মায়াবী কন্যার প্রেমে

মায়াবী কন্যার প্রেমে

-আমি তোমাকে ভালোবাসি। (আমি) আজকেও তুমি আমাকে বিরক্ত করতে আসছো?(রিমি) আমি সত্যি তোমাকে খুব ভালোবাসি। কিন্তু আমি যে তোমাকে ভালোবাসি না। কেন? ভালোবাসলে সমস্যা কি তোমার?? এতো তর্ক কেন করছো? আজ প্রায় একমাস হয়ে গেছে তুমি আমার পিছনে ঘুরাঘুরি করছো। লজ্জা করে না তোমার?? আমি যে তোমাকে খুব ভালোবাসি। শেষবারের মতো বলছি, আমার পিছনে ঘুরে কোনো লাভ নাই, বলেই ক্লাস রুমে চলে গেল। আমি ও পিছু পিছু ক্লাসে চলে গেলাম।

কলেজ শেষে রিমির পিছু পিছু হাঁটতে লাগলাম।কারন ওর বাসা আর আমার বাসা একটাই। ওরা থাকে নিচ তলায় আর আমার ২ তলায়। বাসায় গিয়ে ফ্রেশ হয়ে,,খেয়ে ঘুমিয়ে পরলাম। বিকেলে ঘুম থেকে ওঠে একটু ছাদে গেলাম। গিয়ে দেখি রিমি ফুলগাছে পানি দিচ্ছে। কি করছো? (আমি) কানা নাকি? দেখোনা কি করছি? আমি আর কোনো কথা বললাম না, কারণ খুব রেগে আছে। রাগলে ওকে হেব্বি লাগে। আর চেহারায় কি যে মায়া, তাই দেখেই তো ওর প্রেমে পড়ছি।

পরেরদিন কলেজে গিয়ে আবার প্রপোজ করলাম, সিরায়াসলি আমি তেমাকে খুব ভালোবাসি রিমি, কিন্তু এবার আমার গালে কষে কয়েকটা চড় দিলো, আর অনেক কথা বলে অপমান করলো। আমি আর ক্লাস না করে বাসায় চলে গেলাম। কলেজ ছুটির পরে, রিমি যখন রাস্তা দিয়ে হাঁটছে তখন পিছনে তাকিয়ে দেখে আজকে আর ওর পিছনে নিরব নেই (নিরব আমার নাম) ও একটু মনে মনে খুশি হয় ভাবছে, আরো আগে অপমান করলেই আর এতোদিন আমার পিছনে ঘুরতো না। আমি সেদিন বিকেলে আর ছাঁদে গেলাম না।

রাতে আম্মুকে ফোন করে পরেরদিন মামার বাড়ি চলে গেলাম। কয়েকদিন মামার বাড়ি ঘুরলাম, আসার সময় আমার মামাতো বোনকে সাথে নিয়ে আসলাম। পরেরদিন কলেজে গেলাম, কিরে এতোদিন কই ছিলি? (সাখাওয়াত) মামার বাড়ি ঘুরতে গেছিলাম। ওওও চল ক্লাসে চলে যাই। ক্লাসে গিয়ে দেখি রিমি বসে আছে, আমি না দেখার ভান করে একদম পেছনে গিয়ে বসলাম। ক্লাসে আর রিমির দিকে তাকালাম না, কারণ ওর অপমান গুলো ভুলার মতো না।

এদিকে রিমি ভাবছে কলেজ শেষে নিরবের কাছে মাফ চাইবে। কিন্তু কলেজ ছুটির পর আমি আগেই বাসায় চলে গেলাম। রিমি রাস্তায় আর আমাকে পেলো না। বিকেলে শুয়ে আছি নিজের রুমে, এমন সময় কে যেন কলিং বেল দিচ্ছে। আমি গিয়ে দরজা খুলে দিলাম। খুলতেই দেখি রিমি। কি চাই? (আমি) ভেতরে আসতে দিবে না? (রিমি) আসুন। আমি আম্মুকে ডেকে দিচ্ছি। আমি তো তোমার সাথে কথা বলতে এসেছি। আমার সাথে আপনার কি কথা থাকতে পারে? হঠাৎ করে তুমি থেকে, আপনি বলছো কেন? অপরিচিত মানুষকে কি বলবো তাহলে?

আমাকে মাফ করা যায় না? (রিমি) আপনি তো কিছু করেন নাই, তাইলে মাফ চাচ্ছেন কেন? রিমি এবার কেঁদে দিলো। প্লিজ এসব নেকা কান্না বন্ধ করেন। আমি তোমাকে এ কয়দিনে খুব মিস করছি, আমি তোমাকে ভালোবাসি নিরব। রিমি এবার কেঁদে দিলো। প্লিজ এসব নেকা কান্না বন্ধ করেন। আমি তোমাকে এ কয়দিনে খুব মিস করছি, আমি তোমাকে ভালোবাসি নিরব। কিন্তু আমি আপনাকে ভালোবাসি না। প্লিজ এভাবে বলো না, তুমিই তো আগে ভালোবাসি বলতে (রিমি) এখন তো আর বলি না। তাই আমায় আর বিরক্ত করবেন না। দয়া করে এভাবে বলো না, আমি সত্যি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবো না।

আমি আপনাকে ভুলে গেছি, আপনিও যদি আমাকে ভুলে যান, তাইলে আপনার জন্যই মঙ্গল। আমি আর রিমির সামনে থাকলাম না, আমার সাথে যা কিছু করছে এতো সহজে ভুলার মতো না। পরেরদিন কলেজে গেলাম, কেমন আছো???(রিমি) উত্তর না দিয়ে, ক্লাসে চলে গেলাম, একদম শেষের একটা ফাঁকা বেঞ্চে বসলাম। রিমি ক্লাসে আমার বেঞ্চ খালি দেখে, আমার সাথে বসলো। আমি আর কিছু করতেও পারছি না। তাই চুপচাপ ক্লাস করতে লাগলাম। রিমি একটু পরপর আমাকে খোঁচা দিচ্ছে, আর আমি চুপচাপ সহ্য করছি। প্রথম ক্লাস করেই বেরিয়ে পড়লাম। গাছের নিচে গিয়ে বসলাম। পিছু পিছু রিমিও আসলো। রিমিকে দেখে আমি উঠে আসতে চাইলাম, আমার হাত ধরে ফেললো। আমার হাত ছাড়ুন। আমাকে কি মাফ করা যায় না? আমি কি এতোটাই খারাপ।

আপনি আমার কাছে মাফ চাইছেন কেন? আর আপনি খারাপ হতে যাবেন কেন? খারাপ তো আমি, এতোদিন আপনাকে বিরক্ত করছি। এখন যে তোমার বিরক্ত গুলো খুব মিস করছি। আমার ভালো লাগছে না, আমি বাসায় চলে যাবো। আমিও তোমার সাথে যাবো। না, সেই অধিকার আপনার নাই। প্লিজ এভাবে বলো না (কেঁদে) আমি আর সেখানে থাকলাম না, এসেই রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছি। কিন্তু একটা রিকশাও দেখা যাচ্ছে না এই তো একটা রিকশা আসছে। এই রিকশা যাবে? কোথা থেকে রিমি এসে রিকশায় উঠে পড়লো। এটা কি হলো? কেন? কি করছি আমার রিকশায় আপনি উঠছেন কেন? তোমার রিকশা? তা তুমি রিকশা চালাও কবে থেকে?

এবার আমার খুব রাগ হলো, আর কোনো কথা না বলে আমি হাঁটতে লাগলাম। এখন কথা বললে কথা শুধু বাড়বে।কিন্তু একটা রিকশাও আর দেখতে পাচ্ছি না। উঠে পড়ো। আজ আর রিকশা পাবে না।(রিমি) বাসাও অনেক দূরে। কি করবো ভাবছিলাম। এতো ভেবে লাভ নেই। উঠে পড়ো। অগত্যা আমি উঠে পড়লাম। এই এতো চেপে বসছো যে, পড়ে যাবে তো? পড়বো না। আমাকে কি মাফ করা যায় না? এসব কথা বললে আমি নেমে যাবো। রিমি চুপচাপ কাঁদছে আমার ও কিছু করার নাই। বাসার সামনে চলে আসলাম। ভাড়া দিয়ে আমি চলে আসলাম। সন্ধ্যায় একটু ছাঁদে গেলাম কিন্তু একি?

কে যেন ছাঁদের রেলিং এর উপড়ে দাঁড়িয়ে আছে। এতো রিমি, তার মানে আত্নহত্যা করতে যাচ্ছে। তাড়াতাড়ি গিয়ে ধরে ফেলে নিচে নামিয়ে আনলাম। আমাকে বাঁচালেন কেন? আমি আপনার কে? তুমি আমার সব। কি? হে। এতোদিন আমাকে কষ্ট দিছো যে? আমি তোমাকে ভালোবাসা কি তা বুঝাইলাম, আর একটু পরীক্ষা করলাম। তা কি বুঝলে?

আমি আর তুমি কেউ কাউকে ছাড়া থাকতে পারবো না। তুমি খুব পঁচা। আমাকে এবার প্রপোজ করো। না। করবে না? (আমার কান ধরে) করছি তো ওকে করো।

আই লাভ ইউ…আই লাভ ইউ 2 অবশেষে আমাদের ভালোবাস অবিরাম চলতে লাগলো।

(সমাপ্ত)

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত