সমাজে অামার একটা মানসম্মান অাছে তুমি অামার মেয়েটা কে ফিরিয়ে দাও,
এইভাবে স্বর্নার বাবা রানা কে অনেক অনুরোধ করে যেনো স্বর্না কে তার বাবার কাছে পাঠিয়ে দেয়।
.
স্বর্না ও রানার রিলেশন হয় ফেইসবুক থেকে এরপর অাস্তে অাস্তে তারা অনলাইনের ভালবাসা ছেদ করে অফলাইনে চলে অাসে।
.
একগুয়েমি রানা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ডিপার্টমেন্টের ছাত্র তার বিপরিতে স্বর্না খুলনার একটা সরকারি ন্যাশনাল কলেজের ছাত্রী।
রানার এই একগুয়েমির জন্যই অাজ তাদের রিলেশন মৃত্যুপথ যাত্রী।
.
খুব মিষ্টি ও রোমান্টিকতা দিয়েই শুরু হয় তাদের রিলেশন বেশির সম্পর্কেই শেষ পযর্ন্ত এটা ধরে রাখতে পারে না।
তাদের ক্ষেত্রেও এর ব্যাতিক্রম হয়নি।
কয়েকদিন পর পরই রানা তার গাড়ি নিয়ে খুলনার উদ্দেশ্য রওয়ানা দিত….,
উদ্দেশ্য একটাই কাছ থেকে স্বর্না কে দেখা অপরদিকে স্বর্না তখন রানার সাথে সময় কাটাতো।
স্বর্না অপেক্ষা করতো কখন তার ভালবাসার মানুষ অাসবে…….
রানার অাসার পর কলেজ থেকে ফাকি দিয়ে সারা দিন তাঁরা একসাথে ঘুরে সন্ধার দিকে বাসায় ফিরতো।
এভাবেই সচারচর সন্ধা করে বাসায় ফিরায় তাঁর বাবা কিছুটা স্বন্দেহের অাভাস পেয়েছে তাই তো তাঁর বিয়ে ঠিক করে।
খবর টা যখন রানা জানতে পারে তখন সে ভাবতে পারছিল না তাঁকে ছেড়ে স্বর্না অন্য কারো হাত ধরে চলে যাবে।
.
নিজের ভালবাসা কে বাঁচিয়ে রাখতে স্বর্না কে নিয়ে একসাথে সারাজীবন কাটাতেই খুলনা থেকে স্বর্না কে ঢাকায় নিয়ে অাসে।
সেদিন রানা খুব সকালে গাড়ি নিয়ে খুলনায় চলে অাসে অপরদিকে স্বর্না কলেজের কথা বলে বাসা থেকে বের হয়ে রানার কাছে চলে এলো।
দু চাকার গাড়ি তার মতই ঘুরছে সন্ধার অাগেই তাঁরা ঢাকায় পৌছায়।
.
সৃর্যের অালো নিভে সন্ধা ঘনিয়ে এলো স্বর্নার বাসায় স্বর্নার খোজ নিতে লাগলো।
বাবা মায়ের টেনশন স্বর্নার নাম্বার অফ রাত প্রায় দশটা বেজে গেল তাঁদের অার বুঝতে বাকি রইলো না স্বর্না পালিয়েছে।
.
অাগে থেকেই তাদের সম্পর্কের কথা স্বর্নার বাবা জেনে গিয়েছিল তাইতো রানার নাম্বার পেতে বেশি একটা বেগ পেতে হয়নি।
রানার নাম্বারে কল করেই রানা কে অনেক অনুরোধ করে যেনো তাঁদের মেয়ে কে তাঁদের কাছে পৌছে দেয়।
স্বর্নার বাবার অনেক অতি অনুরোধেই তাঁর বাবার সম্মানের কথা ভেবে পরের দিন স্বর্না কে খুলনায় পাঠিয়ে দেয়।
.
স্বর্না কে পাঠিয়ে দেওয়াটাই ছিল রানার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল অার ভুলের মাশুল তো দিতেই হবে।
রানা হয়তো ভেবেছিল দু’জন ঠিক থাকলে স্বর্নার বাবা তাঁদের ভালবাসার দেয়াল হয়ে দাড়াতে পারবে না এসব ভেবেই স্বর্না কে সে পাঠিয়েছি।
রানার ভাবনার সাথে স্বর্নার ভাবনার একটুও মিল ছিল না তাইতো রানার ভাবনার উল্টোটা হলো।
.
খুলনাতে পৌছার পর স্বর্না যেনো হয়ে গেল অন্যরকম এক অচেনা স্বর্না।
রানা একের পর এক কল করেই যাচ্ছে কিন্তু স্বর্না দেখেও রিসিভ করছে না, মেসেজের পর মেসেজ করেই যাচ্ছে কিন্তু কোন মেসেজের রিপ্লে দিচ্ছে না।
এক পর্যায়ে বিরক্ত হয়ে কল রিসিভ করলো স্বর্না।
মৃত্যু থেকে যেনো বেঁচে উঠলো রানা ….
প্রিয় মানুষের পরিচিত কন্ঠ টা যেনো অপরিচিত হয়ে গেল রানা,
হয়তো স্বর্নার কাছ থেকে অাশা করেছিল কেমন অাছো এই কথাটি বলবে কিন্তু তা বলেনি।
সেদিন স্বর্না তাঁকে অনেক বকেছিল রানার সাথে মিসবেহেব করেছিল স্বর্নার শেষ কথাগুলো ছিল এমন।
বখাটে তুই অামার বাবার সম্মান নষ্ট করেছত! তোর সাথে অামার কোন সম্পর্ক নেই! অার কোনদিন অামায় ফোন দিবি না।
রানা কিছু বলতে চেয়েছিল কিন্তু তাঁর অাগেই ফোন কেটে যায়।
.
সেদিন রানা কান্না করেনি শুধু অবাক হয়েছে অার ভাবছে …..
কয়েকদিন অাগে যে মেয়ে অামার হাত ধরে বলেছিল অামায় ছাড়া বাঁচবে না সে মেয়ের অাজ এত্তো পরিবর্তন কিন্তু কি করে কিন্তু কি কারনে?
প্রশ্নটা রানার কাছেও অজানা উত্তর টা শুধু একমাত্র স্বর্নাই জানে।
এই একটা প্রশ্নের উত্তর জানতে স্বর্না কে ফিরে পেতেই বার বার ফোন মেসেজ করেই যাচ্ছে কিন্তু অপর পাশ থেকে স্বর্নার কোন সাড়া সেই।
.
দিনের পর দিন নিজের ভালবাসা কে হারানোর যন্ত্রনায় রানা এক রকম মানসিক রোগি হয়ে গেছে!
অপর প্রান্তে বসে থাকা স্বর্না হয়তো জানে না তাঁর মুখের কন্ঠ শুনার জন্য অপেক্ষা করে অাছে রানা নামের একগুয়ে একটি ছেলে!
রানা শুধু একটা প্রশ্নের উত্তর খুজে বেড়ায় কেনো স্বর্নার হঠাৎ এত্তো পরিবর্তন।
এই প্রশ্নটার উত্তর অামরাও জানি না একমাত্র স্বর্নাই জানে,
অার এই প্রশ্নের উত্তর খোজতে খোজতে রানা নামের ছেলেটা নিজের ভালবাসা হারানোর যন্ত্রনায় হয়তো পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে নিজের অস্তিত্ব এই ধরণী থেকে মুছে ফেলবে।