কিরে ভাই বের হচ্ছিস? পেছন থেকে দিদির ডাক শুনে থামলাম। ওর দিকে না ফিরেই হ্যা সূচক মাথা নাড়ালাম।“আমার একটা ছোট্ট কাজ করে দিবি প্লিজ। অফিসের এই পেপারগুলো একটু ফটোকপি করে দে না” “না। পারব না”“লক্ষ্মী ভাই , এই দেখ আমার পা কেটে গেছে নাহলে আমি নিজেই যেতাম।”
ফিরে তাকিয়ে দেখলাম আসলেই ওর পায়ের অনেকটা কেটে গেছে। কিন্তু কেটে গেলে কেটে যাক , তাতে আমার কি যায় আসে! আমি ওর কথার কোন গুরুত্ব দিলাম না।“পারব না” বলে কয়েক ধাপ সিঁড়ি নেমে গেলাম। কিন্তু ও যেভাবে ছিল সেভাবেই দাঁড়িয়ে আছে। আর কয়েক ধাপ নেমেই আবার উপরে উঠে ওর হাত থেকে কাগজ গুলো নিয়ে নিচে নেমে গেলাম। আশ্চর্য মাঝে মাঝে নিজের কাজ দেখে নিজেই অবাক হয়ে যাই। আমার উচিত ছিল ওর কাজটা করে না দেওয়া। কিন্তু কেন করতে যাচ্ছি নিজেই বুঝলাম না।
কেন করব? ও যে আমার সৎ বোন। সৎ বোন কখনও আপন হয় না। আর যেহেতু আপন হয় না সেহেতু আমি ওর কাজ করবো কেন ? আসলে দোষটা ওরই কারণ এই পর্যন্ত আমার এই দিদিটার কোন দোষ আমি খুঁজে বের করতে পারিনি। প্রতিনিয়ত ওর কিভাবে দোষ বের করা যায়, কিভাবে ওর সাথে ঝগড়া করা যায় , কিভাবে ওকে মায়ের বকুনি খাওয়ানো যায় , কিভাবে ওকে পচানো যায় সেই চেষ্টায় থাকি আমি। কিন্তু আমার স্বভাবের ঠিক উলটো স্বভাব ওর আমি কোন একটা মিথ্যা দোষ চাপালে ও মাথা পেতে নেয়, আমি ঝগড়া শুরু করার আগেই ও সারেন্ডার করে ফেলে, মায়ের বকুনি খাওয়াতে অবশ্য পারিনি এখনও পর্যন্ত কারণ আমার মা টাও না ওকে অনেক ভালবাসে।
কিন্তু কেন ভালবাসে? ও তো মায়ের মেয়ে না। শুনেছি , দিদির মা যখন মারা যান তখন দিদির বয়স ছিল মাত্র আট মাস। মানে হল , ঠিকমত মায়ের দুধও পায়নি আমার এই দিদিটা। তখন ওকে দেখার মত কেউই ছিল না। তারপর আমার বড় কাকারা সবাই মিলে বাবাকে আবার বিয়ে করান। যদিও আমার বাবা বিয়ের ব্যাপারে অমত ছিলেন তারপরেও দিদির দিকে তাকিয়ে হলেও বিয়েটা করতে বাধ্য হন। কিন্তু মাকে শর্ত দিয়েছিলেন যে তিনি যেন এই একটা ছোট্ট পরীকে নিয়েই খুশি থাকেন। মাও শর্ত মেনে নিয়েছিলেন কিন্তু ঘটনাটা ঘটালো দিদিই। এর মধ্যে আমার মত এক অপদার্থকে পৃথিবীর আলো দেখার সূযোগ করে দিল সে। ওর যখন ছয় বছর বয়স তখন নাকি একদিন বাবার কাছে আবদার করে বসল ওর একটা ছোট ভাই দরকার। এমনভাবে বায়না করল বাবা আর অমত করতে পারলেন না।
