:-হুসাইন আমি আর রিলেশনটা রাখতে চাচ্ছিনা।(জারা)
অনেকটা অবাক হয়ে কিছুক্ষণ জারার দিকে তাকিয়ে রইলাম।ওর চোখের দিকে তাকিয়ে বুঝার চেষ্টা করছি মিথ্যা না সত্যি বলছে।
:-কেনো জানতে পারি?(আমি)
:-আমি এতকিছু বলতে পারবোনা। বলেছি রিলেশন রাখবোনা সো রাখবোনা।আমাকে আর কখনো ফোন দিবেনা কিংবা আমার সামনে আসবেনা।
:-শুধু কারণটা বলে যাও।আর কিছু জানতে চাইবোনা।
:-তুমি কী ছোট আছো যে সবকিছু বুঝিয়ে বলতে হবে।
:-ধরে নাও তাই।
:-এই জন্যই তোমাকে আমার বিরক্ত লাগে।সব সময় ত্যাড়া ত্যাড়া কথা বলো।এসব আর ভালো লাগেনা।তাছাড়া আমার সব ফ্রেন্ডরা আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করে।
:-তুমি ভার্সিটিতে পড়ো আর আমি সামান্য একটা সরকারি কলেজে পড়ি এই জন্য তাইনা?
:-হ্যাঁ।
:-ভালো।
:-ভালো থেকো।
:-তুমি আমাকে কথা দিয়েছিলে কখনো আমাকে ছেরে যাবেনা।
:-এসব কথা মনে রাখে কয়জন।
:-কিন্তু তুমিতো আল্লাহর নামে কসম করে বলেছিলে?
:-ভুল করেছিলাম আমি।তখন তুমি আমার যোগ্য ছিলে কিন্তু এখন যোগ্য না।
:-বুঝতে পেরেছো এতদিনে।
:-হ্যা বুঝেছি।বাই
জারা বসা থেকে ওঠে দাড়ালো।শেষ বারের মত আমার দিকে তাকালো তারপর হাটা শুরু করলো।আমি তাকিয়ে জারার চলে যাওয়া দেখছি।জারাকে আটকানোর ক্ষমতা আমার নেই।যখন কেউ ভালোবাসার মাঝে স্বার্থ খোজে তখন তাকে আটকে রাখা যায়না।স্বার্থের কাছে সবকিছু হার মানে।তীলে তীলে গড়া স্বপ্নগুলোও একসময় মিথ্যা হয়ে যায় যদি সেই স্বপ্নগুলোতে কিছুটা খাদ থাকে।২বছরের রিলেশন মুহুর্তেই ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে গেলো।জারা আস্তে আস্তে আমার চোখের দৃষ্টি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে।চোখগুলো আস্তে আস্তে ঝাপসা হয়ে আসছে।অনেকদিন পর আমার চোখ থেকে পানি ঝড়ছে। চিৎকার করে জারাকে বলতে ইচ্ছে করছে প্লিজ জারা আমাকে ছেড়ে যেওনা।আমি তোমাকে ছাড়া কখনোই ভালো থাকবোনা।তুমি ছাড়া যে আমার কেউ নেই।তুমিও আমার লাইফ থেকে চলে গেলে খুব একলা হয়ে যাবো আমি।
আমি হুসাইন আহম্মেদ।অনার্স ২য় বর্ষের ছাএ।জারা আমার গালফ্রেন্ড।দুজন সেম ইয়ারে পড়ি।পার্থক্য হলো জারা ভার্সিটিতে পড়ে আর আমি সরকারি কলেজে।আজ এই পার্থক্যটাই আমার জীবনে সবথেকে কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়ালো।মানুষ খুব স্বার্থপর।নিজের স্বার্থের জন্য সবকিছু করতে পারে।আমার স্মৃতির পাতাগুলো উল্টালে সেখানে দুঃখ ছাড়া আর কিছু পাওয়া যাবেনা।
এই পৃথিবীতে আমার কেউ নেই।কেউ নেই বললে ভুল হবে কারণ বাবা,মা ভাই সবাই আছে কিন্তু আমার কাছ থেকে তারা অনেক দুরে।পরপর দুই বার ইন্টার পরীক্ষায় ফেল করেছিলাম বলে বাবা বাসা থেকে বের করে দিয়েছিলো।যখন বাসা থেকে বের করে দিয়েছিলো তখন ভেবেছিলাম দুদিন পর সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে কিন্তু আমার ধারণা ভুল ছিলো।দুদিন একটা ফ্রেন্ডের বাসার থাকার পর আমাদের বাসায় আছি।আব্বু তখন বাসায় ছিলোনা।