আমার মধ্যে কিছুটা মেয়েলী ভাব আছে। একথা সবাই বলে। বন্ধুবান্ধবরা বলে, মা-বাবা ও বলে। আমার নামটা ও মেয়েলী। শ্রাবণ। মাকে সেদিন জিজ্ঞাস করলাম, “মা আমার নাম শ্রাবণ রাখলে কেন? এটা তো মেয়েদের নাম।” মা বলল, “তোর জন্মের আগেই আমি ঠিক করেছিলাম ছেলে হোক মেয়ে হোক নাম রাখব শ্রাবণ।” আমি হতাশ হয়ে মায়ের দিকে তাকিয়ে রইলাম। তবে একটা সত্য কথা হচ্ছে শ্রাবণ নামটার মধ্যে একটা রোমান্টিক ভাব আছে। তাই আমার মধ্যেও রোমান্টিক ভাব অতি প্রবল। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস! আমার এই রোমান্টিকতার অতল সাগরে কোন মেয়ে হাবুডুবু খায় না। বহু চেষ্টা করেছি, বহু বিনিদ্র রাত কাটিয়েছি, বহু দিবাস্বপ্ন দেখেছি। কিন্তু কাজ হয় নি। তবে আমি হাল ছেড়ে দিই নি। বর্তমানে ও এক সুন্দরী ললনার মন জয় করার চেষ্টা করছি।
সুন্দরীর সাথে আমার দেখা হয় ছাদে। আমি প্রতিদিন ছাদে উঠি। আর বাইলোকুলার দিয়ে বিভিন্ন ছাদের দিকে নজর রাখি। সেদিন ও অন্যদিনের মতো ছাদে উঠেছিলাম। হঠাৎ পাশের ছাদে আবিষ্কার করলাম রূপসী মেয়েটিকে। আমি মনের অজান্তে গেয়ে উঠলাম “একটা ছিল সোনার কন্যা মেঘবরন কেশ।” আমার কর্কশ কন্ঠ শুনে কার্নিশে বসা কাকগুলি উড়ে গেল। আমার পাশে ছিল আমার ছোটভাই রিয়াজ। আমার চেয়ে দু’বছরের ছোট রিয়াজ। তবে সম্পর্কটা একদম বন্ধুর মতো। রিয়াজ চোখ বড় বড় করে বলল “ভাইয়া আমার তো পড়ে না চোখের পলক অবস্থা। এই মেয়েকে তো আগে দেখে নি।”
আমি: নিশ্চয়ই পাড়ায় নতুন এসেছে।
রিয়াজ: যাক, ভালোই হলো। অনেকদিন ধরে ভাবছিলাম কোন মেয়ের সাথে ভাব জমাবার চেষ্টা করব। এবার মনে হয় সে সুযোগ হয়েছে।
আমি রিয়াজের মাথায় একটা চাটি বসালাম। থমথমে গলায় বললাম, “ছিঃ!ছিঃ! বড় ভাই এখনও প্রেমিকাবিহীন। সেদিকে তোর কোন নজর নেই। তুই দেখি selfish এর মতো স্বার্থপর।”
রিয়াজ জোরে হেসে উঠল। আমি ওর হাসি মাঝপথে থামিয়ে দিয়ে বললাম, “খবরদার এই মেয়ের দিকে নজর দিবি না। আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়ে এই মেয়ের মন জয় করব।” রিয়াজ খুব ভাল। মোটেও স্বার্থপর নয়। আমার কথায় সহজেই রাজী হয়ে গেল। বলল, “আচ্ছা ঠিক আছে। তোমার জন্য না হয় একটু ত্যাগ স্বীকার করলাম।” আমি খুশিতে বত্রিশটা দাঁত বের করে বললাম, “এই তো লক্ষী, পক্ষী, সোনা, মাছের পোনা।”
: সোনা পর্যন্ত ঠিক ছিল, আবার মাছের পোনা কেন?