ব্যস পৃথিবীর ভার বাড়াতে আমার মত আরেক অপদার্থের জন্ম হল। মায়ের মুখে শুনেছি আমি নাকি অনেক কাঁদতাম ছোটকালে। আর আমার কান্নার নাকি একটাই ওষুধ ছিল দিদির কোল দিনের প্রায় পুরো সময়টা জুড়েই আমি নাকি ওর কোলেই থাকতাম। ঘুমোতামও ওর সাথেই। মায়ের কাছে শুধু খাওয়ার সময় যেতাম। আর বাবা তো আমাকে আদর করার চান্সই পেয়েছেন কিনা সন্দেহ আছে সে যাই হোক একসময় সেই ছোট ছোট ভাই-বোন দুটো বড় হতে শুরু করল। কিছু দুষ্টুমি , কিছু ঝগড়া, কিছু মজার স্মৃতি সবমিলিয়ে ভালই চলছিল দিন কিন্তু আমাদের পরিবারের এই স্বর্গীয় সুখ দেখে উপরওয়ালার বোধহয় আমাদের প্রতি হিংসে হয়ে গেল। হঠাৎ করেই আমাদের থেকে বাবাকে ওনার কাছে নিয়ে গেলেন।
সামনে পেলে হয়ত উনাকে একবার জিজ্ঞেস করে দেখতাম যে, আমাদের অপরাধটা কি ছিল? সুখে থাকাটা কি অনেক বেশি অপরাধ? তখন দিদি ছিল ভার্সিটির ৫ম বর্ষের ছাত্রী আর আমি এইচ.এস.সি. দেব মাত্র আমাদের নিয়ে মা যেন এক অকূল পাথারে পড়ে গেলেন। ঠিক সেই সময়ে দিদি এগিয়ে এলো সংসারের হাল ধরতে পড়ালেখার পাশাপাশি একটা পার্ট-টাইম জব নিয়ে নিল ও। স্নাতক শেষ করে নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে একচুল পরিমাণও চিন্তা করে নি ও। সাথে সাথেই চাকরীতে জয়েন করে ফেলে। কে জানতো হয়ত সেদিন ও সেই সেক্রিফাইস না করলে আমরা আজ এ অবস্থায় আসতে পারতাম না যাই হোক তারপরেও ও আমার সৎ বোন। কেন? কারণ সমাজ বলে। সমাজ অবশ্য এও বলে যে ওকে তাড়াতাড়ি বিয়ে দিয়ে বিদেয় করে দিতে , নাহলে পরে হয়ত আবার বাবার সম্পত্তির ভাগ চেয়ে বসবে।
আমিও আবার মায়ের অবাধ্য ছেলে হলেও সমাজের কথার বাধ্য ছেলে। সমাজ যেহেতু বলে সেহেতু দিদি আমার সৎ বোনই বটে। কিন্তু কয়েকটা প্রশ্ন আমার মাথায় কেন আসেনা? দিদি যখন কোলে নিয়ে আমার কান্না থামাতো, যখন সারারাত আমার মলমূত্রে একাকার হয়ে আমার পাশেই ঘুমিয়ে থাকত তখন কোথায় ছিল এই সমাজ? বাবাকে হারিয়ে যখন আমরা জীবন সমুদ্রে হাবুডুবু খাচ্ছিলাম তখন কোথায় ছিল এই সমাজ? হয়ত প্রশ্নগুলো অমূলক বলেই আমার তীক্ষ্ণ মস্তিস্কে ওরা জায়গা পায় না। ওহ! আচ্ছা আপনাদের বলতে তো ভূলেই গেছি। আমি আবার এখন ডক্তারি পড়ছি।কয়দিন পর সমাজের প্রথম শ্রেনীর নাগরিক হব। তাই-ই সমাজের কথার আমার কাছে অনেক দাম। কিন্তু কিভাবে ভর্তি হলাম ডাক্তারিতে? কার দ্বারা হলাম? এই প্রশ্ন গুলো আবার সমাজ করে না যাই হোক, দিদির পেপারগুলো নিয়ে ফটোকপির দোকানে দিলাম।
