এই শহরে জোনাকি নেই

এই শহরে জোনাকি নেই

এই এভাবে শুয়ে আছো কেন, কখন থেকে ডাকতেছি শুনতে পাচ্ছোনা? এমনি ভালো লাগতেছে না এমনি, অফিস থেকে কখন আসলা, খেয়েছো কিছু?

না জানপাখি ভালো লাগতেছে না পরে খাবো, তুমি যাও ফ্রেস হয়ে আসো? ভালো লাগতেছে না মানে, এই তুমি আজ আবার বৃষ্টিতে ভিজে বাসায় এসেছো? হুম কই দেখি কম্বল সরা ও, ওমাগো এই শরীর তো একেবারে পুড়ে যাচ্ছে? এই তোমাকে না যাওয়ার সময় ছাতা দিয়েছিলাম, কি করছো বলো?

এখন কি বকাবকি করবা, নাকি ঔষধ দিবা ও আমি বকাবকি করি, বল ছাতা কাকে দিয়েছিস? মাথায় জ্বলপট্টি দিতে দিতে (সত্যি টা বলা যাবেনা বললে কপালে দুঃখ আছে? ) কি হলো চুপ করে আছো কেন?

এতো প্রশ্ন করো না, যাও কিছু নিয়ে এসো, ক্ষুধা লেগেছে?

এতক্ষণ বকাবকি আর সেবা করলো এটা হলো আমার বৌ পরী। তিন বছর হলো বিয়ে করেছি, আমি শাওন, আর ম্যাডাম হলো পরী, একটা প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষকতা করে।

ছাতা টা দিয়েছিলাম আসলে আমার অফিস কলিক তাহিয়া কে, বড্ড ভালো মেয়ে, অনেক দুর থেকে এসে অফিস করে, আজ একটু তারাতাড়ি কাজ শেষ হলো তাই বেরিয়ে পড়লাম, আর রাস্তায় গাড়ির জন্য দাঁড়াতে দাঁড়াতে এলো ঝুম বৃষ্টি, আমি ভাবলাম অনেক দিন বৃষ্টিতে ভিজা হয় না, আর তাহিয়া মেয়ে মানুষ ভিজে ভিজে বাসায় যাবে কেমন দেখায় না, তাই দিয়ে দিলাম, অবশ্য নিতে চাইনি, আমি কিভাবে যাবো এই ভেবে। তারপর আরকি ভিজে ভিজে বাসায় আসলাম আর জ্বর মামা ধরলো আমাকে ঝাপটে, আরে বাবা রাতে আসতি যখন বৌ কে জড়িয়ে ধরে ঘুমাতাম।

এই শুনছো, বেশী খারাপ লাগতেছে কি?

(পরী) একটু একটু একটু বসত পারবা, তোমার জন্য রং চা করে নিয়ে আসলাম?

হুম দাও এগুলো ভিজিয়ে ভিজিয়ে খাও, তারপর ঔষধ খাইয়ে দিবো। (তিনটা ব্রেড এগিয়ে দিয়ে) সব গুলো পারবো না গো না পারলে ও খেতে হবে, জ্বর আনলে কেন? জানপাখী ঠান্ডা লাগতেছে একটু জড়িয়ে ধরবে?

যা বলো এখন তো করতেই হবে, উপায় আছে বলো, তুমি অসুস্থ হলে আমার কষ্ট কেমন হয় তা তো জানোনা সরি মিষ্টি বৌ, আর কখনো এমন করবো না। হুম এখন ঘুমিয়ে পড়ো।

আমি কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছি, পরী আমাকে উপর দিয়ে ঝাপটে ধরে আছে, কেন জানি তারপর ও কাঁপতেছি, আমার কাঁপাকাঁপি ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে লাগলো, এবার আরো শুরু হলো পরীর অস্থিরতা, কোনমতেই নিজেকে ধরে রাখতে পারতেছিনা, পুরো খাট কাঁপতেছে, আমার এই অবস্থা দেখে পরী হাউমাউ করে কান্না করতে শুরু করলো। পরী ডাক্তার কে কল করে আমার মাথায় জলপট্টি দেওয়া শুরু করলো। আর চোখ দিয়ে অনর্গল পানি ছাড়তে লাগলো, আটটার দিকে ডাক্তার আসলো, জ্বর মেপে দেখলো ১০৪°। কিছু ঔষধ দিলো আর একটা ঘুমের ইনজেকশন দিলো, এর পরে আর কিছু বলতে পারিনা। তলিয়ে গেলাম গভীর ঘুমে।