: আদর করে বলছিলাম। রিয়াজ, আজ থেকে আমি ছাদেই থাকব। ছাদের এই ছোট রুমটায় হবে আমার আবাস।
রিয়াজ আস্তে আস্তে বলল, “যতই করো আবাস! হয়ো না জ্যান্ত লাশ।”
: কি বললি?
: না কিছু না। Best of luck for your new mission.
সুন্দরীর নাম নিঝুম। সব সুন্দরীর মতো এই সুন্দরী ও অহংকারী। আমি বহুদিন কথা বলার চেষ্টা করলাম। কিন্তু পাত্তাই পেলাম না। সেদিন অবশ্য কথা বললাম।
আমি বললাম, “কেমন আছেন, নিঝুম?”
: ভাল নেই।
: কেন, নিঝুম?
: যেভাবে সারাদিন ড্যাবড্যাব চোখে তাকিয়ে থাকেন তাতে তো ভাল থাকা খুব মুশকিল।
: ছিঃ! ছিঃ! কি বলছেন এসব?! আমি সারাক্ষন ড্যাবড্যাব চোখে আপনার দিকে তাকিয়ে থাকি?!!
: অবশ্যই। সারাদিন ছাদে থাকেন কেন? আর আমি বাইরে বেরুলে মোড়ের ওই দোকানটায় দাড়িয়ে থাকেন কেন?
আমি মিনমিন করে বললাম, “ইয়ে মানে ছাদে সুন্দর বাতাস, সুন্দর পরিবেশ, সুন্দর জোৎস্না ———।”
: হয়েছে। হয়েছে। আর বলতে হবে না। কবিতা লেখেন নাকি?
আমি লাজুক চোখে তাকিয়ে বললাম, “তা একটু আকটু লিখি।”
: বাহ ভাল তো। একদা ছাদে এক কবি বসবাস করিত, কোন মেয়ে দেখলেই সে তার পিছু নিত।”
আমি হতবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম। নিঝুম হাসতে হাসতে চলে গেল।
সেদিনই নিঝুমকে নিয়ে ১২০ লাইনের একটা ছোট কবিতা লিখলাম। শুধু কবিতা লিখেই ক্ষান্ত হলাম না। একটা প্রেমপত্র ও লিখলাম। প্রেমপত্রের শুরুটা এমন,
“নিঝুম তুমি আমার মনের আসমানের মাঝে ময়দার রুটির চেয়ে নরম আমাবশ্যার চাঁদ।”
মনে সিদ্ধান্ত নিলাম যে করেই হোক কবিতা আর প্রেমপত্রটি নিঝুমকে দিতে হবে। সাথে অবশ্য একগুচ্ছ গোলাপ ও দিতে হবে। আমার পরিকল্পনার কথা রিয়াজকে খুলে বললাম। রিয়াজ সব শুনে কেমন জানি বিমর্ষ হয়ে গেল। ভীত গলায় বলল, “এত তাড়াতাড়ি প্রেম নিবেদন। যদি চড় মারে।”
আমি করুন সুরে বললাম, “ছিঃ। এরকম অলুক্ষণে কথা বলতে হয় না। বুকে ধাক্কা লাগে।”
তবে আমি রিয়াজের কথা একেবারে উড়িয়ে দিলাম না। রাতের বেলা নিজেই নিজের মুখে চড় মেরে প্র্যাকটিস করতে লাগলাম। রিয়াজ চড় মারা দেখে বলল, “ভাইয়া আম্মার হিলওয়ালা স্যান্ডেলটা এনে দিব? আস্তে আস্তে মুখে মারতে থাকো। After all প্র্যাকটিস থাকুক।” রিয়াজ গলা ফাটিয়ে হাসতে লাগল। আর আমি চোখ পাকিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম।
এরপর কয়েকদিন নিঝুমের কোন পাত্তা পেলাম না। ইউনিভার্সিটি বন্ধ। তাই বাসা থেকে ও তেমন একটা বের হয় না। নিঝুমরা ৩ ভাই বোন। বড় বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। মেঝ নিঝুম। আর সবার ছোট নিঝুমের ছোটভাই খোকন। খোকন ক্লাস ফোরে পড়ে। আমি ভাবলাম খোকনকে দিয়েই কবিতা, চিঠি আর গোলাপগুলো পাঠাবো। খোকনকে সেদিন রাস্তাতেই পেয়ে গেলাম।
আমি ডাকলাম, “এ্যাই খোকন?”
