মেয়েটার পিছনে এতোদিন ধরে লেগে আছি,এরপরেও মেয়েটা কথা পর্যন্ত বলে না।কিন্তু আমিও কম কিসে?? আমিও পিছনে পড়ে থাকব।দেখি কতোদিন আমায় ঘুরায়তে পারে। আজও বিকেল বেলায় তার বাসার সামনে দাঁড়িয়ে আছি,,,ওই তো বের হচ্ছে। কি সুন্দর মিষ্টি চেহারা, মায়াবী মুখ, কিন্তুু কি অহংকার এতোদিন ধরে তার পিছনে লেগে আছি, সামান্য কথাটা পর্যন্ত বলে না।এটাও তো বলতে পারে,,, এই যে আপনি আমায় প্রতিদিন লুকিয়ে লুকিয়ে দেখেন কেন???বা ফলো করছেন কেন? কিন্তু না একটা কথাও বলে না।
এই রে মেয়েটা তো চলে যাচ্ছে। আমি পিছনে পিছনে যাচ্ছি,, মেয়েটা পিছনে তাকিয়ে দেখে,আমি আজও তাকে ফলো করছি। রিমি দাঁড়া(অন্য একটা মেয়ে ওকে ডাকলো) যাক আজ এতোদিন পরে মেয়েটার নাম জানলাম। এতোক্ষনে মেয়েটা রিমির সাথে কথা বলা শুরু করছে। চল যাই (রিমির বন্ধু) ওরা দুই জনে মিলে একটা বাড়ির ভেতরে চলে গেলো। আমি অপেক্ষা করতে লাগলাম কখন আবার আসবে।প্রায় এক ঘন্টা পরে বাড়ি থেকে বের হলো। আমি আবার পিছনে পিছনে চলতেছি। ভাইয়া প্রত্যেকদিন আমাদের ফলো করেন কেন?? (রিমির বন্ধু) আমি না মা,,,মা মানে।কি বলবো ভেবে পাচ্ছি না।
আপনি যা চাইছেন তা কখনো সম্ভব না (মেয়েটা) কেন?? কি সম্ভব না?(আমি) আপনি দয়া করে আমার বন্ধুর পিছনে ঘুরবেন না কেন?? রিমি এবার আমার সামনে চলে আসলো আমার দিকে কেমন মায়া মায়া চোখে চাইলো। আমি তাকে বললাম, আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি রিমি(আমি) রিমি নিচের দিকে তাকিয়ে কান্না করছে। কি হলো কাঁদতেছ কেন?? কিছু তো বলো??(আমি) রিমি এবার কাঁদতে কাঁদতে চলে গেল আমি চুপচাপ হা করে দাঁড়িয়ে রইলাম,কি এমন বললাম যে কান্না করে চলে যেতে হবে।
আপনি রিমির পিছনে ঘুরা বন্ধ করেন(রিমির বন্ধু) কিন্তু কেন?? কারণ ও কথা বলতে পারে না। ও বোবা আমি বসে পড়লাম মাথায় হাত দিয়ে,,যার জন্য পিছনে এতোদিন ঘুরলাম সে নাকি বোবা। কি হলো??? জানতাম বোবা বলে ওর সাথে আপনি রিলেশন করতে পারবেন না। তাই ওকে প্লিজ বিরক্ত করবেন না।(মেয়েটা আর কোনো কথা না বলে চুপচাপ চলে গেলো)আমি সেখানেই বসে রইলাম।কেন জানি না দেখি চোখ দিয়ে পানি পরছে অনবরত। এতোদিন ওকে দূর থেকে ভালোবাসলাম,, আর আজ যখন জানলাম সে কখনো কথা বলতে পারবে না,,, তখন চোখ দিয়ে পানি পরতেছে। তাতে কি কথা বলতে পারবে না আমার সমস্যা নাই,,আমায় ভালো তো বাসতে পারবে।এতেই চলবে।