সকাল বেলা জেগে দেখি পরী আমাকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছে, চোখে গভীর ঘুম। মনে পড়ে গেলো কালকের কথা, ইসসসস আমার জন্য মেয়েটা সারারাত মনে হয় ঘুমাই নি। কিছুক্ষণের জন্য পরীর মাঝে হারিয়ে গেলাম। কি মায়াময় নিস্পাপ একটা চেহারা। মনে পড়ে গেলো আমাদের সম্পর্কের প্রথম দিন গুলোর কথা। ফেইসবুকে টুকটাক গল্পলেখার কারনে পরীর সাথে পরিচয়, হাই হ্যালো থেকে শুরু করে সারাদিন কেয়ারিং শেয়ারিং, সকাল সাতটা থেকে চ্যাটিং শুরু হতো ধাপে ধাপে বিরতি নিয়ে সেই রাত বারটা পর্যন্ত বেজে যেতো। কখনো কখনো রাত ২টা ও বেজে যেতো।

এরপর দুজন দুজনকে ফিল করা শুরু করলাম। কেউ কারো সাথে মেসেজ না করে দশটা মিনিট থাকতে পারতাম না। হঠাৎ একদিন হুট করে রাত সাড়ে আটটার দিকে প্রপোজ করে বসি। পরীর তখনো বিশ্বাস হচ্ছিলো না, আমি পরীকে প্রপোজ করবো।

তারপর পরী ও তার ভালোবাসার কথা জানায়, আমাকে নাকি আগের থেকে অনেক অনেক লাভভ করে, কখনো বলতে পারেনি। ঐ যে মেয়েদের বুক ফাটে তো মুখ ফুটে না। রিলেশনশিপ এর শুরুতে দুজনের তুমুল ঝগড়া হতো, দিন শেষে একিই নিরে আবার ফিরে আসতাম। দুজনে বলতাম হাজারো লাল নীল হলুদ গোলাপী রঙের স্বপ্নের কথা। রিলেশনের ছয়মাসের মাথায় হঠাৎ পরী অগোছালো আচরণ শুরু করে। আমি নাকি পাল্টে গেছি, আগের মতো ওকে ভালোবাসিনা, সময় দিই না।

আমাদের দশদিন কথা বন্ধ ছিলো। আমি পাগল প্রায় হয়ে গিয়েছিলাম। দিনের বেলা অন্যমনস্ক আর রাতের বেলা কান্না করতাম। তারপর সব ঠিক হলো। এর দুইবছর পর আবার পরীকে হারিয়ে ফেলি, হঠাৎ পরী যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়, দুইটা সিম বন্ধ, পরীর বান্ধবীদের সাথে যোগাযোগ ও করতে পারিনি। আমি আবার পাগলের মতো আচরন করি, খাওয়া দাওয়া কিছু ভালো লাগতো না, কেউ যদি কানের কাছে কিছু বলে তো মন চাইতো খুন করে ফেলি।

অনেক চেষ্টা করেছি পাইনি। একবার পরীর কলেজে ও গেছিলাম কোন খোজ পায়নি। পরীদের বাড়ি ছিনতাম ই না। কষ্ট গুলো তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠেছিলো। একবার ঘুমের ঔষধ খেয়ে শুয়েছিলাম কিছু বলতে পারিনা। পরে আম্মুর সে কি কান্না। আর ওইদিন আম্মুকে ছুয়ে কথা দিয়েছিলাম খারাপ কিছু করবো না।

তারপর ধীরে ধীরে আবার গুছিয়ে উঠতে শুরু করলাম। রাত্রি হলে আবার পরীর সাথে বলে কথা গুলো মনে উঠতো। ছয়মাস পর ঢাকায় চলে আসি, বড় আপুকে নিয়ে সাথে আম্মু ও ছিলো, দুলাভাই বিদেশ থাকে, ওদের দেখার মতো কেউ ছিলো, ছোট্ট একটা ভাগনি ও আছে। ভাগ্নিকে একটা কেজি স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিলাম। এরপর থেকে আমি কখনো যেতাম না, আপু বা আম্মু আসা যাওয়া করতো জান্নাতকে নিয়ে।

একদিন আম্মু অসুস্থ থাকায় আপু রান্না করতেছিলো, আমি বাসায় বসে ছিলাম, আপু বললো জান্নাত কে নিয়ে আসতাম, তখন দুপুর বারোটা বাজে। সাদা একটা শার্ট গায়ে দিয়ে চলতে শুরু করলাম, স্কুলের ভিতর যেতে জান্নাত আমাকে দেখে দোড়ে এসে মামা বলে ঝাপটে ধরলো।

জান্নাত বলা শুরু করলো মামা আজ তুমি আসলে যে, মামনি কোথায়? তোমার মামনি কাজ করতেছে, মামা আসলাম আজ তোমাকে নিয়ে যাবো বলে?