পরে আব্বু বাসায় এসে আমাকে দেখতেই রেগে যায়।আমাকে রড দিয়ে খুব মারে।সারা শরীল দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিলো।প্রতিটা আঘাতে আমি চিৎকার করে কাঁদছিলাম।তখন বারবার একটা কথাই মনে হচ্ছিলো আমি কী আসলেই এদের সন্তান?নিজের সন্তানকে কেউ এভাবে মারতে পারে? আম্মু সেদিন আব্বুকে আটকানোর চেষ্টা করেছিলো কিন্তু পারেনি। মারতে মারতে আমাকে বাসা থেকে বের করে দেয়।এতটা মেরেছিলো যে ঠিকমত হাটছে পারছিলাম না।সেদিন থেকে বাবা
নামের মানুষগুলোর প্রতি খুব বেশি ঘৃনা জন্নে গিয়েছিলো।সামান্য একটা পরীক্ষায় ফেল করার জন্য এতটা মারতে পারে তারা কখনো মানুষ হতেনা পারেনা। আব্বু আমাকে বলেছিলো আমি যদি এই বাড়িতে আবার আসি তাহলে আম্মুকে বাসা থেকে বের করে দিবে।রক্তাক্ত শরীল নিয়ে ছোট চাচাদের বাসায় ওঠি।সেখানেও টিকতে দেয়নি আবার বাবা।নানুদের বাসায়ও টিকতে দেয়নি আমাকে।গ্রাম থেকে শহরে আসি।আমার একটা ফ্রেন্ডের মেসে ওঠি।বিপদের সময় ফ্রেন্ডগুলোই সবথেকে আগে এগিয়ে আসে।আমার শরীলের আঘাতগুলো দেখে ও ভয় পেয়েছিলো। একজন শত্রুও এভাবে আঘাত করেনা।ফ্রেন্ডের মেসে কয়েকদিন থাকার পর কিছুটা সুস্থ হয়।প্রতিজ্ঞা করি যারা আমাকে অবহেলা করলো একদিন তারাই আমাকে পাবার জন্য আফসোস করবে নিজেকে সেরকম করেই গড়ে তুলবো।এরপর ওর সাহায্য নিয়ে কয়েকটা টিনশনির ব্যবস্তা করে নিই।ওর মেসেই থাকার ব্যবস্থা করে দেয়।আবার ইন্টার পরীক্ষা দিই।অনেক পরিশ্রম করি পড়াশুনায়।আল্লাহতালাও ফল দেন অনেক ভালো।এবার আর ফেল করিনি।থানা ফাষ্ট হয়ে পাশ করি।ভেবেছিলাম আমি থানা ফাষ্ট হয়ে পাশ করেছি এটা শুনে আব্বু আমাকে ফোন দিয়ে বাড়িতে আসার কথা বলবে কিন্তু বলেনি।আমার একটা খোজ খবরও নেয়নি কখনো।
এরপর শুরু হয়ে ভার্সিটি এডমিশন।এক বড় ভাইয়ের সুবাদে বিনা টাকায় কোচিং করার সুযোগ হয়।সেখান থেকেই পরিচয় হয় জারার সাথে।জারা ছিলো কোচিং এর মেয়েদের মধ্যে সবথেকে ভালো স্টুডেন্ট। আর আমি ছেলেদের মধ্যে।ওর সাথে সবসময় প্রতিযোগিতা হতো।তবে আমি কখনো জারার সাথে কথা বলতাম না।কোচিং এর মাঝামাঝি এসে হঠাৎ করেই ওর সাথে আমার ফ্রেন্ডশিপ হয়ে যায়।শেষ পর্যন্ত লাভ।জারা ভার্সিটিতে চান্স পায় আমার চান্স হয়না।অনেকটা ভেঙ্গে পড়েছিলাম ভার্সিটিতে চান্স না হওয়ায়।অনেক পড়াশুনা করেও চান্স হয়নি।ভার্সিটিতে চান্স পাওয়ার ক্ষেএে ভাগ্য এবং পরিশ্রম দুটোই থাকতে হবে।আমার ভাগ্যটা খারাপ বলে চান্স হয়নি।প্রথম দুটো ভার্সিটিতে পরীক্ষা দেওয়ার পর খুব অসুস্থ হয়ে পড়ি।তারপর আর পরীক্ষা দেওয়া হয়না।অবশেষে ভর্তি হতে হয় সরকারি কলেজে।তবে জারা সবসময় আমার পাশে ছিল।জারা বলেছিলো আমি যেখানেই পড়াশুনা করিনা কেনো ও
আমাকে ছেড়ে কখনো যাবেনা।কিন্তু ও ওর কথা রাখলোনা।সব কথা ভুলে আজ আমাকে ছেড়ে চলে গেলো।
অতীদের কথাগুলো মনে পড়াতে চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি ঝড়ছে।অনেক কষ্টে চোখের পানি আটকালাম।এত সহজেই আমি হার মানবোনা।আজকের কষ্টের চেয়েও অনেক গুণ বেশি কষ্ট এর আগে আমি পেয়েছি।জারার সাথে মাএ দুই বছরের সম্পর্ক কিন্তু আমার পরিবারের সাথে আমার ১৮ বছরের সম্পর্ক ছিলো।১৮বছরের সম্পর্ক ভেঙ্গে যাওয়ার পরেও যদি বেঁচে থাকতে পারি তাহলে মাএ ২বছরের সম্পর্ক ভাঙ্গাতে কেনো বাঁচতে পারবোনা। বসা থেকে ওঠে হাটতে শুরু করলাম।থেমে থাকলে চলবেনা।আমাকে সামনের দিকে এগোতে হবে।আমি এই পৃথিবীকে দেখাতে চাই আমি একজন যোগ্য মানুষ।যারা আমাকে অযোগ্য মানুষ হিসেবে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে তারা আমার যোগ্য না।মেসে আসার পথে ফার্মেসির দোকান থেকে ঘুমের ওষুধ কিনে নিলাম। মেসে এসে ঘুমের ওষুধটা খেয়ে নিলাম।কিছুক্ষণ ঘুমানোর দরকার।জারাকে ভুলতে পারবোনা কোনদিন।কারণ জীবনের প্রথম ভালোবাসা কেউ কখনো ভুলতে পারেনা।আস্তে আস্তে চোখের পাতাগুলো বন্ধ হয়ে গেলো।হারিয়ে গেলাম আমি ঘুমের দেশে।
প্রচন্ড শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেলো।ঘুম ভাঙ্গতেই চমকে ওঠলাম আমি।আমি কোথায় আছি এখন?চারপাশ নানা রঙের লাইট দিয়ে সাজানো।রুমের চারপাশে নানা রঙের বেলুন লাগানো।মনে হলো আমি স্বপ্ন দেখছি তাই নিজের হাতে নিজেই চিমনি কাটলাম।না আমি স্বপ্ন দেখছিনা,বাস্তবেই আছি।রুমটা ভালো করে লক্ষ্য করলাম।এটাতো আমারি রুম কিন্তু এখানে এতকিছু কিভাবে?আমি ঘুমানোর আগে কিছুইতো ছিলোনা।শিপন,সুমন,শান্ত,ফকরুল আরো অনেক ফ্রেন্ডকে দেখতে পাচ্ছি।ঘুমের ঘোর কাটতে এক ফ্রেন্ডের হাতে কেক দেখে বুঝতে পারলাম আজ আমার জন্নদিন।কেকের উপর বড় বড় আমার নাম লেখা।কতটা মন ভুলা আমি,নিজের জন্নদিনের কথাই ভুলে গেছি।অনেক ফ্রেন্ডরাই এসেছে।আমাকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্যই এতকিছু করেছে ওরা।আমি খুব খুশি হয়েছি।সবাইমিলে কেট কাটলাম।অনেক আনন্দ করলাম সবাইমিলে।জারাকে খুব মিস করছি। ও যদি আজ আমার পাশে থাকতো তাহলে জীবনের সবথেকে খুশির দিনটা হতো আজ।কিন্তু আফসোস জারা কখনোই আমার জীবনে আর ফিরে আসবেনা।হাজার কষ্টের মাঝে একটুখানি আনন্দ অনেকটা ভালো লাগার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।ওদের মত ফ্রেন্ড যার জীবনে আছে তার কখনো মন খারাপ থাকতে পারেনা।সবাইমিলে সারারাত অনেক মজা করলাম।সারারাত একবারো মনে হয়নি আমার জীবন থেকে আমি অনেক কিছু হারিয়েছি।সকালবেলা যখন একএক করে সব ফ্রেন্ডরা চলে গেলো তখন থেকে আবার কষ্টগুলো ভর করতে থাকে আমার উপর।জীবনে আস্তে আস্তে না পাওয়ার পাল্লাটা ভারি হয়ে ওঠছে।না আমাকে থেমে থাকলে চলবেনা অনেকদুর এগিয়ে যেতে হবে আমাকে।বন্ধুদের বিদায় দিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিলাম।টিউশনিতে যেতে হবে।যারা আমাকে অবহেলা করেছে তাদের দেখিয়ে দিতে হবে আমি যোগ্য মানুষ।
রুমে বসে টিউশনিতে যাবার জন্য রেডি হচ্ছিলাম তখন শিপন(আমার ফ্রেন্ড)আসলো রুমে।
:-হুসাইন তোর অফ নাকিরে?(শিপন)
:-হ্যাঁ।কেনো?(আমি)