বাসায় এসে কেবল রিমির কান্না করা মায়াবী মুখটা আমার সামনে ভাসতেছে। এতো সুন্দর মায়াবী একটা মেয়ে,, অথচ কথা বলতে পারবে না।ডিসিশন করলাম এই মেয়েকেই ভালোবাসব। কিন্ত কালকে ওর সামনে যাব না।দেখব আমায় মিস করে কিনা। বিকেলে একটু আগেই রাস্তার পিছনের গাছের আড়ালে লুকিয়ে রইলাম। ওইতো বের হচ্ছে রিমি কেমন যেন মনমরা দেখাচ্ছিল। সামনে হাঁটছে আর একটু পরপর পেছন তাকাচ্ছে। আামায় না দেখে হয়তো ভাবছে,ওকে বোবা জানার পর থেকে হয়তো আমি ওকে ঘৃণা করে চল গেছি। সামনের রাস্তা থেকে ওর বন্ধু কে নিয়ে হাঁটছে। ওই মেয়েটাও পিছনে তাকিয়ে দেখে আজকে আর আমি তাদের পিছু নেই নাই।
ওই ছেলে আর কখনো আসবে না(রিমির বন্ধু) রিমি কেমন মনমরা হয়ে পিছনে তাকালো,দেখলো সত্যি এখনো ছেলেটাকে দেখা যাচ্ছে না।এখন ওর মুখটা আরো কালো হয়ে গেলো।হয়তো আমি এতোদিন ওর পিছু নেয়ার কারণে, আমাকেও ও ভালোবেসে ফেলছে। আমি ওইদিন চলে আসলাম আর ভাবতে লাগলাম কেমনে প্রপোজ করবো।রাতে একরকম টেনশন করতে করতে ঘুমিয়ে পড়লাম। পরের দিন চলে গেলাম অনেক দেরিতে।যাতে রিমির সাথে আসার সময় দেখা হয়। ওই যে আসছে।ওর বন্ধু ওকে বিদায় দিয়ে চলে গেছে, আমি এবার তার সামনে গিয়ে পাঁচ কালারের পাঁচটা গোলাপ দিয়ে প্রপোজ করলাম।
ও হয়তো ভাবছিলো আমি আর কোনোদিন ওর পিছু নিব না। ও গোলাপ গুলো নিয়ে আমায় জড়িয়ে ধরে কান্না করতে লাগলো। আমিও ওকে জড়িয়ে ধরলাম। ওকে নিয়ে একটু ঘুরলাম।কিন্তু একবারের জন্যও মনে হল না ও বোবা।রাতে ওর সাথে অনেকক্ষণ ফেইসবুকে চ্যাট করলাম। পরের দিন বিকেলে ও ওর বাড়ি থেকে বের হলো। আমি ওকে সাথে নিয়ে হাঁটছি, তুমি প্রত্যেকদিন বিকেলে কোথায় যাও ও ইশারায় বোঝালো ও ওই বাড়িতে প্রাইভেট পড়ে।
হাঁটতে হাঁটতে ওর বন্ধুর বাসার সামনের রাস্তা এসে পড়লাম।ওর বন্ধু দূর থেকে আমাদের একসাথে আসা দেখছিলো,,আর মনে হয় অনেকটা অবাক হচ্ছিল। তার সামনে চলে গেলাম।ও এতোক্ষনে আমার আর রিমির সম্পর্ক হয়ে গেছে বুঝে ফেললো। তিন জনে মিলে সারাদিন ঘুরলাম। রিমিকে বাসায় পৌঁছে দিয়ে চলে আসলাম। এভাবেই আমাদের দুষ্ট মিষ্টি সম্পর্ক চলতে লাগলো।
অবশেষে একটা কথা বলা যায়,,, সকল মানুষেরই ভালোবাসার অধিকার আছে। শুধু সুন্দর মনের মানুষ প্রয়োজন। প্রতিবন্ধী বলে কোনো কথা নেই। সবারই ভালোবাসার অধিকার আছে।