খোকন বলল, ” কে আপনি?”
: আমি তোমাদের পাশের বাসায় থাকি।
: ও, আচ্ছা।
.
: তোমাকে দেখে মনে হচ্ছে তোমার ক্ষিধে পেয়েছে। চলো পাশের দোকানে গিয়ে কিছু খাই।
.
: চলুন যাই।”
খোকন দেখতে চিকন হলেও, খেতে পারে রাক্ষসের মতো। আটটা লাড্ডু, দশটা সিঙ্গাড়া, আধ লিটার আইসক্রিম খেয়ে খোকন বেড়িয়ে আসল। আমার পকেটের প্রায় পুরোটাই খালি হয়ে গেল। আমি খোকনের কাঁধ ধরে বললাম, “আমার একটা কাজ করে দিতে পারবে খোকন?
: কি কাজ?
: এই খামটি আর গোলাপগুলো তোমার আপাকে দিয়ে আসবে। আর বলবে সন্ধ্যাবেলা যেন বড় রাস্তার বেকারির সামনে আমার সাথে দেখা করে। পারবে তো?
: পারব না।
: কেন?
খোকন গোমড়া মুখে বলল, “মফিজ ভাই, সাকিব ভাই, ওমর ভাই এরা আপুকে কিছু দেওয়ার সময় আমাকে শুধু খাওয়ায়ই না, টাকাও দেয়।”
আমি চোখ কপালে তুলে বললাম, “তুমি এতজনের চিঠি, উপহার তোমার আপুকে দাও?”
: হ্যাঁ, দেই। আমি কারও মনে কষ্ট দিতে পারি না।”
আমি একটা নিঃশ্বাস ফেলে খোকনের হাতে একশটা টাকা গুজে দিলাম। তারপর খোকন খাম আর গোলাপগুলো নিয়ে চলে গেল।
সন্ধ্যায় আমি বড় রাস্তার বেকারির সামনে দাঁড়িয়ে নিঝুমের জন্য অপেক্ষা করছি। একটু পর দেখি নিঝুমের কাজের বুয়া ফুলি আসছে।
ফুলি এসে বলল, “ভাইজান আপনি আমারে পছন্দ করেন তা আগে কইবেন না। খোকন ভাইজান আমাকে সব বলছে। আর চিঠি, গোলাপগুলো ও দিছে। তা ভাইজান এখন আইতে কইছেন ক্যান? ফিলিম দেখতে যাইবেন?”
এমন সময় নিঝুমকে আসতে দেখা গেল। নিঝুম হাসতে হাসতে বলল, “আপনি ফুলিকে পছন্দ করেন তা আগে বললেই হতো। বিয়ের ব্যবস্থা করে দিতাম।”
আমি ভাঙা গলায় বললাম, “আপনি ভুল বুঝছেন। ব্যাপারটা আসলে—-।”
নিঝুম কড়া গলায়, “চুপ করুন। ইডিয়ট।”
নিঝুম ফুলিকে নিয়ে চলে এলো। আমার ইচ্ছা করলো খোকনকে চিবিয়ে খেয়ে ফেলি। বদের বদ।
পরদিন সকালে নিঝুমের বাসার সামনে দিয়ে পায়চারী করছি। হঠাৎ দেখি নিঝুমের বাবা বেরুচ্ছেন। আমি হাসিমুখে বললাম, “আংকেল, আসসালামুলাইকুম।”
নিঝুমের বাবাঃ অলাইকুম।
: আংকেল আমি আপনাদের পাশের বাসায় থাকি। কখনও কোন সমস্যা হলে বলবেন।
: তুমিই তো একটা আস্ত সমস্যা।
.
: মানে?!!
.
: সারাক্ষন ছাদে থাক কেন? কাজকর্ম কিছু নাই?
: ইয়ে মানে চাকরির চেষ্টা করছি।
: বেকার না থেকে হকার তো হতে পার। আজকাল ছোট বড় কাজ বলে কিছু নেই। যাও তো ওই মোড় থেকে আজকের পত্রিকাটা কিনে নিয়ে আসো।”
আমি দৌড়ে গেলাম। পত্রিকা হাতে পাওয়ার পর নিঝুমের বাবা হাসি মুখে বললেন, “এই নাও দশ টাকা। আর এই দুটাকা তোমাকে খুশি দিয়ে দিলাম।” আমি হাত বাড়িয়ে টাকা নিলাম।
রাতের বেলা রিয়াজ সব শুনে বলল, “তুমি একটা গাধা। টাকা নিলে কেন?”
: টাকা না নিলে যদি মাইন্ড করতো।”
পরদিন নিঝুমের জন্য আবার রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে রইলাম। এই রাস্তা দিয়ে নিঝুম ইউনিভার্সিটি থেকে বাসায় ফেরে। নিঝুমের জন্য কিছু চকলেট আর গোলাপ এনেছি। মাথার উপর তালপাকা রোদ। এই রোদে তাল পাকে কিনা জানি না, তবে আমার মাথার চুল পেকে যাচ্ছে। হঠাৎ নিঝুমকে রিকশায় দেখা গেল। কিন্তু একি! নিঝুমের পাশে বসে আছে এক সুদর্শন যুবক। আমাকে দেখে নিঝুম কটুক্তির হাসি দিল। এরপর যুবকের কানে কানে কি যেন বলল। যুবক ও আমাকে দেখে হাসতে লাগল। এরপর রিকশা ভাড়া মিটিয়ে নিঝুম যুবককে নিয়ে ওদের বাসায় ঢুকে গেল। আমার মাথা চরকির মতো ঘুরতে লাগল। তলে তলে এতদূর! চকলেটগুলো ড্রেনে ফেলে, গোলাপগুলো পায়ের তলায় পিষ্ট করলাম। এরপর পাশের দেয়ালে জোরে ঘুষি মেরে চিৎকার করে উঠলাম।
বিকাল পর্যন্ত নিঝুমদের বাসার সামনে দাঁড়িয়ে থাকলাম। নিঝুম বেরুলো বিকাল মেলাবার পর। আমি নিঝুমের পথ আগলে দাঁড়ালাম।
কঠোর গলায় বললাম, “নিঝুম সকালে রিকশায় আপনার সাথে যে ছেলেটি ছিল, সে কে?
: তা দিয়ে আপনার দরকার কি?
: আহা, বলুন তো।
: আমার দুলাভাই।
: ও, আচ্ছা। খুব ভালো।” আমি আশ্বস্ত হলাম। একটু থেমে বললাম, “নিঝুম আমি আপনাকে কিছু কথা বলতে চাই?
: ‘আমি আপনাকে ভালবাসি’ এই টাইপ কিছু?