দোকানদার বলল দশ মিনিট লাগবে। তারপর দেখা গেল , এই দশ মিনিটে কোন এক অজানা কারণে আমি পাশের ডিসপেনসারির দোকানটাতে চলে গেলাম এবং একটা মলম, পেইনকিলার আর কিছু ব্যান্ডেজ কিনে ফেললাম কাজগগুলো আর ওষুধের প্যাকেটটা দিদির হাতে দিয়েই আবার নেমে গেলাম নিচে পেছন থেকে দিদি জিজ্ঞেস করেছিল অবশ্য প্যাকেটটা কিসের কিন্তু কেন জানি উত্তর দিতে পারলাম না সেদিন বন্ধুরা সবাই মিলে একটা রেস্টুরেন্টে গিয়েছিলাম খেতে, কিন্তু কেন জানি খেতে পারলাম না তেমন কিছুই। ওরা বলল প্যাকেটে করে বাসায় নিয়ে যেতে। আমিও তাই-ই করলাম প্যাকেটটা বাসায় নিয়ে আসলাম। কিন্তু বাসায় এসেও দেখলাম আসলেই আমার পেটে জায়গা নেই। মাকে বললাম দিদি আসলে যেন দিদিকে দিয়ে দেয় ওটা।
কিছুক্ষণ পর দিদি বাসায় ঢুকেই মাকে খাবার দিতে মানা করল, কারণ ওর অফিসের কি কনফারেন্স ছিল, ওখানে খেয়ে এসেছে আর সাথে আমার জন্যও একটা প্যাকেট নিয়ে এসেছে। মা বলল, “সেকি রে , তোর ভাইও তো তোর জন্য খাবার নিয়ে এল, দেখ দেখি কি কান্ড।”দিদি থমকে গেল। কিছুক্ষণ থেমে একটা হাসি দিয়ে বলে উঠল, “ওমা তাই নাকি ? আচ্ছা দাও দাও। আমার অবশ্য পেট ভরে নি। ”তারপর আমাকে দেখিয়ে দেখিয়ে ও আমার আনা প্যাকেটটা খেয়ে ফেলল। ওকে দেখে আমারও কেমন জানি ক্ষিদে পেয়ে গেল। আমিও ওর মতই বসে ওর আনা প্যাকেটটা সাবাড় করে ফেললাম।
মাঝরাতে মায়ের চেঁচামেচিঁতে ঘুম ভেঙ্গে গেল আমার। উঠে দেখলাম মা বাথরুমের সামনে আর ভেতরে দিদি বমি করছে। বুঝতে বাকি রইল না আমাকে খুশি করতে গিয়েই ওর এই অবস্থা । তারপরেও আমি কি হয়েছে জিজ্ঞেস করতে গেলাম , মাও বলতে শুরু করল , “আরে বলিস না , তোর প্যাকে” মাকে থামিয়ে দিয়ে দিদি বলল, “কিছু না রে ভাই। মাঝেমাঝে এমন হয় আমার ” হা করে কিছুক্ষণ তাকিয়ে ছিলাম ওর দিকে। ভাই-বোনের মাঝে একটা ছোট নাটক হয়ে হয়ে গেল যেন। দিদিও জানে ও মিথ্যে বলছে আর আমিও জানি কিন্তু কেউই কিছু বললাম না। কিন্তু কেন ওর এই নাটক ? কেন আমাকে খুশি রাখার প্রচেষ্টা ? আমিও তো ওর সৎ ভাই। আর সৎ ভাইও কখনও আপন হয় না। তাহলে এই সৎ ভাইয়ের জন্য এতোকিছু কেন ?
হায়রে সমাজ !!! এই প্রশ্নের উত্তর হয়ত এই সমাজ দিতে পারবে না। আর সমাজের বাধ্যগত এই যে আমি !!! আমিও কখনও সমাজকে এই প্রশ্ন করবো না পরদিন ছুটি ছিল। দিদিরও ছুটি। মা বলছিল দিদিকে নিয়ে কোথাও ঘুরে আসতে। কিন্তু আমি একদম রাজি না। তার অবশ্য একটা যুক্তিযুক্ত কারণও আছে। আমার দিদিটা অনেক সুন্দর। বুঝতেই পারছেন ওকে নিয়ে রাস্তায় হাঁটা আসলেই অনেক কষ্টকর। মাঝেমাঝে মহল্লায় ওকে নিয়ে এদিক ওদিক যাওয়ার সময় বাজে ছেলেরা বাজেভাবে তাকায় তখন ইচ্ছে করে ধরে ছেলেগুলোর চোখ উপড়ে ফেলি। কিন্তু আমার মধ্যে এমন ইচ্ছে আসে কেন? ও তো আমার সৎ বোন। ওর দিকে যে যেভাবে তাকাক না কেন আমার কি আসে যায় ?