জানো মামা আমার একটা ম্যাডাম আছে, প্রতিদিন আম্মু নানু আমাকে নিতে আসে দেরি করে, আর আমি ততক্ষণ ওই ম্যাডামের সাথে গল্প করি। জানো মামা ম্যাডাম টা না অনেক ভালো, আমাকে প্রতিদিন কত কিছু কিনে দেয়?

মামনি এটা কিন্তু ভালো না, তুমি ম্যাডামের টাকা কেন নষ্ট করো? বাসায় তো

তোমার জন্য অনেক কিছু আছে?

বা রে থাকলে কি হবে, ম্যাডাম তো আমাকে আদর করে দেয় ওগুলো?

তাহলে আজ থেকে আমি আর কিছু আনবো না। হঠাৎ পিছন থেকে কে যেন বলে উঠলোএটা কে জান্নাত, তোমার আম্মু নানু আসেনি আজ নিতে না ম্যাডাম আসেনি, আজ আমার মামা এসেছে, এদিকে আসেন পরিচয় করিয়ে দিই।

সামনে আসতেই আমি হতবাক নাকি নির্বাক, নাকি আশ্চর্য হয়ে গিয়েছি তা নিজে ও বলতে পারবো না। মামা এই আমার পরী ম্যাডাম, আমাকে অনেক আদর করে। পরীর দিকে তাকাতেই শকড খেয়ে উঠলাম, এখন পরী চশমা ব্যবহার করে, তবে চোখের নিচে কালো দাগ গুলো ঠিকই বলে দিচ্ছে ঠিকমতো ঘুমায় না, হালকা আকাশী রঙের একটা শাড়ী পড়ে আছে।

মাথায় হিজাব করা, এটা পরীর ছোট বেলা থেকে অভ্যাস ছিলো। পরোক্ষনে অতীতে কথা মনে পড়তেই জান্নাত কে নিয়ে চলে আসতে লাগলাম, আর মায়া বাড়ানোর কোন ইচ্ছে আমার নেই, নতুন করে এমনিতে কষ্ট গুলো আজ আবার জীবিত হবে, আমিও ডুবে থাকবো সারাটা রাত নেশার কবলে।

জান্নাত কে হাটা দিবো পিছন থেকে বলে উঠলো শাওন শুনো আমি থমকে দাঁড়ালাম পিছনে না ফিরে জবাব দিলাম কি বলবেন বলে ফেলুন, আমার তাড়া আছে আমি আবার আপনি হলাম কবে থেকে শাওন যবে থেকে একা করে হারিয়ে গেছো কেন হারিয়ে গেলাম জানতে চাইবে না জানার আর কোনো আগ্রহ নাই এখনো রাগ করে আছো আমার ওপর রাগ কার উপর করবো আমি কেন এমন করলাম জানতে চাইবে না প্রয়োজন মনে করছিনা। কিন্তু তোমাকে যে শুনতে হবে আমার কাজে আছে গেলাম। আমি হাটা শুরু করলাম, পরী পিছন থেকে বলতেছে শাওন আমি তোমার কাছে ফিরতে চাই, I will back pls don’t forget me?

কোন কথা না বলে বাসায় চলে আসলাম জান্নাত কে নিয়ে। দুপুরে খাওয়াদাওয়া করে শুয়ে আছি, কখন ঘুম চলে আসলো নিজেই বলতে পারিনা। বিকেল বেলা ঘুম ভেঙ্গে গেলো হাসির শব্দে। এই শব্দ আমার চির চেনা। এটা পরীর কণ্ঠ, কিন্তু পরী এখানে কি করে আসলো। আম্মুকে ডাক দিয়ে বললাম একগ্লাস পানি দিয়ে যেতে। ফ্রেস হয়ে এসা দেখি পরী পানি হাতে দাড়িয়ে আছে। আম্মা আম্মাআআআ এদিকে এসো কি হয়েছে চিৎকার করছিস কেন?

ও এখানে কেন?

আমার বৌমা কই থাকবে?