:-জারা তোকে ফোনে পাচ্ছেনা তাই আমাকে ফোন দিয়েছে।
(এখন পর্যন্ত কাউকে জানায়নি জারার সাথে আমার ব্রেকআপ হয়ে গেছে)
:-ফোনে চার্জ ছিলোনা তাই অফ করে চার্জে দিয়েছি।
:-তাহলে ফোন অন করে ওর সাথে কথা বল।বললো খুব জরুরী দরকার তোকে।
:-আচ্ছা।
শিপন চলে গেলো।শিপন আমার পাশের রুমের থাকে।শিপনের জন্য আর আল্লাহর রহমতে আমি আজ এখানে।শিপন যদি না সাহায্য করতো তাহলে এতদিন আমার কি হতো জানিনা আমি।
রাতে ইচ্ছা করেই ফোনটা অফ করে রেখেছিলাম।তারপর আর অন করিনি।তবে জারা আবার আমার সাথে কেনো কথা বলতে চায় সেটা বুঝতে পারছিনা।টেবিলের উপর থেকে ফোনটা হাতে নিয়ে অন করলাম।ফোন অন হতেই মেসেজের বর্ষণ শুরু হয়ে গেলো।অতিরিক্ত মেসেজের কারণে ফোনটা খুব স্লো কাজ করছে। অবশেষে ৭২৩ টা মেসেজ এসে থামলো।সবগুলো জারার নম্বর থেকে এসেছে।কৌতুহল বসত মেসেজগুলো পড়তে শুরু করলাম। প্রতিটা মেসেজের শেষের দিকে লেখা প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দাও আমি ভুল করে ফেলেছি।তোমাকে ছাড়া আমি থাকতে পারবোনা।
মেসেজগুলো পড়ার মাঝে জারার নম্বর থেকে ফোন আসলো।ফোন রিচিভ করতেই ওপাশ থেকে শুরু হয়ে গেলো কান্না। আমি স্পষ্ট বুঝতে পারছি জারা ফুপিয়ে ফুপিয়ে কান্না করছে।ভালোবাসার মানুষের সাথে আপনার যতই রাগারাগি হোক সে যদি আপনার সামনে কান্না করে তাহলে আপনি তাকে ক্ষমা না করে থাকতে পারবেন না।সেখানে আমিতো খুব অভিমানি।আমার সামনে কেউ কান্না করলে আমার চোখেও পানি চলে আসে।আমার এক ফ্রেন্ডের বাবা মারা গিয়েছিলো।আমিসহ কয়েকজন ফ্রেন্ড সেখানে গিয়েছিলাম।আমার ওই ফ্রেন্ডের কান্না করে দেখে আমিও কান্না করেছিলাম খুব।আমার কান্না দেখে সবাই মনে করেছিলো আমার নিজের বাবা মারা গেছে।
:-হুসাইন আমাকে প্লিজ ক্ষমা করে দাও।আমি ভুল করেছি।আর কোনদিন এমন ভুল করবোনা।প্লিজ ক্ষমা করে দাও।(জারা)
:-আমি ক্ষমার করার কেউ না।আমিতো একজন অযোগ্য মানুষ।তোমার আর আমার মাঝে অনেক তফাত।তুমি হলে উপরের শিঁড়ির মানুষ আর আমি নিচের শিঁড়ির।তোমার সাথে আমার সম্পর্ক থাকতে পারেনা।তুমি তোমার লেভেলের কাউকে খুজে নাও।(আমি)
:-প্লিজ এভাবে বলোনা।তুমি যদি আমাকে ক্ষমা না করো তাহলে আমি আত্মহত্যা করবো।প্রমিস।
:-ওই সব বিষয় নিয়ে প্রমিস করবানা।
:-করবো।আগে বলো তুমি আমাকে ক্ষমা করেছো?
মেয়েরা সবথেকে স্মাট হলো অভিমানী কথা বলাতে।এমন সব কথা বলবে আপনি কখনোই রাগ করে থাকতে পারবেন না।
:-চুপ করে আছো যে?আমাকে ক্ষমা করবেনা?(জারা)
:-ভাবছি।(আমি)
:-কী?
:-মেয়েরা কিভাবে খুব সহজেই কান্না করতে পারে।
:-মেয়েদের মনটা খুব নরম তাই।
:-হি হি হি হি হি।
:-হাসছো কেনো?
:-এই একটু আগে তুমি কাঁদছিলে আর এখন কাঁদছোনা।
:-তোমার মনে হয় আমি এমনি এমনি কেঁদেছি?(হু হু হু হু)
:-ওই চুপ করো।আরেকবার কাঁদলে আমি ফোন রেখে দিবো।
:-আগে বলো তুমি আমাকে ক্ষমা করেছো?
:-হুম করেছি।
:-লাভ ইউ।
:-টু।আমি এখন টিউশনিতে যাবো।পরে কথা হবে।
:-আচ্ছা।বিকেলে দেখা করতে পারবে?