যাই হোক দিদিকে কোথাও ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার বদলে আমি নিজেই বাইকটা নিয়ে বের হয়ে গেলাম। উদ্দেশ্য জানি না। বেশিক্ষণ অবশ্য ঘোরা হয়নি আমার। মহল্লার শেষ মাথায় একটা ঢালু রাস্তা দিয়ে নামছিলাম হঠাৎ রাস্তার শেষ মাথায় একটা কুকুর সামনে পড়ে গেল আর এই কুকুরটার সাথে আমার একটা ভূল বোঝাবুঝি হয়ে গেল। ব্যাপারটা হল কুকুরটাকে সাইড দিতে গিয়ে আমি যেদিকে বাইক চালালাম কুকুর মহাশয় ঠিক ওদিকেই দৌড় দিলেন। তাই ঢালুর মধ্যেই আমাকে হার্ডব্রেক চেপে রাস্তার বাইরে চলে যেতে হল এবং ফলাফল হিসেবে আমি আর আমার বাইক দুজনই চিৎপটাং তেমন বেশি কিছু হয়নি পায়ের খানিকটা কেটে গেছে। আর এন্টিবায়োটিকের চাপে একটা বড়সড় জ্বর উঠে গেছে। আর সেই জ্বরে আমি প্রায় ২৪ঘন্টা অচেতন হয়ে পড়ে রইলাম। এরপরের দিন ভোরে যখন ঘুম ভাঙ্গল তখন দেখি দিদি আমার মাথার কাছে ঘুমাুচ্ছে।
বাকিটুকু বুঝতে আমার আর বাকি রইল না। উঠে বসে কিছুক্ষণ ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম। চোখের কোণে এখনও কিছু জল জমাট বেঁধে আছে। আর চোখের নিচের কালি দেখে বোঝাই যাচ্ছে কদিন ঘুমায়নি ও হঠাৎ নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে অসহায় মনে হতে লাগল। কেন আপু দিদি ভাল আর কেন আমি এতো খারাপ? কেন ও আমার আপন বোনের থেকেও বেশি কিছু? চিৎকার করে যে কাঁদব সেই সুযোগও নেই। তাই পারলামও না কাঁদতে। আমি এমন নিষ্ঠুর যে কখনও আমার চোখে জলও আসে না। সেদিনও আসল না ধীরে ধীরে দিন গড়াতে লাগল। একসময় সকাল হল, দিদির ঘুম ভাঙল আমাকে সুস্থ দেখে ওর দেহে প্রাণের সঞ্চার হল, মুখে এক চিলতে হাসিও দেখতে পেলাম কিন্তু ওই হাসির আঁড়ালে আমার কেন যেন মনে হতে লাগল ও কিছু একটা লুকোচ্ছে।
কি লুকোচ্ছে আমি বুঝতে পারলাম না। জিজ্ঞেসও করলাম না। আসলে জিজ্ঞেস করতে পারলাম না বলা চলে। একসময় ওর অফিসের টাইম হয়ে গেল। মা এল আর ও চলে গেল। তারপর মায়ের কাছ থেকেই শুনলাম সব ঘটনা আজ দিদিকে বরপক্ষ দেখতে আসবে। অনেকদিন ধরেই ছেলে খোঁজা হচ্ছিল। কিন্তু দিদির সাথে মানানসই ছেলে পাওয়া যাচ্ছিল না। এবার নাকি একটা ভাল ছেলে পাওয়া গেছে। আজই নাকি ওরা দেখতে আসবে। আমার ঠিক খুশি হওয়া উচিত ছিল কিন্তু কেন জানি আমার বুকের বাম পাশে একটা চিনচিনে ব্যাথা আরম্ভ হয়ে গেল। কিছু একটা বলতে চাইছি কিন্তু বলতে পারছি না তাই গলায় ব্যাথা শুরু হয়ে গেল। হঠাৎ কি করব কিছুই বুঝতে পারলাম না, মানে কিংকর্তব্যবিমূড় হয়ে গেলাম অনেকটা।