মানে আমি বিয়ে কবে করলাম করিস নাই তো করবি। করবো ঠিক আছে তবে এই মেয়েকে না।

তো কাকে করবি তোমরা ল্যাংরা লুলা ভয়রা কানা খোগরা যেমন মেয়ে হোক পছন্দ করো আমি বিয়ে করবো,কিন্তু এই মেয়ে কে না। (কথা গুলো বলার সাথে সাথে পরীর চোখ দিয়ে টপ টপ করে পানি পড়া শুরু করলো) আমি এতো কিছু জানিনা আমার এই মেয়েকে পছন্দ হয়েছে, আর একেই বিয়ে করবি। থাক আম্মু ও যেহেতু চাচ্ছে না আমি চলে যাচ্ছি, আপনারা জগড়া করবেন না প্লিজ +(পরী) যা যা তোকে আসতে কে বলেছে।

শাওন বেশি হয়ে যাচ্ছে কিন্তু, পরী আমাকে সব বলেছে (আম্মু) কি বলেছে ওর কাছ থেকে শোন, আর খবরদার ওকে বের করছিস তো খুব খারাপ কিছু হবে। আম্মু এই বলে চলে গেলো, পরী এখনো দাড়িয়ে আছে। চোখ দিয়ে পানি এখনো পড়তে আছে। শাওন আমার কথা গুলো শুনবে, আর কখনো তোমার সামনে আসবো না, কথা দিতেছি।

আচ্ছা বলো আমি জানি তুমি আমার ওপর এখনো রাগ করে আছো, কেন আমি এমন করলাম, কিন্তু বিশ্বাস করো আমার উপায় ছিলো না, আব্বু ভাইয়া আমাদের সম্পর্কের কথা জেনে যায়, আমার থেকে মোবাইল নিয়ে নেয়, তোমার সাথে যোগাযোগ করার কোনো ওয়ে ছিলো না, পরে একমাসের মধ্যে আমার বিয়ে ঠিক করে ফেলে, আমাকে বন্দী করে রাখে। মাঝে মাঝে আম্মুকে জড়িয়ে ধরে অনেক কান্না করতাম আর বলতাম আম্মু আমাকে শাওনের কাছে যেতে দাও। কিন্তু আম্মু যে ছিলো নিরুপায়।

এরপর আমার বিয়ে ঠিক হয়ে যায়, ছেলে বিদেশ থাকে। তাদের নিজস্ব দোকান আছে। বিয়ের দিন ঘনিয়ে আসে, গায়ে হলুদের দিন পার্লারের কথা বলে পালিয়ে আসি, তোমার নাম্বার বন্ধ, কোনো উপায় খুজে পাচ্ছিলাম না, পরে অনেক কষ্টে এই স্কুলের জবটার ব্যবস্থা হয়। তোমাকে প্রতিনিয়ত খুজে চলেছি কোথায়ও পায়নি। কিন্তু দেখো আমরা দুজন পাশাপাশি ই ছিলাম।

তোমাকে মন থেকে একমিনিটের জন্য ও সরাতে পারিনি। তাই তো কাল তুমি না শুনার পরে ও নিলজ্জের মতো তোমার বাসায় চলে আসি, আম্মুকে সব বলাতে আম্মু বললো তোমার সাথে ই আমার বিয়ে দিবে, কিন্তু তুমি যে আমাকে এতোটা ঘৃণা করো তা জানতাম না, ভালো থেকো চললাম, আর কখনো দেখা হবেনা, আল্লাহ হয়তো বাঁচিয়ে রেখেছিলেন, তোমাকে একনজর দেখার জন্য।

পরীর বাসা থেকে পা বাড়াতে বললাম চলেই যাবে হ্যাঁ তুমি তো আর রাখবেনা এই জানো আমার মনের কথা মুখে তো বলে দিলা আমাকে সহ্য করতে পারসোনা।

আসো তাহলে এই বলে হাত দুটো বাড়িতে দিলাম, পরী দোড়ে এসে আমার বুকে ঝাপ দিলো। ওইদিন সন্ধ্যায় পরীকে বিয়ে করে নিই। এর পর থেকে ভালোই চলছে আমাদের খুনসুটিতে দিন গুলো।

সেই দিন গুলোর কথা ভাবলে আমার এখনো হাসি পায়। পরীর কপালে একটা চুমু খেয়ে বেরিয়ে পড়লাম। এখন ভালো আছি গায়ে জ্বর নেই। বাসা থেকে বের হয়ে রওনা দিলাম বাজারের দিকে। আজ আমিই রান্না করবো। ব্যাচেলর থাকতে কত রান্না করেছি তার কোন হিসেব নাই।