:-হুম পারবো।
:-৫টায় লেকের ধারে চলে এসো।
:-আচ্ছা।রাখি।
:-ওকে।
ফোন রেখে দিলাম।মনের মধ্যে এখন কিছুটা শান্তি অনুভব করছি।হারানো মানুষ ফিরে এলে সত্যিই অন্যরকম অনুভুতি হয়।
বিকেলবেলা
দক্ষিণা বাতাস বইছে।বাতাসে জারার চুলগুলো উড়ে এসে আমার মুখে পড়ছে।আমি অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখছি জারাকে।মেয়েটাকে কেমন যেনো বাচ্চা বাচ্চা লাগে।
:-এই কী দেখো এভাবে?(জারা)
:-একটা বাচ্চা মেয়েকে দেখি।(আমি)
:-কি?ওই আমি বাচ্চা?আমি বাচ্চা?দাড়াও দেখাচ্ছি মজা।
কথাগুলো বলেই আমার গায়ে কিল ঘুসি মারতে শুরু করলো।
:-আ আ,এই লাগছেতো।(আমি)
:-লাগুক।আমাকে বাচ্চা বলা।দেখো এবার মজা।
:-বাচ্চা মেয়ের গায়ে এত জোর আগে জানতাম না।
:-হুম দেখলেতো।আবার বাচ্চা বললে দেখো কি করি।
:-ঢের শিক্ষা হইছে।আর ভুলেও বলবোনা।
:-হুম
কিছুক্ষণ নিরবতা।আমাদের মত অনেক কাপল এসেছে এখানে।বিকেল হতেই লেকের ধার কাপলে পরিপুর্ণ হয়ে ওঠে।
:-চুপ হয়ে গেলে যে?(আমি)
:-বলো।(জারা)
:-মন খারাপ?
:-না।
:-তাহলে চুপ কেনো?
:-আচ্ছা হুসাইন যদি আমার সম্পর্কে কখনো খুব খারাপ কিছু শোনো তাহলে কী আমাকে ছেড়ে চলে যাবে?
:-কি বলছো এসব?তুমি খারাপ হতে যাবে কেনো।তুমিতো আমার লক্ষি শোনা।
:-প্লিজ বলোনা ছেড়ে যাবে কিনা?
:-না যাবোনা।
জারা হঠাৎ করে শক্ত করে আমার হাত ওর হাত দিয়ে চেপে ধরলো।জারার এমন কান্ডে কিছুটা অবাক হলাম।জারাকে দেখে মনে হচ্ছে ও খুব ভয় পাচ্ছে।কপাল বেয়ে ঘাম ঝড়ছে।
:-এই কি হয়েছে তোমার?এভাবে ঘামছো কেনো?(আমি)
আমার কথা শুনে কাঁদতে শুরু করলো জারা।
:-ওই চুপ করো।একদম কাঁদবেনা।(ধমক দিয়ে)
আমার ধমক শুনে চুপ হয়ে গেলো।আমি মোটেও এই পরিস্থির জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। দুহাত দিয়ে জারার চোখের পানি মুছে দিলাম।
:-কী হয়েছে নির্ভয়ে বলতে পারো আমাকে।কথা দিচ্ছি কখনোই তোমাকে ছেড়ে যাবোনা।(আমি)
:-নিশ্চুপ(জারা)
:-ওই বলোনা।তুমি মন খারাপ করে থাকলে আমার ভালো লাগেনা।
:-আমি খুব খারাপ একটা মেয়ে।
:-ওই কি বলছো এসব। মাথা ঠিক আছে তোমার?
:-আমার একটা অতীত আছে।যেটা শুনলে তুমি আমাকে ছেরে চলে যাবে।(কাঁদতে কাঁদতে)
:-আবার কান্না শুরু করলে।শুনো তোমার অতীতে কি ছিলো সেটা আমি জানতে চাইনা।তুমি বর্তমানে কেমন সেটাই বড় কথা।
:-আজ আমাকে বলতেই হবে।আমি তোমাকে ঠকাতে পারবোনা।আমার আগে একবার বিয়ে হয়েছিলো।ক্লাস এইটে থাকতে আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আমার ফুফাতো ভাইয়ের সাথে বিয়ে দিয়েছিলো
বিয়েটা শুধু পড়িয়ে রেখেছিলো।কথা ছিলো আমার এসএসসি পরীক্ষা শেষ হলে তারা আমাকে তাদের বাসায় নিয়ে যাবে কিন্তু নেয়নি।উল্টো আমাদের কিছু জমি তারা দখল করে নেয়।তাদের বাঁধা দেওয়ার মত আমাদের পরিবারে কেউ ছিলোনা।আমাদের জমি দখল করে তারা সেখানে বাড়ি করে।উনারা আমাদের নিজের আত্নীয় তাই বাইরের কেউ কথা বলে সাহস পাইনি।জমিজমা দখল করার পর আমাকে আর কোনদিন নিবেনা এটা তারা জানিয়ে দেয়।আমরা গ্রামের মাতব্বরের কাছে যায়।গ্রামের সব মেম্বার চেয়ারম্যান তাদের হাতে ছিলো ফলে আমাদের কথা কেউ শোনেনি।