মা চলে যাবার পর ঘরের মধ্যে পায়চারী শুরু করে দিলাম। কেন জানি সবকিছু অসহ্য লাগছে আমার। ছেলেপক্ষ বলেছে দুপুর ১টার দিকে আসবে। দিদি হয়ত এর আগেই অফিস থেকে ফিরবে আমার কেন যেন ঘরের মধ্যে দম বন্ধ হয়ে আসছে। কোনকিছু না বলেই বেরিয়ে গেলাম ঘর থেকে। হাঁটতে থাকলাম রাস্তায় কোথায় যাচ্ছি আমি নিজেও জানি না। পৃথিবীটা বড্ড অচেনা লাগছে। মনে হচ্ছে অনেক বড় কিছু জীবন থেকে হারিয়ে ফেলেছি। এমন কিছু যেটা ছাড়া জীবন অসম্ভব।
আর কোনদিন হাজার চেষ্টা করেও সেটা আর ফিরে পাব না ঘুরতে ঘুরতে কখন যে বিকেল হয়ে গেছে টেরই পেলাম না। হঠাৎ মনে পড়ে গেল ঘরের কথা। এতোক্ষণে হয়ত মা আর দিদি আমার জন্য পাগল হয়ে গেছে। তখনই মনে পড়ল মোবাইলের কথা সঙ্গে সঙ্গে খুলে দেখলাম সাতাশ টা মিসড কল আর তিনটে মেসেজ। তিনটাই দিদির দেওয়া আমি কোথায় ওর উপর রাগ করেছি কিনা ও অনেক সরি এগুলোই হল মেসেজ গুলোর সারমর্ম ওকে অনেক দেখতে ইচ্ছে করল হঠাৎ তাই চলে এলাম বাসায় মা এসে বলল, “কিরে কই ছিলি সারাদিন? আমার কথা বাদ দে তোর দিদির কথা তো অন্ততপক্ষে ভাবতে পারতিস” আমি বললাম,“কেন? কি হয়েছে ?”
মা বলল, “ছেলে পক্ষকে তো ফিরিয়ে দিয়েছে আর সারাটা দিন তোকে ফোন করেছে আর কেঁদেছে। কিছুই খায়নি এই কিছুক্ষণ আগে কাঁদতে কাঁদতেই ঘুমিয়ে পড়েছে মেয়েটা” আমি কিছুই বললাম না। চুপি চুপি দিদির রুমে গেলাম। দেখি ছোট্ট একটা মেয়ের মত বিছানার একপাশে গুটি মেরে শুয়ে আছে ও। ওর সামনে গিয়ে হাটু গেড়ে বসলাম এমনিতেই বিশ্বসুন্দরী, আমার দিদিকে হালকা সাজে আজ সত্যিই পরীর মতই লাগছে।
কিন্তু চোখের কোনে জমে থাকা অশ্রুগুলো আমার অস্তিত্যকেই যেন নাড়া দিয়ে বসল খুব ইচ্ছে করছে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে বলি, “দিদি তুই এতো ভাল কেন? তোকে ছাড়া আমি থাকতে পারি না কেন? তোকে যে আমি অনেক ভালবাসি কিন্তু মুখ ফুটে কখনও বলতে পারলাম না। আদৌ পারব কিনা কে জানে” কিন্তু এবারও পারলাম না আর হয়ত পারবও না। পারার হয়ত দরকারও নেই কারণ আমি জানি আমার দিদি জানে আমি ওকে কত্তো ভালবাসি , হয়ত ওর মত পারব না কিন্তু আমার মত করে হলে।… ওকে অনেক ভালবাসি …