এখন আপু রা বাড়িতে থাকে, জান্নাকে ওখানে নিয়ে গেছে, আম্মু ও চলে গেছে নাতিনের সাথে। বাজার করে বাসায় এসে দেখি পরী এখনো ঘুমাচ্ছে, জাগালাম না। রান্নাবান্না শেষ করতে এগারো টা বেজে যায়।

টমেটো সস, গরুর গোস্ত বুনা, কই মাছ বাজি, লাল শাক বাজি, সবজি, আর শুটকি দিয়ে আলুডিম রান্না করলাম। সবগুলো টেবিলে সাজিয়ে রেখে পরীকে ডাকতে গেলাম। এই যে ম্যাডাম উঠেন আর ঘুমাতে হবে না না আর একটু ঘুমাই আজ তো স্কুল বন্ধ। হোক বন্ধ, কয়টা বাজে দেখছো, রাত আমার জন্য ঘুমাতে পারোনি জানি, তাও এখন উঠো খেয়ে আবার ঘুমিয়ে যেও?

কয়টা বাজে গো সাড়ে এগারো টা কিহহহ আগা ডাক দিবানা, তুমি এতক্ষণ না খেয়ে আছো?

আচ্ছা উঠো ফ্রেস হও খাবার রেড়ি আছে?

কে রেডি করলো কে আবার তোমারবর আমার বর তো অসুস্থ না এখন পুরোপুরি সুস্থ আছে কই দেখি (আমার কপালে হাত দিয়ে) দেখছো এখন নাই, যাও ফ্রেস হও দ্রুত। পরী ফ্রেস হতে চলে গেলো, আমি একটু ফেইসবুকে ঢু মেরে বসলাম। পরী আয়নার সামনে বসলো, আহহহ কি দারুন আমার বৌ টা, চুল গুলো ছেড়ে দেওয়া, সৌন্দর্যতা টিপ টিপ করে পড়তেছে।

কি গো এভাবে হা করে তাকিয়ে আছো কেন?

তুমি এত্তো সুন্দর কেন গো কে বলেছে আমি সুন্দর কে আবার তোমার বর, এই আসোনা একটু আদর করি! না এখন এসব হবে না, ক্ষুধা লেগেছে আমার।

কে শোনা আর কার কথা, পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে, দিকেসামনের ফেরালাম, পরী জোর করতেছে না, কারন পরী জানে আমার থেকে নিজের জোরে ছোটা সম্ভব না। তারপর দুজনের লিপ চারটা হিপহপ আর দুষ্টামি করে না দুষ্ট বর, আমার সত্যি খিদে পেয়েছে।

ওকে চলো আগে খেয়ে নিই, তবে আজ একটা কথা বলতে হবে?

কি বর এই খাটে তিনজন চাই কিন্তু আমি (পরীকে কোলে নিয়ে) তোমার ইচ্ছা। (পরী আমার বুকে মুখ লুকিয়ে ফেললো) পরীকে খাবার টেবিলে বসাতে পরী অবাক, এইসব তুমি রান্না করেছো কেন সন্দেহ হচ্ছে, আমি রান্না করতে পারিনা আগে খেয়ে দেখি কেমন হয়েছে হুম, এখানে আসো আমি খাইয়ে দিচ্ছি তুমি এতো ভালো রান্না করতে জানো আজ আমার জানপাখির জন্য করলাম। এত্তো গুলা লাভিউ মিষ্টি বর। লাভিউ ঠু। আজ আমরা বিকেলে ঘুরতে বের হবো।

সত্যিই হুমমমম বিকালে বের হলাম দুজনে মার্কেটে গিয়ে কিছু কেনা কাটা করলাম, তারপর একটা লেকসিটিতে ফুসকে আর আইসক্রিম খেলাম। তারপর আরেক টা পার্কে বাদাম চিবালাম। সন্ধ্যা হতেই দুজনে হলুদ নিয়নের আলো তে বাসার উদ্দেশ্যে হাটা দিলাম। পরীর একটা হাত আমার হাতে অধর মুঠো বন্দি। আর আমি গুনগুন করে মিনারের একটা গান গেয়ে উঠলাম।

” এই শহরে জোনাকি নেই সন্ধ্যে হয় হলুদ নিয়নে এই আধারে আলো নেই ভুলে চিঠি আসে পিয়নে।।

সমাপ্ত

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত