে বললাম এসব কার জন্য?? এখানে আর কে আছে?? আমি চারিদিকে তাকিয়ে বললাম আর কেউ তো নেই। তাইলে তোমার জন্যই খেতে বসো। আমি একটা হাসি দিয়ে খেতে বসলাম।ও আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি ওর দিকে তাকিয়ে দেখলাম ও কান্না করছে। আমি খাওয়া বন্ধ করে বললাম কাঁদছো কেন?? আমাকে ছাড়া থাকতে পারবা তুমি?? আমি ওর কথার উত্তর না দিয়ে আবার খাওয়া শুরু করলাম। নীলিমা বলল যে কার্ডটা তোমাকে পাঠিয়েছি সেটা ভুয়া। মানে?? হুম। আজ আমার বিয়ে না।

আসলে ওরা আমাকে দেখতে  এসে নীলাকে পছন্দ করেছে।  আর নীলার ও ছেলেটাকে পছন্দ হয়েছে।(নীলা নীলিমার ছোট বোন) আমি ওর দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি। কি বলবো বুঝতে পারছিনা। আমি খাচ্ছি না দেখে নীলিমা চোখটা মুছে আমার প্লেট টা ওর কাছে টেনে নিয়ে ওর হাতে খাবার তুলে আমার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলল হা করো। আমি হা করলাম। আর ভাবছি ওকে ছাড়া থাকাটা সত্যিই খুব বেশি কষ্টদায়ক আমার জন্য। কয়েক দিন পর আমার চাকরীতে জয়েন করি। তারপর বাড়িতে যাই। বাবা মা তো আমাকে নিয়ে অনেক খুশি। এই দিকে চাকরী পাওয়ার  সাথে সাথে আম্মু আমার বিয়ের  জন্য উঠেপড়ে লাগলো। আম্মুকে বললাম আম্মু একটা মেয়েকে আমি থাক আর বলতে হবে না বাবা। তোর খুশিতেই আমরা খুশি। তারপর প্রস্তাব নিয়ে গেল নীলিমাদের বাড়িতে। বিয়েটাও হয়ে যায়। এই কিছু টাকা দাও তো! আমার কাছে টাকা নাই। মানে কি?? কাল মানিব্যাগে তো অনেক গুলা টাকা দেখলাম। জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল করছি তোমাকে বিয়ে করে। কথাটা শুনে নীলিমা স্তব্ধ হয়ে গেল।

যেই মেয়েকে আমি এত ভালবাসি  সে আমার কাছে এরকম কিছু কখনো আশা করেনি হয়ত। তারপর বলল মানে?? তুমি এটা বলতে পারলা?? মানে তোমার সাথে যখন প্রেম করতাম তখন তুমি আমার খরচের টাকা দিতে। আর বিয়ে করার পর আমি দিচ্ছি। তোমার সাথে আজীবন প্রেম করে  গেলেই ভাল হতো। এবার একটা হাসি দিয়ে বলল তোমাকে না??? কিপটে কোথাকার। তুমিও কিপটে হয়ে গেছো। আমাকে আগের মতো টাকা দাও না। তাড়াতাড়ি দাও তো টাকা। তারপর মানিব্যাগ টা এগিয়ে দিলাম। ও টাকা নিয়ে আমার কপাল একটা আদর দিয়ে আম্মুকে নিয়ে শপিং এ চলে গেল। আর এভাবেই ক্রমাগত চলতে থাকবে মধ্যবিত্তের ভালবাসার খুনশুটি ময় ভালবাসা।

(সমাপ্ত)

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত