অরণীর খুব কাছে কাছে হাঁটছি । মেয়েটা রাগে ফোঁসফোঁস করছে । কারন এই মাত্র ওকে আমি প্রপোজ করছি । প্রপোজ করার পর কেউ রাগে সাপের মত ফোঁসফোঁস করতে পারে ওকে না দেখলে কখনো বিশ্বাস করতাম না । কি করবো ! আমরা অনেকদিন যাবত ভালো বন্ধুই ছিলাম । হঠাৎ শুনলাম সানি ওকে পছন্দ করে । এরপর আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না । সরাসরি প্রপোজ মেরে বসলাম । ক্লাস শেষে মেয়ে টাকে বললাম একটু পদ্ম পাড়ে বসবি ? একটা সিরিয়াস কথা আছে । মেয়েটা হাসলো । কারন আমার মত আনসিরিয়াস ছেলের মুখে সিরিয়াস শব্দটাই কেমন যেনো হাস্যকর লাগে । সে বলল , বল শুনি ।
আমি পকেট থেকে একটা সাদা গোলাপ বের করে বললাম ” আই লাভ ইউ “….
মেয়ে ফুল তো নিলই না । উল্টা রাগে ফোঁসফোঁস করতে লাগলো । কোন কথা না বলে ডিপারটমেন্টাল স্টোরের দিকে
হাটা শুরু করলো । আমিও ওর কাছাকাছি একটা নির্দিষ্ট দূরত্ব রেখে হাঁটছি । মেয়েটা ডিপারটমেন্টাল স্টোরে ঢুকে প্রথমে মোবাইলের কার্ড কিনলো । তারপর আবার বের হয়ে আসলো । আমিও দেখাদেখি বের হয়ে আবার ওদের হলের দিকে হাঁটা শুরু করলাম । মেয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বলে
” কিরে ! তুই আসিস ক্যান ? তোর হল এদিকে?”
“না ! ”
“তাইলে এদিকে কি ? ”
মানে ! তোর উত্তর টা তো পাইলাম না!
“ভাগ তো ! বিরক্ত করিস না মেজাজ খারাপ ! ”
“সরি দোস্ত ! আমার এটা করা মোটেও ঠিক হয়নি ”
“যা তো ! তোরে সহ্য হইতাছে না এখন । ভাবছিলাম তুই বোধহয় আট দশ পোলার থেকে ভিন্ন । ভুল ভাবছি । পোলা জাতিটাই এমন । বলদ গুলা আগে ভাগে প্রপোজ করে,, আর চালাক গুলা প্রথমে ফ্রেন্ড এর একটা
ভাব নিয়া দেখায় তার প্রেম পিরিতে ইন্টারেস্ট নাই । পরে ঠিকই সেইম কাজ করে । ভাগ তো । ট্রেডিশনাল কমন পিউপল ”
“সরি দোস্ত ! আমি আসলে ঐরকম নাহ”
ও আমার দিকে পাত্তাই দিল না । আমি বাসায় এসে সরি বলার জন্য ওকে ফোন দিতে গেলাম । দেখি ফোন বন্ধ । কেমন টা লাগে ? পরের দিন ক্লাস শেষে ওর পিছে পিছে হাঁটছি । মেয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বলল
“কিছু বলবি ? ”
” নাহ ভালো আছিস ? ”
“হুম ! অনেক ভালো । ”
“ফোন অফ রাখছিস ক্যান ? ”
“আমার ফোন আমি অফ রাখবো । তোর কি ?”
“প্লিজ দোস্ত ! আমারে ভুল বুঝিস না । তোরে প্রপোজ করছি তোকে হারানোর ভয়ে । আমি আসলে তোর ফ্রেন্ডই থাকতে চাই । ”
“আর ভেজাল করবি নাতো ? ”
“না !! মাথা খারাপ !! ”
আসলে ভালোবাসাটা বোধহয় ভাইরাস এর মত । কাউকে একবার ভালোবেসে ফেললে বারবার মনের মধ্যে এসে উকি দিয়ে হিহিহি করে হাসে । বিরক্তিকর ফীল।।
মেয়ে টার সাথে সব সময় ভান করি সে আমার বন্ধু কিন্তু ভেতরে ভেতরে যে আমি ওর প্রেমে পরে সিদ্ধ আলুভর্তা হয়ে আছি কিভাবে বুঝাই।।
ও অবশ্য কোনদিন আমাকে এক্সট্রা পাত্তাও দেয় না । রাতে ফোন দিলে বলে, ঐ রাতে ফোন দিস ক্যান ? তুই আমার বয় ফ্রেন্ড লাগস?
“আজব ! রাতে ফোন দিতে হইলে বয় ফ্রেন্ড হইতে হয় ? ”
“হ ! আমার বয় ফ্রেন্ড না হইলে রাত ১১ টার পর ফোন দেয়া যাবেনা । ”
“তাইলে বয় ফ্রেন্ড বানাইয়া নে ”
” ব্যচ মেট এর বেইল নাই । সিনিয়র হইলে ভাইবা দেখতাম ”
“আজব ! মেন্টালিটি মিল্লেই তো হয় ! বয়সে বড় হইলেই কি সব ভালো হয়ে যাবে নাকি ! আমার মত ফ্রেন্ড প্লাস বয় ফ্রেন্ড কোনদিন পাবি না ! ”
আবার কথা কস ! ভার্সিটিতে নিউ ব্যচ আইছে ! ঐদিকে ট্রাই মার । আমার ধারে কাছে আসবি না প্রেম ট্রেম এর চিন্তা নিয়া । ”
“তুই কাউরে লাইক করিস ? ”
“নাহ ! তবে ফেইসবুকে এক সিনিয়র ভাইয়ের সাথে কথা হয় ! গ্রামীনফোনে জব করে ! কথাবার্তা ভালই আছে । ”
“ফোনে কথা হয় ? ”
“না ! ফোন নম্বর চাইছে । দেইনাই এখনো । আপাতত আরও কিছু দিন দেখি । তারপর যদি মন চায় দেব । ”
“ওহ ! ভালো তো….. ! ”
ভালোবাসার মানুষ বেইল দেয় না এটা মেনে নিছি । তাই বলে আরেকজনের সাথে প্রেম করবে ? এটা সহ্য করি কিভাবে । রাতে একটানা দশটা সিগারেট ধরালাম । হাইভলিউম দিয়ে গান শুনছি।
তবুও রাগ যাচ্ছে না।
পরেরদিন ক্লাস শেষে ও আমাকে ডেকে নিয়ে ক্যফেটেরিয়ায় আসলো । আমার দিকে তাকিয়ে বলল
“শিঙাড়া খাবি ? ”
“না ! অনেক গরম পড়ছে । একটা কোক খাওয়া। ”
“আচ্ছা ! ”
ও কোক এর অর্ডার দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বলল ,
“দোস্ত ! তাসফি এর সাথে কথা হইছে । ”
“ঐ সিনিয়র ভাইয়া টা ? ”
“হুম অনেক ম্যচিউরড ভয়েস । তোর মত পিচ্চি পিচ্চি না । ”
“ভালো তো…. ।। ”
“আমারে কিন্তু এখন ভুলে ও রাতে ফোন দিবি না । ধরবো না । ফোনে বিজি দেখলে মাইন্ড করতে পারে । ”
“একদিন কথা বলেই প্রেমে পরে গেছিস নাকি ? এতো সাবধানতা ? ”
অরণী একটা লাজুক হাসি দিয়ে বলল । ” আগেই পড়ছি । কিন্তু ইচ্ছে করেই ফোন নম্বর দেইনি এতদিন । কাল সারা রাত কথা বলছি । এতো ফান করে কথা বলে না , আর কি বলবো! ”
“ও ভালো তো…. ! ”
কোক খাওয়ার সময় গলা দিয়ে কেন জানি নামছিল না । বুকের মধ্যে দম আটকে আছে কেন ? পুরো পৃথিবীতে নিজেকে অনেক নিঃস্ব মনে হচ্ছে । এরপর অরণী কি কি বলল কিছুই আমার কানে ঢুকছিল না ।
এরপর থেকে ওকে ফোন দিতে গেলেই হাত আটকে যায় । ওর ফোন নম্বর ইচ্ছে করে ডিলিট করে দিলাম । কিন্তু নম্বর টা মাথার মধ্যে পেইন হয়ে আটকে আছে । ঐ নম্বর ভোলার জন্য ফোন লিস্টের সব নম্বর মুখস্ত করলাম ।
সব নম্বর তালগোল পাকিয়ে দেখি অরণীর নম্বর টা ঠিকই মনে আছে ।
ওর সাথে শুধু ফেইসবুকে কথা হয়,, শুধু হাই হ্যালোতেই শেষ । জিজ্ঞেস ও করে না ফোন দেই না কেন এতদিনের বন্ধুত্ব সে নতুন একজন মানুষের জন্য এতো সহজে মূল্যহীন মনে করছে,, ভালই তো।
“কাল আমার সাথে কে এফ সি যাবি ? ”
“তুই খাওয়াবি ? ”
“নাহ । আমার হবু প্রেমিক । প্রথম দেখা । কিন্তু তোকে নিয়ে যাবো । সেইফটি হিসেবে ”
“কেন ? ভাইকে এখনো বিশ্বাস করতে পারছিস না ? ”
“নাহ । এমনি । প্রথম দেখা । লজ্জা লাগছে । ”
“আমাকে নিলে তো ভাই এর লজ্জা লাগতে পারে ”
“জী না ! হি ইজ নট লাইক ইউ ! হি ইজ অ্যা ম্যান অ্যান্ড ইউ আর দা আল্টিমেট মেইন্দা ”
“প্লিজ তুই আমাকে কথায় কথায় পচাবিনা । ভালো লাগে না।”
“হা হা হা ”
ওই হাসবি না..!
মেয়েটার হাসিটা কত সুন্দর ! ওদের দেখা হবার দিন আমি অসুস্থতার কথা বলে এড়িয়ে যাই । অরণী অনেক মাইন্ড করে। তবুও আমার করার কিছু ছিল না ।
একদিন অরণী বলে ,
কিরে এমন দেবদাস হইয়া কতদিন থাকবি ? প্রেম ট্রেম কর ।
-হা হা হা
“কিরে হাসির কি হলো ।
“কিছুনা । প্রেম করবো না । তোর বন্ধু আছি । একজন বন্ধু থাকলেই হলো । কারো মুখে জানু শোনা লাগবে না”
“বাহ ! এই যুগের ছেলের মুখে এই কথা ! ভালো। একটু আমার সাথে সদরে মার্কেটে যাবি ? ”
“ক্যান ? ”
“তাসফি এর জন্য রিষ্ট ওয়াচ কিনবো। ওর কাল বার্থ ডে ”
“ওহ ! আমার যেতেই হবে ? ”
“হুম ”
মেয়ে তার বয় ফ্রেন্ড এর জন্য রিষ্ট ওয়াচ দেখছে । আর আমি ওর দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি ।
আমার কানে হেড ফোনে
“হোয়াই নট মি ” গান টা শুনছি
“Escaping nights without you with shadows on the wall…
My mind is running wild trying hard not to fall…
You tell me that you love me but say I’m just a friend…
My heart is broken up into pieces”…
রিকশাতে মেয়ে টাকে নিয়ে পাশাপাশি যাচ্ছি । আজকে ক্লাস শেষে একটা সেমিনার ছিল । তাই একটু বেশি রাত হয়ে গেছে । আমাকে বডী গার্ড হিসেবে যেতে হচ্ছে । মেয়ে টার চুল গুলো বাতাসে এদিকে ওদিকে উড়ছে ।
সাথে আমার বুকের মাঝে ড্রাম বেজে চলছে । ও কারো গার্ল ফ্রেন্ড ! এটা কখনো আমার মাথায় চিন্তাও আসে না। আমার মনে হয় আমার বউ অন্য কারো সাথে প্রেম করছে কিন্তু আমি কিছু করতে পারছিনা । তাই ওর প্রতি আমার রোমান্টিক ফীল গুলো আমি কিছুতেই কন্ট্রোল করতে পারছিনা ।
প্রচণ্ড গরমকালে হঠাৎ করে প্রবল বাতাস শুরু হয় । সাথে প্রবল বৃষ্টি ।
মামা একটা পলিথিন দিল ।
দুজন এক পলিথিন এর নিচে ।
হুড লাগানোর কারনে ওর গা ঘেঁসে বসতে হয়েছে । ওর চুল ,পারফিউম এর গন্ধ সহ্য করে আমার পক্ষে থাকা সম্ভব হচ্ছিল না । ভেতরে ভেতরে আমি শেষ হয়ে যাচ্ছিলাম । হঠাৎ ওকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ওর ঠোঁটে প্রবল একটা চুমু খেলাম।
এরপর রিকশা ওয়ালা মামাকে বলে রিকশা থামিয়ে এক দৌড়ে চলে আসলাম ।
কি করলাম আমি ? নিজের এতো অধপতন । ছি নীলয় ছি (নিজেকেই নিজে বলছি) !!!
এরপর থেকে ওর দিকে তাকাতেই ভয় হতো । তিনদিন পর ও আমাকে ক্লাস শেষে ডাক দিল ।
“কিরে দূরে দূরে থাকিস ক্যান ? ”
“মানে ? ”
“কি মানে ? ”
“তুই রাগ করিস নাই ঐদিনের ঘটনার জন্য ? ”
“করছি । সরি ও তো বল্ললি না তাহলেই তো ঠিক হয়ে যেত সবকিছু ! ”
“সরি বলবো না । আমি ভুল করিনাই । ”
” ওহ ! তাই নাকি ! ? ”
মেয়ে টার মুখে রহস্যময়ী হাসি ।
একদিন অরণীর দিকে তাকিয়ে দেখলাম ওকে অনেক বিধ্বস্ত লাগছে । কেমন যেনো দিশেহারা একটা ভাব ।
“কিরে কি হইছে তোর ? ”
“কিছু না ! ”
ও আমাকে এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করছে। আমি ওর হাত ধরে জোর করে ক্যম্পাসের সামনে দিঘীর পাড়ে নিয়ে আসলাম ।
অনেকক্ষণ যাবৎ আমরা দিঘীর পাড়ে বসে আছি । একটু দূরে
একটা প্রজাপতি একটা ঘাসফুল এর উপর বারবার বসছে আবার উড়ে উড়ে যাচ্ছে ।
আমি ওর দিকে তাকিয়ে বললাম
“ভাইয়ার সাথে কেমন যাচ্ছে দিনকাল ? ”
“ও আমার সাথে অনেক খারাপ আচরন করছে।”
“কেনো ? ”
“আমি ভালো মেয়ে না এইজন্য ! ”
“কি হইছে খুলে বলবি তো ! ”
“ও আমার সাথে ফিজিক্যাল রিলেশনে যেতে চায় । আমি রাজি হইনা । তাই সে আমাকে অনেক বাজে বাজে কথা বলছে।
আর বলছে যদি আমি রাজি হই তবে রিলেশন রাখবে । নাহলে থাকবে না । ”
“ভাইয়ার সাথে কন্টাক্ট অফ করে দে । ”
“আমি ওকে অনেক ভালোবাসি ”
“নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারিস না ।
কোন ভুল কিছু করে ফেললে নিজেই পস্তাবি ।”
“সব ছেলেই এক । তুই কি নিজে সুযোগ নিস নাই ? ”
আমি চুপ হয়ে গেলাম । আমার বলার কিছু ছিল না । কি বলবো.. ঐ দিন কেন এমনটা করলাম বুঝতে পারছি না।।
“আচ্ছা ! তোর যা ভালো মনে হয় তাই কর ”
এরপর কেন জানি অরণীই নিজে থেকে আমার সাথে দূরত্ব বাড়িয়ে দিল । ওর সাথে কথা বলতে গেলেই কেমন জানি একটা গা ছাড়া ভাব দেখানো শুরু করলো ।
“কেমন আছিস ? ” (আমি)
“ভালো ” (অরণী)
“চল সেমিনারে একটু বসি ! ”
“নারে ! ভালো লাগছেনা । যাই । ”
এভাবে দিন কেটে যাচ্ছে । একদিন গভীর রাতে ও আমাকে ফোন দিল ।
“ভালো আছিস ? ”
“হুম । তুই ? ”
“ভালো নেই । তবে কিছুক্ষন পর অনেক ভালো থাকবো । অনেক । ”
ওর কথায় কেমন যেন মাতলামো ভাব আছে ।
“এই কি হইছে ? বল তো ”
“কিছু না । তুই আমাকে অনেক ভালবাসিস । তাই নারে ? ”
“এই কথা এখন রাখ । কি হইছে বল না”
“আই অ্যাম প্রেগন্যান্ট অ্যান্ড হি হ্যস ব্রোক আপ উইথ মি । হা হা হা ”
আমি ঢোক গিল্লাম ।
“কেন করলো এমন ?”
“সে নাকি আমার সতিত্তের পরিক্ষা নিছে। আমি ফেইল করেছি । যে মেয়ে বিয়ের আগে বয় ফ্রেন্ড এর সাথে ফিজিক্যাল রিলেশন করতে পারে সেই মেয়ে র সাথে সে নাকি সারাজীবন কাটাতে পারবেনা ”
“সেই তো তোর বয় ফ্রেন্ড । ”
“আই ওয়াজ রং । হি ইজ অ্যা চিট ! অ্যান্ড আই অ্যাম ব্লাডি বিচ । হা হা হা । আই হ্যাভ টু পানিশ মাই সেলফ । ভালো থাকিস ”
“এই কোন পাগলামি করিস না ! আমি তোকে বিয়ে করবো। ”
এই কথাটা বলার আগেই লাইন কেটে গেলো । আমি মধ্য রাতে বাসা থেকে পাগলের মত দৌড়ে বের হলাম । ওদের বাসা আমাদের থেকে রিকশাতে এক ঘণ্টার দুরত্ত । রাতে রিকশা পেলাম না। তবে একটা ভ্যান ওয়ালা
মামা পেলাম । লোকটা নেশা করে ভ্যনের উপর শুয়ে আপন মনে গান গাচ্ছিল। আমি তার সুখের সময় নষ্ট করে একরকম জোড় করে রাজি করালাম।
ওদের বাসার মেইন গেট এতো রাতে খোলা ক্যান ? আশে পাশে দারওয়ান মামাও নেই। ওদের দরজায় নক করতে গেলাম,, একি দরজাও খোলা !
একদম ওর রুমে গিয়ে দেখি রকিং চেয়ারে বসে দোল খাচ্ছে। হাতে এক কাপ কফি। আমার কি এখন অবাক হওয়া দরকার নাকি না! বুঝতেছিনা!
মাথার মধ্যে এক হাজার ইরর।
“কিরে মরিস নি ?”
“নাহ ”
“ক্যান ? ”
“তোকে প্রপোজ করবো বলে। ”
“মানে ? ”
“মানে কিছুনা । ”
“দোস্ত ! আমি কিছু বুঝতেছিনা । বাসার সবাই কই ? দরজা খোলা কেন ? মেইন গেট পর্যন্ত খোলা । ”
“আমি খুলে রেখে দিছি । বাবা মা বাসায় নেই । দারোয়ান মামা ঘুমাচ্ছে তার রুমে। আমি চুপে চুপে গিয়ে দরজা খুলে দিয়ে আসছি । ”
“তুই আমাকে একটু আগে ফোনে যা বল্ললি সেগুলা কি ছিলো ? ”
“ভোগাস, মিথ্যা ! আমি ঐ ফালতু ছেলের কথা মেনে ভুল করবো, এটা ভাবলি কি করে ! আমি নিজেই ব্রেক আপ করে দিছি । যে ছেলে বিয়ের আগে তার গার্ল ফ্রেন্ড এর সাথে ফিজিক্যাল রিলেশনে যেতে চায় সেই ছেলে যদি ব্র্যাড পিট ও হয়ে থাকে তবে তার সাথে সম্পর্ক রাখা উচিৎ না । এরা ভালবাসে না । এরা মাংসপিশাচ। ”
“কিন্তু আমাকে এভাবে ভয় দেখালি ক্যান ? ”
“তুই যে আমাকে ভালোবাসিস সেটা আমি জানতাম কিন্তু আমার মা বাবা জানতো না । তাদের দেখানোর জন্য ”
“মানে ? আঙ্কেল আনটি বাসায় ? ”
“হুম ”
এরপর দেখলাম ধীরে ধীরে অরণীর রুমে আঙ্কেল আনটি অরণীর ছোট বোন আর পিচ্চি ভাইটা হাসতে হাসতে ঢুকলো । অরণী সবার সামনে আমার কাছে এসে হাত দুটো ধরে বললো ,
” আই লাভ ইউ”…
এদিকে খুশিতে আমার মাথায় অটো মিউজিক প্লেয়ার চালু হয়ে গেছে…
“বুকের ভেতর ডানা ঝাপটায় পাখি, বেপরোয়া ভাংচুর … সীমাহীন রোদ্দুর …