আমি কপালের ঘাম মুছে বললাম, “জ্বি।”
নিঝুম মুখটা বাংলার পাঁচের মত করে বলল, “সরি, রোমিও। আমার পক্ষে সম্ভব না। আমার পিছু ছাড়ুন, না হলে আমার দুলাভাইয়ের হাতে রদ্দা খাবেন।” নিঝুম চলে গেল।
আমার নিঝুমকে খুব পাষাণী মনে হতে লাগল। বাসায় গিয়ে আসিফের ছ্যাকা খাওয়া গানগুলো বারবার শুনতে লাগলাম। একবার ভাবলাম আত্মহত্যা করি। ছাদের উপর দাঁড়িয়ে কয়েকবার চেষ্টা ও করলাম। কিন্তু আমি মারা গেলে দেশ ও দশের অনেক ক্ষতি হবে। তাই আত্মহত্যা না করার সিদ্ধান্ত নিলাম। আত্মহত্যা না করি অন্য কিছু তো করা যায়। অতঃপর আমি দেবদাস মার্কা দাড়ি রাখলাম, টয়লেটে বসে বেশি করে কবিতার ছন্দ মিলাতে লাগলাম। আর বিভিন্ন পত্রিকায় ছদ্মনামে নারীর নিষ্ঠুরতা বিষয়ক প্রবন্ধ পাঠাতে লাগলাম।
কয়েক সপ্তাহ পর রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে সিংগারা খাচ্ছি। হঠাৎ দেখি নিঝুম ছুটতে ছুটতে আসছে। ওর ছুটবার ভঙ্গিই বলে দিচ্ছে কোন ভিলেন ওকে তাড়া করেছে। আমি ভাবলাম নায়ক হওয়ার এই তো সুযোগ। আমি বুক ফুলিয়ে দাঁড়ালাম।
নিঝুম আমাকে দেখে বলল, “আমাকে বাঁচান।”
আমি লাফিয়ে উঠে বললাম, “কোথায় ভিলেন?”
: ভিলেন নয়, পাগলা কুকুর।”
আমি একটা ভয়ানক কুকুরকে ছুটে আসতে দেখলাম। এতো ভিলেন থেকেও ভয়ংকার। আমি নিঝুমকে পাশ কাটিয়ে দৌড় দিলাম। কুকুরটা এবার আমাকে তাড়া করল। কুকুরটার তর্জন গর্জনে আমার বুক ধ্বক ধ্বক করতে লাগল। রাস্তার মানুষ আমার দৌড় দেখে হাততালি দিতে লাগল। একটা পিচ্চি বলল, ” লাল্টু, উনারে জব্বর একটা কামড় দিস।” আমি আর দৌড়াতে না পেরে রাস্তার পাশে বড় নর্দমার মধ্যে ঝাঁপ দিলাম। এরপর জ্ঞান হারালাম।
জ্ঞান ফিরে দেখতে পেলাম আমি হাসপাতালে। আমার হাত পা প্লাস্টার করা। মাথায় খুব ব্যথা। আমার সামানে উদ্বিগ্ন বাবা,মা আর রিয়াজ। এমন সময় দেখলাম নিঝুম এসে ঢুকল। নিঝুমকে দেখে মা,বাবা, রিয়াজ বাইরে চলে গেল। নিঝুমের হাতে একগুচ্ছ ফুল।
নিঝুম উদ্বিগ্ন গলায় বলল, “কেমন আছেন এখন?”
: জ্বি ভাল।
: আপনার সাথে অনেক খারাপ আচরণ করেছি কিছু মনে রাখবেন না।
: সুন্দরীদের খারাপ আচরণ মনে রাখতে হয় না।
: আমি আপনাকে কিছু কথা বলতে চাই।
আমি আগ্রহস্বরে বললাম, “বলুন।”
: কিছু মনে করবেন না তো।
: না, না। কিছু মনে করব না।” আমি বুঝতে পারলাম নিঝুম আমাকে কি বলবে। ও নিশ্চয়ই আমার প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েছে।
নিঝুম মাথা নিচু করে বলল, “আমি।”
: শেষ করুন।
নিঝুম লাজুক স্বরে, “আমি আপনা।”
: আহা! বলুন না।” আমার মধ্যে উত্তেজনার ভাব ফুটে উঠে।
: আমি আপনা।
: বলুন না।
: আমি আপনার ছোটভাই রিয়াজকে খুব পছন্দ করি।
: জ্বি?!!!
: আপনি তো রিয়াজের বড় ভাই। মানে আমার ও বড় ভাই। আমাকে একটু সাহায্য করুন না। কি করবেন তো?”
আমি চোখ বন্ধ করে ক্লান্ত গলায় বললাম, “অবশ্যই করব।”
আমার মাথায় দুটো কবিতার লাইন চলে এলো। আমি বিড়বিড় করে বলতে লাগলাম,
“মেয়ে, মনের কথা তুমি কি জানো?
ওগো মেয়ে, তুমি এত জটিল কেন?”