আমাকে তারা ছাড়েওনি আবার তাদের বাড়িতেও নেয়নি।আমাদের বিয়ের কোন কাগজ ছিলোনা তাই আইনের ব্যবস্থাও নিতে পারিনি।আমি তখন অনেক কেঁদেছিলাম।এরপর থেকে প্রতিদিন রাতে আমি কাঁদতাম।এভাবে ইন্টার পাশ করি।তারপর পরিচয় তোমার সাথে।কখন যে তোমার প্রেমে জরিয়ে পড়ি নিজেও বুঝতে পারিনি।তোমাকে অনেক আগে থেকে কথাগুলো বলার চেষ্টা করছি কিন্তু পারিনি।।সেদিন যখন তোমার সাথে রিলেশন ব্রেকআপ করলাম সেদিন আমি নিজের ইচ্ছাতে ব্রেকআপ করিনি।আমার ফুফাতো ভাই আবার আমাকে নিতে চাই।আমাদের উপর চাপ দিচ্ছিলো কয়েকদিন ধরে।আমার বোনদের স্কুলে যেতে বাঁধা দিচ্ছিলো।আমি তখন বাধ্য হয়ে এসব করি।তোমার সাথে রিলেশন ব্রেকআপ করে বাসায় গিয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করি।আম্মু বাঁধা দেয়।আম্মু আমাকে বলে আমাকে ওই বাড়িতে যেতে দিবেনা।(জারার ফ্যামিলির সবাই আমাদের রিলেশন সম্পর্কে আগে থেকেই জানতো)।তোমার থেকে আমাকে আলাদা করবেনা।তাতে যা হবার হবে।আমাদের অনেকবার মেলামেশাও হয়েছিলো।জানো নিজেকে অনেকবার শেষ করে দিতে চেয়েছি কিন্তু পারিনি।
আমি পুরোপুরিভাবে চুপ হয়ে গেলাম।চোখের কোণ দিয়ে কয়েকফোটা জল গড়িয়ে পড়লো।কতবড় অন্যায় করেছি আমি।পরোকিয়া প্রেম করেছি এতদিন আমি।ছিঁ।নিজেই নিজেকে ধিক্কার দিচ্ছি।রিলেশন শুরুর আগে আমার উচিতছিলো সবকিছু জেনে নেওয়ার।জারার চোখ বেয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে।কান্না করার কারণে ফর্সা গাল লাল বর্ণ ধারণ করেছে।আশেপাশে বসে থাকা অনেকেই তাকিয়ে আছে আমাদের দিকে।এই প্রেম আমি কোনভাবেই আর চালাতে পারবোনা।পরোকিয়া প্রেমের জন্য পরকালে কঠোর শাস্তি পেতে হবে।
:-আমাকে এভাবে না ঠকালেও পারতে।আমি কী অন্যায় করেছিলাম যার কারণে এতবড় সত্য লুকিয়েছিলে।(আমি)
:-প্লিজ ক্ষমা করে দাও।বিশ্বাস করো আমি অনেকবার বলতে চেয়েছি কিন্তু পারিনি।তোমাকে হারানোর ভয়ে বলতে পারিনি।
:-কিন্তু এটা যে পরকিয়া প্রেম করেছো আমার সাথে তার শাস্তি পাবে কে?পরোকালে এর জন্যতো আমাকেই শাস্তি পেতে হবে।
:-প্লিজ হুসাইন আমাকে ছেড়ে যেওনা।আমি মরে যাবো তোমাকে ছারা।
:-আমি পারবোনা এই রিলেশন কন্টিনিউ করতে।আমাকে ক্ষমা করে দিও।
জারার পাশ থেকে ওঠে চলে আসলাম।জারার অনেকবার আমাকে আটকানোর চেষ্টা করলো কিন্তু পারলোনা।
পশ্চিম আকাশে সূর্য অস্ত যাচ্ছে।পাখিরা সব বাসায় ফিরছে।ছাদে বসে আছি।মনটা খুব খারাপ।ওই উপরওলার প্রতি খুব অভিমান জমেছে মনে।আমার জীবনটা কেনো এত কষ্টময় করে দিলো।কী অপরাধ করেছি যার কারণে এত কষ্ট পেতে হচ্ছে আমাকে।পরিবার থেকে বিচ্ছেদ হলাম,তারপর একজনকে ভালোবাসলাম সেও ঠকালো।কেনো আমার সাথেই এতকিছু ঘটছে।মনের কোণে কষ্ট জমতে জমতে সুখ কি সেটা ভুলে গেছি।কষ্টগুলোকে এখন সবথেকে বেশি আপন মনে হচ্ছে।
ফোনের শব্দে চমকে ওঠলাম।গভীর চিন্তাতে মগ্ধ থাকার সময় যদি ছোট শব্দও কানের কাছে বাঁজে তাহলে মনের মধ্যে ধুক করে বেঁজে ওঠে।ফোনটা পকেট থেকে বের করে হাতে নিলাম। অপরিচিত নম্বর।রিচিভ করলাম
:-হুসাইন বলছো?(মেয়েলী কন্ঠ)
:-হ্যাঁ।আপনি কে?(আমি)
:-আমি জারার আম্মু।
:-ও আন্টি!কেমন আছেন?
:-ভালো। তুমি কেমন আছো?
:-জ্বি আন্টি ভালো।
:-জারার সাথে কি হয়েছে তোমার?বাসায় আসার পর থেকে পাগলামি করছে।তোমার সাথে ঝগড়া হয়েছে?
:-না।
:-তাহলে?
:-আন্টি আপনি সবকিছু জানেন।ওর আগে বিয়ে হয়েছিলো সেখান থেকে ছারাছাড়ি হয়নি এখনো সেই অবস্থায় আমার সাথে রিলেশন করেছে।এটাকে কি বলে আপনার অজানা নয়।
:-তুমি ভুল বুঝেছো। ওদের সাথে আমাদের সবকিছু আজ সকালেই শেষ হয়ে গেছে।জারার ফুফাতো ভাইয়েরা গ্রামের মেম্বর ডেকে এসে সিপারেট করে দিয়েছে।
:-কিন্তু জারাতো আমাকে এসব বলেনি।
:-তুমি আমাকে বলার সুযোগ দিয়েছো?তার আগেইতো হুর হুর করে চলে গেলে।(ওপাশ থেকে জোরে কথাগুলো বললো জারা)
:-যাইহোক আমার কাছে সবকিছু লুকিয়েছিলে কেনো?
:-ও যা করেছে তার জন্য আমি ওর হয়ে তোমার কাছে ক্ষমা চাইছো।ও খুব পাগলামি করছে জানিনা কখন কি করে বসে।
:-আন্টি কিসব বলছেন আপনি?আপনি কেনো ক্ষমা চাইছেন?জারাকে দেন আমি ওর সাথে কথা বলছি।
:-বলো।(জারা)
:-কি পাগলামি করছো শুনি?
:-আমি মরে যাবো তোমাকে না পেলে।
:-মরে যাওয়া এতই সহজ?
:-হুম সহজ।
:-এক থাপ্পর মারবো।
:-মারো।
জারার সাথে আবার সবকিছু ঠিক হয়ে গেলো।আমি মেনে নিয়েছি জারাকে।কি করবো মেনে না নিয়ে জারা না থাকলে আমি যে খুব একা হয়ে যাবো।তাছাড়া মেয়েটা যে অভিমানী আমি যদি ওকে মেনে না নিই নিশ্চিত আত্মহত্যা করে বসবে।২য় বারের মত সুযোগ দিলাম ওকে।
২দিন পর
রুমে বসে আছি তখন একটা নম্বর থেকে ফোন আসলো।নম্বরটা খুব অবাক হলাম আমি।কতগুলো দিন যে এই নম্বরটা থেকে একটা ফোন কলের অপেক্ষা করেছি তার হিসেব নেই।কতরাত জেগেছি।কতবার আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছি তার হিসেব নেই।এসব ভাবতে ভাবতে ফোন কল কেটে গেলো।তবে কয়েক সেকেন্ড পর আবার বেঁজে ওঠলো।এবার রিচিভ করলাম।
:-কেমন আছিস বাবা?(আব্বু)
আব্বুর কন্ঠশর শুনে চোখ দিয়ে আমার কয়েকফোটা জল গড়িয়ে পড়লো।কতগুলো বছর পর পাষান মানুষটার আমার কথা মনে হলো।আমাকে যতই মারুক কাটুক সে আমার বাবা।আমি কখনোই তার উপর রাগ করে থাকতে পারিনা।কতগুলো রাত জেগে জেগে কেঁদেছি আব্বু আম্মু ছোট ভাইদের কথা মনে করে তার হিসেব নেই।
:-কিরে কথা বলবিনা এই খারাপ মানুষটার সাথে?(আব্বু)
কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি আমি।কি বলবো ভেবে পাচ্ছিনা।
:-আমি ভালো আছি।তোমরা কেমন আছো?(আমি)
:-ভালো।আমাকে খুব ঘৃনা করিস তাইনা?
:-না।তুমি হলে আমার জন্নদাতা তোমাকে কখনো ঘৃনা করতে পারিনা। হাজার কষ্ট দিলেও তুমি আমার বাবা।
:-এই খারাপ মানুষটাকে ক্ষমা করে দিয়ে বাসায় ফিরে আয়।
:-আমি আসছি।এখনি রওনা হচ্ছি।তুমি আম্মুকে বলো আমি আসছি।
আব্বুকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে আমি ফোন রেখে দিলাম।ফোনে কথা বলে আমি সময় নষ্ট করতে চাইনা।খুব তাড়াতাড়ি বাসায় যেতে হবে আমাকে।কতগুলো বছর পর সবাই দেখবো এটা ভাবতেই মনের ভিতর আনন্দের ঢেও খেলে যাচ্ছে।তাড়াতারি রেডি হয়ে বেড়িয়ে পড়লাম।পরিবারের মানুষদের ছেড়ে দুরে থাকা কতটা কষ্টের তা একমাএ সেই ব্যক্তিই জানে যে পরিবার থেকে বিছিন্ন।আমার জীবনের সবথেকে বড় সারপ্রাইজ আমি পেয়ে গেছি।হারনো পরিবার ফিরে পেলাম আমি।আমিতে আশা ছেরে দিয়েছিলাম।ধরে নিয়েছিলাম কোনদিন আর দেখা হবেনা হয়তো আব্বু আম্মু,ছোট ভাইদের সাথে কিন্তু উপর আমার ভাগ্যে অন্যকিছু লিখে রেখেছিলো।
৫ঘন্টার জার্নি শেষে বাসায় পৌঁছালাম।
বাসায় ঢুকতেই দেখলাম সবাই বসে আছে।আম্মু আমাকে দেখা মাএই ওঠে এসে জরিয়ে ধরলো।আম্মু কাঁদছে।আমিও কাঁদছি।এতদিন পর আম্মুকে দেখে আমার অশান্ত মন আজ শান্ত হলো।মনের মধ্যে আজ কষ্টের বদলে সুখের হাওয়া বইছে।ছোট ভাইয়েরাও এসে আমাকে জরিয়ে ধরলো।ওদের চোখেও পানি।অজানা এক ভালোলাগা কাজ করছে আমার মাঝে।আজকে আমি সবথেকে খুশি।আমার জীবনের সবথেকে খুশির দিন আজ।আব্বু একটু দুরে দাঁড়িয়ে আমাদের সবার মিলনের দৃশ্য দেখছে।আব্বুর চোখেও পানি দেখতে পেলাম।আব্বু আমাদের কাছে এগিয়ে আসছেনা।কেনো আসছেনা আমি বুঝেছি।আমাকে বাসা থেকে বের করে দেওয়ার অপরাধবোধ তার ভিতরটা কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে।আম্মুদের কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে আব্বুর কাছে এগিয়ে গেলাম।আব্বুর কাছাকাছি যেতেই আব্বু আমাকে জরিয়ে ধরে বাচ্চা ছেলের মত কাঁদতে শুরু করে দিলো।
:-আমাকে ক্ষমা করে দে। আমি তোকে পরিবার থেকে আলাদা করে খুব বড় অপরাধ করেছি।আমাকে ক্ষমা করে দে।(আব্বু)
:-আব্বু চুপ করো।এসব কি বলছো।তুমি আমার কাছে ক্ষমা চাইলে আল্লাহ আমার উপর নারাজ হবেন।বাদ দাও এসব।আমার খুব ক্ষুদা লেগেছে চলে সবাই একসাথে খাবো(আমি)
:-হুসাইনের আম্মু টেবিলে খাবার দাও।আজ আমি ওদের তিন ভাইকে নিজ হাতে খাওয়ায়ে দিবো।যা বাবা রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আয়।
আমি রুমে চলে আসলাম।পকেট থেকে ফোন বের করে তাকাতেই চমকে ওঠলাম।কাজ সারছে।২৫৫ মিসকল।আজ আমার কপালে দুঃখ আছে।তাড়াতাড়ি ফোন ব্যাক করলাম।
:-এই তুমি কোথায়?ফোন ধরোনা কেনো?তুমি ঠিক আছো?(জারা)
:-এতগুলো প্রশ্নের উওর কিভাবে একসাথে দিবো?
:-তুমি জানো কতটা টেনশনে ছিলাম?তুমি ফোন ধরছিলে না বলে শিপনকে ফোন দিলাম শিপন বললো ও জানেনা তুমি কোথায়।
:-আব্বু ফোন দেওয়ার পর সবকিছু ভুলে গিয়েছিলাম।মেস থেকে চলে আসার সময় কাউকে বলিও নি।
:-কি?তোমার আব্বু তোমাকে ফোন দিয়েছিলো?এতগুলো বছর পর?
:-হুম।আমি বাসায় চলে এসেছি।
:-আল্লাহর কাছে লাখো কোটি শুকরিয়া উনি তোমার সবকিছু ফিরিয়ে দিয়েছেন।
:-হুম।আজ আমি খুব খুশি।জীবনের সবথেকে বড় সারপ্রাইজ আজ আমি পেয়ে গেছি।জানো সবাই আমাকে জরিয়ে ধরে খুব কাঁদছিলো।আমিও কেঁদে দিয়েছিলাম।
:-আজ আমিও তোমাকে একটা সারপ্রাইজ দিবো।
:-দাও।
:-Ummmma.
:-বুঝিনি।
:-Ummmma.
:-কিবলো বুঝিনা।
:-ওই বোঝনা তাইনা।দুষ্টু।
:-আরেকটা দাওনা।
:-ওই না।
সারপ্রাইজ এর উপর সারপ্রাইজ।
*****************************************সমাপ্ত*************************************